কথাসাহিত্যিক অমর মিত্রের কাছে তাঁর সেরা গল্পটি নিয়ে লিখতে অনুরোধ করা হলে তিনি সেরা লেখা নির্বাচন করেন না বলে জানান। তবে তিনি তাঁর লেখা এই চরাচর এই চালচিত্র গল্পটি দিয়েছেন। গল্পটি নিয়ে অমর মিত্রের সঙ্গে আলাপচারিতা নিচে প্রকাশিত হল।।
গল্পটি পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
-----------------------------------------------------------------
গল্পপাঠ ১. আপনার লেখা কোন গল্পটি সেরা বলে মনে হয়?
অমর মিত্র. কোনো গল্পই সেরা মনে হয় না আমার। আসলে পুরনো লেখার দিকে ফিরে তাকাতে নেই। আমি যে গল্পটি এখানে দিলাম, এই চরাচর এই চালচিত্র---এই গল্পটিকে আমি এমনি নির্বাচন করলাম। আমার নিজের কোনো সেরা গল্প নেই। সেরা গল্প আমি এ জীবনে লিখতে পারব কি না জানি না. আমি নিজেকে এখনো খনন করে যাচ্ছ। সবচেয়ে প্রিয় গল্পটি খুঁজে যাচ্ছি শন্যতায়।
গল্পপাঠ ২. গল্পটির বীজ কিভাবে পেয়েছিলেন?
অমর মিত্র. এই গল্প 2005-এ লেখা।
গল্পপাঠ ৩. গল্পের বীজটির বিস্তার কিভাবে ঘটল? শুরুতে কি থিম বা বিষয়বস্তু নিয়ে ভেবেছেন? না,কাহিনীকাঠামো বা প্লট নিয়ে ভেবেছেন?
অমর মিত্র. আমি শুরুতে কিছুই ভাবি নি. কোনো লেখাই সেই ভাবে অনেকটা ভেবে লেখা হয় না. আমি জমি অধিগ্রহন দেখেছি। সরকারী আমিন--সার্ভেয়রের জমি দখল দেখেছি, তদন্ত দেখেছি. মানুষের চোখে ভয় দেখেছি, এই গল্প সেই দেখা থেকে হয় তো লেখ। আর গল্পটি পডলে ধরা যাবে এই গল্পে সেই অর্থে কোনো প্লট নেই।
মানুষ কী ভাবে সমস্ত কিছু হারাতে থাকে তা আমি দেখেছি।পশ্চিমবংগে জমি অধিগ্রহন নিয়ে আন্দোলন শুরু হয় 2006-এর জুনের পর।আমার এই গল্প তার এক বছর আগে লেখা। আমি অশ্বচরিত উপন্যাস লিখেছিলাম 1998-এ।সেই উপন্যাসেও ছিল অধিগ্রহনে সব হারানো মানুষের কথা।
গল্পপাঠ ৪. এই গল্পগুলোর দ্বন্দ্ব-সংঘাত কিভাবে নির্মাণ করেছেন?
অমর মিত্র. এই গল্পের চরিত্র তো রাধিকা কুইলা , তার স্বামী আর সার্ভেয়র। এদের নিয়ে আমি ভাবি নি।এরা আপনা-আপনি এসেছে। এদের কোনো না কোনো সময়ে আমি দেখেছি। আমি এদের চিনি। এদের সংগেই কাটিয়েছি জীবনের অনেকটা সময়।
এই গল্পে যা কিছু দ্বন্দ্ব---সংঘাত , সবই এসেছে স্বাভাবিক ভাবে। আমাকে কিছু নির্মাণ করতে হয় নি।
গল্পপাঠ গল্পপাঠ ৫.গল্পের পরিণতিটা নিয়ে কি আগেই ভেবে রেখেছিলেন?
অমর মিত্র. গল্পের পরিণতি ভেবে আমি লিখতে পারি না। আর এই গল্পের পরিণতিই বা কী, এই গল্প কী শেষ হয়, হয় না। রাধিকা কুইলার গল্পের কোনো পরিণতি হয় না।
গল্পপাঠ ৬. গল্পটি কদিন ধরে লিখেছেন? এর ভাষা ভঙ্গিতে কি ধরনের শৈলী ব্যবহার করেছেন?
অমর মিত্র. হয় তো দুদিন লেগেছিল গল্পঠি লিখতে। এর শৈলী, ভাষা নিয়ে ভাবিনি। আসলে গল্পই তার ভাষা আর শৈলী নিয়ে আসে। বিষয় শৈলী ভাষা পরস্পরের সংগে জডিয়ে থাকে।
গল্পপাঠ ৭. গল্পটিতে কি কিছু বলতে চেয়েছিলেন?
অমর মিত্র. গল্পটিতে কী বলতে চেয়েছিলাম তা কি গল্পের ভিতর দিয়ে ধরা যায় না ? আমার নতুন করে কিছু বলার নেই।
গল্পপাঠ ৮. গল্পটি লেখার পরে কি আপনি সন্তুষ্ট হয়েছেন? আপনি কি মনে করেন--আপনি যালিখতে চেয়েছিলেন, তা লিখতে পেরেছেন এই গল্পটিতে?
অমর মিত্র. যা লিখতে চেয়েছিলাম তা হয় তো পেরেছিলাম কিছুটা। অন্য ভাবে দেখেছি সবটা, এইটুকু চেয়েছিলাম, একে যদি পরিতৃপ্তি বলা যায়, তবে তাই।
গল্পপাঠ ৯. এই গল্পটি পাঠক কেনো পছন্দ করে বলে আপনার মনে হয়?
অমর মিত্র. সে তো পাঠক বলবেন। আমি কী বলব।

লেখক পরিচিতি
অমর মিত্রজন্ম :৩০ আগস্ট, ১৯৫১।
বাংলাদেশের সাতক্ষীরার কাছে ধুলিহর গ্রামে | বিজ্ঞানের ছাত্র | কর্ম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক দপ্তরে | তিনি ২০০৬ সালে ধ্রুবপুত্র উপন্যাসের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছেন।
প্রকাশিত বই
পাহাড়ের মত মানুষ, অমর মিত্রের শ্রেষ্ঠ গল্প, অর্ধেক রাত্রি, ডানা নেই উড়ে যায়, ধুলোগ্রাম, অশ্বচরিত, আগুনের গাড়ী, ধ্রুবপুত্র, নদীবসত, কৃষ্ণগহ্বর, আসনবনি, নিস্তব্দ নগর, প্রান্তরের অন্ধকার, ভি আই পি রোড, শ্যাম মিস্ত্রী কেমন ছিলেন, গজেন ভূঁইয়ার ফেরা, জনসমুদ্র, সবুজ রঙের শহর, সমাবেশ, সারিঘর, সুবর্ণরেখা, সোনাই ছিলো নদীর নাম, হাঁসপাহাড়ি।
পুরস্কার : সাহিত্য একাডেমী।
5 মন্তব্যসমূহ
Kothao pouchhuno satyi gelo na. Galpota abashya aami porini. Amar aamar priyobhajan. Taar kotha aamar jana. Kintu ekhane bakira khub ekta spashta uccharan shunte pelen mone hoy na.
উত্তরমুছুনগল্প না পড়লে কোথাও পৌঁছন যাবে না।
উত্তরমুছুনভালো লাগল।
উত্তরমুছুনgalpo ti besh valo laglo.onyo dharoner.besh alada chinta dhara.valo laglo.
উত্তরমুছুনএইমাত্র পড়ে শেষ করলাম অমর মিত্রের উপন্যাস অচিনপুর। কালি ও কলম অনলাইন সংস্করণে। আমি মুগ্ধ, তৃপ্ত, বিস্মিত তাঁর লেখনি ক্ষমতায়।
উত্তরমুছুন