তারিনীর মা বলল, ওরে খোকা, বুড়োটা অমন টলছে কেনরে? আমার কেমন জানি লাগছে। তারিনী বলল, বাদ দাওতো, সাত সকালে মাল খেয়েছে, বুঝলেনা। এখন বাড়ির সামনে বমি ফমি করবে, কোত্থেকে যে জোটে ঢ্যামনাগুলো। এই এলাকাটাকে মোটামুটি বস্তিই বলা যায়। ওই একটু উন্নত বস্তি আরকি। তারিনীর মা তবু বলল, নারে, আমার মায়ের মন, কেমন জানি লাগছে। দেখনা অমন করছে কেন। তারিনী উঠে গিয়ে বলল, ও দাদু, কী হয়েছে, সাত সকালে চুল্লু টেনেছ না কি । লোকটা ফ্যালফ্যাল করে তাকায়। তারিনীর মা গিয়ে বলে, বাবা জল খাবে ? বলে উত্তরের অপেক্ষা না করে প্লাস্টিকের মগে করে জল বাড়িয়ে দেয়। লোকটা ঢকঢক করে জল খায়, পেট চেপে ধরে। তারিনীর মা বলে, আস্তে, আস্তে, ওকি, পেট ব্যাথা করে? লোকটা আবার টলে, হাঁটতে থাকে, টলে টলে হাঁটে। তারিনী দৌড়ে গিয়ে বলে অ্যাই অ্যাই, মগটা নিয়ে যাচ্চো কেন? লোকটা আর দুপা গিয়ে ঠাস করে পড়ে গেল।
থানায় সেকেন্ড অফিসারের সামনে চেয়ারটা একদিকে কাত হওয়া। তিনি তবু বললেন, বসুন। জাগরি এদিক ওদিক দেখে একটা টুল টেনে এনে বসল। আমি একটা মিসিং ডায়ারি করতে এসেছি। সেকেন্ড অফিসারের বুকে নাম লেখা, অভিষেক ব্যানার্জি। তিনি বললেন, মিসিং ? কে মিসিং? জাগরি বলল, আমার ফাদার ইন ল’, শ্রী মাখন লাল শাসমল। অফিসার বললেন, তা তিনি মিসিং, সেটা জানা গেল কী করে ? জাগরি অবাক হয়ে বলল, তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাই। ব্যানার্জি কেটে কেটে বললেন, খুঁজে – পাওয়া – যাচ্ছেনা। তা কী ভাবে খোঁজা হয়েছে ? পুরোটা বলে ফেলুন, মানে, কবে থেকে পাওয়া যাচ্ছেনা, আপনারা কোথায় কোথায় খুঁজেছেন, কী ভাবে খুঁজেছেন – বলুন। ডায়ারি করব বললেই তো হয়না। আদ্যপান্ত বলতে হয়। জাগরি বলল, কি মুশকিল, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা মানে তিনি বাড়িতে নেই, বাড়ির কাছাকাছি কোথাও নেই, কোথাও তাঁকে দেখা যাচ্ছেনা – সেকেন্ড অফিসার বললেন, কবে থেকে ম্যাডাম, উঁ, কবে থেকে ? এই সব বলতে বলতে তিনি ড্রয়ারে কী সব ঘাঁটতে লাগলেন, খুব যে মন দিয়ে তার কথা শুনছেন জাগরির তা মনে হ’লনা। জাগরি বলল, আপনি প্লীজ কিছু করুন, আজ সকাল ন’টার পর থেকে তাঁকে দেখা যাচ্ছেনা। অভিষেক ব্যানার্জি বললেন, এত উতলা হবেন না, কোথাও গেছেন টেছেন। আত্মীয় স্বজনের বাড়ি ফাড়ি হবে, ঠিক সময়ে চলে আসবেন। আপনি টেনশন নেবেন না কেমন? এই কেমন শব্দটা এমন ভাবে বললেন, তাতে বোঝা গেল, এবার উঠুন।
বাসন্তী দেবী খুব সাবধানী মানুষ। আজকাল কাগজে, টিভিতে যা সব দেখাচ্ছে, দিনের বেলাতেও যা কিছু হতে পারে। উনি কোনও অপরিচিত লোককে দরজা খুলবেননা। একবার কিচেনের চিমনি পরিষ্কার করার একটা লোক এসেছিল, উনি তাকেও ঢুকতে দেননি। কর্তা বাড়ি ফিরে রাগারাগি করতে উনি বললেন, ওরা রোববার এলেই পারে। কর্তা মাথায় হাত দিয়ে বললেন, রোববার ওদের ছুটি থাকে মনা, আমাদের মতই। তোমার এই ভয়টা একটা অবসেশনে দাঁড়িয়ে গেছে। আরে বাবা আমাদের বাড়িতে ক’লাখ টাকার সম্পত্তি থাকে, যে দিনের বেলা ডাকাত পড়বে ? আজ রোববার। কর্তা বাড়িতেই, বোধহয় বাথরুম টাথরুমে গেছে। ধপ্ ধপ্ করে দরজা বাজাচ্ছে কে? পাশে বেল আছে, দেখতে পাচ্ছেনা? ব্যাটা চিমনিওয়ালা এল নাকি ? কর্তা যে বলল রোববার ছুটি। কে ? কে বাইরে? কী চাই? আবার ধপ্ ধপ্। বাসন্তী দেবী উঠে গিয়ে দরজায় কান পাতলেন। কে? কে দরজা ধাক্কাচ্ছ ? বাইরে থেকে কে যেন বলল, রাজীব – রাজীব নেই? – কে রাজীব? কাকে চাই? এবাড়িতে রাজীব ফাজীব কেউ নেই। বাইরের আওয়াজটা বলল, ও রাজীব নেই, সঞ্জীব ? সঞ্জীব আছিস, বড় খিদে পেয়েছে রে, দুদিন কিছু খাইনি। কে ওটা বৌমা নাকি? একটু খোলনা- বাসন্তী বললেন, আ মরন, কে আমার সাতকেলে শ্বশুর এলেন রে। যাও যাও আর নাটক করতে হবেনা। বিদেয় হও। আওয়াজটা থেমে গেল।
দাসবাবু ভেতরের বারান্দায় বদ্রিকা পাখিদের দানা দিচ্ছিলেন। এঘরে এসে বললেন, কী হ’ল মনা? আবার তোমার ডাকাতবাবু এসেছিলেন নাকি? বাসন্তী মুখ নেড়ে বললেন, ইয়ার্কি মেরোনা, ডাকাতই তো। কত ঢং করল, বলে রাজীব আছে? সন্দীপ আছে ? ও বৌমা দোর খোলো, খিদে পেয়েছে – দাসবাবু বললেন সেকী ? রাজীব, সন্দীপ ? সন্দীপ হতে পারেনা, নিশ্চয়ই সঞ্জীব। কিন্তু এই সব নাম বলে ডাকাত দরজা ধাক্কাবে? একবার খুলেও দেখলেনা? দেখি সরতো ? বাসন্তী বাধা দেয়ার চেষ্টা করলেন। তোমার বেশি বেশি সাহস বেরোবে একদিন। ভাল কথা বলছি যেয়োনা – দাস বাবু সটান দরজা খুললেন। কেউ কোত্থাও নেই। ওপাশ থেকে মিসেস তামাং উঁকি মারছেন। - মিস্টার দাস ? একটা বুঢ়া মতোন লোক এসেছিল নাকি আপনাদের ঘরে? কী সব বোলছিল, ভুখা আছে নাকি, রাজীব কহাঁ হ্যায় এই সব পুছছিল। পাগল হ্যায় কেয়া? দাসবাবু বললেন, আপনাদের বাড়িতেও নক্ করেছিল লোকটা ? আপনি দেখেছেন তাকে ? মিসেস তামাং বললেন, হাঁ দেখলম তো বুঢ়া আদমি, ওল্ড ম্যান। মগর স্ট্রং আছে, ওয়েল ড্রেসড অলসো। সুধু বোলছিল, ভুখ লেগেছে। আমি কিছু খানা দেব ভাবছিলাম, কিন্তু রাজীব রাজীব করে ইধর উধর দেখে চোলে গেল।
অভিষেক ব্যানার্জি বললেন, ম্যাডাম, আপনি এবার আসুন তাহলে। দেখুন হয়তো বাড়ি গিয়ে দেখলেন তিনি বসে আছেন। অত কথায় কথায় ডায়ারি করলে চলে, আমাদের দিকটাও একটু ভাবুন। জাগরি বলল, কিন্তু উনি তো সকাল থেকেই হারিয়ে গেছেন। আপনাদের হেল্প না হলে – ব্যানার্জি বললেন, আঃ হারিয়ে গেছেন বলবেন না, কোথাও গেছেন হয়ত। নিজে চলাফেরা করতে পারেন? বয়স কত? জাগরি বলল, বয়স সেভেনটি সেভেন। কিন্তু স্ট্রং ছিলেন, এয়ার ফোর্সে ছিলেন, ডিসিপ্লিন্ড লাইফ লীড করতেন। অফিসার বললেন, বাঃ, তবে? আপনি তো ভয় পাইয়ে দিয়েছিলান মশাই। অ্যাঁ, বলে কিনা হারিয়ে গেছে। ঠিক আছে, আপনি এবার – জাগরি বলল, দেখুন আপনি ব্যাপারটা বুঝছেন না। উনি সব কিছু ভুলে যান, সেইজন্যেই – অভিষেক ব্যানার্জি বললেন, আরে ভুলে তো আমরা সবাই যাই। উনি সাতাত্তর না কত বললেন, আর আমার তো মোটে সাঁইতিরিশ। আপনার সঙ্গে বক বক করতে করতে, কাল যে কোর্টে অ্যাপিয়ারেন্স আছে তাই ভুলে যাচ্ছিলাম। কাগজ তৈরী করতে হবে, পড়া মুখস্ত করতে হবে, কত্ত কাজ, আচ্ছা ম্যাডাম, বাই – জাগরি দেখল, এরা কোনও কথাই শুনবেনা। পেছন ফিরতেই কানে এল, - দেখগে বুড়ো পালিয়েই গেছে হয়তো, যা সব বৌমা আজকাল – জাগরি ধাঁ করে ঘুরল, হোয়ট ডিড ইউ সে ?
ব্যানার্জির পাশের টেবিলে একটা খেঁকুরে মার্কা হাফবুড়ো, পান খাচ্ছিল। ভুরুটা অনেকখানি তুলে বলল, ওরিয়ে বাওয়া, অত চট করে ঘুরবেন না, ম্যাডাম, বুকের মধ্যে ধড়াস ধড়াস করে। তিনোমূল না সিপিয়েম ? জাগরি বলল, সিপিএম তৃণমূল কিছুই যে নই তা তো ভাল করেই জানেন। তা হলে তো দৌড়োদৌড়ি পড়ে যেত এতক্ষণে। একজন অসুস্থ মানুষ বিপদে পড়েছেন, আর আপনারা – কেঁদে ফেলল জাগরি। ব্যানার্জি একজন মহিলা কনস্টেবলের দিকে তাকিয়ে বললেন, ও বাণীদি, আপনার কেস। যান সামলে নিয়ে যান – জাগরি রুমাল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বলল, নিয়ে কাউকে যেতে হবেনা। আমি দেখছি, চেনাশোনা লোকজন আছে লালবাজারে। লেটস সী হোয়ট ক্যান বি ডান। ব্যানার্জি বললেন, দেখুন ম্যাডাম, আপনি খামোখা এক্সাইটেড হচ্ছেন। মিসিং ডায়ারি করার কতকগুলো নিয়ম আছে। একটা কনসিডারেব্ল টাইম অবধি না দেখে কিছু বলা যায়না। জাগরি বলল, কনসিডারেব্ল টাইমটা কত? ক’বছর? ব্যানার্জি বললেন, আপনি সেই রেগেই আছেন। মিনিমাম চব্বিশ ঘন্টা তো কাটতে দিন। বেশির ভাগ সময়ে দেখা যায়, যাঁরা হারিয়ে গেছেন ভাবা হচ্ছিল, তাঁরা নিজেরাই ফিরে আসেন। ওনার কাছে মোবাইল নেই? জাগরি বলল, আপনি ব্যাপারটা বুঝতে পারছেন না। ভুলে যান মানে এমনি ভুলে যান না। উনি ডিমেনশিয়ার রোগী। ভুলে যাওয়াটাই ওঁর অসুখ। মোবাইল দিলেও নম্বর বের করে রিং করার মত ওঁর ক্ষমতা নেই।
তিন চারটে সিঁড়ি লাফিয়ে লাফিয়ে সুনু ঢুকল ঘরে। কী ব্যাপার ভাবি, বাবাকে পাওয়া যাচ্ছেনা মানে? তুমি আগে ফোন করলে না কেন। জাগরি বলল, আগে তো আমিও খবর পাইনি। আমি তো অফিস থেকে ফিরেই দেখছি। সেই সকাল থেকেই নাকি নেই। সুকুমার আমাদের কাউকে না জানিয়ে নিজেই পাকামি করে খোঁজাখুঁজি করেছে। সুনু বলল, হোয়্যার ইজ দ্যাট বাস্টার্ড সুকুমার ? ওর চামড়া গরম করে দেব আমি। জাগরি বলল, আঃ মাথা গরম কোরনা। বেচারা ঘুমিয়ে পড়েছিল। সেই ফাঁকে বাবা বেরিয়ে গেছেন। পুরো বাইরে যাবার জামাকাপড় পরেছেন, পাপ্পুর দোকান থেকে সিগারেটও কিনেছেন শোনা যাচ্ছে। তোমার দাদা এখনও ফিরলনা কেন, তিন তিন বার ফোন করেছি। সুকুমার নিজেই বেশ কিছুক্ষন খুঁজে তারপর ভয়ে কোথাও পালিয়ে গেছে। যে এজেন্সি থেকে ওকে দিয়েছিল, তারাও ওর হদিশ দিতে পারছেনা।
অভিষেক ব্যানার্জির আজ অন্য চেহারা। বললেন, বসুন স্যার, আপনিই তো আর কে শাসমল স্যার? রাজীব বলল হ্যাঁ। আমার স্ত্রী পরশু এসেছিলেন, জানেন বোধহয়। আপনারা ডায়ারি নিতে রিফিউস করেছেন। আজ কি দয়া করে নেবেন? ব্যানার্জি বলল, না স্যার, রিফিউস কেন করব, আমি তো ওনাকে বুঝিয়ে বললাম, মানে, উনি অবশ্য বলেছিলেন, লালবাজারে – মানে, কোনও প্রয়োজন ছিলনা স্যার। আমরা তো পরের দিনই ডায়ারি নিতাম স্যার। আপনি কাইন্ডলি সিদ্দিকি স্যারকে – রাজীব বলল, ঠিক আছে, ঠিক আছে, চট করে লিখে নিন, নাম মাখন লাল শাসমল, বয়স সাতাত্তর। হাইট পাঁচ এগারো। ওয়েল বিল্ট। হারিয়ে যাবার সময় গাঢ় সবুজ রঙের পুরো হাতা সার্ট আর ফন কালারের কর্ডুরয়ের ট্রাউসার্স পরে ছিলেন। অল্প কথা বলেন, কথা বলার সময়ে সামান্য হাসেন। এনি থিং মোর? ব্যানার্জি বলল, না স্যার আমরা কিন্তু আপনি আসার আগেই কাজ শুরু করে দিয়েছি। আপনি কাইন্ডলি সিদ্দিকি স্যারকে -
মইদুলের সাইকেল সারাইয়ের দোকানের সামনে লোকটা পড়েছে। উপুড় হয়ে পড়ে আছে, হাত দুটো দুটো দু দিকে ছড়ানো। মইদুল বলল, সকাল সকাল কি কেলো বল দেখি। পড়ার আর জায়গা পেলনা। ও দাদু, উঠ্বে পড়েন, চা খাবেন নাকি, গাছতলায় আসেন। সাদেক বলল, এ মাল এখন লড়বেনা। আমি ডিউটি যাওয়ার সময়ে ক্যামাক ইস্টিটে এক দিন দেখি এক মাল এরম ভিরমি খেয়ে পড়ল। লোকজন কত ডাকে, সাড়া করেনা। এক ভদ্দোমইলা দুধ ফুধ নিয়ে এসে কত দরদ দেখাল, কোনও সাড়া নেই। তারপর একজন এসে পঞ্চাস টাকার লোট সামনে ধরতেই হাত বাড়িয়েছে। আসলে লোকটা ওর দলের লোক। ওর দেখাদেখি এ দস টাকা দেয় তো সে বিস টাকা। আমি মোটামুটি হিসেব করলাম, পেরায় সাড়ে তিনসো লিয়ে গেল সালা। একে চায়ের কথা বল, সুনবেনা, দুধের কথা বল, সুনবেনা, পঞ্চাস টাকার একটা লোট ধর মুখের সামনে, তারপর দেখবি খেলা।
মইদুল বলল, ধুস শালা, তুই পঞ্চাশ বললি, আমি তো একশো টাকার লোট লিয়ে লেড়েচেড়ে শেষে মুখে বুলিয়েও দিলাম। সালা লড়েও না, চড়েও না। কেসটা বিলা মনে হচ্ছেরে। বুড়োটা খরচা হয়ে গেল নাকিরে, অ্যাঁ ? ওই তারিনীর মা-ই মাল হড়কে দিল। অতখানি পানি একসঙ্গে খাওয়াতে আছে? ওকিরে, ওদিকে পুলিসের গাড়ি রে – সিগগির পাতলা হ’। কেস বিলা। পুলিশের গাড়িটা গলির মুখে ঘচ্ করে ব্রেক করল। একজন বাচ্চামত এএসআই নেমে দরজা খুলে ধরল, আসুন ম্যাডাম, সবুজ শার্ট বলছিলেন না ? আপনাদের ডায়ারির পর দুদিন ধরে পুরো কোলকাতা চষে ফেলা হচ্ছে। একটা সোর্স বলল, এখানে খবর আছে। চিন্তা করবেননা। পেলে এক্ষুনি হসপিটালে – তারিণীর মা বলল, আ মোলো, ঐ তো সবুজ জামা। ও তো দুঘন্টা ধরে ওখানেই পড়ে আছে। এতক্ষণে বেঁচে কি আর আছে? পুলিশ অফিসার ধমকে বলল, আপনারা কী করছিলেন? থানায় খবর দেননি কেন? তারিনীর মা বলল, আমি কী করে জানব, আমি তো বাজার থেকে এসে মাত্তর সবে শুনলাম। পাড়ায় তো বড়রা কেউ ছিলনি। বাচ্চারা বলল যে ওখেনে – আর কি হবে বাবা, যার গেল তার গেল। গোবিন্দ গোবিন্দ –
( এটি কাল্পনিক গল্প নয়, শুধু সামান্য পরিবর্তিত। ২০১৩ সালের জুন মাসের ৪ তারিখে, দিল্লীর সঙ্গম বিহার অঞ্চলে মনোহর লাল শর্মা নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিমান বাহিনীর অফিসারকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। ৩০শে মে তিনি তাঁর বসন্ত্ কুঞ্জের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান, আর ফিরতে পারেন নি।)
০২।০৭।২০১৩
থানায় সেকেন্ড অফিসারের সামনে চেয়ারটা একদিকে কাত হওয়া। তিনি তবু বললেন, বসুন। জাগরি এদিক ওদিক দেখে একটা টুল টেনে এনে বসল। আমি একটা মিসিং ডায়ারি করতে এসেছি। সেকেন্ড অফিসারের বুকে নাম লেখা, অভিষেক ব্যানার্জি। তিনি বললেন, মিসিং ? কে মিসিং? জাগরি বলল, আমার ফাদার ইন ল’, শ্রী মাখন লাল শাসমল। অফিসার বললেন, তা তিনি মিসিং, সেটা জানা গেল কী করে ? জাগরি অবাক হয়ে বলল, তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাই। ব্যানার্জি কেটে কেটে বললেন, খুঁজে – পাওয়া – যাচ্ছেনা। তা কী ভাবে খোঁজা হয়েছে ? পুরোটা বলে ফেলুন, মানে, কবে থেকে পাওয়া যাচ্ছেনা, আপনারা কোথায় কোথায় খুঁজেছেন, কী ভাবে খুঁজেছেন – বলুন। ডায়ারি করব বললেই তো হয়না। আদ্যপান্ত বলতে হয়। জাগরি বলল, কি মুশকিল, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা মানে তিনি বাড়িতে নেই, বাড়ির কাছাকাছি কোথাও নেই, কোথাও তাঁকে দেখা যাচ্ছেনা – সেকেন্ড অফিসার বললেন, কবে থেকে ম্যাডাম, উঁ, কবে থেকে ? এই সব বলতে বলতে তিনি ড্রয়ারে কী সব ঘাঁটতে লাগলেন, খুব যে মন দিয়ে তার কথা শুনছেন জাগরির তা মনে হ’লনা। জাগরি বলল, আপনি প্লীজ কিছু করুন, আজ সকাল ন’টার পর থেকে তাঁকে দেখা যাচ্ছেনা। অভিষেক ব্যানার্জি বললেন, এত উতলা হবেন না, কোথাও গেছেন টেছেন। আত্মীয় স্বজনের বাড়ি ফাড়ি হবে, ঠিক সময়ে চলে আসবেন। আপনি টেনশন নেবেন না কেমন? এই কেমন শব্দটা এমন ভাবে বললেন, তাতে বোঝা গেল, এবার উঠুন।
বাসন্তী দেবী খুব সাবধানী মানুষ। আজকাল কাগজে, টিভিতে যা সব দেখাচ্ছে, দিনের বেলাতেও যা কিছু হতে পারে। উনি কোনও অপরিচিত লোককে দরজা খুলবেননা। একবার কিচেনের চিমনি পরিষ্কার করার একটা লোক এসেছিল, উনি তাকেও ঢুকতে দেননি। কর্তা বাড়ি ফিরে রাগারাগি করতে উনি বললেন, ওরা রোববার এলেই পারে। কর্তা মাথায় হাত দিয়ে বললেন, রোববার ওদের ছুটি থাকে মনা, আমাদের মতই। তোমার এই ভয়টা একটা অবসেশনে দাঁড়িয়ে গেছে। আরে বাবা আমাদের বাড়িতে ক’লাখ টাকার সম্পত্তি থাকে, যে দিনের বেলা ডাকাত পড়বে ? আজ রোববার। কর্তা বাড়িতেই, বোধহয় বাথরুম টাথরুমে গেছে। ধপ্ ধপ্ করে দরজা বাজাচ্ছে কে? পাশে বেল আছে, দেখতে পাচ্ছেনা? ব্যাটা চিমনিওয়ালা এল নাকি ? কর্তা যে বলল রোববার ছুটি। কে ? কে বাইরে? কী চাই? আবার ধপ্ ধপ্। বাসন্তী দেবী উঠে গিয়ে দরজায় কান পাতলেন। কে? কে দরজা ধাক্কাচ্ছ ? বাইরে থেকে কে যেন বলল, রাজীব – রাজীব নেই? – কে রাজীব? কাকে চাই? এবাড়িতে রাজীব ফাজীব কেউ নেই। বাইরের আওয়াজটা বলল, ও রাজীব নেই, সঞ্জীব ? সঞ্জীব আছিস, বড় খিদে পেয়েছে রে, দুদিন কিছু খাইনি। কে ওটা বৌমা নাকি? একটু খোলনা- বাসন্তী বললেন, আ মরন, কে আমার সাতকেলে শ্বশুর এলেন রে। যাও যাও আর নাটক করতে হবেনা। বিদেয় হও। আওয়াজটা থেমে গেল।
দাসবাবু ভেতরের বারান্দায় বদ্রিকা পাখিদের দানা দিচ্ছিলেন। এঘরে এসে বললেন, কী হ’ল মনা? আবার তোমার ডাকাতবাবু এসেছিলেন নাকি? বাসন্তী মুখ নেড়ে বললেন, ইয়ার্কি মেরোনা, ডাকাতই তো। কত ঢং করল, বলে রাজীব আছে? সন্দীপ আছে ? ও বৌমা দোর খোলো, খিদে পেয়েছে – দাসবাবু বললেন সেকী ? রাজীব, সন্দীপ ? সন্দীপ হতে পারেনা, নিশ্চয়ই সঞ্জীব। কিন্তু এই সব নাম বলে ডাকাত দরজা ধাক্কাবে? একবার খুলেও দেখলেনা? দেখি সরতো ? বাসন্তী বাধা দেয়ার চেষ্টা করলেন। তোমার বেশি বেশি সাহস বেরোবে একদিন। ভাল কথা বলছি যেয়োনা – দাস বাবু সটান দরজা খুললেন। কেউ কোত্থাও নেই। ওপাশ থেকে মিসেস তামাং উঁকি মারছেন। - মিস্টার দাস ? একটা বুঢ়া মতোন লোক এসেছিল নাকি আপনাদের ঘরে? কী সব বোলছিল, ভুখা আছে নাকি, রাজীব কহাঁ হ্যায় এই সব পুছছিল। পাগল হ্যায় কেয়া? দাসবাবু বললেন, আপনাদের বাড়িতেও নক্ করেছিল লোকটা ? আপনি দেখেছেন তাকে ? মিসেস তামাং বললেন, হাঁ দেখলম তো বুঢ়া আদমি, ওল্ড ম্যান। মগর স্ট্রং আছে, ওয়েল ড্রেসড অলসো। সুধু বোলছিল, ভুখ লেগেছে। আমি কিছু খানা দেব ভাবছিলাম, কিন্তু রাজীব রাজীব করে ইধর উধর দেখে চোলে গেল।
অভিষেক ব্যানার্জি বললেন, ম্যাডাম, আপনি এবার আসুন তাহলে। দেখুন হয়তো বাড়ি গিয়ে দেখলেন তিনি বসে আছেন। অত কথায় কথায় ডায়ারি করলে চলে, আমাদের দিকটাও একটু ভাবুন। জাগরি বলল, কিন্তু উনি তো সকাল থেকেই হারিয়ে গেছেন। আপনাদের হেল্প না হলে – ব্যানার্জি বললেন, আঃ হারিয়ে গেছেন বলবেন না, কোথাও গেছেন হয়ত। নিজে চলাফেরা করতে পারেন? বয়স কত? জাগরি বলল, বয়স সেভেনটি সেভেন। কিন্তু স্ট্রং ছিলেন, এয়ার ফোর্সে ছিলেন, ডিসিপ্লিন্ড লাইফ লীড করতেন। অফিসার বললেন, বাঃ, তবে? আপনি তো ভয় পাইয়ে দিয়েছিলান মশাই। অ্যাঁ, বলে কিনা হারিয়ে গেছে। ঠিক আছে, আপনি এবার – জাগরি বলল, দেখুন আপনি ব্যাপারটা বুঝছেন না। উনি সব কিছু ভুলে যান, সেইজন্যেই – অভিষেক ব্যানার্জি বললেন, আরে ভুলে তো আমরা সবাই যাই। উনি সাতাত্তর না কত বললেন, আর আমার তো মোটে সাঁইতিরিশ। আপনার সঙ্গে বক বক করতে করতে, কাল যে কোর্টে অ্যাপিয়ারেন্স আছে তাই ভুলে যাচ্ছিলাম। কাগজ তৈরী করতে হবে, পড়া মুখস্ত করতে হবে, কত্ত কাজ, আচ্ছা ম্যাডাম, বাই – জাগরি দেখল, এরা কোনও কথাই শুনবেনা। পেছন ফিরতেই কানে এল, - দেখগে বুড়ো পালিয়েই গেছে হয়তো, যা সব বৌমা আজকাল – জাগরি ধাঁ করে ঘুরল, হোয়ট ডিড ইউ সে ?
ব্যানার্জির পাশের টেবিলে একটা খেঁকুরে মার্কা হাফবুড়ো, পান খাচ্ছিল। ভুরুটা অনেকখানি তুলে বলল, ওরিয়ে বাওয়া, অত চট করে ঘুরবেন না, ম্যাডাম, বুকের মধ্যে ধড়াস ধড়াস করে। তিনোমূল না সিপিয়েম ? জাগরি বলল, সিপিএম তৃণমূল কিছুই যে নই তা তো ভাল করেই জানেন। তা হলে তো দৌড়োদৌড়ি পড়ে যেত এতক্ষণে। একজন অসুস্থ মানুষ বিপদে পড়েছেন, আর আপনারা – কেঁদে ফেলল জাগরি। ব্যানার্জি একজন মহিলা কনস্টেবলের দিকে তাকিয়ে বললেন, ও বাণীদি, আপনার কেস। যান সামলে নিয়ে যান – জাগরি রুমাল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বলল, নিয়ে কাউকে যেতে হবেনা। আমি দেখছি, চেনাশোনা লোকজন আছে লালবাজারে। লেটস সী হোয়ট ক্যান বি ডান। ব্যানার্জি বললেন, দেখুন ম্যাডাম, আপনি খামোখা এক্সাইটেড হচ্ছেন। মিসিং ডায়ারি করার কতকগুলো নিয়ম আছে। একটা কনসিডারেব্ল টাইম অবধি না দেখে কিছু বলা যায়না। জাগরি বলল, কনসিডারেব্ল টাইমটা কত? ক’বছর? ব্যানার্জি বললেন, আপনি সেই রেগেই আছেন। মিনিমাম চব্বিশ ঘন্টা তো কাটতে দিন। বেশির ভাগ সময়ে দেখা যায়, যাঁরা হারিয়ে গেছেন ভাবা হচ্ছিল, তাঁরা নিজেরাই ফিরে আসেন। ওনার কাছে মোবাইল নেই? জাগরি বলল, আপনি ব্যাপারটা বুঝতে পারছেন না। ভুলে যান মানে এমনি ভুলে যান না। উনি ডিমেনশিয়ার রোগী। ভুলে যাওয়াটাই ওঁর অসুখ। মোবাইল দিলেও নম্বর বের করে রিং করার মত ওঁর ক্ষমতা নেই।
তিন চারটে সিঁড়ি লাফিয়ে লাফিয়ে সুনু ঢুকল ঘরে। কী ব্যাপার ভাবি, বাবাকে পাওয়া যাচ্ছেনা মানে? তুমি আগে ফোন করলে না কেন। জাগরি বলল, আগে তো আমিও খবর পাইনি। আমি তো অফিস থেকে ফিরেই দেখছি। সেই সকাল থেকেই নাকি নেই। সুকুমার আমাদের কাউকে না জানিয়ে নিজেই পাকামি করে খোঁজাখুঁজি করেছে। সুনু বলল, হোয়্যার ইজ দ্যাট বাস্টার্ড সুকুমার ? ওর চামড়া গরম করে দেব আমি। জাগরি বলল, আঃ মাথা গরম কোরনা। বেচারা ঘুমিয়ে পড়েছিল। সেই ফাঁকে বাবা বেরিয়ে গেছেন। পুরো বাইরে যাবার জামাকাপড় পরেছেন, পাপ্পুর দোকান থেকে সিগারেটও কিনেছেন শোনা যাচ্ছে। তোমার দাদা এখনও ফিরলনা কেন, তিন তিন বার ফোন করেছি। সুকুমার নিজেই বেশ কিছুক্ষন খুঁজে তারপর ভয়ে কোথাও পালিয়ে গেছে। যে এজেন্সি থেকে ওকে দিয়েছিল, তারাও ওর হদিশ দিতে পারছেনা।
অভিষেক ব্যানার্জির আজ অন্য চেহারা। বললেন, বসুন স্যার, আপনিই তো আর কে শাসমল স্যার? রাজীব বলল হ্যাঁ। আমার স্ত্রী পরশু এসেছিলেন, জানেন বোধহয়। আপনারা ডায়ারি নিতে রিফিউস করেছেন। আজ কি দয়া করে নেবেন? ব্যানার্জি বলল, না স্যার, রিফিউস কেন করব, আমি তো ওনাকে বুঝিয়ে বললাম, মানে, উনি অবশ্য বলেছিলেন, লালবাজারে – মানে, কোনও প্রয়োজন ছিলনা স্যার। আমরা তো পরের দিনই ডায়ারি নিতাম স্যার। আপনি কাইন্ডলি সিদ্দিকি স্যারকে – রাজীব বলল, ঠিক আছে, ঠিক আছে, চট করে লিখে নিন, নাম মাখন লাল শাসমল, বয়স সাতাত্তর। হাইট পাঁচ এগারো। ওয়েল বিল্ট। হারিয়ে যাবার সময় গাঢ় সবুজ রঙের পুরো হাতা সার্ট আর ফন কালারের কর্ডুরয়ের ট্রাউসার্স পরে ছিলেন। অল্প কথা বলেন, কথা বলার সময়ে সামান্য হাসেন। এনি থিং মোর? ব্যানার্জি বলল, না স্যার আমরা কিন্তু আপনি আসার আগেই কাজ শুরু করে দিয়েছি। আপনি কাইন্ডলি সিদ্দিকি স্যারকে -
মইদুলের সাইকেল সারাইয়ের দোকানের সামনে লোকটা পড়েছে। উপুড় হয়ে পড়ে আছে, হাত দুটো দুটো দু দিকে ছড়ানো। মইদুল বলল, সকাল সকাল কি কেলো বল দেখি। পড়ার আর জায়গা পেলনা। ও দাদু, উঠ্বে পড়েন, চা খাবেন নাকি, গাছতলায় আসেন। সাদেক বলল, এ মাল এখন লড়বেনা। আমি ডিউটি যাওয়ার সময়ে ক্যামাক ইস্টিটে এক দিন দেখি এক মাল এরম ভিরমি খেয়ে পড়ল। লোকজন কত ডাকে, সাড়া করেনা। এক ভদ্দোমইলা দুধ ফুধ নিয়ে এসে কত দরদ দেখাল, কোনও সাড়া নেই। তারপর একজন এসে পঞ্চাস টাকার লোট সামনে ধরতেই হাত বাড়িয়েছে। আসলে লোকটা ওর দলের লোক। ওর দেখাদেখি এ দস টাকা দেয় তো সে বিস টাকা। আমি মোটামুটি হিসেব করলাম, পেরায় সাড়ে তিনসো লিয়ে গেল সালা। একে চায়ের কথা বল, সুনবেনা, দুধের কথা বল, সুনবেনা, পঞ্চাস টাকার একটা লোট ধর মুখের সামনে, তারপর দেখবি খেলা।
মইদুল বলল, ধুস শালা, তুই পঞ্চাশ বললি, আমি তো একশো টাকার লোট লিয়ে লেড়েচেড়ে শেষে মুখে বুলিয়েও দিলাম। সালা লড়েও না, চড়েও না। কেসটা বিলা মনে হচ্ছেরে। বুড়োটা খরচা হয়ে গেল নাকিরে, অ্যাঁ ? ওই তারিনীর মা-ই মাল হড়কে দিল। অতখানি পানি একসঙ্গে খাওয়াতে আছে? ওকিরে, ওদিকে পুলিসের গাড়ি রে – সিগগির পাতলা হ’। কেস বিলা। পুলিশের গাড়িটা গলির মুখে ঘচ্ করে ব্রেক করল। একজন বাচ্চামত এএসআই নেমে দরজা খুলে ধরল, আসুন ম্যাডাম, সবুজ শার্ট বলছিলেন না ? আপনাদের ডায়ারির পর দুদিন ধরে পুরো কোলকাতা চষে ফেলা হচ্ছে। একটা সোর্স বলল, এখানে খবর আছে। চিন্তা করবেননা। পেলে এক্ষুনি হসপিটালে – তারিণীর মা বলল, আ মোলো, ঐ তো সবুজ জামা। ও তো দুঘন্টা ধরে ওখানেই পড়ে আছে। এতক্ষণে বেঁচে কি আর আছে? পুলিশ অফিসার ধমকে বলল, আপনারা কী করছিলেন? থানায় খবর দেননি কেন? তারিনীর মা বলল, আমি কী করে জানব, আমি তো বাজার থেকে এসে মাত্তর সবে শুনলাম। পাড়ায় তো বড়রা কেউ ছিলনি। বাচ্চারা বলল যে ওখেনে – আর কি হবে বাবা, যার গেল তার গেল। গোবিন্দ গোবিন্দ –
( এটি কাল্পনিক গল্প নয়, শুধু সামান্য পরিবর্তিত। ২০১৩ সালের জুন মাসের ৪ তারিখে, দিল্লীর সঙ্গম বিহার অঞ্চলে মনোহর লাল শর্মা নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিমান বাহিনীর অফিসারকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। ৩০শে মে তিনি তাঁর বসন্ত্ কুঞ্জের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান, আর ফিরতে পারেন নি।)
০২।০৭।২০১৩
লেখক পরিচিতি
বয়স : ৬৫ বছর
প্রকাশিত বই : ‘ধানাই পানাই’ ( প্রকাশ, জানুয়ারি, ২০১৩)
লেখক পরিচিতি : প্রধাণতঃ নাট্যকার ও নির্দেশক। এখন শারীরিক কারণে
নাটকের ধকল সহ্য হয়না বলে গল্প লিখছেন।
বয়স : ৬৫ বছর
প্রকাশিত বই : ‘ধানাই পানাই’ ( প্রকাশ, জানুয়ারি, ২০১৩)
লেখক পরিচিতি : প্রধাণতঃ নাট্যকার ও নির্দেশক। এখন শারীরিক কারণে
নাটকের ধকল সহ্য হয়না বলে গল্প লিখছেন।
1 মন্তব্যসমূহ
ভালো লাগল। সংলাপবহুল হলেও বাস্তব কথোপকথন, নাটকের মতো।
উত্তরমুছুনশ্রাবণী দাশগুপ্ত।