মৌসুমী কাদের
বন্ধু, তোমার হাতের উপর হাত রাখলেই আমি টের পাই তোমার বাজারে অনেক দেনা,
ছেলেটা উচ্ছন্নে গেছে, মেয়ে রাত করে বাড়ি ফেরে, আজ যা-বলার আছে তুমি আমাকেই
বলো, স্ত্রীর মুখরতার কথা বলো, সহকর্মীদের শটতার কথা বলো, রাতে ঘুম হয় না সেই
কথা বলো, আর যদি কাঁদতেই হয় তবে এই কাঁধে মাথা রেখে কাঁদো, বন্ধু। - সলমা-জরির কাজ -৭
প্রশ্ন করতেই পারেন, গল্পপাঠে তাকে নিয়ে কথা হচ্ছে কেন। তিনি তো কেবল কবিতা লিখেছিলেন। আসলেই কি একথা সত্যি? তিনি কি কেবলই কবিতা লিখেছিলেন? নাকি অনুগল্পের ঢঙে গদ্য লিখেছেন । তার লেখার ঠিক ঠিক ব্যাখ্যা করার সাহস আমার নেই। বরং বলি তার লেখায় ঘোর লাগে, স্বপ্নেরা ঝুলে থাকে চোখের পাপড়িতে। কোথায় যেন এক প্রবল বোধ তাড়িয়ে বেড়ায়, ঠিক ঠাক বলা যায়না। নির্লিপ্ত ও নিরাসক্তভাবে বিষয় বা পরিবেশের যথাযথ বর্ণনা তাকে বিশিষ্ট করে অনেকের চাইতে । তাই তিনি গল্প, কবিতা যাই লিখুন না কেন, প্রিয় কবি বা লেখক হয়ে ওঠেন সহজেই।
১৯৯৪ সালে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন; ‘আমার লেখায় আপনি দেখবেন যে, কন্টেন্ট সচেতনতার চেয়ে
আমি ফর্মকেই প্রাধান্য দিতে চেয়েছি। যতক্ষণ না পর্যন্ত একটা লেখাকে আমি ভিসুয়ালাইজ করতে পারি যে পাতায় কেমন দেখাবে,ছাপায় কেমন দেখাবে,ততক্ষণ পর্যন্ত আমার নিজের পক্ষে লেখা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।’
একারনেই হয়ত বিষয়ের মাপকাঠিতে, শিরোনামের ঘোরে, কাঠামোর টুকরো ফালিতে বা কবিতার ফর্মেটে ফেলা যায়না তার কবিতাগুলোকে। অথবা ছন্দ দিয়ে মাপতে গেলে হোচট খেতে হয়। কাকে মাপবো? কি দিয়ে মাপবো? যে নিজেই নিজেকে মাপেননা। বিষয়ে সহজ, ব্যক্তিগত, অথচ কত বিস্তৃত তার বিস্তার; বাস্তবতা এবং পরাবাস্তবতায় হুলুস্থুল কান্ড বাঁধিয়ে দেন তিনি, পথিক হয়ে হাটেন, সটান হয়ে শুয়ে পড়েন পাগলা কুকু্রের সাথে। আবার সাঁতার কাটতে কাটতে ভেসে যান নদীর জলে। মাঝে মাঝে মনে হয় উনি কি ডায়রী লিখছেন? নাকি ছবি আঁকছেন? তার এই অন্যরকম বিশেষত্বই বোধহয় আশি ও নব্বই দশকের বাংলা কবি- সাহিত্যিকদের ভেতর বিশেষ প্রভাব ফেলেছিল।
উৎপলকুমার বসু জীবনানন্দ পরবর্তী মধ্য পঞ্চাশের কবি। খুব সিরিয়াসলি কবি হবেন বলে ভেবেছিলেন বা লিখতে বসে গেছিলেন সেরকমটা শোনা যায়না। সখের বশে লিখতে বসে পাকা লেখক হয়ে উঠেছিলেন। বিলেতে বহুদিন কাটিয়েছেন। ইউরোপীয় আধুনিক চিন্তা, কবিতা,চিত্রকলা,দর্শন, তাকে প্রভাবিত করেছিলতো বটেই। হয়ত একারনেই পুরোটা খুলে বলেন না। একটু বলে রেখে দেন। বোদ্ধা পাঠক বাকিটা বুঝে নেবেন। পরাবাস্তবতা থেকে বাস্তবকে বর্ননা করেছেন তিনি নিজস্ব স্টাইলে। সাধারন টুকটাক দৈনন্দিন চিত্রের শব্দহীন বসে থাকাই তার কবিতা। যা দীর্ঘায়িত হতে পারত কোন আস্ত উপন্যাসে, অথবা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচিত্রে। প্রকৃতির বর্ননায় দেশ, পরদেশ, অন্যদেশ ছাপিয়ে চেনাপথগুলোই যেন আপন হয়ে উঠেছিল তাঁর লেখায়। যেখানে শব্দ বা বাক্যেগুলোয় লেপ্টে থাকে সুগন্ধি আঁতর। তার তীব্র ঘ্রাণ কেউ নিতে পারে, কেউ পারেনা।
তিনি যখন বলেন--
কখন মোরগ ডাকবে – আমি ঘরে ফিরে যাবো ।
কান্তারে সমস্ত রাত শস্য-পাহারার ছলে জেগে আছি
এবং অলৌকিক জ্যোৎস্নায় এই রণভূমি ফসলে,সংগ্রামে,গানে
ভরে গেছে – বুঝি মনে হলো সুদূর আলোর পথে তোমাদের অপস্রিয়মান ছায়া
আবার উঠেছে জেগে। দীপ্ত নখর মেলে, হা হা শব্দে
রক্তের তৃষ্ণায় যারা উড়ছ – বুঝি ভেবেছ সহসা
প্রান্তরে একাকী আমি বধ্য আছি। বুঝি জেনেছ গোপনে
এ-কাহিনী সকালের রৌদ্রের পালক দিয়ে ঢাকা যাবে।-গুপ্তচর
ব্যাপক চিত্রকল্পে ভেসে যাই আমরা; অপেক্ষা করি কখন মোরগ ডাকবে? এই অবস্থান ও বোধ, অলৈকিক জোৎস্নায় জাগিয়ে রাখে, ধূপছায়া বাষ্পজল চিরচেনা অস্তিত্বে বাঁচায়। এত সাবলীলভাবে সময়কে তুলে ধরা, যেন তার চির স্বভাব।
আবার যখন লেখেন--
শ্বাসকষ্ট উঠলেই বুঝতে পারি ফুলডুঙরি পাহাড় আর বেশি দূরে নয়
নইলে এমন হাঁপাচ্ছি কেন? কেন ওসুধে সারে না?
ঐ পাহাড়ের মাথায় উঠলে এ-বছর কী দেখব কে জানে-
যে-পাথরে আমরা সবাই নাম লিখিয়েছিলাম সেটি হয়ত
নিচে গড়িয়ে পড়ে গেছে,
যে-জলস্রোত লাফিয়ে পার হয়েছিলাম তাকে ঘুরি
চাষজমির দিকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল-
যদি তাই হয়ে থাকে তবে আর তাকে আমি খুঁজে পাবো না,
এইসব ভাবি আর হাসপাতালের বিছানা শুকনো ডালপালায়,
ছেঁড়া কাগজে আর পরিত্যক্ত সাপের খোলসে ভরে ওঠে-
এত জঞ্জাল সরাবে কে? আমি কি সময় করে উঠতে পারবো?
আমি তো ফুলডুঙরি পাহাড়ে প্রায় পৌঁছে গেছি।
চেপারামের ঘরটা
এখান থেকে দেখা যাচ্ছে। আরেকটু পা চালিয়ে
উঠে গেলেই হয়। সলমা-জরির কাজ ১০
‘গাছে উঠে বসে থাকি। ফল খাই। ব্যক্তিমানুষের দিকে আঁটি ছুঁড়ে মারি। নিচে হাহাকার পড়ে যায়। বেশ লাগে।’ এই বোধ তাকে না পড়লে চেনা যায়না। তাই যারা গল্প ভালোবাসেন বা কবিতা পড়েন তাদের জন্যে ‘কবি উৎপলকুমার বসু’ অবশ্যপাঠ্য।
পরিচয়
উৎপলকুমার বসু কলকাতার ভবানীপুরে জন্মগ্রহণ করেন ৩ আগস্ট, ১৯৩৯ সালে। তার শৈশব কেটেছে বহরমপুর, দিনহাটায়। ১৯৬১ সালে একদল কবির সংগে হারিং আন্দোলনে মেতে থেকে তার কবিতায় নতুন মাত্রা যোগ করেন তিনি। এর ফলশ্রুতিতে ১৯৬৪ সালে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। চাকরি থেকে বরখাস্ত হন তিনি ১৯৬৪ সালে। ১৯৬৫র দিকে তিনি চলে যান লন্ডন, সেখানেই বসবাস, লেখালেখি থামিয়ে দিয়ে নিরব শিক্ষকতা। কিন্তু যে মানুষটি জন্মেছেন লিখবে বলে তাকে থামিয়ে রাখা যায় কি করে? তাই ৮০'র দিকে আবার ফিরে এলেন কলকাতায়। ফের লিখতে শুরু করলেন। ২০০৬ সালে, তার কাব্যগ্রন্থ সুখ-দুঃখের সাথীর জন্য আনন্দ পুরস্কার এবং ২০১৪ সালে তাকে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। গত ৩ অক্টোবর, ২০১৫ তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
তার জন্য আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলী।
তার লেখা
চৈত্রে রচিত কবিতা-১৯৬১,পুরী সিরিজ-১৯৬৪, আবার পুরী সিরিজ-১৯৭৮, লোচনদাস কারিগর ,-১৯৮২, খণ্ডবৈচিত্রের দিন-১৯৮৬, শ্রেষ্ঠ কবিতা-১৯৯১, সলমাজরির কাজ-১৯৯৫,পদ্যসংগ্রহ-১৯৯৬, কবিতাসংগ্রহ-১৯৯৬,কহবতীর নাচ-১৯৯৭,নাইট স্কুল-১৯৯৯, টুসু আমার চিন্তামণি-২০০০
বন্ধু, তোমার হাতের উপর হাত রাখলেই আমি টের পাই তোমার বাজারে অনেক দেনা,
ছেলেটা উচ্ছন্নে গেছে, মেয়ে রাত করে বাড়ি ফেরে, আজ যা-বলার আছে তুমি আমাকেই
বলো, স্ত্রীর মুখরতার কথা বলো, সহকর্মীদের শটতার কথা বলো, রাতে ঘুম হয় না সেই
কথা বলো, আর যদি কাঁদতেই হয় তবে এই কাঁধে মাথা রেখে কাঁদো, বন্ধু। - সলমা-জরির কাজ -৭
প্রশ্ন করতেই পারেন, গল্পপাঠে তাকে নিয়ে কথা হচ্ছে কেন। তিনি তো কেবল কবিতা লিখেছিলেন। আসলেই কি একথা সত্যি? তিনি কি কেবলই কবিতা লিখেছিলেন? নাকি অনুগল্পের ঢঙে গদ্য লিখেছেন । তার লেখার ঠিক ঠিক ব্যাখ্যা করার সাহস আমার নেই। বরং বলি তার লেখায় ঘোর লাগে, স্বপ্নেরা ঝুলে থাকে চোখের পাপড়িতে। কোথায় যেন এক প্রবল বোধ তাড়িয়ে বেড়ায়, ঠিক ঠাক বলা যায়না। নির্লিপ্ত ও নিরাসক্তভাবে বিষয় বা পরিবেশের যথাযথ বর্ণনা তাকে বিশিষ্ট করে অনেকের চাইতে । তাই তিনি গল্প, কবিতা যাই লিখুন না কেন, প্রিয় কবি বা লেখক হয়ে ওঠেন সহজেই।
১৯৯৪ সালে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন; ‘আমার লেখায় আপনি দেখবেন যে, কন্টেন্ট সচেতনতার চেয়ে
আমি ফর্মকেই প্রাধান্য দিতে চেয়েছি। যতক্ষণ না পর্যন্ত একটা লেখাকে আমি ভিসুয়ালাইজ করতে পারি যে পাতায় কেমন দেখাবে,ছাপায় কেমন দেখাবে,ততক্ষণ পর্যন্ত আমার নিজের পক্ষে লেখা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।’
একারনেই হয়ত বিষয়ের মাপকাঠিতে, শিরোনামের ঘোরে, কাঠামোর টুকরো ফালিতে বা কবিতার ফর্মেটে ফেলা যায়না তার কবিতাগুলোকে। অথবা ছন্দ দিয়ে মাপতে গেলে হোচট খেতে হয়। কাকে মাপবো? কি দিয়ে মাপবো? যে নিজেই নিজেকে মাপেননা। বিষয়ে সহজ, ব্যক্তিগত, অথচ কত বিস্তৃত তার বিস্তার; বাস্তবতা এবং পরাবাস্তবতায় হুলুস্থুল কান্ড বাঁধিয়ে দেন তিনি, পথিক হয়ে হাটেন, সটান হয়ে শুয়ে পড়েন পাগলা কুকু্রের সাথে। আবার সাঁতার কাটতে কাটতে ভেসে যান নদীর জলে। মাঝে মাঝে মনে হয় উনি কি ডায়রী লিখছেন? নাকি ছবি আঁকছেন? তার এই অন্যরকম বিশেষত্বই বোধহয় আশি ও নব্বই দশকের বাংলা কবি- সাহিত্যিকদের ভেতর বিশেষ প্রভাব ফেলেছিল।
উৎপলকুমার বসু জীবনানন্দ পরবর্তী মধ্য পঞ্চাশের কবি। খুব সিরিয়াসলি কবি হবেন বলে ভেবেছিলেন বা লিখতে বসে গেছিলেন সেরকমটা শোনা যায়না। সখের বশে লিখতে বসে পাকা লেখক হয়ে উঠেছিলেন। বিলেতে বহুদিন কাটিয়েছেন। ইউরোপীয় আধুনিক চিন্তা, কবিতা,চিত্রকলা,দর্শন, তাকে প্রভাবিত করেছিলতো বটেই। হয়ত একারনেই পুরোটা খুলে বলেন না। একটু বলে রেখে দেন। বোদ্ধা পাঠক বাকিটা বুঝে নেবেন। পরাবাস্তবতা থেকে বাস্তবকে বর্ননা করেছেন তিনি নিজস্ব স্টাইলে। সাধারন টুকটাক দৈনন্দিন চিত্রের শব্দহীন বসে থাকাই তার কবিতা। যা দীর্ঘায়িত হতে পারত কোন আস্ত উপন্যাসে, অথবা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচিত্রে। প্রকৃতির বর্ননায় দেশ, পরদেশ, অন্যদেশ ছাপিয়ে চেনাপথগুলোই যেন আপন হয়ে উঠেছিল তাঁর লেখায়। যেখানে শব্দ বা বাক্যেগুলোয় লেপ্টে থাকে সুগন্ধি আঁতর। তার তীব্র ঘ্রাণ কেউ নিতে পারে, কেউ পারেনা।
তিনি যখন বলেন--
কখন মোরগ ডাকবে – আমি ঘরে ফিরে যাবো ।
কান্তারে সমস্ত রাত শস্য-পাহারার ছলে জেগে আছি
এবং অলৌকিক জ্যোৎস্নায় এই রণভূমি ফসলে,সংগ্রামে,গানে
ভরে গেছে – বুঝি মনে হলো সুদূর আলোর পথে তোমাদের অপস্রিয়মান ছায়া
আবার উঠেছে জেগে। দীপ্ত নখর মেলে, হা হা শব্দে
রক্তের তৃষ্ণায় যারা উড়ছ – বুঝি ভেবেছ সহসা
প্রান্তরে একাকী আমি বধ্য আছি। বুঝি জেনেছ গোপনে
এ-কাহিনী সকালের রৌদ্রের পালক দিয়ে ঢাকা যাবে।-গুপ্তচর
ব্যাপক চিত্রকল্পে ভেসে যাই আমরা; অপেক্ষা করি কখন মোরগ ডাকবে? এই অবস্থান ও বোধ, অলৈকিক জোৎস্নায় জাগিয়ে রাখে, ধূপছায়া বাষ্পজল চিরচেনা অস্তিত্বে বাঁচায়। এত সাবলীলভাবে সময়কে তুলে ধরা, যেন তার চির স্বভাব।
আবার যখন লেখেন--
শ্বাসকষ্ট উঠলেই বুঝতে পারি ফুলডুঙরি পাহাড় আর বেশি দূরে নয়
নইলে এমন হাঁপাচ্ছি কেন? কেন ওসুধে সারে না?
ঐ পাহাড়ের মাথায় উঠলে এ-বছর কী দেখব কে জানে-
যে-পাথরে আমরা সবাই নাম লিখিয়েছিলাম সেটি হয়ত
নিচে গড়িয়ে পড়ে গেছে,
যে-জলস্রোত লাফিয়ে পার হয়েছিলাম তাকে ঘুরি
চাষজমির দিকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল-
যদি তাই হয়ে থাকে তবে আর তাকে আমি খুঁজে পাবো না,
এইসব ভাবি আর হাসপাতালের বিছানা শুকনো ডালপালায়,
ছেঁড়া কাগজে আর পরিত্যক্ত সাপের খোলসে ভরে ওঠে-
এত জঞ্জাল সরাবে কে? আমি কি সময় করে উঠতে পারবো?
আমি তো ফুলডুঙরি পাহাড়ে প্রায় পৌঁছে গেছি।
চেপারামের ঘরটা
এখান থেকে দেখা যাচ্ছে। আরেকটু পা চালিয়ে
উঠে গেলেই হয়। সলমা-জরির কাজ ১০
‘গাছে উঠে বসে থাকি। ফল খাই। ব্যক্তিমানুষের দিকে আঁটি ছুঁড়ে মারি। নিচে হাহাকার পড়ে যায়। বেশ লাগে।’ এই বোধ তাকে না পড়লে চেনা যায়না। তাই যারা গল্প ভালোবাসেন বা কবিতা পড়েন তাদের জন্যে ‘কবি উৎপলকুমার বসু’ অবশ্যপাঠ্য।
পরিচয়
উৎপলকুমার বসু কলকাতার ভবানীপুরে জন্মগ্রহণ করেন ৩ আগস্ট, ১৯৩৯ সালে। তার শৈশব কেটেছে বহরমপুর, দিনহাটায়। ১৯৬১ সালে একদল কবির সংগে হারিং আন্দোলনে মেতে থেকে তার কবিতায় নতুন মাত্রা যোগ করেন তিনি। এর ফলশ্রুতিতে ১৯৬৪ সালে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। চাকরি থেকে বরখাস্ত হন তিনি ১৯৬৪ সালে। ১৯৬৫র দিকে তিনি চলে যান লন্ডন, সেখানেই বসবাস, লেখালেখি থামিয়ে দিয়ে নিরব শিক্ষকতা। কিন্তু যে মানুষটি জন্মেছেন লিখবে বলে তাকে থামিয়ে রাখা যায় কি করে? তাই ৮০'র দিকে আবার ফিরে এলেন কলকাতায়। ফের লিখতে শুরু করলেন। ২০০৬ সালে, তার কাব্যগ্রন্থ সুখ-দুঃখের সাথীর জন্য আনন্দ পুরস্কার এবং ২০১৪ সালে তাকে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। গত ৩ অক্টোবর, ২০১৫ তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
তার জন্য আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলী।
তার লেখা
চৈত্রে রচিত কবিতা-১৯৬১,পুরী সিরিজ-১৯৬৪, আবার পুরী সিরিজ-১৯৭৮, লোচনদাস কারিগর ,-১৯৮২, খণ্ডবৈচিত্রের দিন-১৯৮৬, শ্রেষ্ঠ কবিতা-১৯৯১, সলমাজরির কাজ-১৯৯৫,পদ্যসংগ্রহ-১৯৯৬, কবিতাসংগ্রহ-১৯৯৬,কহবতীর নাচ-১৯৯৭,নাইট স্কুল-১৯৯৯, টুসু আমার চিন্তামণি-২০০০
0 মন্তব্যসমূহ