সমীরণ দাসের গল্প : সিঁড়ি

আজকাল প্রায়ই বাবা আসে। যখন আমার বয়স পঁচিশ ছিল, বাবা আসেনি, যখন ত্রিশ-পয়ত্রিশ ছিল, তখনও আসেনি। কিন্তু এখন-যখন দিনে দিনে মধ্য বয়সের দিকে এগিয়ে চলেছি অবিচলিত ভাবে, বাবা আসছে। প্রায়ই এসে আমার কাছে থাকছে, কথা বলছে। তার জীবদ্দশায় যে সমস্ত কথা শুনে বিরক্ত হতাম, ঝগড়াও করতাম- এখনও মাঝেমধ্যে এসে বাবা সেই সব কথাই বলছে। কিন্তু একটুও বিরক্তি জাগছে না। মনে হচ্ছে, বাবা থাকুক, আরও একটু সময় থাকুক। আগের মতোই উপদেশ দিক,আমি সাধ্যমতে সে-সব পালন করার চেষ্টা করব। দূরে একটা সিঁড়ি দেখা যায়, বাবা সেটা দেখিয়ে প্রায়ই বলেন,এই সিঁড়ি ভেঙে তোকে উঠতে হবে।

তিন ভায়ের মধ্যে আমিই ছোট। যখন আমরা পূর্ব বাংলা থেকে এখানে এলাম, আমরা প্রকৃত অর্থেই সর্বহারা। বাবার বয়স তখন চল্লিশ-পয়তাল্লিশ। আয়ের কোনও সংস্থান নেই,বাড়ি নেই, কিন্তু বহন করার মতো পাঁচজনের সংসার। আমরা তিন ভাই,মা ও বাবা নিজে। আমরা একটা ঘর ভাড়া নিয়েছিলাম,যার দেওয়াল থেকে ঝুরঝুর করে পলেস্তারার বালি খসে পড়ত। একটু হাওয়া হলেই সেই বালি ছড়িয়ে পড়ত ঘরের মধ্যে। বাবা মাত্র পাঁচশ টাকা আনতে পেরেছিল পূর্ব পাকিস্তান থেকে, সেই টাকা দিয়েই শুরু হয়েছিল হার না মানা লড়াই। বাইরের জগতের সঙ্গে লড়তে লড়তে তার মধ্যে যে ক্ষত তৈরি হ’ত; লোকজনের ঈর্ষাকাতরতা, ক্ষুদ্রতা, লালসা, কুৎসিত মানসিকতা যে ক্ষোভের জন্ম দিত সেটাই যেন মুক্তি পেত মায়ের ওপর। আমাদের সবার ওপর। একটুতেই রেগে যেত বাবা, আমাদের ওপর বকাবকি করত। মা কাঁদত। আমরা বাবার ক্ষোভের কারণ বুঝতে না পেরে তার ওপর ক্ষুব্ধ হতাম। মনে হ’ত, এই লোকটা আমাদের বাবা নয়, আমাদের শত্রু। কিন্তু এখন এই মধ্যবয়সে পৌছে বুঝতে পারি বেঁচে থাকার আনন্দ বিন্দুমাত্র না পাওয়া আমার বাবা কী অসহায় যন্ত্রণায় বিদ্ধ হয়েই আমাদের প্রায় বিনা কারণে বকত! সেদিন বাবা বলল, বাড়িটা একটু ওপরে। বাড়িটার মধ্যে ঢুকতে হলে সিঁড়িগুলো নিপুণভাবে টপকাতে হবে। এবং সেই নিপুণতা তোকে সাধনা করেই আয়ত্ত করতে হবে! আমি একটা ব্যবসা করি। ফুটপাতের দোকান,বাবা লেখাপড়া শেখাতে পারেনি,যেজন্য বাধ্য হয়েই ছোট ব্যবসা শুরু করতে হয়েছে। কিন্তু মাঝে-মধ্যেই সেই দোকানের ওপর এসে পড়ে হামলা। দোকান উঠে যায়, আবার অন্য কোথাও বসি। এই সমস্ত প্রক্রিয়ার মধ্যেই বাবা এসে আমাকে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে বড় বাড়িতে প্রবেশের কথা বলে। নানা কারণে বাবার কথা ভুলে যাই; কিন্তু যখনই ফের বাবা এসে কথাটা মনে করিয়ে দেয়,ভাবি,বাবার আদেশটা পালন করতেই হবে। আর ক'দিনই বা বাঁচব!

বড় বাড়ির সিঁড়িটা দিনে দিনে আমাকে তীব্রভাবে আকর্ষণ করছিল। আমি বাইরে থেকে বারবার দেখেছি সিঁড়িটা,বাড়িটা। অনেক পুরনো বাড়ি,অনেকটা ভিক্টেরিয়া মেমোরিয়ালের আদলে তৈরি। ভিতটা উচুতে,যেজন্য অনেকগুলো সিড়ি ভেঙে ওপরে উঠতে হয়। বাড়িটার চারদিকে চারটি প্রবেশদ্বার,দ্বারের সামনে একজন করে রক্ষী-আমিই কোনওদিন ঐ বাড়িতে ঢুকতে পারিনি। একদিন চোয়াল শক্ত করে ভাবলাম-একবার বাড়িটাতে ঢোকার চেষ্টা করতেই হবে সিঁড়ি ভেঙে। সারা জীবন বাবার কথা অবহেলা করেছি-আর নয়! আমার একটা মোটে সন্তান। ছেলে। অণিমা ভাবে,আরেকটা বাচ্চা হলে কেমন হয়? যদি মেয়ে হয়, দুই ভাই-বোন একসঙ্গে খেলাধুলো করে বড় হবে। কিন্তু আমি রাজি হই না! একটাকে মানুষ করতেই জান বেরিয়ে যাচ্ছে! সামনের বছর ক্লাস ওয়ানে উঠবে,তারপর টু-থ্রি-ফোর ... বছর বছর নতুন ক্লাশ,বইপত্র, ড্রেস,স্কুলের খর্চা। দুটো হলে শেষ হয়ে যাব !

ছেলেকে স্কুলে পৌছে দিয়ে অণিমা এক গামলা জামাকাপড় নিয়ে সামনের কলে কাচতে বসেছে। তীব্র গরমে শরীর থেকে ঘাম বেরিয়ে এসেছে,সেই ঘামে ব্রাউজটা লেপ্টে গেছে শরীরের সঙ্গে। আমি গভীর দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে ডাকলাম,শোনো! অণিমা কল থেকে উঠে এসে আমার কাছে দাঁড়ালে বললাম,কাল বাবা এসেছিল। অণিমা বলল,সে-তো তোমার বাবা তোমার কাছে প্রায়ই আসে। মরা মানুষ কীভাবে আসে,কীভাবে যায় কে জানে! আমি ওর কথার জবাব না দিয়ে বললাম,আজ আমি দোকানে বসব না-তুমি বসবে ! আমার মুখের দু’একটা দাড়িতে পাক ধরেছে। গভীরভাবে কথা বললে অণিমা কিছুটা ভয়ই পায়। বলল,তুমি কোথায় যাবে? আমি বড় বাড়িতে ওঠার চেষ্টা করব। বাবার কথা সারাজীবন অবহেলা করেছি,আর করব না । অণিমা নিঃশব্দে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে ফের কলে গিয়ে বসিল জামাকাপড় ভর্তি গামলা নিয়ে। আমি স্নান করে খেয়ে দোকানে না বসে অনেকটা রাস্তা পেরিয়ে বড় বাড়িটার সামনে এসে দাঁড়ালাম।


দুই
বাড়ি না বলে ওটাকে প্রাসাদই বলা ভাল। ভিতটা অনেক উঁচু। একের পর এক সিঁড়ি উঠে গেছে, কেন এত উঁচু ভিত করা হয়েছিল কে জানে! যে উঠবে তার ধৈর্য্য,কষ্টসহিষ্ণুতা পরীক্ষার জন্য? বাবা-আমার বাবা। আমাদের মানুষ করার জন্য তোমাকে কত কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে! তোমাকে মর্যাদা দিতে আজ তোমার কথা রাখবই-যত পরিশ্রম করতে হোক না কেন। আমি আবেগতাড়িত কন্ঠে বিড়বিড় করতে করতে সিঁড়িটার দিকে এগোই। কিন্তু প্রথম ধাপে পা দিয়েই মুখ থুবড়ে পড়ে যাই।

প্রচণ্ড উৎসাহে সিঁড়িগুলো ভাল করে না দেখে উঠতে গিয়েছিলাম। এবং সেজন্যই এই পতন। আপাত দৃষ্টিতে সিঁড়িটা পেরোতে কোন অসুবিধা নেই। প্রচুর লোক উঠছে নামছে। তাহলে কেন পড়ে গেলাম? দোষ সিঁড়ির না আমার ? আগে কত বাড়ির কত সিঁড়ি অবলীলায় ভেঙেছি, কিন্তু এভাবে মুখ থুবড়ে পড়িনি। তাহলে?

ফের উঠে দাঁড়ালাম। পায়ে একটু ব্যথা করছে, কঁধেও চোট। বিস্মিত হয়ে সিঁড়িটার দিকে তাকলাম, বাড়িটার দিকে তাকালাম। আগে দূর থেকে বাড়িটাকে দেখে বাইরের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছি। কিন্তু আজ এত কাছে এসে আরও কিছু বৈশিষ্ট্য দেখতে পেলাম। প্রথম বৈশিষ্ট্য সিঁড়ি। সহজে কোনও আনাড়ি যেন এই সিঁড়ি ভেঙে ওপরে উঠতে না পারে,হয়ত সেজন্যই ওটা অত্যন্ত পিচ্ছিল। দ্বিতীয়ত বাড়ির ভিতর থেকে ভেসে আসছে। অত্যন্ত সুরেলা,সুমধুর সঙ্গীতের আওয়াজ। কয়েক মিনিট সেই সঙ্গীত শোনার পর মনে প্রশ্ন জাগল,এই সুমধুর সঙ্গীত শোনার জন্যই কি বাবা বার বার সিঁড়িটা পেরনোর কথা বলে? ভাবতে ভাবতে সিঁড়ির বাধা পেরনোর ইচ্ছা আরও তীব্রভাবে জেগে ওঠে আমার চিন্তা-চেতনায়। এত লোক পারছে-আমি পারব না কেন ?

সিঁড়ির নিচে ফের শক্ত হয়ে দাঁড়াই। দ্বিতীয়বার চেষ্টা শুরু করার আগে নিজের বাড়ির কথা মনে পড়ে। বেশ কিছুদূর হেঁটে এখানে এসেছি। অণিমা এখন কী করছে? দোকানটা ঠিক মতো চালাতে পারছে? ছেলেটাই বা কী করছে? কিন্তু পর মুহুর্তেই নিজের বাড়ি,পরিবার-সবার কথাই ভুলে যথেষ্ট সাবধানে সিঁড়ির ওপর পা রাখতেই আবার যেন রহস্যময়ভাবে নড়ে উঠলো সিঁড়িটা। আমি টাল সামলাতে না পেরে ফের পড়ে গেলাম। তবে এবার সাবধান ছিলাম, চোট লাগলো না।

কিছুটা হতাশ ভাবে বসে থেকে ফের সিঁড়িটার দিকে তাকালাম। বাবা তো আমাকে সিঁড়ির এই রহস্যময়তার কথা বলেননি। তাহলে কি পেরোতে পারব না ওটা ? তখনই পিঠে হাতের স্পর্শ পেয়ে চমকে উঠে তাকিয়ে দেখি,একটা অচেনা লোক দাঁড়িয়ে।

লোকটাকে ক মুহুর্ত নিরীক্ষণ করে কিছুটা ভয় পেলাম। ওঁর মুখ ভর্তি দাড়ি, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। বয়স কত বোঝার উপায় নেই। আমার অবস্থা দেখে হয়ত করুণা হয়েছিল, পিঠে হাত রেখে বললেন, অত সহজে হতাশ হলে চলে? জীবনের কোন কাজই হতাশাগ্রস্থ মানুষেরা করতে পারে না। বারবার চেষ্টা করতে হয়, বিভিন্ন দিক থেকে চেষ্টা করতে হয়; বলতে বলতে মানুষটা অদৃশ্য হয়ে যান। কিন্তু ওঁর শেষ কথাটা আমাকে সচকিত করে দিয়ে যায়। বিভিন্ন দিক থেকে চেষ্টা করতে হয় মানে? এই বাড়িতে প্রবেশের তো আরও তিনটে সিঁড়ি আছে- ঐসব সিঁড়ি দিয়ে কি ওঠার চেষ্টা করার কথা বলে গেলেন উনি ? দেখা যাক।

আমি সিঁড়ির প্রথম ধাপে ছিলাম, আস্তে আস্তে নেমে এসে রাস্তার ওপর দাঁড়ালাম। অনেক বেলা হয়েছে, রোদের তেজও বেশি, কিন্তু কী সুন্দর হাওয়া। সামনের বাগানে ফুটে থাকা অজস্র ফুল থেকে গন্ধ ভেসে আসছে,আমি বুক ভরে সেই সুগন্ধী হাওয়া টেনে নিতে নিতে কয়েক পা হেঁটে পেছনের সিঁড়ির কাছে এসে দাঁড়াই। আগের সিঁড়িটা ভাল করে পর্যবেক্ষণ না করেই উঠতে গিয়েছিলাম,এবার সে ভুল করলাম না। এবার এই দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখার আগে ভাল করে বোঝার চেষ্টা করলাম-কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলাম না। প্রায় একই রকম এদিকের সিঁড়িাও ! বোঝার উপায় নেই এটা সামনের সিঁড়ি থেকেও বেশি পিচ্ছিল কিনা ? পরীক্ষার জন্য ডানপাটা তুলে চাপ দিতেই পা হড়কে গেল। কিন্তু পড়লাম না,যদিও পাশের ৱেলিংয়ে আঘাত লেগে মাথার একটা দিক ফেটে গেল। তাহলে কি আমার পক্ষে সিঁড়ি পেরিয়ে বাড়িতে ঢোকা আদৌ সম্ভব নয় ?

হতাশ হয়ে বসে পড়ে ফের সামনের মাঠের দিকে তাকাই। দূরে বড় বড় গাছ ওপরে নীল আকাশ,মাথার ওপর দিয়ে শব্দ করতে করতে দলবদ্ধ পাখি এগিয়ে যায়। বেলা পড়ে আসছিল, সেই পড়ন্ত সূর্যের স্নান আলোর মধ্যে সামনের ফুলগাছের মাথাদোলান এক অপার্থিব রহস্যময়তার সৃষ্টি করছিল। বার বার মনে হচ্ছিল - কেন বাইরের জগতের এই সৌন্দর্যের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে বাড়িটার মধ্যে প্রবেশের কথা ভুলে যেতে পারছি না ? গভীর অন্ধকারের বুক চিরে প্রতিদিন যে সূর্য ওঠে-সারা দুনিয়ার কোথায়ও কি সেই সৌন্দর্যের তুলনা আছে? সম্ভবত নেই;কিন্তু কটা মানুষ আর ঘুম থেকে উঠে সেটা উপভোগ কৱে?

আমি আবার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে এগনোর চেষ্টা করি। এবার সিড়ির পাশের রেলিং আঁকড়ে হাতের ওপর শরীরের সমস্ত ভার প্রয়োগ করেই পা ফেলি। রাস্তা যদি দুর্গম হয়-তাহলে তো সাহায্য নিতেই হবে। কপাল থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে রক্ত বেরিয়ে আসছিল,একটু থেমে ডান হাত দিয়ে পকেট থেকে রুমাল বের করে সেই রক্ত মুছে ফের চোয়াল শক্ত করে পা ফেলতে থাকি।

মাঝপথ পর্যন্ত এসেছি,হঠাৎ দেখি,ওপর থেকে ঘন,দুর্গন্ধযুক্ত এক প্রকার তরলের স্রোত বেরিয়ে আসছে। বিস্মিত হয়ে ভাবি, তাহলে কি এই সৌন্দর্যের,রহস্যময়তার পেছনে জমা আছে অনেক ক্লেদ,যা মানুষ দূর থেকে দেখতে পায় না? বুঝতেও পারে না? বি্ভ্রান্ত ভাবে রেলিং ধরে শক্তি প্রয়োগ করে একটু একটু এগোতে থাকি। কিন্তু পর মুহুর্তেই অন্যরকম একটা ঘটনা ঘটে গেল। সেই গাঢ়,চটচটে তরল আমার পায়ে লেগেই পায়ের পাতাদুটো গলে গেল। শুরু হল প্রচণ্ড যন্ত্রণা। পড়েই যাচ্ছিলাম, কিন্তু মুহুর্তে বুঝে নিলাম,পড়ে গেলে ঐ তরলে গোটা শরীরটাই গলে যাবে। আমি দুই হাতে শরীরের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে সিঁড়ির রেলিং ধরে ঝুলে পড়লাম। এবং সেভাবেই কিছুক্ষণ ঝুলে থাকার পর দেখলাম,তরলের স্রোত শেষ হয়েছে। এবার এগোতে পারব। কিন্তু পা দুটো যে আমার চলে গেছে! এত লোক ওঠা-নামা করছে, তাদের কারুর তো এরকম হচ্ছেনা। শুধু আমার বেলাতেই এমন?

মাঝপথ পর্যন্ত এসেছি। ভাবলাম ফিরে যাই। পা দুটো গেছে আর এগোলে হয়ত গোটা শরীরটাই চলে যাবে। কিন্তু কী এক অমোঘ টান আমার সত্তার মধ্যে সঞ্চারিত হচ্ছিল। আমি রেলিংয়ে শরীর ঝুলিয়ে একটু একটু করে ওপরে উঠে দরজার সামনে এসে বসে পড়লাম।

মাথায় ক্ষত,দুটো পা নেই। তবুও সিঁড়িটা পেরিয়ে ওপরে আসতে পারার জন্য তীব্র আনন্দ হচ্ছিল। দরজায় ধাক্কা দিতেই সেটা খুলে গেল,এবার ভিতরে প্রবেশ করতে পাৱব। কিন্তু মুখ বাড়িয়ে ভিতরের দিকে তাকাতেই দেখলাম,সেখানে আরও একটা সিড়ি,যা আরও বেশী পিচ্ছিল। আরও বেশী দুর্গম।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ