অক্ষর যখন অক্ষরে বদল ঘটে

কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর

একটা গল্প তখন সৃজিত হবে। গল্পটি বিনীতার হতে পারে, হতে পারে মাইদুল কিংবা একটা বাঙলোর। এবং অবশেষে গল্পটি বাঙলোরই হওয়ার কথা বলে গুঞ্জন রয়ে যায়। এই যে গল্প যে গল্পটির ভিতর বাঙলোয় যাওয়ার রাস্তা,সেলফোনসার্ভিসিং সেন্টার,সরকারি রক্ষা বাহিনী বা চরণ-হরণ পর্ব-পাওয়া যায়, অনেক স্মৃতি অনেক কথা, অনেক হারানো লেগে থাকে, তবু সবকিছু বিবেচনাকরত একটা বাঙলোর সৃজনউন্মুখময় গল্পই এটি। আমরা গল্পটির শুরুর পর্যায়ে বিনীতার চলাচলে নজর লাগাতে থাকব। আমরা হয়ত ব্যাকুল আগ্রহে দেখতে পাবো, ওর জীবন এখন বাঙলোমুখি হতে চায়, হয়ে হয়ে রয়-- মাইদুল তাকে এমনই জানিয়েছে। সেই গমনাগমনের বাইরে সে থাকতে পারছে না। তাই সে এখন, হেমন্তের এই শীত-শীত বিকালেই বাসাটির একেবারে বুক বরাবর এসে দাঁড়িয়েছে। ম্ইাদুল তাকে বার বার বাসায় ঢোকার মূল রাস্তাটির কথা বলে দিয়েছে। বাসার ঠিকানা দেয়ার ব্যাপারে বরাবরই সে সিরিয়াস। রীতিমতো ম্যাপ এঁকে, চারপাশের পরিবেশ, মূল গেইটের সাথে দক্ষিণদিকে বিরাজ করা একটা পিচ্চিগেইট, নানা রঙের ফলের গাছ, সামনের পুষ্পকলি নার্সারির আদ্যপন্ত বিবরণ এর ভিতর আছে। কাজেই তাকে বাসার লোকেশন নিয়ে অন্তত ভাবনার কিচ্ছু নাই। মাইদুল বার বার সামনের রাস্তাটায় চোখও রাখছে। অথচ বিনীতা তার সেলফোনে জানাচ্ছে, সে নাকি বাঙলোর মূল রাস্তাটাই খোঁজে পাচ্ছে না। আজব তো-- সেলফোনের এই যুগে বাসা খোঁজার ঝামেলায় পড়তে হয়? সময় পার হলেও এর কুলকিনারা হচ্ছে না। তার মানে বিনীতার পেরেশানি নিয়ে মাইদুলকে ভাবতেই হয়। কিন্তু সে তো ঝামেলায় পড়েছেই, সেই ঝামেলা দিয়ে তাকেও ঝামেলায় ফেলে দিচ্ছে। সে নাকি রাস্তা খোঁজে পাচ্ছে না! এমন কথা মাইদুল তার এ বাঙলোয় বসবাস করা সাড়ে চার বছরের ভিতর শোনেনি। বাসাটি খুঁজতে কিঞ্চিত ঝামেলা হয়। তবে এই নগরের মূল রাস্তা থেকে নাক বরাবর পাকারাস্তা ধরে হাঁটতে থাকলে রাস্তাই মানুষটাকে বাসায় টেনে নিয়ে আসে। কারণ রাস্তার এমনই আকর্ষণ, মায়া; তারচেয়ে বড়ো কথা, বাসাটির সর্বত্র এমন সৌগন্ধ বিলানো যে সেই গন্ধই মানুষটাকে বাঙলোয় পৌঁছে দেয়! অথচ বিনীতা কী ধরনের পাগলামি শুরু করল! মূল রাস্তার কথা বাদ দিয়ে আরও কতগুলি রাস্তার কথা ও বলেই যাচ্ছে। আচ্ছা, এটা কেমন কথা যে তাকে যেভাবে বলেছে সেইভাবে রাস্তা ধরে ধরে তার এখানে আসতেই পারছে না! প্রতিটি মানুষ কী তাদের যাতায়তের রাস্তা নিজেদের কাঁধে নিয়ে ঘুরছে? এইভাবে ধমক লাগাতেই বিনীতা পাল্টা কথা শোনাচ্ছে-- এখন তো তুমি বলবেই, আমাকে রাস্তায় নামিয়ে এখন কত নীতি কথা শোনাবে! পারলে তুমিই রাস্তাটা বার করে দেখাও না। বিনীতা এইভাবে কথা বলছে যেন সে গতকাল বা পরশু আয় করা স্বপ্নটা থেকেই বার হতে পারছে না। ঘটনা কি-- স্বপ্ন মানুষকে এভাবে ঘুরপাক খাওয়াতেই পারে। মাইদুল ঘাড় ঘুরিয়ে জানালা পেরিয়ে রাস্তার দিকে চোখ ফেরাতেই তার মনে হয়, এ ঘুমের ভিতর তার অনেক কাল চলে গেছে। হেমন্তের এই বিষণ্ন বিকাল, এই ১১.১১.১১-এ, এখনকারকথা স্মরণে করতে পারে না। কিন্তু সামনের দিকে গজিয়ে ওঠা নতুন নতুন রাস্তার উপর তার চোখ পড়তেই ভিতরে একটা কাঁপুনি আসে। তার কাঁপুনির এমনই নমুনা যেন সারা দুনিয়ার গজব এই রাস্তার উপর ন্যস্ত হয়েছে। বিনীতা এই রাস্তার ভিতর দিয়ে কী করে শব্দনির্মিত এই প্রাসাদে আসবে? তাহলে বিনীতা কোনদিকে গেল? এরই ভিতরই আবারও রক্তাক্ত চিৎকার আসে-- আমাকে পথ দেখাও...

সেই পথের সন্ধানে অর্থাৎ মাইদুলের দেখানো পথে সে পড়ন্ত বিকালেই আবারও ঢুকতে চেয়েছিল। সে একটা মেয়েমানুষ হিসাবে সকালের পর দুপুরের কড়ারোদের ভিতর বাসাটাই ঢুকতে চেয়েছিল। বা শব্দনির্মিত প্রাসাদে ঢোকার একটা ব্যবস্থা সে করেই ফেলতে পারত। কিন্তু বিদেশি টাকার গন্ধে সময় পার করা আব্দুস সামাদ আরেক বুদ্ধি দেয়,কয়--হেমন্তের বিকালের মতো অত মজার সময় এই দুনিয়ায় নাই। বিনীতাও ভাবে আব্দুস সামাদের কথার শুধু দামই নয়, দাপটও আছে। শুধু দাম দিয়ে এই দুনিয়ায় চলা মুশকিল,দাপটের আলাদা ফজিলত আছে। সেই ফজিলতের ধান্ধায় পড়ে সে বাস-ট্রাক-সিএনজি ট্যাক্সি-ট্যাম্পুর এই রাস্তার একেবারে কিনারায় এসে দাঁড়ায়। একজনকে ডাকে, লোকটি তার এ ডাকাডাকির এক পয়সা মূল্য না দিয়ে পাহাড়ের চিপায় দাঁড়ানো হিজড়াটার সাথে ঠারে ঠারে কথা বলে নেয়। কিন্তু হিজড়াটা এমন ক্ষেপে যায় যে সেলতে থাকে—চুদানির পুয়া,চুদনের টাইমে মনে ন’ তাকে; মাঙ্গির পুত, নডির পয়দা, রাতিয়া ওক, তোরে ল্যাংটা গ’রি ঝাঁড়া মাইজ্যুম। লোকটি এই কথার তেজে পড়ে, রাতে গোয়া মারা খ্ওায়ার ভয়ে কিংবা বিনীতাকে এক পয়সার দাম না দেয়ার খায়েশে বাতাসের বেগে কোথায় যেন হারিয়ে যায়। সেই রাস্তাটার ভিতর মানুষ কর্তৃক মানুষকে হারিয়ে দেয়ার খেলা শুরু হয়, তা আর থামে না। বিকাল গড়িয়ে সন্ধার ভিতর আলো ঢুকতে
থাকে। বিনীতা জানপ্রাণ দিয়ে মূল রাস্তা থেকে মাইদুলেরবাঙলোর গেইট খুঁজে। গেইট সে খুঁজতেই পারে,কারণ মাইদুল তাকে বলেছিল,এই বাঙলোটার বড়ো বৈশিষ্ঠ্যই হচ্ছে,রাস্তা দিয়ে রাস্তার খোঁজ করে দেয়ার কৌশল এর আছে। এই শহরে এমন রাস্তাপাগল রাস্তা আর একটিও নাই!কিন্তু মূল রাস্তা থেকে সে প্রাণপণে আবারও জামরুল গাছের বিশাল দুইটি ছায়ার পর কাঁঠাল গাছের ছায়ার পর লেবুর টাটকা গন্ধ পাবে দূরে থাক, গাছগাছালি নির্মিত রাস্তার মায়াবী পথ পাবে কী রাস্তারই কোনো নামনিশানা নাই। সে বার বার সেলফোনে লাইন সংযোগ স্থাপন করতে গিয়ে পড়ে আরেক ধাক্কায়--এইখানে দাঁড়াইয়া রাস্তা খুঁজলে রাস্তা তো পাইবেনই না,আপনার তামাম জিন্দেগি রক্তের ফান্ধে আটকা পইড়া যাইবো। তারপরই অনেকগুলি শব্দের ঢেউ ওঠে,সেই মিলানো ঢেউকে ধরে ধরে এক-একটা হোহোহো হাসির রব ওঠে। সেই রবের কিনারা করার অবসরে তামাম রাস্তার উপর রক্তের এক পাবন নামে। এই দেশের, রাস্তার সবকিছু যেন এখন রক্ত দিয়েই হিসাব করা লাগবে। বিনীতা সেই রক্তের ফোয়ারা থেকে বাঁচার মানসে উল্টা দিকে দৌড় মারতে থাকে। তার দৌড়াদৌড়ির উপর তীব্র সমন্বিত হাসির ঢেউ আছড়ে পড়তে থাকে।


সে কোনো একসময় হয়ত পিছনে ফিরে তাকায়, সময়ের আন্দাজ নেয়, কতদূর এল তাও বুঝতে চায়। অনেকদূর থেকে, হয়ত আচানক ঐ বাঙলোটা থেকেই আচানক সব শব্দ জন্ম নিতে থাকে। এত কথা মানুষ বাড়িটা নিয়ে বলছে? এটা নাকি কোনো মানুষের বাড়িই হতে পারে না,ভূত-টূত থাকার খুবই সম্ভাবনা আছে। তুমুল জোছনায় একটা বাড়ির সর্বাঙ্গ থেকে নতুন করে উঠা ক্ষতচিহ্নের মতো কাদাকাদা কানড়বা আসে! যেন ঘুটঘুটে আন্ধারের রাতে রক্তাক্ত স্রোতের লীলা মানুষ টের পায়। এই কথা বিনীতা মাইনুলকে বললে, তুমুল স্রোতের মতো একটা হাসি পয়দা করে,সেই হাসির রেশ তছনছ হওয়ার আগেই, বিনীতাকে জড়ানোর মতোই বলত, জাদুমনি,মানুষের মতো বিটলামি প্রজাতি এই দুনিয়ায় নাই। তাইলে বাড়িটার এত তেলেসমাতি চলতেই থাকবে? মাইদুল হাসে, তার সৃজিত হাসির রায়ট লাগানোর মতোই চারপাশ কাঁপাকাঁপির ভিতর কয়, এই বাড়ির তামাম আলামত বালের এই চোখ দিয়া দেকা যাবে নাহে। এই বলে সে কোথায় কোথায় যেন তাকায়,আবারও তার কথা শেষ করার দিকেই মন লাগায়,বাড়িটার সবকিছুই যেন চারপাশের আলো-বাতাস আর মানুষের প্রেম-প্রীতি দিয়ে ভরাট করা লাগবে। এমন আজগুবি কথা শোনে বিনীতা নিজেকে সামাল দিতে পারে না, টাসকি লাগার মতোই সেলফোনে কান লাগায়ে রাখে। মাইদুল যতই আরে কিছু বলছো না যে? ততই সে চুপচুপ নির্জনতার ভিতর তার সময় পার করে। মাইদুলের ভালোবাসার ভিতর কিছু একটা মনে কয় আছে। নতুবা এই যে তার বাসার কাছ থেকে পাওয়া রক্তজনিত ভীতি থেকে বাঁচার মানসে একটা পাহাড়ের নিচে, জামরুল গাছের ছায়ায় বসে,বসে বসে অনেকক্ষণ জিরিয়ে নেয়;একটু দূরেই সরকারি কোয়ার্টারগুলির তীব্র আলোয় তার অন্ধকার খানিক দূর হলেও আজকের মতো ক্ষান্ত দিয়ে বাসার দিকে রওয়ানা হওয়ার ফন্দি কওে কেন? আবারও তার সেলফোনের বাটন টিপতে গিয়ে এক রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে। তার মনে হতে থাকে, এর সারাঅঙ্গ যেন রক্তের ফোয়ারায় ভাসতে শুরু করেছে। তাড়াতাড়ি এটিকে অফ করতে গিয়েই সে আরেক ম্যাসেজের মুখোমুখি হয়-- মাইদুলের বাসায় ঢোকার রাস্তা শুধু একটি নেই, অনেক অনেক হয়ে গেছে; আপনাকে তার ভিতর থেকেই আসলটিকে খুঁজে নিতে হবে। এমন কথাতে তার ভয় লাগে। তার কইলজার ভিতর একটা কাঁপন ওঠে। সেই কাঁপনের ধাক্কায় যেন সেলফোনটি অটোমেটিক অফ হয়ে যায়। এখন তার সেলফোনের টোটাল আচরণকে উদাহরণবাদীদের অতি নাটকীয়তার মতোই মনে হয়। এইবার নাকি এর নির্দিষ্ট কোনো রূপ থাকবে না,বাসাটার উপর আস্থাও রাখা যাবে না। কারণ এর সৌন্দর্য এর হাতে নেই। তার চারপাশের গাছ-লতা-পাতা, আর প্রাণীকুলের জৈবিক আচরণই বাসাটির এক-এক রূপের জন্য দায়ী? এখন


মাইদুলকে নিয়ে প্রশড়ব রাখা যায়। তাকে নিয়ে প্রশড়ব রাখা যায় মানে তার আচরণ নিয়ে প্রশড়ব তোলা যায়। এমন একটা বিষয় নিয়ে ভাবতেই বিনীতার সেলফোনে আবার একটা ম্যাসেজ আসে। এই ম্যাসেজটা যে মাইদুলের তা পরখ করার জন্য সেলফোনখান নিপুণভাবে পরীক্ষা করার দরকার নেই; কারণ এতে মাইদুল সংক্রান্ত কিছু ঘটলেই এর ভিতর-বাহিরে অদ্ভুত সব কাণ্ড ঘটে। এর রং বদলে যায়, সাউন্ড অন্যরকম হয়, এমনকি এর ভিতর আলাদা ধরনের কম্পন তৈরি হয়। এইসবের মিলিত ক্রিয়ার ফলেই বিনীতার সর্বাঙ্গে আলাদা রোশনাই নামে। তবে তাতে এখন ভয়ও যুক্ত হয়েছে। তাই সে অতি সাবধানে মনিটর অন করলেই অতি মনোহর একটা ম্যাসেজ পায়, ‘মানুষ, গাছপালা বা আলো-বাতাসের বিটলামির কোনো মূল্য নাই, যেইদিক দিয়ে পারো বাঙলোয় ঢুকো। এই বাঙলোর, প্রতি কামরায় তোমায় স্বাগতম।’

অনেকদিক সে দেখে, খুঁজে,-- এ খোঁজাখুঁজির সার্বিক ব্যবস্থাও একসময় মাইদুলই করে দেয়। কিন্তু কিছুই তো পায় না। নিজের মনে রাস্তা খোঁজে। সে আসলে আন্দাজের উপর ভর করেই হয়ত কাজটাতে হাত দেয়। কারণ সে তো রাস্তার অত বিটলামি বুঝতে পারছে না। তাহলে তারা ওইখানে আছে কিভাবে? এতে কোনো গায়েবি ব্যবস্থাপনা আছে নাকি। বাঙলো বাঙলোর জায়গায় আছে নাকি এই ইন্টারনেটের জমানায় জ্যান্ত সমাধি হয়ে সবার ভিতর জ্যান্ত দশা তৈরি করছে? এটা তো একটা ভাবনার বিষয় হতে পারে! তবে বিনীতা এই চিন্তার ভিতর অনেক সময় ধরে থাকতে পারে না। সেলফোনে ও একটা ম্যাসেজ পায়, তাই সে পড়তে গিয়ে একেবারে হাঁপিয়ে ওঠছে। কারণ এটি সে সরাসরি পড়তে পারছে না। এই জন্য সেলফোনের সার্ভিস সেন্টারে তাকে যেতে হয়। সার্ভিস সেন্টারের মেয়েটি হাসে, হাসতে হাসতে লুটিয়ে লুটিয়ে কাদার দশা হয় তার। ব্যাপার কি? বিনীতার এমন ইশারার জবাবে জানায়, আগের যুগের নিয়ম দিয়ে বোকার মতো সময় পার করলেই হবে? তার কত সময় পার হয়েছে। তা সে জানতে পারে না। তবে মেয়েটি দুই হাতের দশটি আঙুল প্রকাশ্যে তার চোখের সামনে নাড়িয়ে চাড়িয়ে বুঝিয়ে দেয়,এরই মধ্যে দশটা বছর চলে গেছে। আজ এই ১১.১১.১১. তারিখের হেমন্তের সন্ধ্যায় এমন কথা শোনে সে রীতিমতো টাসকি লেগে যায়। তবে মেয়েটি একেবারে অংকের হিসাবে অত কথা বলতে পারবে না। কারণ তাকে মেয়েটি জানায়, বছরের হিসাব আর আগের মতো করা যাবে না। কেন করা যাবে না? কারণ, এই হিসাব এখন আর আমাদের হাতে নাই। কাদের হাতে আছে তাহলে? এই যে এখন আপনি নিজেই দেখুন কাদের হাতে আছে! সত্যি সে যে ম্যাসেজটা পায় তার সময়জ্ঞান নিয়ে তার মাথা ঘুরতে থাকে। কারণ তাতে প্রমেই জানানো হয় যে, সময়,সময়ের চলাচল, এমনকি জৈবিক চাহিদা এখন আর এইখানে এইভাবে ঘটতে থাকবে না। তাহলে কোথায় হবে? ভিতরে যে এটা চরণ-হরণ কমপেক্স আছে, সেখানে গেলেই সব বোঝা যাবে। কী আশ্চর্য ব্যাপার-- ভার্সিটির অনার্স কমপ্লিটই করেছে মাসছয়েক হলো,এর মধ্যে এমন আজগুব কমপেক্সের কথা তো সে শুনেনি। তাহলে তো ওইদিকেই যাওয়া লাগে। তাই সে করতে উদ্যত হয়। চরণ-হরণ কমপেক্সই তার ঠিকানা মনে করে সামনে হাঁটে। বাঙলোটিতে পৌঁছার রাস্তা আপাতত বন্ধ হলেও বাঙলোটির রূপই তার রূপ বদলিয়ে বদলিয়ে এক-একটা রাস্তা করে দেবে। রাস্তাবিহীন এই জগৎ তো অচল। অচল জীবনকে সচল করার যাবতীয় ব্রত এই বাঙলোটাই পালন করবে। ফলে বিনীতাকে ঘুরঘুর করে লাঠিমের মতো ঘুরতে থাকার যে মনোবাসনা ছিল তা আপাতত দমিত হতে থাকে। এর ফলে সকাল,দুপুর,বিকাল,সন্ধ্যা,এমনকি রাতের বেলায়ও নতুন নিয়মে সে রাস্তা খুঁজে। মাইদুল বার বার তার সাথে যোগাযোগ করতে চায়, কিন্তু তাকে আর পায়ই না। তবে সে জল-হাওয়ার ক্ষীয়মাণ রোশনাই হয়ে জানাতে পারে,এই বাঙলোর রূপ আর গন্ধ যদ্দূর যাবে তদ্দূর জীবনের বালামুসিবত বলতে কিছুই থাকবে না। কারণ জীবনের পরম সৌন্দর্য আবিষ্কারই বাড়িটার লক্ষ্য।

চরণ-হরণ কমপেক্স সে দেখে, দেখতেই থাকে। সময় পার হয়, মাস, বছর সমানে গায়েব হতে থাকে, এই নিয়ে সে ভাবে। এই ভাবনায় যে ভাবনা টেনে আনে তা আসলে মাইদুলের বাঙলোয় ঢোকার বাসনা। তবে এতে ঢোকার কোনো রাস্তা সে আবিষ্কার করতেই পারে না। পাহাড়ের চিপাচাপা দিয়ে খুঁজতে থাকলেও তা পায় না। এখন তো দেখা যায়, ম্যাসেজ আসাও বন্ধ। বাঙলোর চারপাশ ঘন ঘাসজঙ্গলে ছেয়ে যাচ্ছে। বাঙলোটা আছে তো? এই প্রশড়বটি যাকে করে সে সরকারের রাস্তাঘাটের পাহারাদার বলে মনে কয়। সে প্রমে কিছু না শোনার মতোই রাস্তা পাহারায় মন লাগায়। আবারও বিনীতা ব্যাকুল পরানে তার প্রার্থনা জানায়। এদিকে কিছু একটা আছে--কিছু একটা আছে এইদিকে, যেখানে পুলিশতা আছে। পাহাড় দখল করতে করতে ছায়া-কায়া হরণ পর্ব দেখা যায়। বিনীতা তার সাথে কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে সামনের বিরাট রাস্তা দেখে। তার রং দেখে দেখে, এখান থেকেই এইটুকু বুঝতে পারছে, এর রং এক নয়, ক্রমশ বদলে যাচ্ছে। একটা মানুষের সাথে আরেকটা মানুষ এক করা যায় না, আবার যায়ও। কারণ তাদের পুঁজি হচ্ছে শরীরে লেগে থাকা কঙ্কালত্ব। এখানকার ক্রমশ কঙ্কাল হতে থাকে। এখানকার সর্বত্র দারিদ্র ছড়ানো-- আর দারিদ্র যে পথে চলে সে পথ তো নোংরা হবেই, কারণ দারিদ্র যে পথে থাকে সেই পথকেই চরম নোংরা করে দেয়! সে তার যাত্রাপথকে পাহাড়ের মায়ায় জড়াতে চাইলে পুলিশসকল অসহায়তার ভিতর হাসে, হাসিতে হাসিতে তাদের মাড়ির ঘা দেখা যায়, তারা জানায় দারিদ্র পাহারা দিতে দিতে তারাও দরিদ্র হয়ে গেছে। তখনই বিনীতা দেখে তার পাশেই একটা রুচিশীল গেইট আছে। সেই গেইটে আবার মায়াবি কতক রমণী আছে। তারা যেভাবে তাকে দেখে, এই তাকানোটা তার পরিচিত নয়। একজন মেয়ে হিসাবে স্বভাবতই তাদের আনুকূল্য পাওয়ার জন্য সে ব্যাকুল হতে থাকে। কিন্তু তার ব্যাকুলতা তাদের কাছে তেমন পাত্তা পায় বলে মনে হয় না। তবে তারা সবাই মিলে ইকো তৈরির মতো বিনীতাকে বিনীতার কায়দা পরিবর্তন করতে বলে। তাকে তাদের দরবারে অর্থাৎ চরণহরণ কমপেক্স পর্বের মূল গেইটে আসার ইশারা জানায়। তবু বিনীতা শেষ চেষ্টা হিসাবে কায়দা করে লুকিয়ে চাপিয়ে পুলিশের লোকগুলোকে চা-নাস্তার জন্য বাড়তি কিছু দিতে চেয়েও ব্যর্থ হয়। কারণ তারা জানয়,চরণ-হরণ কমপেক্স এই লোকগুলি বিদেশি পয়সার কাছে জিম্মি হয়ে তাদেরকে

পাহারা দিচ্ছে। কোনো দুই নম্বরি কর্ম তারা করতেই পারবে না, কারণ তারা আর কোথাও পোস্টিং পায় না। প্রশাসন জানায়, দারিদ্র দিয়ে দারিদ্র লালন করতে হয়। তারা এর পাশের রাস্তাটি দেখায়। তাদের একেবারে নাড়িভুঁড়িতেও নাকি সিসি ক্যামেরা ফিট করা আছে। একটু এদিক সেদিক হলেই রাজসিক দরবারে নালিশ পৌঁছে যাবে। এর জন্য কাগজপত্র পাঠানোর দরকার নাই। তাদের কাছে যে আধুনিক বিদেশি যন্ত্রপাতি আর কায়দা আছে তাই সব জানিয়ে দিবে। এখানকার সবকিছুই নাকি বিদেশি কায়দায়, বিদেশি টাকায়, বিদেশি ফরমাইশে হয়। কতদিন এমন চলবে, তাতে তারা জানায়, রোজ কেয়ামত পর্যন্ত মনে হয় এই সিস্টেমেই চলবে। আশ্চর্য তো আপনাদের এডমিনিস্ট্রেশন এসব সহ্য করছে! এইটুকু শুনেই তারা এমন ভয় পায় যে, বান্দরের মতো কিচিরমিচির করতে করতে বানরের চিকন-চাকন হাতপায়ের মতো চিকন শরীর নিয়ে যে যেদিকে পারছে পালাচ্ছে। বিনীত বেকুবের মতো দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই ওইপাশ থেকে ব্যাপক আহ্বান আসে-- আমরা এখানে মানুষ দেখি, মানুষ ভজন করি, মানুষ সৃজনও করি!!! চরণ-হরণ পর্বে আপনাকে স্বাগতম।

তারা এমন এক জগতে স্বাগতম জানায় যেখানে তারা ধর্মের কথা বলে না, ধর্মকে বাদও দেয় না। তারা কোনোকিছুকেই ফেলনা মনে করে না; তাইতো মাইদুলের বাঙলোকে ভেঙেচুরে এখানে লালন করছে বলে জানায়। তারা এটাই প্রমাণ করতে চায়, প্রকৃতি আর জৈবিক সৌন্দর্যকে আবিষ্কারের জন্য মাইদুল ধরনের পাগলের আর দরকার নাই। তারা বিশ্বাস ব্যাপারটাকে আবিষ্কার করতে পেরেছে। এবং তাদের এ জন্য পুঞ্জিপাট্টার কোনো শর্ট পড়বে না। কারণ অভাব জিনিসটা তাদের ভিতর নাই। তারা দারিদ্রকে মিউজিয়ামে পাঠাতে পারছে। ওই যে ওই গেইটের লোকদের দেখেন, তার দারিদ্র পাহারা দিচ্ছে। তারা দারিদ্রকে দারিদ্রের ভিতর রেখে দারিদ্র নিয়ে ব্যবসা করছে। আমরা কি করছি? এমন একটা মৌলিক প্রশেড়বর উত্তর তো তার কাছে নাই। বিনীতা তাই জানার ইশারা তৈরি করে। তাতেই তারা হাসে, হাসাহাসির যে এমন চরম কায়দা থাকতে পারে তা তার জানা ছিল না। তারা জানায়, আমরা আপনাদের যাবতীয় দারিদ্র কিনে নিচ্ছি। বিনীতা অবাক হতে হতে জানায়, এটা কি করে সম্ভব? এটা সম্ভব এ জন্য যে আপনারা নিজেরাও জানেন না, কিভাবে আপনাদের মেজাজ,স্বভাব, এমনকি নামও আমরা আমাদের জিম্মায় রাখতে পেরেছি। বিনীতা তার প্রতিবাদ জানায়,চিৎকার করে তাদেরকে তার প্রমাণ দিতে বলে। তারা তখনও একই মাপে হাসে। তারা হাসতে হাসতেই তাকে তাদের গেইটের ভিতর ঢুকিয়ে দেয়। অতঃপর চারপাশ থেকে মায়াবি এক বাদ্য মাঝে। সমস্ত প্রকৃতির রং বদলে যেতে থাকে।

প্রথমেই যে কমপেক্সের দর্শন মেলে তথাকার আলো-ছায়ারত ধরন দেখে বিনীতা প্রামতো ঘাবড়ে যায়। কোনো ইলেক্ট্রিক যাদুঘরেও সে এত রঙের খেলা দেখেনি। কখন যে রং ক্রমশ বদলে যাচ্ছে, তীব্র আকাশি থেকে ফ্যাকাশে বেগুনি হয়ে যাচ্ছে। আবার লালের গাঢ়তার ভিতর হলুদ তৃষ্ণার্ত রং দেখা যাচ্ছে। এই এমন এক আলোর খেলা যাতে মেজাজের ধরন নির্ণয় এভাবেই হতে পারে! তার পর যে রূমটাতে সে ঢোকেন তাতে মানুষজন আছে কি নাই তা বোঝা যায় না। কারণ

তারা পুতুলের মতোই কী কী সব ইশারায় নাকি চলে! এখানে ঈশ্বর নেই আবার আছেও। তাই বলে মেজাজের কোনো হেরফের নেই। একই মেজাজে তারা তাদের কাজ করছে। যে কোনো সমস্যার জন্য কর্পোরেট কর্তৃক জারিকৃত নানান সিস্টেমের ভিতর তাদের রাখতে পারছে। যখনই মেজাজের নড়বড়ে হয়, তখনই তাদের একেবারে বুকের কাছে যে কম্পিউটারের মনিটর সেট করা আছে, যে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক সিস্টেমে তারা আছে, তাই দিয়ে একেবারে সেন্ট্রাল মনিটরে ওইসব ম্যাসেজ পৌছে যায়। যে উদ্দীপনা এখানে আছে তাতে ভয়ের কিছু নেই। কারণ এখানে বস বলতে কেউ নেই, প্রত্যেকে প্রত্যেকের বস। একেবারে হেড-রিসেপসনিস্টের চেহারা যে রমণী বসে আছেন, তার শরীরে হাসির ঢেউ ওঠে। তিনি এমন হাসির জন্য কর্পোরেট-ব্যক্তিত্ব হিসাবে একবার প্রাইজও পেয়েছেন।তথায় বিনীতা যায়। এক গেইট থেকে অন্য গেইটে চলাচল করে। বিনীতা তথায় নিজেকে বারে বারে দেখে, বিনীতা তথায় আবিষ্কারের গন্ধ নিতে পারবে বলে এর পাহাদাররা জানায়। এখানে ছায়া-পর্ব (ছায়ায় সব এখানকার মানুষ বিনীতার জানাশোনা মানুষের মতো ওজনদার নয়;তাদের চলাচল আলাদা;তারা মানুষ হিসাবে খাটো হবে, কিন্তু তাদের ছায়া হবে লম্বা। কারণ এটা ছায়াদের রাজত্ব। তারা ছায়া খায়, ছায়ার মারফত বেতন নেয়। ছায়া বিনে জাতির মুক্তি নাই। এখানে যে যত খাটো তার ছায়া তত দীর্ঘ। রক্তের দলার মতো যখন সূর্য মাথা বার করে; কিংবা তীব্র হলুদেও মতো কুসুম কুসুম মায়া নিয়ে যখন সূর্য ক্ষয় হতে থাকে, পশ্চিমে হেলে পড়ে, তখনই এখানকার সৌন্দর্য বাড়ে।) আছে, আছে নামমোচন পর্ব (নামই জগতের যত ঝামেলার মূল,এখানে মানুষ হাসে,হাসিতে সমাজতন্ত্র থাকে--নাম নাই,শুধু কামই এখানকার ভরসা,এত মহৎসমাজতন্ত্র এতদিনের দেখা বা শোনা বা জয়গান করা সমাজতেন্ত্রর চৌদ্দগোষ্ঠৗও দেখেনি। নামহীন মানুষের সমাজতন্ত্র কায়েম করার মতো মুরোদ এখানকার বালফালাইেন্যওয়ালা সমাজতন্ত্রীদের নাই। এর জন্য প্রজেক্ট দরকার, বিদেশি মালপানি দরকার। এখানে তা-ই চাষাবাদ হচ্ছে) ঐতিহ্য হরণ পর্ব (ঐতিহ্য এক ফালতু বাহাদুরি নাম, এই কথা যে বলে বা শোনে তার লিঙ্গই উত্থিত হয়, যত ঐতিহ্য এখন এই হেডামের ভিতর আছে। বিনীতার নামহীন শরীরে হেডামের চাষাবাদ শুরু করে)।

অনেক সময় পার হয়। কত সময় হতে পারে? তা নির্ণয় করা যায় না। একদিন হয়তো বিনীতা এইসবের ভিতর দিয়ে একসময় বাঙলোটার কাছাকাছি পৌছতে পেরেছিল। কারণ চরণ-হরণ পর্ব-এর এডমিনিস্ট্রেশন তাকে এও জানায়,আপনি আপনার স্বাধীনতা নিয়ে চলতে পারেন। বিনীতা তার মেজাজ,নাম,ঐতিহ্য বিলুপ্তকরণের ভিতর দিয়ে কোন দিকে যাবে সে বলতে পারে না,এমনকি মাইদুলের নামটিও তার স্মরণে আসে না। অবশেষে এমন একটা জায়গায় সে নামহীন, মেজাজহীন, ঐতিহ্যহীন অবস্থায় পৌছে যে মাইদুল তাকে চিনতেই বহুযুগ নিয়ে নেয়।


উদাহরণবাদীরা এখানে এখনও আসে কিনা তা জানা যায়, কারণ বাড়ি--ঘর, রাস্তাঘাট এখনও বন্ধকি সিস্টেমের ভিতর আছে। তাদের বিশ্বাস হয়ত আছে, হয়ত নাই। এখন তো রাজত্ব চলছে হয়ত-এরই। বিনীতাকে তবু সে পায়, সে তাকে দেখে, তার শরীরের কোনায় কোনায় বর্ণে বর্ণে শরীরের রং বদলানো ধান্ধা করে। বিনীতাকে নাম দিতে চায়, হয়ত পারে, হয়ত পারে না। তার সারা শরীরটাকে ওড়নার মায়াবি আবরণ থেকে শাড়ির সৃজনস্টাইল থেকেই একএকভাবে সৃজন করতে চায়। কিন্তু মানুষটাকেই তো আগের জায়গায় রাখতে পারে না। তার শরীর থেকে এক-একটা বর্ণ দিয়ে এই জমানার একটা আসমানি কিতাব বানানোর লোভ হয় তার। বিশ্বাসের নতুন জমানা মাইদুল সৃজন করতে চায়। এর ধর্ম মানেই শরীর, প্রকৃতি, তার ভিতর নব নব কায়দায় জীবন আবিষ্কারের বাসনাও সে পায় না। কারণ বিনীতা আবার তার নাম পেয়েছিল কিনা তা তো জানার কোনো ব্যবস্থা নাই। বিনীতার ভিতর দিয়ে মানুষ আবিষ্কারের নেশা সে জিইয়ে রাখতে চায়। সারা জগৎ বিনীতার থ্রুতে যেন সৃজনপিপাসু হয় মাইদুল। ঈশ্বরকে হাতের উদারতায় সে দেখতে চায়! যেন স্বপেড়বর ভিতর স্বপ্ন পাওয়ার মতোই একসময় বিনীতাকে ছোঁয, শরীরে খানিক রক্ত চলাচলের ভিতরই শরীর নড়ে, তাতে শরীর নবতর আয়োজনে সৃজিত হয়। খানিক-খানিক করে শরীর মন চিনতে থাকে সে। যেন কোরানের সমস্ত শব্দই কোরানমুখর শরীরটাতে নবসৃজনেন ঢুকতে তাকে। তাকে আরেক রমণীরূপে চিনতে থাকে। আসলেই চিনতে থাকে? নাকি এও এক ধান্ধা -- বিনীতা তার নাম হারানোর ভিতর নিজের শরীর খোঁজে। কিন্তু তা যেন রূপান্তরিত আসমানি কিতাব, তার অক্ষর তার শরীরে বাসা বাঁধে; নতুন অক্ষরে রূপান্তরিত শরীরে কিসের যেন হাওয়াওটের পায়...


১১.১১.১১



লেখক পরিচিতি
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর

তাঁর জন্ম ১৯৬৩-এ, মামাবাড়িতে। কিশোরগঞ্জস্থ বাজিতপুর থানার সরিষাপুর গ্রামে শৈশব- কৈশোর, যৌবনের প্রাথমিক পর্যায় কাটান তিনি। স্কুল-কলেজের পড়াশোনা করেছেন গ্রাম ও

গ্রামঘেঁষা শহরে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একাডেমিক পড়াশুনা করেন চট্টগ্রামে। লেখাজোখা তাঁর কাছে অফুরন্ত এক জীবনপ্রবাহের নাম। মানুষের অন্তর্জগতে একধরনের প্রগতিশীল বোধ তৈরিতে তাঁর আকাক্সক্ষা লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন জায়গায়--ছোট বা বড়োকাগজে তিনি লিখে যাচ্ছেন।

কথাসাহিত্যের ছোটকাগজ কথা’র সম্পাদক। কথা সম্পাদনার জন্য তাকে ‘লিটলম্যাগ প্রাঙ্গণ পুরষ্কার ২০১১’ প্রদান করা হয়।

প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ -- মৃতের কিংবা রক্তের জগতে আপনাকে স্বাগতম (জাগৃতি প্রকাশনী), স্বপ্নবাজি (ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ), কতিপয় নিম্নবর্গীয় গল্প (শুদ্ধস্বর)

উপন্যাস-- পদ্মাপাড়ের দ্রৌপদী ’(মাওলা ব্রাদার্স),
প্রবন্ধগ্রন্থ-- উপন্যাসের বিনির্মাণ, উপন্যাসের জাদু (জোনাকী)।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ