শামীম আজাদ
খোঁচা খোঁচা লোহার ফেন্সের ওপর ঝুলে থাকা গাছগুলোর আঙ্গুলে না
পাড়া ফলের
রোয়া শুকোচ্ছে। বাকল পাকা হবার অপেক্ষায় কখন সে বীজ বর্মের
মত নিয়ে যাবে
হাইবার্নেশনে। তারপর নতুন সূর্যবিভায় ঘেমে পরের বছর তা ফেলবে
মাটির
উঠানে। জাগবে হরিণ সময়। এমনই বিলেতের হেমন্ত। এসময় দারুণ
মচমচে
একটা সূর্য ওঠে।
এরকম সময় উৎসের একদম বাসে উঠতে ইচ্ছে হয় না। আন্ডারগ্রাউন্ড
রেলে
ঢুকে একঘেয়ে সুরের “মাইন্ড দা গ্যাপ মাইন্ড দ্যা গ্যাপ”-এর গানও অনেক বাজে
লাগে। গাড়ির পেটে পত্রিকা হাতে গম্ভীরমুখো মানুষগুলোকে দেখলে
লাগে যেন
স্টারবাকের তেতো কফি খেয়েছে ওরা। বরং এই কবি হাওয়ায়
হাঁটতেই ভালো
লাগে। বিশেষ করে আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন আর খালার বাসার মাঝের
এই দূরত্বটুকু
যেন এক স্লাইস লন্ডিনিয়াম কেক!
এসব ভাবতে ভাবতে আর হাঁটতে হাঁটতে গায়ের হালকা লেবু-হলুদ টি-শার্ট
টান মেরে একটু ওপরে তুলে নেয় উৎস। সেল থেকে কিনলেই কি এমন
হতে হবে?
নাকি এদেশের মিডিয়াম সাইজ আমাদের দেশের স্মলÑ কে জানে! যাহোক;
ট্রাউজার-এর ডান পকেটের বাইরে হাত দিয়ে আবারো অনুভব করে।
নিশ্চিত হয়
ওটা ঠিক আছে। মিনি ক্যাসেট টেইপ। এর কী যে হয়েছিল কাল! আর
হবি তো হ
একেবারে ঠিক ফিফার এ্যাডভাইজার স্টিভ ম্যারির সঙ্গে কথা বলার
সময়ই। মানে
হয়! আটকে গেল তো গেলই। বিব্রতকর অবস্থা। তাকিয়ে দেখে
বাংলাদেশ
এনটিভির মসিউল কামাল তার দিকে চেয়ে হাসছে। উৎস এটি বদলাতে
বদলাতেই
অন্য সব বিদেশী স্পোর্টস রিপোর্টার ব্যাটারা তাদের আখের
গুছিয়ে নিল। এইতো
দুনিয়ার হালচাল। সুযোগ সৃষ্টি করবে একজনÑ তার ব্যবহার করবে অন্যজন।
ফুটবল খেলার মত। জোগাড় যন্ত্র করে একজন আর কিক দিয়ে জালে বল
ফেলে
অন্যজন। নাম হয় গোলদাতার। একথা মনে হতেই হঠাৎ সে মনে মনে বলে,
‘আমাদের
জাতীয় টিমের এটাই সমস্যা। সবাই নিজের পায়ে গোল দিতে চায় ফলে
দল আর জেতে না। আর μিকেটে ব্যাটারা ব্যাট পেলেই সব ভুলে যায়, আর এমন
পেটাতে চায় যে পিটা খেয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে আসে!’
বৃক্ষ থেকে বৃক্ষান্তরে ফড়িং-এর পাখা হয়ে শুকনো খয়েরি
সিকামোর এক একটি
অণু হেলিকপ্টারের প্রপেলারের মত ঘুরে ঘুরে এসে মাটিতে পড়ছে।
আর কি আশ্চর্য!
হাঁটতে হাঁটতেই ক্যাসেটটি ঠিক করে ফেললো উৎস। এখন তার নিজেকে
একজন
পীর মনে হয়। যে কেউ তার হাতে ইলেকট্রিক বিকল যন্ত্র ধরিয়ে
দিলে সে শুধু বলবে
“হও”, আর হয়ে যাবে! আসলে তার কাছে
এটা কোনো ব্যাপারই না। এ নিয়ে
পত্রিকা অফিসে তার একটা নামই আছে। তাদের নতুন কেনা কফি মেশিন
বা
ফটোকপিয়ার বন্ধ হলে বাইরের টেকনিসিয়ানের আগে তার ডাক পড়ে।
এবার
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি μিকেট কাভার করতে লন্ডন আসার আগে সম্পাদক
ওবায়েদ আহসান ফাইনাল ব্রিফিং শেষে বলেন, “...আর আশা করি তুমি না ফেরা
পর্যন্ত আমরা ঝামেলা ছাড়াই কফি পান করতে পারবো, কি বলো?” সে উত্তর দেয়
নি। হেসেছিলো। তবে অন্য কারণে। সবাই যখন বলে চা খাই, কফি খাই ওবায়েদ
স্যার বলেন চা পান, কফি পান। তিনি ‘বিয়ে’ বলেন না, বলেন বিবাহ। তিনি
বোধহয় সেদিন তার মনের কথা শুনতে পেয়েছিলেন। না হলে তক্ষুণি
কী মনে করে
জিজ্ঞেস করলেন, কি... তুমি ফিরে এলেই প্রেমার
সঙ্গে বিবাহ নাকি?
মেজ খালার এসেক্সের বাড়ি আর আন্ডার গ্রাউন্ড ষ্টেশন। দশ
মিনিটের পায়ে হাঁটা
দূরত্ব। এক দিকে “ভ্যালেন্টাইন” পার্ক আর আরেক দিকে ছবিতে দেখা
সুইস
কটেজগুলোর মত বাড়ি সারি সারি। যেন রঙিন কেক! নির্ঘাত প্রেম
দেবতা সেন্ট
ভ্যালেন্টাইন ঐ দীর্ঘ ঘন সবুজ ওক সারির ওপর ওড়াওড়ি করেন।
ভ্যালেন্টাইন্স
ডে’তে লেকের হাঁসদের ভাসমান সংসার
দেখতে আসে ভালোবাসাবদ্ধ নর-নারীরা।
উৎসের মনের ঘাটে প্রেমার কলমি ফুল এসে লাগে। বাঁ পাশের
জর্জিয়ান ধোঁয়াহীন
চিমনী ওলা টেরেস্ড বাড়িগুলোর মতই প্রাচীন অথচ নবীন তাদের
সর্ম্পক। আসার
সময় ওর কথা টেইপ করে এনেছে। প্রেমার কথা মনে হলেই সেটা শোনে।
দূরগামী
নতুন বিবাহিতরা যেভাবে প্রিয়ার ছবিতে তাকিয়ে থাকে সেরকম। তারতো
আর
বিদেশীদের মত মোবাইল নেই। হাঁটতে হাঁটতেই এ ক্যাসেটটা সত্যি
ঠিক হল কিনা
তা টেস্ট করার জন্য ডিক্টাফোনে প্রেমার ক্যাসেট ভরে কানে
ধরতেই প্রেমা বলে,
“...মনে
রাখবা, কোনো বিদেশি মেয়ের এত কাছে যাবা না যাতে
তাদের ঘ্রাণ
পাও।” পাগল! দীর্ঘ দাঁড়ানো ওকের দিকে চেয়ে
মাথা নাড়ে উৎস।
“তোমাকে
দেখি না নারী
ঘ্রাণ পাই
শুনি শ্বাসের হৃৎপিন্ড দোলা
μি€াল বিজলীতে রক্ত পোড়ে
দুধ ধান আল চিড়ে মগজের কোষে নেয় ঠাঁই...”
প্রেমার স্বর ওর রোমরাজির রন্ধ্রমূলে বৃষ্টি এনে দেয়।
স্মৃতিবন্দী হয়ে যায় উৎস।
ক্যাসেটটি নাকের কাছে নেয়Ñ শ্বাসনালী সুবাসে ভরে ওঠে। মনে
হয় যেন অনেক
দিন তার কোন শ্বাসনালী ছিলো না।
উৎস এ নিয়ে চার বার বিলেতে এসেছে। খালার বাড়িতে স্যুটকেসটি
ফেলে শোল্ডার
ব্যাগ আর লেখার যন্ত্রপাতিসহ ঘুরেছে নানান স্থান; এমনকি ফ্রান্স ও হল্যান্ড। তার
প্রতিবারের থাকাটা এখানেই হয় বলে এ পাড়াকে কেমন আত্মীয়
আত্মীয় লাগে।
আসলে মানুষই সড়ক চিহ্নায়নে কাজ করে। আর করে তার স্কাইলাইন।
ঐ সব
ধোঁয়াহীন চিমনিগুলো রোজ এই হেমন্তের ব্যাপার। একশ তেইশ নম্বর ‘লিলি পন্ড’
নামের পিচ ফল রাঙা বাড়ির ছাদের ঘরে অনেক রাত অব্দি বাতি
জ্বলে আর মৃদু গান
শোনা যায়। এক শ্বেতাঙ্গ যুবকের কাঁধের একপাশ একবার দেখেছিলো
রাতে। সে
নিশ্চয়ই রাত জেগে ঐ ছোট্ট ঘরে ইন্টারনেট নিয়ে বসেছিল। উৎস
তাকে নাম
দিয়েছে জন। জনের পরে থাকে পল (এটাও তার দেয়া নাম)। পল জিমে
যায়। না
হলে এভাবে কি কোন মানুষ মিস্তিরির মত এত কাজ করতে পারে? কখনো সে ছাদে
লাল লাল টাইল লাগাচ্ছে, কখনো এ্যাটিকের ঝুলন্ত টবে
নতুন রঙ লাগাচ্ছে আবার
কখনো সামনের প-াম গাছের হেলান বাঁধছে। নিশ্চয়ই তার সব ঠিক
আছে। একটা
ব্যাপার সে বোঝে না; এখানে অচেনা কারো দিকে ভালো
ভাবে তাকালেই তারা এটা
জিজ্ঞেস করে। আন্ডার গ্রাউন্ডেতো একজন বেশ গরম হয়েই প্রশড়ব
তোলে। কথাটা
খালাকে জিজ্ঞেস করতে হবে। পরের বাড়িতে থাকেন এক বৃদ্ধা। তাকে
মনে মনে
ক্যাথারিন ডাকে উৎস। সামারে দেখেছে, একটি ক্যানভাস টুলে ছোট্ট
ট্রান্সিসটারে
টক স্পোর্ট চালিয়ে ভ্যানিলা ব-সমের নিচে লেইসের হ্যাটে মুখ
ঢেকে জংলি শর্টস
পরে সান¯িঙঊন
মেখে শুয়ে থাকেন। রেডিও বাজে নিজের মত। ঠিক সে সময় ট্রেন্ডি
জুতো পরা হাতে কুকুর ধরা এক লালমুখো এদিক দিয়ে যায়। দেহ
কাঠামো একদম
লাগার ব্যারেল। মাথায় মেয়েদের ক্লিপ দিয়ে লাগানো আধাটুপি।
তার হাতে থাকে
সকালের জুইশ μনিক্যাল আর হোমস্ ও বেইগল। এ পাড়াটা নাকি
গোড়ার দিকে
জুইশ পাড়া ছিলো।
সে আরো জানে, বৃহষ্পতিবার সকালে বর্জ্য নিতে
আসে কাউন্সিলের সবুজ
গাড়ি। এদিন লিন্টন μিসেন্টের সারা সপ্তাহের তাবত বর্জ্য জমা
থাকে সবার বাড়ির
সামনে। কাঁচ, প-াস্টিক, রানড়বার বর্জ্য সবই আবার
নানান কন্টেনারে রাখতে হয়
রিসাইক্লিং-এর জন্য। মানুষ যে এত বর্জ্য বানায় তা সে বিলেতে
না এলে জানতেই
পারতো না। খালাকে সাহায্য করতে গিয়ে যখন সে কালো বর্জ্য
ব্যাগ বাইরে রাখতে
গেছে সে অবাক হয়ে দেখেছে এখানে মানুষ কী যে দামি দামি জিনিস
ফেলে দেয়!
স্টিলের ছোট্ট সাইড টেবিল, সিডি পে-য়ার, বাচ্চাদের খেলনা কত কি!
- ওসব ইলেকট্রিক্যাল গ্যাজেট্স
ঠিক করতে যে সময় আর টাকা লাগে,
তারচে’ তা ফেলে মানুষ নতুনই কেনে। আবার কারো
লাগলে ওসব তুলে নেয়া যায়।
বিলেতি টোকাই আরকি! বলেন খালা।
উৎস প্রায়ই টুকটাক তুলে আনে। সেদিনতো একটা মিনি ইস্ত্রি এনে
দিব্বি ঠিক
করে তার কাজ চালাচ্ছে। এটা সে দেশে নিয়ে বলবে, দেখো টোকাইর ইস্ত্রি। কিন্তু
ওঠাবার সময় অনেক সর্তক ছিলো যাতে কেউ না দেখে ফেলে। জানা কথা, একজন
শ্বেতাঙ্গ ইংলিশ আস্ত কম্পিউটার তুলে নিলে লোকে হয়তো ভাববে
চ্যারিটি শপে দান
করতে নিচ্ছে। আর সে নিলে ভাববে, আহারে এ্যাসাইলাম সিকার কিনতে
পারে না...
ওমা! ভাবতে না ভাবতেই দেখে ‘লিলি পন্ডের’ বর্জ্য ব্যাগের পাশে একটি
টেলিফোন ভয়েস মেশিন। এটা না নিয়ে যায় কি করে! টুক করে তুলে
ঝুপ করে
শোল্ডার ব্যাগে ফেলে জোনাকি চোখে দেখে নেয় চারদিক। তারপর দু’মিনিটেই
উইকলি টিকিট কিনে ঢুকে যায় পাতালেÑ ইংল্যান্ডের এ্যাবিসে।
’হোয়াইট
চ্যাপেলে’ তার সঙ্গে এসে যোগ দিল এনটিভি’র মসিউল আর ’জনকন্ঠ’-র
শিবলী। চলন্ত ট্রেনে খালি সিট পেয়েই উৎস ব্যাগ থেকে প্রায়
দেবতা বের করার
মত করে বের করে আনে চকোলেট বর্ণের এ্যানসার ফোন। ওপর দিককার
প-াস্টিক
খোলের ভেতর থেকে মগজের মত বেরিয়ে আছে ক্যাসেট টেইপ।
দ্যাখেন কি পাইছি টোকাইয়া!
কি করবেন? জিজ্ঞাসা করে তার উত্তর না
শুনে নিজের ব্যাগের ভেতর থেকে
ডিজিটাল ক্যামেরা বের করে গ্যালারি এডিট করতে থাকে। ক্যামেরা
থেকে
অপ্রয়োজনীয় ছবি ডিলিট করতে থাকে শিবলীÑ ওর দিকে তাকায় না। ট্রেন
দৌড়ায়
শহরের দিকে। ওদের যেতে হবে ভিক্টোরিয়া। সেখান থেকে
বার্মিংহাম। সেখানেই
এখন খেলা।
দ্যাখেন না কি করি! আগের মিনি ক্যাসেটটা ঠিক করে ফেলায় একটি
নতুন
উদ্ভাবনের অংকুর তার বুকে খুঁচিয়ে ওঠে। কিন্তু হাতিয়ে
ফাতিয়ে কিছুতেই ক্যাসেটটি
বের করতে পারে না।
বিলেতের মিডল্যান্ড বার্মিংহাম। তিনটি বাড়িতে টোকা দেবার পর
একটি ‘ব্রেড এ্যান্ড
ব্রেকফাস্টের’ সামনে দাঁড়িয়ে ওরা যখন ভাবলো, কেমন হবে এর মালিক; ঠিক
তখনই ম্যান্চেস্টার ইউনাইটেডের টি-শার্ট গায়ে μিস এসে দাঁড়ায়। μিকেট
দুনিয়ায় নবাগত বাংলাদেশের তিন সাংবাদিক পেয়ে সে লোক মহা
সমারোহে তাদের
জন্য মশলা চা বানাতে লেগে গেলো। চা’য় ঠোঁট ছোঁয়াতে না ছোঁয়াতেই ওদের
সম্মোহিত করার মত বলে, দেয়ার ইজ এ্যানাদার সারপ্রাইজ
ফর ইয়্যু। তারপর
ওপর তলা থেকে নিয়ে আসে ত্রিশ দশকের চোঙ্গাওলা আস্ত একটা
গ্রমোফোন আর
সামনে এনে রাখে সে আমলের ওজনদার রেকর্ড। পিন বসতেই ক্লিফ
রিচার্ড
‘কংগ্রাচুলেশন’ গাইতে শুরু করলে সে বলতে থাকে
তার সঙ্গীতপ্রেমী বাবার গল্প।
যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলকাতা ছিলেন। বাবার এই
পুরোনো আর ভাঙ্গা
ম্যানুয়্যাল গ্রামোফোনটি নিজের কারিকুরি খাটিয়ে কিভাবে তা
ইলেকট্রিক্যাল করে
ফেলেছে। এসব শুনে দ্রব হয়ে যায় উৎস। মনে মনে বলে, তুমি আর আমি দু’জনেই
কারিগর। একজন জিঞ্জিরার আর অন্যজন মিডল্যান্ডের। তারপর শুকনো
সিকামোরের মত তার ঘরে উড়ে গিয়ে সেই এ্যানসার ফোন নিয়ে এসে
বলে লেট্স
সি ইফ উই ক্যান ফিক্স দিস।
শুরু হয় μিস ও উৎসের কারিগরি। কখন পুরো রাত্রির
পালক খসে যায় বুঝতে
পারে না ওরা। একসময় অকৃতদার μিস ঘুমে মাতাল অবস্থায় কোন মতে বাই বলে
ওপর তলায় তার ফ্ল্যাটে উঠে যায়। বাইরে আঠার মত শীত জমতে
থাকে আর
উৎসের মনে কৌতুহল। জানালার সাদা লেইসে চোখ রেখে প্রায় ঠিক
হয়ে যাওয়া
যন্ত্রের শেষ কাজটি সারতে সারতে ভাবে অন্যের ব্যক্তিগত কথা
শোনা কি ঠিক?
সবাই ঘুমে। একটু চা চাই। পানি চাপতে ইলেকট্রিক কেটলীর ঝড়ো
আওয়াজে
শুরু হয় ‘শুড আই পে- অর শুড আই নট?’ আবার তা পুরো ব-্যাঙ্ক হতে
পারে। চা
আর যন্ত্রটি নিয়ে ঘরে ঢুকে দরোজা বন্ধ করেই সুইচ টিপতেই...
- পি-জ, বিল লিসেন। অল আই ওয়ান্ট টু
সে স্যরি ফর দা আদার ডে! পি-জ
কল মি ব্যাক। বা-ই! হায় হায়... মেয়েটির গলাতো একদম ভেজা!
কি হয়েছে
বিলের সাথে। চা’র
মগে ডায়ানার ছবি। মনে মনে বলে, নিষিদ্ধ গন্ধম তুমি আমি
তব বীজ। তার শুনতেই হবে কি হয়েছিলো সে রাতে। এবার তার পরের
মেসেজ
বাজে...
- হ্যালো, দিস ইজ রবি দা প-াম্বার। কল মি
টু ফিক্স এ্যা ডে সো আই ক্যান
কাম এ্যান্ড গেট দা রেস্ট ডান। থ্যাঙ্কস। ও এ ব্যাটা পানি
মিস্ত্রী- তাই চাষাড়ে গলা।
এবার তার পরেরটা...
- আই অ্যাম মিস্টার রিচার্ডসনÑ কলিং ফ্রম ডেট কালেকশন
ক্যানারি ওয়ার্ক।
ক্যান ইয়্যূ কল মি ব্যাক? এই বিল ব্যাটা সুপুরুষ হলে কি
হবে এ দেখি টাকা পয়সার
ঘাপলা লাগিয়ে বসে আছে! কিন্তু ওগো বিদেশীনি তুমি এই
নিঃস্বটার জন্য কাঁদছো
কেন? কী করেছে এ বেকুব?
উৎসের জানতে ইচ্ছে করে আরো অনেক কিছু। কিন্তু ক্লান্তিতে
সড়বায়ু খুলে
পড়ছে। লাইট নিবিয়ে অনুশোচনাসিক্ত এক নারীর অবয়ব আঁকে।
সেখানে
“টাইটানিক”-এর কেইট উইন্সলেট সাঁতরায়। মানুষ অচেনার
রূপও তার চেনা
দিয়েই নির্মাণ করে।
পরদিন রোজ বলে প্রেস কর্ণারের সুবিধা-অসুবিধা, কিভাবে ফ্যাক্স ফোন করা যায়,
কোথায় ই-মেল করা যাবে আর কোথায় বা ওদের খেতে দেবে এবং দিলে
তা
ভক্ষণযোগ্য হবে কি নাÑ এসব দরকষাকষি করতে করতেই বিকাল
হয়ে যায়।
ফেরার পথে হঠাৎ দেখে কিছু বার্চ আর রোয়ানের মেঘলা পাতায়
দেয়ালের মত
একটি বাংলাদেশী রেস্তোঁরা বসে আছে। নাম বলাকা। তিন তরুণ μীড়াসাংবাদিক
উত্তেজিত হয়ে নিয়ন আলোয় বাইরে আটকানো মেনু পড়তে থাকেÑ মেথি বোয়াল,
ফিস চচ্চড়ি, ফিরনী এবং ব্রাকেটে লেখা রাইস
পুডিংÑ বাহ! এসময় ভেতর থেকে
কাঁঠালের কোয়ার মত ফর্সা এক ভদ্রলোক বেরিয়ে আসেন। পরিচয় হল।
- আপনারা দেশের সাংবাদিক ভাইরা, আমার দেশ ইংল্যান্ডের মাটিতে
খেলছেÑ
কত বড় কথা! আর খাবেনতো চারটা ডাল ভাতই! ভাইরে সিলেটি নিয়মেই
বলি,
খেলা বাদে রুজ বলাকা তনে স্টাফ কারি খাইয়া গর যাইবা। পয়সা
লাগতোনায়।
বিদেশে এমন করে বুকের ভেতর থেকে দেশ বেজে উঠেছে দেখে ওরা
অভিভূত।
তারপর ভাপানো জুঁই ফুলের মত গরম গরম বাসমতি ভাত, তারকা ডাল আর
সাতকড়া চিকেনের স্টাফ কারি খেয়ে ওরা তাকে জড়িয়ে ধরে।
পথে শিবলী জিজ্ঞেস করে, কিরে ফিক্স করতে পারলি?
- ওটা μিস দেখছে কি করা যায়। আমি ঘুমাইতে
গেছিলাম। উৎস সত্যি কথা
বলে না।
সবাই ঘুমোলে অন্ধকারে বেজে ওঠে মেয়েটির স্বর...
সুইট হার্ট ইট্স অনলি মি... এ্যাগেইন। পি-জ কল মি ব্যাক
এ্যান্ড গিভ মি এ্যা
চান্স টু এক্সপে-ইন।
এবার সত্যি কানড়বার শব্দ। তারপরের মেসেজ...
বিল, ইঁটস্ টনি। লিসেন্ মাই ফেন্ড, ডোন্ট বি সো সিলি! ইউ মেড
ক্যাথরিন
রিয়েলি আপসেট। কাম অন ম্যান। গিভ ক্যাথি এ কল। শি ইজ μাইং হার হার্ট
আউট...!
ও মাই গড! এ যে নাটক জমে উঠেছে। ট্রাই এ্যাংগেল স্টোরি। টনি
বিপাকে
পড়েছে এই লালমুখো দেনায় ডোবা বাঁদরটাকে নিয়ে!
একটি ত্রিভুজ প্রেমকাহিনীর আলামত পেয়ে উৎস বিছানা ছেড়ে
লাফিয়ে উঠে
ঘরে চক্কর দিতে থাকে। কিন্তু এসব যে সে গোপনে শুনছে তা তো
কাউকে বলা যাবে
না। দরোজাটা ভালো ভাবে চেপে উৎস দ্রুত পরের সংবাদগুলো
ফরওয়ার্ড করতে
থাকে। ও সব আর শোনার দরকার নেই। ক্যাথরিনের অনুনয় অনুরোধ ও
অনুশোচনা শুনে শুনে বার বার বাজিয়ে অস্থির হয়ে পড়ে উৎস।
তার বুকের সড়ক
প-াবিত হতে থাকেÑ সে আর ক্যাথরিন এক সঙ্গে
গড়াগড়ি খায় ধুলোবালিতে।
বিল এর নির্বুদ্ধিতা নিয়ে তার আর সন্দেহ থাকে না! ইডিয়টটা
কি বুঝতে
পারছে না যে ক্যাথরিনের জন্য টনি প্রায় গোলাপ নিয়ে
দাঁড়িয়ে! উৎসের মনের
হাড়গোড় বৈঠা বাইতে থাকে। তার শ্বাসে রোদের মেখলা রচিত হয়।
প্রেমাকে
ক্যাথরিনÑ ক্যাথরিনকে প্রেমা মনে হয়। কি
হবে তারপর জানতে ইচ্ছে হয় কিন্তু
এদিকে আবার আগামীকাল ইংল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের খেলা। এখন
বাংলাদেশে
সকাল। এক্ষুণি পত্রিকায় টেক্সট মেসেজ পাঠাতে হবে কালকের
নিউজের সম্ভাব্য
শিরোনাম নিয়ে। টেইপ বন্ধ করে মোবাইলে প্রেমাকে টেক্সট করে, আই মিস ইয়্যু!
পরদিন ইংল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ একটি ভেজা ত্যানার মত
খেললো। হাবিবুল
বাসারের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেদের মধ্যেই একটা ঝগড়া লেগে গেল।
প্রেস কর্ণার
থেকে দেশে খবর পাঠিয়ে ঘা খাওয়া শারমেয়র মত মাথা নিচু করে
ঘরে ঢুকে ওরা
μিসকে
দেখতে পেয়ে এ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ আর হার্মিশনকে ভালো খেলার জন্য গালাগালি
শুরু করে দিল। μিস একটু বিব্রত হয়ে দ্রুত বেরিয়ে গেল।
যেন ভালো খেলাটা সে-
ই খেলেছে। আর খারাপটা এ তিন সাংবাদিক! সোহেল ফ্রিজ খুলে
সয়াদুধ এনে মগে
ঢেলে রুটির স্লাইস ভেজাতে ভেজাতে বলে, এই ইংলিশ বেটারা কি দুধ খায়রে
উৎস?
উৎস জবাব দেয় না; মোবাইলের ক্যালকুলেটরে আজকের
কেনাকাটার খরচার
হিসাব করে। তারপর ইশারায় সবাইকে গুড বাই দিয়ে ঘরে ঢুকেই কান
পাতে
ক্যাথরিনের কইতর বুকে। সেখান থেকে সুনীলের বরুনার মত ঘ্রাণ
আসে...
- হানি, আই রিয়েলি ডোন্ট নো হাউ টু
রিচ ইয়্যু। হোয়ার আর ইয়্যু? পি-জ লেট
মি নো। কান্ট টেইক ইট এ্যানি মোর।
ক্যাথরিনের কানড়বার উত্থিত বেগে তার ভেতরে সুনামী লেগে যায়।
গা ঘেমে
যেতে থাকে পরের দিনের ম্যাসেজে। স্বর ভেঙে গেছে মেয়েটার...
উইশ আই নিউÑ হোয়াই ইয়্যু আর ডুইং দিস টু
মি... সুইটহার্ট গিভ মি এ্যা
লাস্ট চান্স...।
টেইপ যে শেষ! কি হবে এখন? কী হয়েছে তারপর? এত হল্কা এত গরম কখন
হল? সে জানালা খুলে বাইরের হাইডেঞ্জা গাছের
গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়ায়। ইচ্ছে
হয় এর কান্ড দিয়ে মুগুর বানিয়ে বিলকে পেটায়। ক্যাথিকে বলে, ওগো বিদেশীনি
আমি তোমাকে আর কাঁদতে দেবো না। কাজ শেষ হলেই লন্ডন এসে ঐ
ইডিয়টটাকে ধরবো। খেলা পেয়েছে! র্যাব বাহিনী দিয়ে বিলকে
পিটাতে ইচ্ছে করে।
এবার বিলেতে পৌঁছার পর হিথ্রো থেকে ঘরে নেবার সময় গাড়ি
চালাতে চালাতে
খালু বলছিলেন, তো উৎস এই র্যাবরা যে বিনা
বিচারে μস ফায়ারে লোক মারছে
এটা কি ঠিক?
- মারুক! আপদগুলো বিদায় হচ্ছে।
- কি বলছো? খালু অবাক। আসামী হলে বিচার
হবে আদালতে...
- কবে কোন বিচার হয়েছে আমাদের
দেশের আদালতে? খালি খালি তদন্ত
কমিশন করে আর কিন্তু কিছু না। বঙ্গবন্ধুর কন্যাই পারলেন না
তার বাবার খুনিদের
দেশে আনতে বা স্বাধীনতার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে। অথচ
দেখেন না,
এরশাদ কেমন ইন্দুরের মত জাল ফুটা করে বের হয়ে যাচ্ছে।
এবার লন্ডন ফিরেই খালাকে বলবে আপনাদেরো র্যাব বাহিনীর দরকার।
অন্তত বিল জাতীয় লালমুখোদের পেটাতে!
পরদিন সুখ সুখ বাতাসে প্রেস ব্রিফিং-এর সময় পরিচয় হয়
আইটিভির একজনের
সঙ্গে।
নাম ক্যাথরিন উইনটার। সে আবার ল্যাপটপ নিয়ে বসেছিলো তারই
কাছে।
তারপর সারাদিন যতবার ওর নাম ধরে কেউ ডেকেছে সে চমকে উঠেছে।
এদিকে
বাংলাদেশের আশরাফুল আর রফিক ছাড়া কেউই পারলো না। কী করতে
পারে ওরা!
মনে হয় খালার কথা...
- আচ্ছা উৎস এই যে, বাংলাদেশ বাইরে খেলতে এসে খালি
হারেÑ এটা কেন
রে?
সে খালাকে পাল্টা প্রশড়ব করে, মুক্তিযুদ্ধে জেতা ছাড়া আর
কোথায় জিতেছেন
বলুন তো দেখি? আপনারা সব জায়গায় হেরে এখন
আমাদের খেলোয়াড়দের কাঁধে
সব জেতার দায়িত্ব চাপাচ্ছেন! কেন সব জেতার দায়িত্ব কি খালি
তাদের?
এতদিনে তার দেখা হয়ে গেছে কেন এরা ভালো খেলে। প্রত্যেকটা
স্কুলে মাঠ,
জিম, কোচ, খাওয়া, পোশাক আর কোর্স। প্রত্যেকটি
কাউন্টিতে পার্ক, মাঠ, ক্লাব
আর ট্রেনিং। প্রতিটি পাড়াতে কোচ আর স্কুলের ন্যাশনাল
কারিকুলামে খেলা। আহা!
এই সুযোগের সিকিটাও যদি আমাদের ছেলেরা পেতো। আর যা সুন্দর
স্বাস্থ্যসম্মত
খাবার দাবার খায় এরা! আর আমরা খাবার না খেয়ে বড় হই। আমরা
নিজের কথাটা
পর্যন্ত ঠিক মত বলতে পারি না। ভাবতেই আবার ক্যাথরিনের কথা মনে
হয়। আচ্ছা
ক্যাথরিন কার খেলা দেখে? সে কি লর্ডস গেছে কখনো? উইম্বলডনে হ্যানম্যান
টিলায় বসেছে নিয়ে পিকনিক। বাতাসে উড়েছে ক্যাথরিনের সোনালী
চুল! আবারো
তার নাকে ভেসে আসে ক্যাথরিনের দেহের আতর।
বার্মিংহাম থেকে লন্ডনে ফিরে আসার সময় সব খুঁটিনাটি টু ব্রাশ, তোয়ালে আর
উইন্ডব্রেকার ভরার সময় পরম যতেড়ব নিজের কলিজা ভরার মত
ব্যাগে ঢোকায় যন্ত্রটি।
কিন্তু লন্ডন ফিরতে রাত হয়ে যায়। রেডব্রীজ থেকে বেরিয়েই
দেখে পাবের সামনে
ডেড লকের মত জড়িয়ে আছে নর-নারীরা। লিলি পন্ডের দরজায়
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে
থাকে সে। টোকা দেয় না। বেল দেয় না। ওপরে বিলের ছোট ঘরের আলো
জ্বলছে।
ব্যাগের গায়ে হাত বুলিয়ে হাঁটা দেয় সেজ খালার বাড়ির দিকেÑ যা করার কাল
করবে।
বাড়তি চাবি থাকাতে খালাকে না জাগিয়ে সরিসৃপের মত উঠে যায়
নিজের
ঘরে। কিন্তু প্রক্ষালন ইত্যাদি করতে গিয়ে শতবর্ষ পুরোনো
কাঠের বাড়ির কঁকানিতে
খালা উঠে এসে লর্ডসে ডিনারের নিমন্ত্রণের কার্ডটা দিয়ে আবার
ঘুমুতে যান।
সর্বনাশ! কালই!! তো একটা কাজ করা যায়, এখনই কম্পিউটার ঘরে ঢুকে
বাংলাদেশের খেলা নিয়ে এখানকার টিভির কিছু বিশে-ষণ মিলিয়ে
নিউজ বানাতে
হবে। আর দিনে ফেরত দেবে বিলের যন্ত্র।
কিন্তু কি যে হয় তার; যেন খেয়েছে ঘুমের মদ। কোন মতে
লেখা শেষ করে
সেখানেই খয়েরী সোফায় কাত। সেটিতে কুন্ডলী পাকিয়ে
ক্যাথরিনের কানড়বা শুনতে
শুনতে ঘুমায়। ঘুম ভাঙ্গে খালা খালু কাজে চলে গেলে দুপুরেÑ যেন হাবিবুল বাশাররা
নয়, সে-ই প্রাণপণ খেলে হেরেছে এত অবসনড়ব তার
শরীর। বাইরে মহা বৃষ্টি।
এরকম বৃষ্টিবন্দী সময়ে ঘড়ি দেখা ছাড়া সময় বোঝায় উপায়
নেই।
দুপুর হয়ে গেছে; এখনতো বিল বাড়িতে থাকবে না।
সন্ধ্যায় লর্ডসে যাবার পথে
দিয়ে যাবে ওর মেশিন। দিবে আর ইচ্ছামত চোয়ালের সুখে বকে
দেবে। কে জানে
এতদিনে ক্যাথরিন এ শ্বেতাঙ্গ গাধাটার বেহাত হয়ে গেল কিনা।
মনে মনে দু’একটা
সভ্য ইংরেজি গালির কথা ভাবতে ভাবতে এক মগ কফি আর মাওয়া রঙ মর্নিং
কফি
বিস্কিট নিয়ে খুলে ধরে বিবিসি টিভির খবর।
শীতের সর ঢেকে ফেলেছে লন্ডনের হেমন্তের তরলতা। প্রেমা ও
ক্যাথি বারবার
পর্যায়μমে
বৃষ্টির লেবাসে আছড়ে পড়েছে ওর জানালায়। সে ফর্মাল কম্বিনেশন স্যুট
পরে তৈরী হয়। ব্যাগে ক্যাথরিন। তাকে দিলে তবে সে ফিরে যাবে
প্রেমার কাছে।
কিন্তু ফেরত দেবার জন্য হাঁটতে শুরু করতেই কি এক হলুদ আলো টের
পায়।
দরোজা খুলে গেছে।
থ্যাঙ্কয়্যু। ইটস্ ক্যাথরিন। বিল ওয়েন্ট আউট ফর এ্যা ওয়াক।
ক্যাথরিনের চুল
থেকে উড়ছে সড়বানের ধোঁয়া। তার হাতে যন্ত্রটি তুলে দিতেই
করমর্দনের সুঘ্রাণে
শরীরের সকল দূর্বা জেগে ওঠে। নাকে হাত দুপুরের কফির গন্ধ
পায়। কিসব ভাবছে
সে!
বেলের শব্দে দরোজা খুলে গেলে হয়তো সামনে এসে দাঁড়াবে সেই
পাশ থেকে
দেখা শয়তান সুপুরুষ। বিরক্তিতে মাসল-এর বড়শি টেনে তাকে
কিছুই বলবার
সুযোগ না দিয়ে ফ্যাস ফ্যাসে গলায় বলতে পারে, সরি উই ডোন্ট হেল্প এ্যানি
এ্যাসাইলাম সির্কাস। ইট ইজ টেরিবল হোয়াট ইয়্যু হ্যাভ ডান টু
আওয়ার কান্ট্রি!
জাস্ট গো ব্যাক টু ইয়োর কান্ট্রি।
আর ক্ষেপে গিয়ে উৎস বলবে, এক্সকিউজ মি। হু হ্যাজ গিভেন
ইউ দা রাইট টু
কল মি এ্যান এসাইলাম সিকার?... ইউ ব্রিটিশ ওয়েন্ট টু আওয়ার
কান্ট্রি এন্ড স্টোল
অল আওয়ার ট্রেজারস। এ্যান্ড... ইয়্যু আর এ্যা হিপোμেট...। কিন্তু এভাবে বলতে
হল না তার।
বেলের ধাতব শব্দে দরোজা খুলে বাইরে এল রোগা এক শ্রীলংকান যুবক।
যন্ত্রটি বের করে ফেরত দিতে চাইলে সে হেসে উঠলো, সরি উই জাস্ট মুভ্ড ইনটু
দিস প্রোপার্টি। প্রিভিয়াস অউনার ডিড নট লিভ হিজ এ্যাড্রেস।
ইট ইজ ইয়োর্স
নাউ।
হলোতোÑ এখন এই ক্যাথরিন তোমার! কথাটা বুঝতে তার
একটু দেরী হল।
আরো একটু হল হাতের যন্ত্রটি ব্যাগে ঢোকাতে। টবহীন বৃক্ষহীন
বন্ধ দরোজার
সামনে নিজের বেকুব চেহারা মিলে গেল। তার লাল নৌকা ভিড়ল না।
দৌড়ে কর্ণার শপে ঢুকে সে ফোন কার্ড কিনলো। মনে হচ্ছে প্রেমার
কথা শোনে
নি কত বছর।
ধানমন্ডি, ১০.১০.০৬
0 মন্তব্যসমূহ