দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত কোলকাতার অধিবাসী। পেশায় চিকিৎসক। চিকিৎসা বিষয়ে নানা নিবন্ধ লিখে থাকেন পত্র-পত্রিকায়। লেখালেখিও তাঁর অন্যতম কাজ। গল্প নিয়ে তাঁর ভাবনাটি স্বচ্ছ।
গল্পপাঠ : ১. আপনি শুরুতে কি পড়তেন? দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত : শুরুতে আমি শিকার, অ্যাডভেঞ্চার প্রভৃতির কাহিনী যেমন জিম করবেট পড়তাম । তখন আমি পাঁচ কি ছয় বছরের।
গল্পপাঠ : ২. এর মধ্যে গল্প কখন পড়া শুরু করলেন?
দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত : গল্প পড়া শুরু করি পাঠ্য বইয়ে 'আম আঁটির ভেঁপু ' পড়ে উৎসাহিত হয়ে। ওটি ছিল 'পথের পাঁচালি'র একটি অংশ ।
গল্পপাঠ : ৩.গল্প কেনো পড়েন?
দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত : গল্প পড়ি মূলত তিনটি কারণে । প্রথমত অজানা জীবন / কাহিনি/ঘটনা কে জানবার অদম্য কৌতূহল । দ্বিতীয়ত চরিত্রগুলোর মধ্যে নিজেকে/ চেনা মানুষকে খুঁজে পাবার ইচ্ছেতে/ তৃতীয়ত অচেনা ,অধরা ,রহস্য/ একদম নতুন কিছু যা বোধগম্যতার বাইরে এমন কিছুর সন্ধান করতে। নতুন কোনও দর্শন ,ভাবধারা ,আবিষ্কার , কল্পনা, যা আমূল বদলে দিতে পারে আমাদের প্রচলিত সব চিন্তাধারাকে এমন কিছুর সন্ধানেচ্ছু কলম্বাস মনটার খিদে মেটানোর ইচ্ছায়।
দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত : গল্প পড়ি মূলত তিনটি কারণে । প্রথমত অজানা জীবন / কাহিনি/ঘটনা কে জানবার অদম্য কৌতূহল । দ্বিতীয়ত চরিত্রগুলোর মধ্যে নিজেকে/ চেনা মানুষকে খুঁজে পাবার ইচ্ছেতে/ তৃতীয়ত অচেনা ,অধরা ,রহস্য/ একদম নতুন কিছু যা বোধগম্যতার বাইরে এমন কিছুর সন্ধান করতে। নতুন কোনও দর্শন ,ভাবধারা ,আবিষ্কার , কল্পনা, যা আমূল বদলে দিতে পারে আমাদের প্রচলিত সব চিন্তাধারাকে এমন কিছুর সন্ধানেচ্ছু কলম্বাস মনটার খিদে মেটানোর ইচ্ছায়।
গল্পপাঠ : ৪. জীবনে প্রথম কোন গল্পটি আপনাকে বেশী স্পর্শ করেছিল? কেনো করেছিল?
দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত : জীবনে সবচেয়ে নাড়া দিয়েছিলো বালীকা বয়সে পড়া 'পথের পাঁচালি '। কারন নিজের মধ্যের অপুটাকে আর দুর্গাটাকে আবিষ্কার ।
গল্পপাঠ : ৫. গল্প পড়তেন কিভাবে? কোন কোন সময়ে? কোন কোন পরিবেশে? পরিবারের কেউ বা বন্ধু বা শিক্ষক কি কেউ গল্প পড়তে উৎসাহিত করেছেন? একটি গল্প কিভাবে পড়তে হয়--সেটা কি কেউ কখনো আপনাকে দেখিয়ে দিয়েছেন?
দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত : গল্প পড়তাম গোগ্রাসে । কাহিনীটা জানবার আকুতিতে । পরে ভাবতাম।চরিত্রগুলো নিয়ে । বাড়িতে পড়ার পরিবেশ ছিল। বাবা মা দুজনেই লিখতেন এবং প্রচুর পড়তেন । বই ছিলও অনেক।
দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত : জীবনে সবচেয়ে নাড়া দিয়েছিলো বালীকা বয়সে পড়া 'পথের পাঁচালি '। কারন নিজের মধ্যের অপুটাকে আর দুর্গাটাকে আবিষ্কার ।
গল্পপাঠ : ৫. গল্প পড়তেন কিভাবে? কোন কোন সময়ে? কোন কোন পরিবেশে? পরিবারের কেউ বা বন্ধু বা শিক্ষক কি কেউ গল্প পড়তে উৎসাহিত করেছেন? একটি গল্প কিভাবে পড়তে হয়--সেটা কি কেউ কখনো আপনাকে দেখিয়ে দিয়েছেন?
দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত : গল্প পড়তাম গোগ্রাসে । কাহিনীটা জানবার আকুতিতে । পরে ভাবতাম।চরিত্রগুলো নিয়ে । বাড়িতে পড়ার পরিবেশ ছিল। বাবা মা দুজনেই লিখতেন এবং প্রচুর পড়তেন । বই ছিলও অনেক।
মা এবং বাবা ছাড়া দিদিমা, মাসিরা পড়ায় উৎসাহ দিতেন। অনেক গল্প বলতেন মুখে মুখে। একটুখানি বলে লোভ ধরিয়ে দিতেন পুরোটা পড়ার জন্য। কাকা কিনে দিতেন ইংরিজি সাহিত্যর গল্পের বই।
না, গল্প পড়তে হয় কিভাবে আজও জানি না। কেউ দেখায় নি। প্যাশন থেকে পড়া । বাবা মা সাহিত্যের অনুরাগী হলেও টেকনিক্যাল দিকটা অবহিত ছিলেন না।
গল্পপাঠ : ৬. পড়ে কোনো গল্প ভালো লাগলে কি রকম অনুভূতি হয়? আপনার কি কখনো মনে হয়েছে গল্পের কোনো চরিত্র আপনার নিজের মত। বা চরিত্রটি আপনার মধ্যে চলে এসেছে। কিছুদিন তার মত করে চলাফেরা করতে শুরু করেছেন?
দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত : পড়ে ভালো লাগলে দারুন অনুভুতি হয় যেমন বিভূতিভূষণের চাঁদের পাহাড় ,রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালা, শাস্তি , দেনা পাওনা। হ্যাঁ , পথের পাঁচালি যতবার পড়ি দুর্গাকে নিজের সাথে একানুভব করি। প্রথম পড়ে খুব কেঁদেছিলাম কারন ভেবেছিলাম আমিও ম্যালেরিয়ায় মারা যাবো এতো বিশ্বাসযোগ্য চরিত্র হয়েছিলো । আমার জীবনের প্রথম শাড়িটি ছিল হলুদ গাঁদা রঙের। সেটি পড়ে একটা ফটো তুলেছিলাম । যেই দেখত সেই বলতো দুগগা। আমিও ছোটো বোনের সাথে ওভাবেই কথাবার্তা বলার চেষ্টা করতাম। অনেক পরে সত্যজিত রায়ের ছবিটা দেখেছি। উমা দাশগুপ্তর বালিকা বয়স ,আমি ,বিভূতিভূষণের দুগগা সব মিলেমিশে ততদিনে একাকার।
গল্পপাঠ : ৭. একটি গল্পের কি কি বিষয় আপনাকে টানে? অর্থাৎ একটি ভালো গল্প হয়ে উঠতে হলে গল্পের মধ্যে কি কি বিষয় থাকা দরকার বলে মনে করেন?
দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত : গল্পের মধ্যে যাই থাকুক না কেন একটা চূড়ান্ত দর্শন /বার্তা থাকা দরকার । নয়তো সেটা মনে দাগ কাটে না।
গল্পপাঠ : ৮. সে রকম গল্প কোন কোন গল্পকারের মধ্যে পেয়েছেন? কিছু গল্পের নাম বলুন।
দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত : রবীন্দ্রনাথের 'স্ত্রীর পত্র' , শরৎচন্দ্রের 'বড়দিদি' , 'নিষ্কৃতি', তারাসঙ্করের 'গণদেবতা' , এরকম অনেক অনেক।
1 মন্তব্যসমূহ
সুন্দর, সাবলিল আর স্পস্ত বক্তব্য। আরও অনেক অনেক লেখ দলন
উত্তরমুছুন