পিন্টু রহমান
শকুন।
বিশেষ একটি পাখি।
বরেণ্য কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক তার গল্পে এই বিশেষ পাখিটিকে আরো বিশেষভাবে বিশেষায়িত করেছেন। ‘শকুন’ শিরোনামের গল্পটির মাধ্যেমেই বস্তুত: তার গল্পপথে প্রথম অভিযাত্রা। কালের ভেলায় ভর করে হাসান স্যার অনেক পথ পাড়ি দিয়েছেন। অসংখ্য গল্প উপন্যাস লিখেছেন। খ্যাতির শিখরে পৌঁছেছেন। তথাপি নবজন্মের উন্মাদনা বা শকুন এর আবেদন পাঠকের কাছে এখনো অটুট রয়েছে।
উন্নত রুচিবোধ, মানবিক বোধ সম্পন্ন দৃষ্টিভঙ্গি, মনঃস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ, আভিজাত্যময় গদ্যভাষা, ভাষার আঞ্চলিকতা, একরৈখিক গতিপ্রবাহ সর্বপরি সুখপাঠ্যতার কার্ণে গল্পটি চিরন্তন গল্প--সাহিত্যের অংশ হয়ে গেছে। আঞ্চলিক ভাষায় সংলাপের মাধ্যমে যেভাবে গ্রাম্য পরিবেশ-প্রতিবেশ চিত্রায়ন করা যায় তা অন্য কোনভাবে সম্ভব নয়। আলোচ্য গল্পে একদল কিশোরের কথপোকথনের মাধ্যমে পরিবেশ-প্রতিবেশের পাশাপাশি ঘটনার স্থানও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শুধুমাত্র ভাষার আঞ্চলিকতার কারণে খুব সহজেই বুঝতে পারি গল্পকার হাসান আজিজুল হক উত্তরবঙ্গের রাঢ় অঞ্চলের ঘটনা পাঠকের সম্মুখে তুলে ধরেছেন।
শো-শো শব্দে একটা শকুনের উড়ে আসার মধ্য দিয়ে গল্পের সূচনা। গল্পকার উল্লেখ করেছেন, “কয়েকটি ছেলে বসে ছিল সন্ধার পর। তেতুলগাছটার দিকে পিছন ফিরে। খালি গায়ে ময়লা হাফশার্টকে আসন করে। গোল হয়ে পা ছড়িয়ে গল্প করছিল। একটা অর্তনাদের মত শব্দে সবাই ফিরে তাকাল। তেতুল গাছের একটা শুকনো ডাল নাড়িয়ে, পাতা ঝরিয়ে, শো-শে শব্দে একটা বিরাট কিছু উড়ে এল ওদের মাথার উপর। ফিকে অন্ধকারের মধ্যে গভীর নিকশ একতাল সজীব অন্ধকারের মত প্রায় ওদের মাথা ছুয়ে সামনের পোড়ো ভিটেটায় নামল সেটা।”
চমৎকার আবহ; চিত্রময়। কোন ভনিতা না করে আকস্মিক এবং সাবলিলভাবে লেখক আমাদের আখ্যানের পথে ঠেলে দিয়েছেন। আরোপিত কোন ভাব-ভাষা, শব্দপ্রতিমা বা কথপোকথন নয়, স্বতফুর্ততার মাধ্যমে চলে পাঠকের পাঠ-প্রতিক্রিয়া। কাহিনীর পরিসমাপ্তি জানতে পাঠকের মন আকুলি-বিকুলি করে। গল্পটিতে পলটু, জামু, এদাই রফিকসহ আরো কয়েকজন গ্রাম্য কিশোরের উপস্থি্তি লক্ষ্য করা যায়। ওদের মধ্যে কেউ স্কুলে পড়ে, কেউ পড়ে না- গরু চরায়, ঘাস কাটে। কৈশোরজনিত কৌতুহল বা অপরিপক্ক বাস্তবজ্ঞানের অভাবে ওরা ঘরে ফেরার তাগাদা উপেক্ষা করে অন্ধকার মাঠের মধ্যে শকুনের পিছন-পিছন ছুঁটে বেড়ায়। গভীর রাত্রে ক্যানেলের পানিতে গোসল করে। জামুর মুখে উচ্চারিত হতে শুনি, “ সাব শালার হাঁপানির ব্যয়রাম। ওরে শালা, পালাইতে চাও, শালা শকুনি, শালা সুদখোর অঘোর বোষ্টম।”
“ সুদখোর অঘোর বোষ্টম!”
এ কথায় কি বোঝাতে চায় জামু! ম্ভবত ওদের গ্রামে অঘোর নামে কেউ একজন বসবাস করে, যে কি না সুদের কারবারের সাথে সংশ্লিষ্ট! বয়সজনিত কারণে সুদের ভয়াবহতা সম্পর্কে জামুদের স্পষ্ট ধারণা থাকার কথা নয়। ফলে বাক্যটি নিয়ে অসামঞ্জস্যপূর্ণতার প্রশ্ন উঠতে পারে। ভূতের ভয়ে বুকে থুঁতু ছিটানোর মাধ্যমে ইঙ্গিত করা হয়েছে সামাজিক কূসংস্কারের প্রতি। থুঁতু ছিটালে কোনো দৈব শক্তি বা ভূত-প্রেত মানুষের ক্ষতি করতে পারে না-- এমন একটি বিশ্বাস দীর্ঘ সময় আমাদের সমাজে প্রচলিত ছিল ( কোথাও কোথাও এখনো থাকতে পারে!)। গল্পটিতে লেখকের সমাজবীক্ষণ, মনোবীক্ষণ ও নষ্টালজিয়ায় আক্রান্ত করার কৌশল আমাদের বিমোহিত করে। শব্দবিন্যাস ও ঘটনা পরম্পরা গল্পের প্রতি পাঠকের মনোনিবেশ ধরে রাখতে বাধ্য করে। হাসান আজিজুল হক একজন জীবনঘনিষ্ট লেখক। তার গল্পের পরতে-পরতে ছড়িয়ে রয়েছে জীবনের নানাবিধ অনুষঙ্গ। এমনিতেই সহজ-সরল মানুষ উনি। খুব সাধারণ জীবনাচার। নিজে যেমন হাসতে পারেন তেমনি অন্যকে হাসাতে পারেন। ‘শকুন’ গল্প বিষয়ে লেখককে বহুবার বহু প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে!
কোন ভাবনা থেকে গল্পটি লেখা!
গল্পে তিনি কি বোঝাতে চেয়েছেন!
চরিত্রদের সাথে তার পরিচয় আছে কী না!
বাস্তব অভিজ্ঞতা না থাকলে এমন গল্প লেখা কি সম্ভব!
হাসান স্যারের সোজা-সাপটা উত্তর--কোনো কিছু হিসেব না করে, গল্পের কলকব্জা না বুঝেই তিনি না কি গল্পটি লিখেছেন! চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা তিনি হুবহু লিখে ফেলেছেন!
তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে কি হয়েছিল; কি এমন ঘটেছিল গল্পকারের সম্মুখে! নিশ্চয় কোনো ঘটনা ঘটেছিল, যা দেখে তিনি গল্প লেখার তাড়না বোধ করেছিলেন!
আমার সন্দেহ জমিরদ্দি নামক চরিত্রের প্রতি। কতিপয় বালক ও একটি শকুনকে কেন্দ্র করে গল্পের ঘটনাপ্রবাহ বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু শেষভাগে সূক্ষ্ম একটা মোচড় অনুভব করি। কিশোরদের কথপোকথনের মাধ্যমে জমিরদ্দি ও কাদু শেখের বোনের মধ্যকার অনৈতিক সম্পর্ক স্পষ্ট হয়ে ওঠে। শকুন বিষয়েও খানিকটা দ্বিধা! গল্পের প্রারম্ভে পাখিটাকে স্রেফ শকুন বলে মনে হয়। আরো খানিক এগিয়ে অঘোর বোষ্টমের চেহারায় একটা শকুন উঁকিঝুঁকি মারে। কিন্তু শেষপর্যন্ত মনে হয়, অন্য কেউ নয়- জমিরদ্দিই আসল শকুন! পরের সমীকরণও সরল- সুদখোর জমিরদ্দি কাদু শেখের বিধবা বোনের সাথে সুদের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। লোকচক্ষুর আড়ালে চড়া সুদ আদায় করেছে সে। অনৈতিক সম্পর্কের পরিণতিতে জন্ম নিয়েছে একটা মৃত বাচ্চা। ন্যাড়া বেলতলা থেকে একটু দুরে ফাঁকা মাঠের মধ্যে মরা শকুনের পাশে বাচ্চটাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। মৃত্যুর আগে শকুনের বমি করা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়; বরং বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
এ ঘটনায় গল্পকার আমাদের চরম এক সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। গলিত ওই কাঁচা মাংসের দলা হয়ে ওঠে গল্পটির আলোময় দিক; মিথ্যার মুখোশ উন্মোচনের প্রতীক! সমাজ-কাঠামোর অভ্যন্তরে লুকায়িত সত্যকে গল্পকার চমৎকার দক্ষতায় পাঠকের সম্মুখে উপস্থাপন করেছেন। গল্পটি আমাদের সমাজবাস্তবতার ধারাপাত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
আলোচক পরিচিত
পিন্টু রহমান
আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা।
গল্পকার। সম্পাদক-- জয়ত্রী
গল্পের বই : পরাণপাখি।
শকুন।
বিশেষ একটি পাখি।
বরেণ্য কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক তার গল্পে এই বিশেষ পাখিটিকে আরো বিশেষভাবে বিশেষায়িত করেছেন। ‘শকুন’ শিরোনামের গল্পটির মাধ্যেমেই বস্তুত: তার গল্পপথে প্রথম অভিযাত্রা। কালের ভেলায় ভর করে হাসান স্যার অনেক পথ পাড়ি দিয়েছেন। অসংখ্য গল্প উপন্যাস লিখেছেন। খ্যাতির শিখরে পৌঁছেছেন। তথাপি নবজন্মের উন্মাদনা বা শকুন এর আবেদন পাঠকের কাছে এখনো অটুট রয়েছে।
উন্নত রুচিবোধ, মানবিক বোধ সম্পন্ন দৃষ্টিভঙ্গি, মনঃস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ, আভিজাত্যময় গদ্যভাষা, ভাষার আঞ্চলিকতা, একরৈখিক গতিপ্রবাহ সর্বপরি সুখপাঠ্যতার কার্ণে গল্পটি চিরন্তন গল্প--সাহিত্যের অংশ হয়ে গেছে। আঞ্চলিক ভাষায় সংলাপের মাধ্যমে যেভাবে গ্রাম্য পরিবেশ-প্রতিবেশ চিত্রায়ন করা যায় তা অন্য কোনভাবে সম্ভব নয়। আলোচ্য গল্পে একদল কিশোরের কথপোকথনের মাধ্যমে পরিবেশ-প্রতিবেশের পাশাপাশি ঘটনার স্থানও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শুধুমাত্র ভাষার আঞ্চলিকতার কারণে খুব সহজেই বুঝতে পারি গল্পকার হাসান আজিজুল হক উত্তরবঙ্গের রাঢ় অঞ্চলের ঘটনা পাঠকের সম্মুখে তুলে ধরেছেন।
শো-শো শব্দে একটা শকুনের উড়ে আসার মধ্য দিয়ে গল্পের সূচনা। গল্পকার উল্লেখ করেছেন, “কয়েকটি ছেলে বসে ছিল সন্ধার পর। তেতুলগাছটার দিকে পিছন ফিরে। খালি গায়ে ময়লা হাফশার্টকে আসন করে। গোল হয়ে পা ছড়িয়ে গল্প করছিল। একটা অর্তনাদের মত শব্দে সবাই ফিরে তাকাল। তেতুল গাছের একটা শুকনো ডাল নাড়িয়ে, পাতা ঝরিয়ে, শো-শে শব্দে একটা বিরাট কিছু উড়ে এল ওদের মাথার উপর। ফিকে অন্ধকারের মধ্যে গভীর নিকশ একতাল সজীব অন্ধকারের মত প্রায় ওদের মাথা ছুয়ে সামনের পোড়ো ভিটেটায় নামল সেটা।”
চমৎকার আবহ; চিত্রময়। কোন ভনিতা না করে আকস্মিক এবং সাবলিলভাবে লেখক আমাদের আখ্যানের পথে ঠেলে দিয়েছেন। আরোপিত কোন ভাব-ভাষা, শব্দপ্রতিমা বা কথপোকথন নয়, স্বতফুর্ততার মাধ্যমে চলে পাঠকের পাঠ-প্রতিক্রিয়া। কাহিনীর পরিসমাপ্তি জানতে পাঠকের মন আকুলি-বিকুলি করে। গল্পটিতে পলটু, জামু, এদাই রফিকসহ আরো কয়েকজন গ্রাম্য কিশোরের উপস্থি্তি লক্ষ্য করা যায়। ওদের মধ্যে কেউ স্কুলে পড়ে, কেউ পড়ে না- গরু চরায়, ঘাস কাটে। কৈশোরজনিত কৌতুহল বা অপরিপক্ক বাস্তবজ্ঞানের অভাবে ওরা ঘরে ফেরার তাগাদা উপেক্ষা করে অন্ধকার মাঠের মধ্যে শকুনের পিছন-পিছন ছুঁটে বেড়ায়। গভীর রাত্রে ক্যানেলের পানিতে গোসল করে। জামুর মুখে উচ্চারিত হতে শুনি, “ সাব শালার হাঁপানির ব্যয়রাম। ওরে শালা, পালাইতে চাও, শালা শকুনি, শালা সুদখোর অঘোর বোষ্টম।”
“ সুদখোর অঘোর বোষ্টম!”
এ কথায় কি বোঝাতে চায় জামু! ম্ভবত ওদের গ্রামে অঘোর নামে কেউ একজন বসবাস করে, যে কি না সুদের কারবারের সাথে সংশ্লিষ্ট! বয়সজনিত কারণে সুদের ভয়াবহতা সম্পর্কে জামুদের স্পষ্ট ধারণা থাকার কথা নয়। ফলে বাক্যটি নিয়ে অসামঞ্জস্যপূর্ণতার প্রশ্ন উঠতে পারে। ভূতের ভয়ে বুকে থুঁতু ছিটানোর মাধ্যমে ইঙ্গিত করা হয়েছে সামাজিক কূসংস্কারের প্রতি। থুঁতু ছিটালে কোনো দৈব শক্তি বা ভূত-প্রেত মানুষের ক্ষতি করতে পারে না-- এমন একটি বিশ্বাস দীর্ঘ সময় আমাদের সমাজে প্রচলিত ছিল ( কোথাও কোথাও এখনো থাকতে পারে!)। গল্পটিতে লেখকের সমাজবীক্ষণ, মনোবীক্ষণ ও নষ্টালজিয়ায় আক্রান্ত করার কৌশল আমাদের বিমোহিত করে। শব্দবিন্যাস ও ঘটনা পরম্পরা গল্পের প্রতি পাঠকের মনোনিবেশ ধরে রাখতে বাধ্য করে। হাসান আজিজুল হক একজন জীবনঘনিষ্ট লেখক। তার গল্পের পরতে-পরতে ছড়িয়ে রয়েছে জীবনের নানাবিধ অনুষঙ্গ। এমনিতেই সহজ-সরল মানুষ উনি। খুব সাধারণ জীবনাচার। নিজে যেমন হাসতে পারেন তেমনি অন্যকে হাসাতে পারেন। ‘শকুন’ গল্প বিষয়ে লেখককে বহুবার বহু প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে!
কোন ভাবনা থেকে গল্পটি লেখা!
গল্পে তিনি কি বোঝাতে চেয়েছেন!
চরিত্রদের সাথে তার পরিচয় আছে কী না!
বাস্তব অভিজ্ঞতা না থাকলে এমন গল্প লেখা কি সম্ভব!
হাসান স্যারের সোজা-সাপটা উত্তর--কোনো কিছু হিসেব না করে, গল্পের কলকব্জা না বুঝেই তিনি না কি গল্পটি লিখেছেন! চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা তিনি হুবহু লিখে ফেলেছেন!
তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে কি হয়েছিল; কি এমন ঘটেছিল গল্পকারের সম্মুখে! নিশ্চয় কোনো ঘটনা ঘটেছিল, যা দেখে তিনি গল্প লেখার তাড়না বোধ করেছিলেন!
আমার সন্দেহ জমিরদ্দি নামক চরিত্রের প্রতি। কতিপয় বালক ও একটি শকুনকে কেন্দ্র করে গল্পের ঘটনাপ্রবাহ বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু শেষভাগে সূক্ষ্ম একটা মোচড় অনুভব করি। কিশোরদের কথপোকথনের মাধ্যমে জমিরদ্দি ও কাদু শেখের বোনের মধ্যকার অনৈতিক সম্পর্ক স্পষ্ট হয়ে ওঠে। শকুন বিষয়েও খানিকটা দ্বিধা! গল্পের প্রারম্ভে পাখিটাকে স্রেফ শকুন বলে মনে হয়। আরো খানিক এগিয়ে অঘোর বোষ্টমের চেহারায় একটা শকুন উঁকিঝুঁকি মারে। কিন্তু শেষপর্যন্ত মনে হয়, অন্য কেউ নয়- জমিরদ্দিই আসল শকুন! পরের সমীকরণও সরল- সুদখোর জমিরদ্দি কাদু শেখের বিধবা বোনের সাথে সুদের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। লোকচক্ষুর আড়ালে চড়া সুদ আদায় করেছে সে। অনৈতিক সম্পর্কের পরিণতিতে জন্ম নিয়েছে একটা মৃত বাচ্চা। ন্যাড়া বেলতলা থেকে একটু দুরে ফাঁকা মাঠের মধ্যে মরা শকুনের পাশে বাচ্চটাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। মৃত্যুর আগে শকুনের বমি করা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়; বরং বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
এ ঘটনায় গল্পকার আমাদের চরম এক সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। গলিত ওই কাঁচা মাংসের দলা হয়ে ওঠে গল্পটির আলোময় দিক; মিথ্যার মুখোশ উন্মোচনের প্রতীক! সমাজ-কাঠামোর অভ্যন্তরে লুকায়িত সত্যকে গল্পকার চমৎকার দক্ষতায় পাঠকের সম্মুখে উপস্থাপন করেছেন। গল্পটি আমাদের সমাজবাস্তবতার ধারাপাত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
আলোচক পরিচিত
পিন্টু রহমান
আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা।
গল্পকার। সম্পাদক-- জয়ত্রী
গল্পের বই : পরাণপাখি।
1 মন্তব্যসমূহ
ভালো ।
উত্তরমুছুন