মাঝে মাঝে মানুষের বুদ্ধি দেখে ভাবি- ধ্যাৎ, এতো বড়ো হলাম কেন? আবার মাতৃগর্ভে ফিরে যাই। এ বুদ্ধি নিয়ে এই খেকশিয়ালদের ভিড়ে টিকে থাকা অসম্ভব। এর ওর ল্যাং খেতে খেতে একদিন বেঘোরে প্রাণ হারাতে হবে। তার চেয়ে বরং সময় থাকতে নিরাপদ আশ্রয়ে গিয়ে উঠি। নতুন করে সব শুরু করি। কিন্তু তা তো হবার নয়।
আবার এই উপদ্রবও সইবার নয়। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে চিৎকার করে কাঁদি। বাপরা, মাপ কর, আমি তোদের সাতেও নেই পাঁচেও নেই, আমারে একটু শান্তিদে। কিন্তু এই শেয়ালের অভয়ারণ্যে এ নিছক অরণ্যে রোদন। সারাদিন অফিসে শেয়াল মোরগ খেলতে খেলতে বাসায় এসে দেখি এক খেকশিয়াল আমার দরজায়। এ রূপকার্থে শেয়াল নয়, দেখতে শুনতে একেবারে শেয়াল-মানুষ। ডারউইন একে দেখলে মানুষের উৎস নিয়ে ভিন্ন মত দিতেন; আমি নিশ্চিত। আসুন সম্মানিত অতিথি মহোদয়কে একটু লক্ষ্য করি।
ধারালো চিবুকখানা ঝুলিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। চোখ দুটো চক চক করছেপরমানন্দে। ঝোপের আড়াল থেকে শেয়াল যে আনন্দ নিয়ে মুরগী নাগালে আশার অপেক্ষায় থাকে, অনেকটা সে রকম।এ লুফে নেবার আনন্দ। পেড়ে ফেলবার আনন্দ। আমি বৃন্ত-ছেঁড়া ফুলের মতো ফ্যাকাসে মুখ করে তাকিয়ে থাকি। যদিও চোখ দুটোতে জ্বালিয়ে রাখি রক্তিম সতর্ক সংকেত। লাইন ব্লকড। যত চেষ্টা করো আমার চিন্তা তরঙ্গে ঢুকতে পারছো না। কিন্তু সে সব থোড়াই কেয়ার করে এগিয়ে আসে আমার দিকে। ধীরে ধীরে যেন ডুব দেয় আমার মনোহ্রদে। তল খোঁজে। ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলি, এদিক ওদিক ঘাড় নাড়াই, নিজেকে লোকাবার চেষ্টা করি। কিন্তু কিছুতেই শেয়ালের নাগাল থেকে রেহাই মেলে না। তখনই মোরগ দুটো কক্ কক্ করে ওঠে। মোরগের ডাক শুনে চমকে যাই। আবিস্কার করি আমি আমার ড্রইং রুমে বসা। শেয়ালের মুখোমুখি। শেয়ালের পায়ের কাছে রাখা দুটো মোরগ কলহের ফাঁকে ফাঁকে আমাকে দেখছে। এতো আধুনিক শেয়াল, শিকার ধরে না মেরে পোষে। ক্ষুধার জন্য অপেক্ষা করে। তার সঞ্চয়ের তৃতীয় প্রাণীটি হওয়ার আগে নিজের সামর্থ্যরে ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করি। শিকারীর হাত থেকে বাঁচতে সজারু যেমন কাটার বর্ম ফুলিয়ে তোলে, আমি তেমনি বাক্যস্ফূর্তি গড়ি।
এসব কি? বেশ জোরে গর্জন করে উঠি। বাসায় বউ বাচ্চা নেই। এই তো সুযোগ।
স্যার মুরাগা। দেশি মুরগা। খাঁটি দেশি মুরগা। দু হাটুর ভেতরে হাত ঢুকিয়ে নিয়ে পা দোলাতে দোলাতে বলল।
তা তো দেখতে পারছি। আমার ঘর নষ্ট করার জন্য নিয়ে এসেছেন।
‘সরি স্যার’ বলে দ্রুত কার্পেটের ওপর থেকে সরিয়ে নেয় মোরগ দুটোকে। এতে মোরগ দুটোর ইগোতে লাগে। ডানা ঝাপ্টাতে ঝাপ্টাতে শ্লোগান দেয়, ‘কক্ক্ এসব করা চলবে না ককক...’ কী অদ্ভূত আমি মোরগের কথা বুঝতে পারছি। মোরগগুলো আমার মতো লাল চোখ করে তাকিয়ে আছে শেয়ালের দিকে।
ওগুলো দরজার বাইরে রেখে আসেন।
স্যার এসব বাইরে রাখার জিনিস নয়, খাবার জিনিস।
কে খাবে!
আপনি।
কেন? আপনার মোরগ আমি কেন খাবো।
স্যার এর পেছনে নিশ্চই একটা কারণ আছে। অবশ্যই বলব। বলার জন্য এসেছি। এর আগে যদি অনুমতি দেন একটু সোয়েটারটা খুলি। বেশ গরম লাগতেছে। ভেবেছিলাম আপনার ঘরে এসি আছে। এজমার প্রবলেম তো-
তার সোয়েটার খোলাও একটা দেখার বিষয়। প্রথমে মাথা থেকে আর্মি ক্যাপ খুলল। তারপর গলা থেকে মাফলার। সোয়েটারের ভেতরে হাত গলিয়ে পকেটের টাকা পয়সা বের করল। ওগুলো এক করে রাখল টেবিলে। তার পর দুটো হাত আড়াআড়ি করে টান দিল সোয়েটারে। সোয়েটারের সাথে শার্টও চলে আসছিল। তাই মাঝপথে সোয়েটার খোলার অভিযান মুলতবি করে আবার নতুন করে শুরু করে। এর মধ্যে প্রকাশিত হয়ে গেলো তার চিত্রিপড়া শতেক ছেঁড়া গেঞ্জিটি। সোয়েটার খোলার পর সে স্থির হলো।
স্যার দেশি বইল্যা বাজারে সব কক... এগুলার পা দেখেন... চরের মুরগা...
আপনি আমার বাসার ঠিকানা পেলেন কেমনে?
স্যার নেসেসিটি নোজ নো ল’। প্রয়োজন হলো... খুব একটা চালাকির কাজ করে ফেলেছে এমন একটা ভাব করে গলায় মাফলার জড়ায়।
ফোনটা তাহলে আপনেই করেছিলেন।
না মানে স্যার...চমকে গিয়ে আমতা আমতা শুরু করে দিল।
কুরিয়ারের কথা বলে ঠিকানা নিয়েছেন, নিজেকে খুব সেয়ানা ভাবেন, তাই না?
কথাটা শোনা মাত্র কান ধরে ফেলল ছেলেটি।
ছি: স্যার, কি যে বলেন। আসলে খুব নিরুপায় হয়ে আপনার কাছে এসেছি...
কেন নিরুপায়!
স্যার আমি একজন বর্গা চাষার ছেলে। হাত দুটো জড়ো করে ঝুঁকে পড়ল আমার দিকে।
এই দেশের অর্ধেকের বেশি ছেলেই তো চাষার ছেলে। এটা উল্লেখ করার মতো কিছু না। আসল কথা বলেন।
খুব কষ্টে এতো দূর এসেছি স্যার।
ভালো কথা।
ভাওয়াল কলেজ থেকে দু’হাজার পাঁচে ডিগ্রি কমপ্লিট করছি।
বেশ।
স্যার এতো দিন ধরে চাকরি বাকরির ট্রাই করছি; সুবিধা করতে পারছি না।
তা আমি কি করতে পারি?
আমরা তিন ভাই।
তো।
স্যার বড়ো কষ্টে সংসারটা চলে। আমি একটু পড়াশোনা করছি। তাই বাপ মা’র এক্সপেকটেশন...
বুঝলাম সব। আমার করণীয়টা বলুন।
আমার বড়ো স্বপ্ন স্যার পরিবারটার হাল ধরার।
আপনি কি সবার বড়ো?
সরীসৃপের চোখে নাকি মায়া থাকে। সেই মায়ার ফাঁদে ফেলে তারা শিকারকে ধরে। এখন দেখছি মনুষ্যরূপী শেয়ালেরও মায়া আছে। তবে দৃষ্টিতে নয় কথায়। আমি বুঝতে পারছি তার কথার ফাঁদে আমি আটকে যাচ্ছি। কারণ ওই বর্গা চাষার পরিবারটি সম্পর্কে জানার কৌতূহল হচ্ছে আমার।
জে না স্যার, মেঝো।
বড়োজন কি করে?
সে থাইল্যান্ডে থাকে।
খুব ভালো কথা।
না স্যার, ভালো না-
কেন!
কারণ সে থাইল্যান্ডের জেলে আছে। মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে ধরা পড়ছে। এখন কয়েদ খাটে।
আপনারা তাকে উদ্ধারের কোন চেষ্টা করছেন না।
না স্যার। আল্লার হাওলায় ছাইড়া দিছি...
মোরাগগুলো আবার অধৈর্য্য হয়ে ওঠে। কক্ ক্ শুরু করে। কতক্ষণ লোকের কথা শোনা যায়। ফলে ছেলেটির কথা হারিয়ে যায় ডাকাডাকির ভিড়ে।
মোরগগুলো বাইরে রেখে আসেন।
স্যার...
বলছি বাইরে রেখে আসেন।
আবার চিৎকার করে উঠি। এতে কাজ দেয়। ছেলেটি ভয়ে পেয়ে উঠে দাঁড়ায়। মোরগ দুটোর পাখনা আকড়ে ধরে বাইরে নিয়ে যায়। প্রাণী দুটোর গাত্রোত্থানের পর দেখা গেলো দুটো বিষ্ঠার চাকতি মাটিতে। বউ আসার আগে পরিষ্কার করে নিতে হবে। নইলে বিরাট কেলেংকারি হয়ে যাবে। শেয়ালটাকে ইচ্ছে হচ্ছে ডেকে এনে দুটো চড় মারতে। কিন্তুডাকার আগেই সেফিরে আসে। একহাতে মাফলারের প্রান্তভাগ ধরে গলার দিকে ছুঁড়ে মেরে বলে,
ছোট ভাইটার কথা জিগগেস করলেন না স্যার...
ও, বলেন।
লোকে ওকে ইঞ্জিনিয়ার ডাকে।
লোকে ডাকে মানে! ও ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে নি।
না স্যার।
তাহলে কিসের ইঞ্জিনিয়ার?
ছাতার স্যার। ও শহরে শহরে ছাতা ঠিক করে বেড়ায়। স্যার আমার বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙায়। এ পেশাটা আমাদের এলাকার ঐতিহ্য বলতে পারেন। অন্য ডিস্টিকের লোকজন আমাদেরটিটকারি মারে ইঞ্জিনিয়ার ডাকে।
ও। ভাবলাম, ব্যাটা কতো বড়ো ফাজিল আমার সঙ্গে তামশা করছে। দাঁড়া, তোর তামশামি আমি ছাড়াচ্ছি।
স্যারের বাড়ি কোথায়?
সেটা জেনে আপনার কোন লাভ নেই। নিশ্চিত থাকেন ফরিদপুরের আশেপাশে নয়।
স্যার আপনি খুব বুদ্ধিমান মানুষ। আপনাকে খুলে বলার কিছু নেই। আমি এসেছিলাম একটা চাকরির জন্য।
মনে মনে যা ভেবেছিলাম তাই। মাস কয়েক হয় ডি.ডি. এডমিনের চার্জে আছি। কিছুদিন আগে আমার স্বাক্ষরে একটা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকায়। কেরানি পিয়ন গোছের কিছু লোক নেয়া হবে। পত্রিকায় বিজ্ঞাপনটা ছাপা হওয়ার পর থেকেই আমি রীতিমতো স্টার। পরিচিত অর্ধপরিচিত অপরিচিত লোকজন পথে ঘাটে কুশলাদি জিজ্ঞেস করছে। একটু প্রশ্রয় দিলে শালা বা ভাগনের চাকরির জন্য তদ্বির। মিথ্যা বলব না, ব্যাপারটা এতোদিন বেশ উপভোগ করছিলাম। আমার মাথায় কোন বদ মতলব নেই। ভাবছিলাম এ সুযোগ দেশজাতির একটু উপকার করব। গ্রামের দু চারটা ছেলেকে এনে সরকারের খাতায় তুলে দেবো। তখন সবাই টের পাবে সরকারি চাকরির ঝাঁঝ। আমার বউ ম্যাডামও সুযোগ বুঝে একটা আব্দার রেখে বসলেন। তার দূর সম্পর্কের এক খালাত ভাইকে একটা চাকরি দিতে হবে। আমি হো হো করে হেসে বলি, একটাই তো...
বউয়ের মিষ্টি হাসিতে টিউব লাইটের আলো ম্লান হয়ে যায়। কিন্তু এ হাসির আয়ুস্কাল বড়ো স্বল্প ছিল। সাপ্তাহ যেতে না যেতে বর্নিশের স্প্রিটের মতো দ্রুত উদ্বায়ী হতে থাকে আমাদের হাসিগুলো। ডি.জি স্যার সব সময় বলেন, সরকারি চাকরিতে সততা কোন গুণ নয়, গুণ হলো দক্ষতা। কে কত সুন্দরভাবে রুলস এন্ড রেগুলেশন ফলো করে ডিউ টাইমের ভেতরে কাজটা নামাতে পারে। এই যে সততা সততা বলে কেউ কেউ গাল ফুলায়, এরা আসলে একেকটা ব্লকহেড পিউপুল।
ব্লকহেড আর ব্ল্যাকহেড পিউপুল নিয়ে আমাদের ডি.জি. স্যারের কাজ। তিনি মনে মনে তার অধীনস্থদের এই দুই পংক্তে ভাগ করে রেখেছেন। ব্লকহেডদের নিয়ে তিনি খেলেন। নির্মম পরিহাসের খেলা খেলেন। আর ব্ল্যাকহেডদের দিয়ে কাজ করান। সেটা বুঝতে আমার একটু দেরি হয়ে গেলো। নইলে ডি.ডি. এডমিনের চার্জটা আমি সবিনয়ে প্রত্যাখান করতাম। পদাধিকার বলে নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব হওয়ার কথা আমার। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার ডাইরেক্টার এডমিন রিক্রুটমেন্ট কমিটির মিটিং কল করলেন, তালিকায় আমি নেই। পরে জানলাম, ডি.জি. স্যারের নির্দেশে ডি.ডি. ইন্সপেকশনকে মেম্বার সেক্রেটারি করে কমিটি ফর্ম করা হয়েছে। ডি.জি স্যার নাকি ডাউরেক্টার স্যারদের বলেছেন নিয়োগে স্বচ্ছতার জন্য এডমিনকে সেক্রেটারি না করে ইন্সপেকশনকে করলাম। সব কেন্ডিডিয়েট এডমিনের পিছনে ছুটবে, কাজ করবে ইন্সপেকশন। সবাই ডিজি’র দক্ষতায় ধন্যি ধন্যি করছে। জাদুর মঞ্চে এসে ধোকা খাওয়া দর্শকের মতো ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আমার আর কিছু করার ছিল না। এতো এতো শিয়ালের সাথে শিকার নিয়ে কাড়কাড়ির ক্ষমতা আমার নেই। আমি পরমহংসদেব সেজে সরে আসি দৃশপট থেকে। কিন্তু অদৃষ্ট আমার পিছু ছাড়ে না। প্রতিদিন পথে ঘাটে ফোনে মানুষের ঘ্যানঘ্যানানি শুনে যেতে হয়। অসহ্য লাগে। বাড়িটাকে এতোদিন এসবের ছোঁয়াচ থেকে আগলে রেখেছিলাম, এখন দেখি সেটারও পতন ঘটল। লোকের কাছে যাত্রার নকল রাজা সাজা যে কি অস্বস্তির, বলে বোঝানো যাবে না।
আপনি ভুল জায়গায় এসেছেন।
কি বলেন স্যার। চাকরি তো দিবেন আপনি। আপনার নামে সার্কুলার।
নাহ, ভুল বললেন। চাকরি দেবেন ডিজি মহোদয়। আমরা সবাই অন বিহাভ অফ হিম কাজ করি।
সেটা তো বুঝলাম স্যার। কিন্তু কাজ তো সব আপনার হাতে।
না আমার হাতে না। আমি রিক্রুটমেন্ট কমিটিতে নেই।
স্যার আমি ব্যাপারটা আন্দাজ করতে পারছি। আপনি এড়িয়ে যেতে চাচ্ছেন। স্যার আমি ইমোশন দিয়া আপনার কাছ থেকে ফেভার চাইতে আসি নাই। একটা চাকরির যে ভেল্যু অফ কস্ট তা দিয়েই আমি চাকরিটা চাই। আমি দরিদ্র শুনে ইগনোর করার কোন প্রয়োজন নেই। আমি ক্যাপাবল স্যার। আপনি শুধু আমাকে একটু হেল্প করেন। লাভ আমাদের দুজনেরই হবে।
ভেল্যু অফ কস্ট!
জি স্যার। আমি জেনে এসেছি। পিয়ন চার লাখ, কেরানি ছয় লাখ।
কি বলেন! আমি তো জানতাম না।
স্যার টাকাটা কেউ না কেউ নেবে। হয়ত আপনিও নেবেন। দশ হাত ঘুরার পর। তার চেয়ে বরং সরাসরি আমার কাছ থেকে নেন। কাউরে কোন কমিশন দিতে হবে না।
বললাম তো ভাই আমি কমিটিতে নেই। বিরক্ত কইরো না।
স্যার টাকা কিন্তু রেডি। জীবনে সুযোগ বারবার আসে না। কমিটিতে থাকেন বা না থাকেন আপনার একটা সুপারিশ এমনেই রাখবে সবাই। বলবেন আমার চাচাত ভাই।
তুমি কি এখনি টাকা দিতে পারবা।
অবশ্যই স্যার।
তাহলে তুমি এতোক্ষণ যা বলছো সব মিথ্যা।
কেন স্যার।
যে এতোগুলা টাকা একসঙ্গে বের করতে পারে, সে তো গরীব না...
ঠিক টাকা না স্যার, টাকার চেক দিতে পারব। আগামী দুই তারিখ আপনে ক্যাশ করে নিতে পারবেন।
তুমি কি আমাকে রাস্তারবাচ্চা ছেলে পেয়েছো। এরকম ব্ল্যাংক চেক যে কেউ বিলি করে বেড়াতে পারে। এর জন্য টাকা লাগে না।
স্যার বিশ্বাস তো করলেন না, আচ্ছা ঠিক আছে- বিশ্বাসের একটা ব্যবস্থা করি।
বলে ছেলেটি পকেট থেকে একটা চেক বের করল। চেকে মূল মালিকের নাম দেখে আমি চমকে গেলাম। পরিচিত স্বাক্ষর।টাকার ঘরে পুরো আট লাখ টাকা লেখা!
এ্যাই ... তুমি এই চেক কোত্থেকে পাইলা।
সেটা আপনার জানার প্রয়োজন নেই। শুধু বলেন আপনি আমারে রিলাই করতে পারছেন কিনা।
না। মোটেও না।
কেন? সত্যি সত্যি ভদ্রলোক যদি তোমাকে চেকটা দিয়ে থাকেন তাহলে তুমি তা ব্যাংকে না দিয়ে হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছো কেন?
কারণ স্যার ১ তারিখের আগে চেকটা ভাঙানো যাবে না।
১ তারিখ কেন?
কারণ এর দু’দিন আগে উনার কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের অপারেশন হবে।
কি বলো, আমি তো জানতাম না।
জি স্যার।হাত দিয়ে খোঁচা খোঁচা দাড়িভরা বন্ধুর গাল ঘঁষতে ঘঁষতে বলল।
আচ্ছা, তুমি কি ডোনার...
ছেলেটা মুখ নীচু করে বসে রইল। তাকে আর শেয়াল লাগছে না। সাথে আসা দুটো প্রাণির মতোই লাগছে। ¯্রফে শিকার।
লেখক পরিচিতি
জয়দীপ দে
প্রভাষক
সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ
কে. বি আমান আলী রোড, চকবাজার, চট্টগ্রাম, ন
গল্পকার।
1 মন্তব্যসমূহ
অসাধারণ
উত্তরমুছুন