মেইল ঝাড়ছিলাম, দুনিয়ার আবর্জনা, খুলে পড়ার মত একটি চিঠিও কোথাও লেখা নেই, শুধু বিজ্ঞাপন দিয়ে কব্জা করার ধান্ধা, অল ক্লিয়ার করলেই হয়, কিন্তু চিঠি প্রত্যাশী মাত্রই জানেন এক টুকরো চিঠির কী মূল্য! একটা নাম এসে চোখ আটকে গেল, ততোদিনে তার গদ্য আমার পরিচিত গদ্যের মাঠ!
স্মৃতিচারণমূলক একটি লেখা, যেখানে দেশ ছেড়ে আসার যাতনাটাই প্রবল, ডায়াস্পোরা ব্যক্তিমাত্রই জানেন মাতৃভূমি ছেড়ে আসার বেদনা মাঝে মাঝে গরম তেলে পাঁচফোড়নের বাগাড়সম অগোপনীয় একটি কান্না, কখনও কখনও আসরেও চোখের বাঁধ ভেঙে পড়ে, এই কান্না কেবল খুব ভাল পিপ্পুল শাক রাঁধতে-পারা মায়ের জন্য নয়, আজন্ম বাঁজা জলপাই গাছটির জন্যও, বাঁজা বলে অনেক খোঁটা দিয়েছি বলে অনুতপ্তেরও কান্না...
লেখকের মা খুব পরিপাটি করে শাক রাঁধেন, ছেলের প্রিয় পিপ্পুল শাক, হয়ত ছেলের প্রিয়ই না, এই ঝাঁঝালো পাতাটি কিন্তু মায়ের কাছে তার পুত্রের প্রিয় খাবার, অথচ সেই রান্নাটি মা চোখ ভিজিয়ে ভিজিয়ে শেষবারের মত রাঁধতে পারেন নি... এই জায়গায় এসে পিপ্পুলের সাথে আমার নিজের প্রিয় ( হয়ত প্রিয় নয়) একটি শাক এসে জোড় বাঁধে! বছরে দুইবার আমরা নানাবাড়ি যেতাম, নানাবাড়ির সাথে ভূমিগত কিছু ব্যাবধান ছিল আমাদের বাড়ির, আমাদের টিলা-টক্করের গ্রাম, তাদের ভেজা ভেজা জলাভূমি, মামাদের বিশাল পরিবার, পাঁচ কেজি মাংস রান্না হয়েছে কিন্তু খেতে বসতে দেরি হলে ঝুলের তলানি, দুইবেলা রাজভোগ কিন্তু তৃতীয়বেলা নিরামিষ। কম্পিটিশন-এর বেলা যা হয়! সেই তৃতীয়বেলা ( রাত আর সকালেই সব সুখাদ্য সাবাড়) রুবি আপা ছোট্র একটি খলুই হাতে গোপাটের দিকে হাঁটা ধরত, সঙ্গে আমি, কেন জানি না আমার সেই চালের মটকার কথা মনে পড়ে যেত, না হলে অল্প কিছু জায়গা, প্রতিদিন সেখানে শাক জন্মায় কীভাবে? নরম তুলতুলে গুচ্ছ গুচ্ছ চেরি শাক! গণহারের নিরামিষে অরুচি ছিলো, তাই দুজনের হয়ে যাবে বুঝলেই ফিরে আসত সে...
পিপ্পুলের জোড় পেয়ে আমি কি লেখকের সাথে কোনও বন্ধন খুঁজে পেলাম?
লেখকের' বৃষ্টি চিহ্নিত জল' গল্প গ্রন্থটি জোগাড় করি দেশ থেকে, তারপর চোখের সামনে ফেলে রাখি কিছুদিন, ইন্দুর-বিড়াল খেলি। রয়ে সয়ে খাওয়া আর কী!
অনেক অনেক গ্রন্থ গোগ্রাসে খাওয়ার অনেক পর জানতে পারি ওগুলো ছিলো বিখ্যাত সব খাবার, খিদে মরে গেলে স্বাদের প্রশ্ন আসে, স্বাদ বুঝার জন্য আবার খেতে হয়েছে, তারপর আসে রুচির ব্যাপার স্যাপার। তাই আজকাল কিছুটা চতুর হয়েছি বলা যায়। মাঝে মাঝে যেকোনো একটি পৃষ্ঠা উলটে দু-একটি লাইন পড়ি, পড়েই বই ভাঁজ করে রেখে দিই, ভাবখানা- 'এই দুই লাইন যদি রসের ইঙ্গিত দিতে পারে তবে আসন গেড়ে বসবো হু....'
গ্রন্থটিতে বেশ কিছু গল্প আছে, বোঝা যায় খুব যাচাই বাছাই করেই বইটি প্রকাশ করেছেন লেখক! এক-একটি গল্পের মাঝে এক-দুদিন করে সময় নিয়েছি আমি। যে কোনও অথবা সবগুলো গল্প নিয়েই কথা বলা যায়, আমি ভুলেও সেদিক দিয়ে যাচ্ছি না, সেই মহান দায়িত্ব গ্রন্থালোচকদের। গল্পের ভাষা, বয়ন ভঙ্গি, প্যাটার্ন, দৃশ্যকল্প, আধুনিক-উত্তারাধুনিক, জাদুবাস্তবতা- এইসব আলোচকদের বিষয়। আমি বলব সেই গল্পের কথা, যা আমাকে শেষ পর্যন্ত পাঠতৃপ্তি দেবে, যেটি আমাকে কিছু ভালোলাগার মুহূর্তে জড়িয়ে রাখবে। আজ শুধু একটি গল্পের গল্প বলব...
'সুবলসখার বিবাহ বৃত্তান্ত' গল্পটি পড়ে আমি কিছুক্ষণ থ' মেরে বসেছিলাম। গল্পের গল্পটি পড়ে বিমোহিত হয়ে পড়েছিলাম, তারপর তার ভেতরের গল্পটি আমাকে বেশ কিছুদিন অন্যমনস্ক করে রেখেছিল... বিয়ে করতে যাচ্ছে সুবলসখা, ঠিক সুবল ও যাচ্ছে না, বরযাত্রী যাচ্ছে বহুদূরের একটি গ্রামে, বর যাবে মহাজনের খাটনি খেটে লগ্ন লাগার আগে আগে... বিয়েতে বরের পক্ষ থেকে কোনো দাবি দাওয়া নেই, শুধু চারটি দিঘা ধানের ভাত খেতে দিতে হবে বরযাত্রীদের, মা হৈমবালার এই একটি প্রত্যাশা, সঙ্গে যদি সামান্য মাছের ঝোল হয়, তার মনোবাসনা পূর্ণ হয়।
বরযাত্রী গুটিকয় মানুষ, ঠিক মানুষও নয়, ভাই, বাল্যবন্ধু, পড়শিনি দুই চপলা, ঘুমঘোরে থাকা একটি তরুণ, আর রেডিও শচীন। সে-ই বরযাত্রীর শোভা, বাকি সবাই দিঘা ধানের ভাতস্বাপ্নিক কিছু ক্ষুধার্ত মানুষ...
নৌকাযোগে বরযাত্রী রওয়ানা দিয়েছে, হাওরে টলটলা পানি, ভিন্ন ভিন্ন হাওর পাড়ি দিচ্ছে তারা ভিন্ন ভিন্ন গল্পে। পাঠক হিসেবে আমি তাদের সঙ্গে যাচ্ছি যেন নৌকার পিছু পিছু কেটে যাওয়া চোরাস্রোত হয়ে। ঘুমপিয়াসী গোলক জল দেখলেই জলপরীকে দেখে, ছুটে যাওয়া নৌকার তলদেশে যথারীতি এক জলকন্যাকে দেখে ফেলে সে, রেডিও কানে নিয়েও শচীন পুরুষ হয়ে উঠতে থাকে একই জলযাত্রায়... বিয়েবাড়ির ঘাটে নৌকা ভিড়ে, জঠিল আবহ তৈরি হয় জলঘেরা বাড়িটিকে ঘিরে, জঠিলতার হেতু দিঘা চালের ভাত, দিঘা চাল নয়, শেষ পর্যন্ত সাধারণ ভাত। বিয়ে বাড়িতে আরেকটি ঝামেলাও যন্ত্রণা দিচ্ছে কনে পক্ষকে, কনেকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে কনের অপ্রাপ্ত বয়স্ক অনুজাকে কনে সাজিয়ে বসিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে কিন্তু আসল কনে না পাওয়া বা লাপাত্তা হয়ে যাওয়াটা কাউকে তেমন বিচলিত করছে না, যা নিয়ে ক্যাচাল বেঁধেছে তা বর, বিয়ের আসর থেকে ভাল বর শচীনকে চুরির পায়তারা করছে ভাতের মালিক চেয়ারম্যান! অথচ শচীন বর-ই নয়, এমনকি দ্বিতীয় দফায় পাকড়াও করা সুদামাসখাও এই বিয়ের বর নয়, বর সুবলসখা তখনও মহাজনের আড়তে... সবচেয়ে বড় ক্যাচাল বেঁধেছে ভাত নিয়ে, ভাতের কোনো নামগন্ধ নেই বিয়ে বাড়িতে, সবার আর কোনো প্রত্যাশা নেই এই মুহূর্তে, শুধু দিঘা চালের দুটো ভাত!
গল্প এই জায়গায় এসে আড়মোড়া ভাঙে, ভাত-ই সব, হাওরের জলে যে-জলপরীর-জন্য হাহাকার করে উঠেছিল গোলকের মন, সেই বিয়ের কনে, ঘরে ভাত নেই অথচ দুয়ারে বরযাত্রী, অগত্য জল-ই নিরাপদ আশ্রয়, সকল অপমান কেবল জল-ই ধুয়ে দেয়! তখন জানতে পারি, শুধু এই কনে নয়, বিয়ের যুগ্যি আরও আরও তরুণী ভাতের অভাবে কারো হাত ধরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় না, অন্যকোনও অন্ধকার গলি বেছে নেয় না, স্রেফ জলে নেমে যায়, যেমন করে কাঙ্ক্ষিত সোনার কলসি জলে নেমে যায় যথার্থ মানুষের অভাবে, সামান্য ভুলে...
শুধুমাত্র ভাতের অভাবে তরুণী তরুণী মানবীরা জলের ভেতর ঘুমিয়ে থাকে শেওলা জড়িয়ে...
গল্পটি আমাকে এই মুহূর্তেও আনমনা করে রেখেছে, অন্যকথা বলতে বসেছিলাম, হয়ত অন্যকোনও দিন আমি সেই গল্পটি বলব...
স্মৃতিচারণমূলক একটি লেখা, যেখানে দেশ ছেড়ে আসার যাতনাটাই প্রবল, ডায়াস্পোরা ব্যক্তিমাত্রই জানেন মাতৃভূমি ছেড়ে আসার বেদনা মাঝে মাঝে গরম তেলে পাঁচফোড়নের বাগাড়সম অগোপনীয় একটি কান্না, কখনও কখনও আসরেও চোখের বাঁধ ভেঙে পড়ে, এই কান্না কেবল খুব ভাল পিপ্পুল শাক রাঁধতে-পারা মায়ের জন্য নয়, আজন্ম বাঁজা জলপাই গাছটির জন্যও, বাঁজা বলে অনেক খোঁটা দিয়েছি বলে অনুতপ্তেরও কান্না...
লেখকের মা খুব পরিপাটি করে শাক রাঁধেন, ছেলের প্রিয় পিপ্পুল শাক, হয়ত ছেলের প্রিয়ই না, এই ঝাঁঝালো পাতাটি কিন্তু মায়ের কাছে তার পুত্রের প্রিয় খাবার, অথচ সেই রান্নাটি মা চোখ ভিজিয়ে ভিজিয়ে শেষবারের মত রাঁধতে পারেন নি... এই জায়গায় এসে পিপ্পুলের সাথে আমার নিজের প্রিয় ( হয়ত প্রিয় নয়) একটি শাক এসে জোড় বাঁধে! বছরে দুইবার আমরা নানাবাড়ি যেতাম, নানাবাড়ির সাথে ভূমিগত কিছু ব্যাবধান ছিল আমাদের বাড়ির, আমাদের টিলা-টক্করের গ্রাম, তাদের ভেজা ভেজা জলাভূমি, মামাদের বিশাল পরিবার, পাঁচ কেজি মাংস রান্না হয়েছে কিন্তু খেতে বসতে দেরি হলে ঝুলের তলানি, দুইবেলা রাজভোগ কিন্তু তৃতীয়বেলা নিরামিষ। কম্পিটিশন-এর বেলা যা হয়! সেই তৃতীয়বেলা ( রাত আর সকালেই সব সুখাদ্য সাবাড়) রুবি আপা ছোট্র একটি খলুই হাতে গোপাটের দিকে হাঁটা ধরত, সঙ্গে আমি, কেন জানি না আমার সেই চালের মটকার কথা মনে পড়ে যেত, না হলে অল্প কিছু জায়গা, প্রতিদিন সেখানে শাক জন্মায় কীভাবে? নরম তুলতুলে গুচ্ছ গুচ্ছ চেরি শাক! গণহারের নিরামিষে অরুচি ছিলো, তাই দুজনের হয়ে যাবে বুঝলেই ফিরে আসত সে...
পিপ্পুলের জোড় পেয়ে আমি কি লেখকের সাথে কোনও বন্ধন খুঁজে পেলাম?
লেখকের' বৃষ্টি চিহ্নিত জল' গল্প গ্রন্থটি জোগাড় করি দেশ থেকে, তারপর চোখের সামনে ফেলে রাখি কিছুদিন, ইন্দুর-বিড়াল খেলি। রয়ে সয়ে খাওয়া আর কী!
অনেক অনেক গ্রন্থ গোগ্রাসে খাওয়ার অনেক পর জানতে পারি ওগুলো ছিলো বিখ্যাত সব খাবার, খিদে মরে গেলে স্বাদের প্রশ্ন আসে, স্বাদ বুঝার জন্য আবার খেতে হয়েছে, তারপর আসে রুচির ব্যাপার স্যাপার। তাই আজকাল কিছুটা চতুর হয়েছি বলা যায়। মাঝে মাঝে যেকোনো একটি পৃষ্ঠা উলটে দু-একটি লাইন পড়ি, পড়েই বই ভাঁজ করে রেখে দিই, ভাবখানা- 'এই দুই লাইন যদি রসের ইঙ্গিত দিতে পারে তবে আসন গেড়ে বসবো হু....'
গ্রন্থটিতে বেশ কিছু গল্প আছে, বোঝা যায় খুব যাচাই বাছাই করেই বইটি প্রকাশ করেছেন লেখক! এক-একটি গল্পের মাঝে এক-দুদিন করে সময় নিয়েছি আমি। যে কোনও অথবা সবগুলো গল্প নিয়েই কথা বলা যায়, আমি ভুলেও সেদিক দিয়ে যাচ্ছি না, সেই মহান দায়িত্ব গ্রন্থালোচকদের। গল্পের ভাষা, বয়ন ভঙ্গি, প্যাটার্ন, দৃশ্যকল্প, আধুনিক-উত্তারাধুনিক, জাদুবাস্তবতা- এইসব আলোচকদের বিষয়। আমি বলব সেই গল্পের কথা, যা আমাকে শেষ পর্যন্ত পাঠতৃপ্তি দেবে, যেটি আমাকে কিছু ভালোলাগার মুহূর্তে জড়িয়ে রাখবে। আজ শুধু একটি গল্পের গল্প বলব...
'সুবলসখার বিবাহ বৃত্তান্ত' গল্পটি পড়ে আমি কিছুক্ষণ থ' মেরে বসেছিলাম। গল্পের গল্পটি পড়ে বিমোহিত হয়ে পড়েছিলাম, তারপর তার ভেতরের গল্পটি আমাকে বেশ কিছুদিন অন্যমনস্ক করে রেখেছিল... বিয়ে করতে যাচ্ছে সুবলসখা, ঠিক সুবল ও যাচ্ছে না, বরযাত্রী যাচ্ছে বহুদূরের একটি গ্রামে, বর যাবে মহাজনের খাটনি খেটে লগ্ন লাগার আগে আগে... বিয়েতে বরের পক্ষ থেকে কোনো দাবি দাওয়া নেই, শুধু চারটি দিঘা ধানের ভাত খেতে দিতে হবে বরযাত্রীদের, মা হৈমবালার এই একটি প্রত্যাশা, সঙ্গে যদি সামান্য মাছের ঝোল হয়, তার মনোবাসনা পূর্ণ হয়।
বরযাত্রী গুটিকয় মানুষ, ঠিক মানুষও নয়, ভাই, বাল্যবন্ধু, পড়শিনি দুই চপলা, ঘুমঘোরে থাকা একটি তরুণ, আর রেডিও শচীন। সে-ই বরযাত্রীর শোভা, বাকি সবাই দিঘা ধানের ভাতস্বাপ্নিক কিছু ক্ষুধার্ত মানুষ...
নৌকাযোগে বরযাত্রী রওয়ানা দিয়েছে, হাওরে টলটলা পানি, ভিন্ন ভিন্ন হাওর পাড়ি দিচ্ছে তারা ভিন্ন ভিন্ন গল্পে। পাঠক হিসেবে আমি তাদের সঙ্গে যাচ্ছি যেন নৌকার পিছু পিছু কেটে যাওয়া চোরাস্রোত হয়ে। ঘুমপিয়াসী গোলক জল দেখলেই জলপরীকে দেখে, ছুটে যাওয়া নৌকার তলদেশে যথারীতি এক জলকন্যাকে দেখে ফেলে সে, রেডিও কানে নিয়েও শচীন পুরুষ হয়ে উঠতে থাকে একই জলযাত্রায়... বিয়েবাড়ির ঘাটে নৌকা ভিড়ে, জঠিল আবহ তৈরি হয় জলঘেরা বাড়িটিকে ঘিরে, জঠিলতার হেতু দিঘা চালের ভাত, দিঘা চাল নয়, শেষ পর্যন্ত সাধারণ ভাত। বিয়ে বাড়িতে আরেকটি ঝামেলাও যন্ত্রণা দিচ্ছে কনে পক্ষকে, কনেকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে কনের অপ্রাপ্ত বয়স্ক অনুজাকে কনে সাজিয়ে বসিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে কিন্তু আসল কনে না পাওয়া বা লাপাত্তা হয়ে যাওয়াটা কাউকে তেমন বিচলিত করছে না, যা নিয়ে ক্যাচাল বেঁধেছে তা বর, বিয়ের আসর থেকে ভাল বর শচীনকে চুরির পায়তারা করছে ভাতের মালিক চেয়ারম্যান! অথচ শচীন বর-ই নয়, এমনকি দ্বিতীয় দফায় পাকড়াও করা সুদামাসখাও এই বিয়ের বর নয়, বর সুবলসখা তখনও মহাজনের আড়তে... সবচেয়ে বড় ক্যাচাল বেঁধেছে ভাত নিয়ে, ভাতের কোনো নামগন্ধ নেই বিয়ে বাড়িতে, সবার আর কোনো প্রত্যাশা নেই এই মুহূর্তে, শুধু দিঘা চালের দুটো ভাত!
গল্প এই জায়গায় এসে আড়মোড়া ভাঙে, ভাত-ই সব, হাওরের জলে যে-জলপরীর-জন্য হাহাকার করে উঠেছিল গোলকের মন, সেই বিয়ের কনে, ঘরে ভাত নেই অথচ দুয়ারে বরযাত্রী, অগত্য জল-ই নিরাপদ আশ্রয়, সকল অপমান কেবল জল-ই ধুয়ে দেয়! তখন জানতে পারি, শুধু এই কনে নয়, বিয়ের যুগ্যি আরও আরও তরুণী ভাতের অভাবে কারো হাত ধরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় না, অন্যকোনও অন্ধকার গলি বেছে নেয় না, স্রেফ জলে নেমে যায়, যেমন করে কাঙ্ক্ষিত সোনার কলসি জলে নেমে যায় যথার্থ মানুষের অভাবে, সামান্য ভুলে...
শুধুমাত্র ভাতের অভাবে তরুণী তরুণী মানবীরা জলের ভেতর ঘুমিয়ে থাকে শেওলা জড়িয়ে...
গল্পটি আমাকে এই মুহূর্তেও আনমনা করে রেখেছে, অন্যকথা বলতে বসেছিলাম, হয়ত অন্যকোনও দিন আমি সেই গল্পটি বলব...
পরিচিতি
শিপা সুলতানা
গল্পকার।
3 মন্তব্যসমূহ
কুলদা দাদার এ গল্পটা আমিও পড়েছিলাম। মনে পড়ছে আপনার লেখাটা পড়ে। বড় চমৎকার বলেছেন। ধন্যবাদ
উত্তরমুছুনKi boli,na bolia sref dhum dhore bose thaki
উত্তরমুছুনAloconata, gronther golpo golpo aungike pakka samolocker porabasobator vitor die shipa sultana jemni kore upshthapon korlen ta satti upvoggo. Mughdo kabi.golpoker, critics @ shipa sultana.
নতুন করে "বৃষ্টি চিহ্নিত জল"পড়ার আগে এই লেখাটি পড়লাম। আলোচকের ভূমিকাটি খুবই ভালো লেগেছে।
উত্তরমুছুন