দেবাঞ্জন চক্রবর্তী'এর গল্প : পবন ধীবর

পবন ধীবরকে আপনি চেনেন?

যদি না চেনেন, আসুন আজ আপনাদের সঙ্গে তাঁকে আলাপ করিয়ে দিই। কি ভাবছেন? ছদ্মনাম? আজ্ঞে, তা নয়। পবন ধীবর নামে সত্যি একজন মানুষ এই মুহূর্তে এই পৃথিবীতে বাস করছেন। কথা হচ্ছে, পবন ধীবর কে এমন ব্যক্তি, যাঁকে চিনতে হবে? কী করেছেন তিনি ? বিশেষ এমন কোনো না কোনো কাজ করেছেন যার জন্য তাঁর নাম শোনার সৌভাগ্য হতে হবে ?

হা মশাইগণ। আমি আপনি—এই আমরা যারা নিজেদের বাবু ভেবে মনে মনে সব সময় গর্ববোধ করি, সেই আমার আপনার চাইতে এই পবন ধীবর একদম অন্য মেজাজের মানুষ। উদারা মুদারা বা তারা—কোনো মাত্রাতেই তাঁকে বাঁধা সম্ভব হয়নি। হয়ত উচিতও নয়। 

এতক্ষণে ধৈর্য চলে যেতে বসেছে নিশ্চয়ই। কে মশাই পবন ধীবর ? কী করেন তিনি ? এই সব কথা না বলে কেন এত ধানাই পানাই? যদি আপনি উৎকণ্ঠিত হয়ে থাকেন, আসুন, এই দিকে। ওই যে পবন ধীবরের পায়ের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি এসে পড়েছেন। দেখতে পাচ্ছেন তাঁর সুগঠিত দেহ, উজ্জ্বল একরাশ চুলের ঢেউ, সহাস্য মুখ। আর হ্যা, ভয় পাবেন না। সত্যিই পবন ধীবরের চোখটা ওরকমই। তাকাতে ভয় করে। কেমন সুদূর-কোনো প্রতিদৃষ্টি নেই। 

পবন ধীবরের চোখের দিকে বেশিক্ষণ তাকবেন না। আপনার মাথা বিমঝিম করবে। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, সুদূর বিপুল সুদূর তুমি যে বাজাও ব্যাকুল বাঁশরী—তাঁর জীবন্ত বর্ণনা হয়ে আছে পবনের দৃষ্টি। কী করেন পবন? আসুন। আপনাদের নিয়ে যাই পবনের কর্মস্থলে। আজ্ঞে না, অফিসে নয়। অফিসে অবশ্য পবন একটা কাজও করেন। সেই কাজটাই তিনি আবার করেন একান্তে তপস্যার মতো করে। চলুন যাওয়া যাক তাঁর স্টুডিওতে। কী ভাবছেন? ধুর, এ আবার কী রকম স্টুডিও? ভেঙে-পড়া একটা বড়সড় কুঁড়েঘর বলেই তো মনে হচ্ছে। 

বাইরে থেকে যেটাকে নেহাতই ভাঙাচোরা একটা বিরাটি গোছের কুঁড়েঘর মনে হচ্ছে তার দরজাটা, যাকে আপনি ঝাঁপও বলতে পারেন, ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই--ওকি! এখনই চোখ কপালে উঠে যাচ্ছে কেন? এখন তো সবে শুরু। দেখুন দেখুন। মন ভরে দেখুন। প্রাণ জুড়িয়ে দেখুন। 

হ্যাঁ, হয়তো আপনি ঠিকই আন্দাজ করেছেন। না, হলে ভাবনা ভুলও হতে পারে। তবে কৌতূহল আর বাড়ানো ঠিক নয়। তাতে শেষ পর্যন্ত সেটা আর বজায় নাও থাকতে পারে। তাই জেনে নেওয়াই ভাল। পবন ধীবর একজন ছবি আঁকিয়ে। যাকে ইংরেজিতে বলে আর্টিস্ট। আর ঠিক সামনে যে বিশাল ক্যানভাসটা দেখা যাচ্ছে—বাজি ধরে বলতে পারি অত প্রাণময় ছবি আপনি কখনও দেখেননি। ফিরোজা নীল, তীব্র নীল থেকে ফিকে হতে হতে আকাশী রঙের জলের সঙ্গে আকাশ মিশে গেছে উধাও দূরত্বে। ছবির সামনে দাঁড়ালে আশ্চর্য অনুভূতি হয়। 

স্টুডিও থেকে, যদি এটাকে আদপেই কোনো স্টুডিও বলা যায়—সমুদ্র মাত্র এক কিলোমিটার দূরে। ছবির সামনে দাঁড়ালে আপনি তাজা বাতাসের গন্ধ পাচ্ছেন। এই ক্যানভাসটায় সমুদ্রের সকালের ছবি আছে। চারদিকে অলস ব্যস্ততা। দশ ফুট চওড়া ছয় ফুট লম্বা ক্যানভাস তেলরঙে আঁকা। গ’লে গ’লে পড়ছে সূর্যের হলুদ। ঢেউয়ের চূড়ায় রঙ ভাঙছে| পবন ধীবরকে কয়েকবার প্রদর্শনীর কথা বলা হয়েছিল। রাজি হননি। কোনোরকম প্রচারে তার কোনো আগ্রহ নেই। পবন ছবি আঁকেন, না তপস্যা করেন—বলা মুশকিল। ছবিগুলো খুঁটিয়ে দেখে কোথাও কোনো ছবিতেই আমি চিত্রকারের নাম দেখতে পাইনি। নাম মাহাত্ম্যের এই সময়ে কেমন অবাক কাণ্ড। প্রশ্ন করতে পবন হেসেছেন। কোনো উত্তর দেননি। অথচ তার ছবির সামনে গিয়ে দাঁড়ালেই আপনি বুঝতে পারবেন আপনার শরীরের মধ্যে বিচিত্র অনুভূতির জন্ম হচ্ছে— যেরকমটা হয় কোনো বিশাল বা মহৎ কিছুর সামনে দাঁড়ালে। 


পবনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে তিন বছর। অত্যন্ত কঠোর অপ্রিয় দায়িত্ব পালনের জন্য জীবনে প্রথমবার সে সময় দক্ষিণ ভারতে যেতে হয়েছিল। মাদ্রাজে নেমে গোকক এক্সপ্রেস ধরে কাটপাডি স্টেশন থেকে নেমে যখন ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজে যাই—তখন সব শেষ। মাত্র বারো বছর বয়সে সায়ন শুয়েছিল। ভেলোরের মর্গে। ডাক্তারেরা রোগটা ধরতেই পারেনি। না। কলকাতায়, না ভেলোরে। শুধু জলের মতো টাকা খরচ, শুধু অনিঃশেষ উদ্বেগ। তার অবস্থা দ্রুত আরও খারাপ হচ্ছে বলে বাবা ভেলোর থেকে জানিয়েছিল। বলেছিল, চলে আয়। তোর মামা-মামিকে সামলাতে হবে--অবস্থা ভাল নয়। 


সেদিনই রাতের ট্রেনে মাদ্রাজ রওনা হয়েও ভেলোর পৌঁছে সায়নের মৃত্যুর খবরটা পাই। স্কুলে কৃতী ছাত্র, ক্লাবে কৃতী খেলোয়াড়—সবদিক থেকেই সম্ভাবনাময় প্রাণবন্ত ছেলেটি কিভাবে এবং কেন যে দুমাসের মধ্যে ওরকম হয়ে গেল—তা আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান জানাতে পারেনি।

মর্গ থেকে সদ্য কিশোরের দেহ বের করে ভেলোরের শ্মশান। কলকাতায় শ্মশান বলতে মোটামুটি পরিচ্ছন্ন জায়গা বোঝালেও ভেলোরের শ্মশান এখনও শ্মশানই। চারদিকে হাড়গোড় পড়ে আছে। ডোমের সায়নের বয়সী একটা ছেলে ছিল। বাবার কাজে সাহায্য করে। ছেলেটা ল্যাংড়া—একটা পায়ে পোলিও হয়েছিল। বারবার সে দেখছিল মৃত সায়নের মুখ। তারই বয়সের কেউ একজন । সেই শশ্মানে চিতা সাজাতে হয়েছিল ঘুঁটে দিয়ে। তার ওপর যৎসামান্য কাঠ। ওখানে লোকেরা মৃতদেহ সম্পূর্ণ দাহ করে না। চিল, কাক, শকুন, কুকুরের ভোগে লাগে অর্ধদগ্ধ শরীর। আমরা কয়েকজন অতি কষ্ঠে কাঠ যোগাড় করে প্রিয় ভাইটির দেহ স্মপূর্ণ দাহ করি। তারপর আবার মাদ্রাজে ফিরে আসি। 

অডিয়ারের দিকটায়, চেন্নাই শহরের কেন্দ্রীয় শহর থেকে তের-চৌদ্দ কিলোমিটার দক্ষিণে সমুদ্রের লাগোয়া এই এলাকায় কিছু কর্মী আবাসান আর কয়েকটা অতিথি আবাস আছে। বিক্ষিপ্ত মন শান্ত করতে প্রকৃতির চেয়ে যোগ্য কেউ নেই। বাড়ির অন্য আত্মীয়দের ট্রেনে তুলে দিয়ে কয়েকটা দিন অতিথি আবাসে থেকে যাওয়ার কথা ভাবলাম। 

প্রথম দিন শরীর এত ক্লান্ত ছিল—ঘুম শুধু ঘুম। কিছুই ভাবার ইচ্ছা ছিল না। দ্বিতীয় দিন চেতনা কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসতেই বাঙালি খোঁজা শুরু হল। কোনো নাম চোখে পড়ছে না। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী আবাসনের চৌকিদারকে জিজ্ঞাসা করতে সে বলল জি-নাইনটি। অর্থাৎ জি-নাইনটি ফ্ল্যাটে একজন বাঙালি থাকে। সেটা পাঁচ তলার ওপর। নাম জানতে চাইলে লেটার বক্স দেখিয়ে দিল।

লেটার বক্সেই আমি প্রথম পবন ধীবর নামটা দেখি। বাঙালি তো ? যাই হোক, ফ্ল্যাটে গিয়েই দেখতে হবে। কয়েক শো লেটার বক্সের ভিড়ে আর কোনো বাঙালি নাম চোখে পড়েনি। বিদেশ বিভূয়ে একজন বাঙালি হাতের কাছে থাকলে... 

দিনটা ছিল রবিবার। সরকারি হিসেবে ছুটির দিন। বলা যায় না, লোকটা যদি আলাপী হয়, কোনো পরিচয়সূত্র বের হয়, তাহলে কপালে থাকলে এই তেঁতুলপুরেও ডাল-ভাত জুটে যেতে পারে। ভেলোরে অবশ্য বাংলার ভাত মাছের হোটেল ছিল। মন ছিল না। খাওয়া হয়নি। চেন্নাইতেও শুনেছি। অন্নপূর্ণ হোটেল বলে একটা জায়গা আছে। শঙ্কর নেত্ৰালয়ে চোখের চিকিৎসা করতে আসা বাঙালিরা সেখানেই যায়। সেটা যে ঠিক কোথায়!

পবন ধীবর যদি আমাকে খেতে নাও বলে, নিশ্চয়ই অন্নপূর্ণর হদিস দিতে পারবে। অনেকরকম ভেবে দাড়ি কামিয়ে স্নান করে, ব্যাগ থেকে পরিষ্কার জামাকাপড় পরে একটা একটা করে সিঁড়ি ভেঙে পাঁচ তলায় উঠে পবন ধীবরের ফ্ল্যাটটা যখন খুঁজে বের করি, তখন দুপুর বারোটা বেজে কয়েক সেকেণ্ড হয়েছে। সারা শরীর ভাত চাইছে ভাত। অথচ দেখুন— পবন ধীবরের দরজায় একটা বড় তালা ঝুলছে।

এরকম বদ রসিকতার কোনো মানে হয়! আডিয়ারের এই এলাকায় আশেপাশে কোনো হোটেলও নেই। এখান থেকে অন্তত এক কিলোমিটার দূরে কোনো খাবার দোকান পাওয়া গেলেও যেতে পারে। কিন্তু সেখানে যা পাব, তা খাওয়া যাবে তো? নাঃ। একটু পরে এসে আবার খোঁজ করতে হবে। মাত্র চারটে বিস্কুট এখন স্টকে আছে। 

জিব এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অনেকরকম ব্যায়াম চৌকিদারের সঙ্গে করার পরে জানা গেল পবন ধীবরকে সে কোথাও বের হতে দেখেনি। লোকটার বাড়িতেই থাকা উচিত।

অতএব আবার সিঁড়িভাঙা। আবার প্রত্যাশা। চিন্তায় এবার ডাল-ভাতের চেয়ে আরও কিছু। 

ও হরি! এখনও যে জি-নাইনটির দরজার তালা ঝুলছে। গেল কোথায় লোকটা? উপায় না দেখে পাশের ফ্লাটের নাম্বুরিপাদের ডোরবেল বাজাতে হল। দরজা খুলল দক্ষিণী কিশোরী। পবন ধীবরের কথা জিজ্ঞেস করতেই সে মৃদু হেসে আঙুল তুলে দেখিয়ে দিল ছাদের দিকে। স্পষ্ট ইংরেজি উচ্চারণে বলল, হি ইজ ইন দ্য স্টুডিও। গো টু দা রুফ টফ। 

আগে লক্ষ করিনি, এখন দেখলাম এক চিলতে কারনিস বের হয়ে আছে পাঁচতলার বারান্দার একপাশে। তার পাশেই একটা কাঠের সিঁড়ি—ছাদে উঠে গেছে। সিড়িটার কথা সরকারি পরিকল্পনায় নিশ্চয়ই ছিল না, পরে কেউ বানিয়ে নিয়েছে।

ভাতের জন্য তখন এভারেস্টও চড়া যেতে পারি, ওরকম সিঁড়ি তাতে কিছুই না। উঠে পড়লাম ছাদে। আর তখনই পবন ধীবর বের হয়ে আসছিলেন তাঁর স্টুডিও থেকে। ছাদটা বিরাট বলে নিচ থেকে স্টুডিওর কিছুই দেখা যায় না। এখান থেকে সামনের বঙ্গোপসাগর স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়েই বললাম, “আপনিই নিশ্চয়ই পবন ধীবর? আপনার কথা শুনেছি।”

কত বয়স হতে পারে? চল্লিশ পায়তাল্লিশ, পঞ্চাশ ? মাথায় কাঁচাপাকা চুল, সুগঠিত দেহ। পবন ধীবরের কথা আমি নিশ্চয়ই শুনেছি। শুনেছি আজই সকলে বাঙালির খোঁজ করার সময়। চৌকিদারের কাছে। চৌকিদার অবশ্য আমাকে বলেনি পবন চিত্রকর। ছবি আঁকেন।

তারপরই তাঁর ছবির সঙ্গে পরিচয় শুরু হল। বলতে কি—প্রথম ছবিটাই দেখেছিলাম আধঘণ্টা ধরে। যতই দেখছি, অনুভূতি হচ্ছে। ছবি বুঝি, এরকম দাবি আমি করি না। তবুও নয় নয় করেও কয়েক হাজার ছবি দেখেছি। বই-এ এবং এগজিবিশনে। কখনও পবনের ছবির মতো ছবি দেখিনি। এত প্রাণময়!

সেই আলাপের শুরু। পবন কেন্দ্রীয় সরকারি দপ্তরে চাকরি করেন। ছবি আঁকারই কাজ। অকৃতদার কোনো রকম নেশাহীন। যখনই দিন সাতেকের ছুটি পাই, কলকাতা থেকে চলে আসি মাদ্রাজে। যাতায়াতেই তিন-চার দিন লেগে যায়। কিন্তু পবন ধীবরের আকর্ষণ অপ্রতিরোধ। ভুল বললাম। পবন ধীবর সেরকম আকর্ষণী নয়। তাঁর ছবিগুলো অসাধারণ। পবন নিজের আনন্দে ছবি আঁকেন।

প্রথম দিনের আলাপের পরেই তার ফ্ল্যাটে তাঁরই রান্না করা মুরগির মাংস আর ভাত খাবার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। পবনের সঙ্গে আমার অনেক অমিল। তিনি প্রায় কথাই বলতে চান না, আমি ক্রমাগত বকবক করি। আত্মপ্রচারে পবন একটিও উৎসাহী নন, আমি সারাদিনই আমি আমি করছি। সতের বছর আগে সেই যে চাকরি নিয়ে নদীগ্রামের কাছে সোনাচুরার পাশে গাংড়াচারের পবন ধীবর বাংলা ছেড়েছেন—আর কোনোদিন দেশে যাননি। 

পবনের ভাইবোন নেই। মা যতদিন জীবিত ছিলেন, ছেলের কাছেই ছিলেন। কাজের সূত্রে তিন-চার বছরে একবার অন্তত কলকাতা তাঁকে যেতেই হয়। পবনের টিভি-রেডিও নেই, প্রচুর গল্পের বই নেই। লক্ষ করেছি সকালের খবরের কাগজ পর্যন্ত তিনি পড়েন না। পবনের ফ্ল্যাটে তিন তিনটি ঘর অথচ বসার জায়গাই প্রায় নেই। ছবিতে ছবিতে ভর্তি। ফ্ল্যাটের বাইরে তাঁর আরও দুটো স্টুডিও—একটা ছাদের ওপর, যেখানে প্রথম আমাদের দেখা হয়েছিল, যে ছবিতে সমুদ্রের হাওয়ার মধ্যে আমি পেয়েছিলাম ভেলোরের শ্মশানের পোড়া কাঠের গন্ধ। আর একটা স্টুডিও সমুদ্রের কাছে। 

পবনের সমস্ত ছবিতেই সমুদ্র। সমুদ্রের নানা রঙ, নানা সময়, নানা মুডের চিত্রণ। ছবিগুলোর সামনে দাঁড়ালে আপনি সমুদ্রের তাজা বাতাসের গন্ধ পাবেন। জল, পাখি, ঢেউ, নৌকোর দেখা পাবেন। এত বর্ণবিহ্বল ছবি, এরকম সমুদ্র, এতরকম সমুদ্র যে কেউ আঁকতে পারে, না দেখলে বিশ্বাস হবে না। সত্যি বলছি, এমনকি দেখলেও বিশ্বাস হবে না। ধীবরদের সেই গ্রামে শিশু বয়স থেকেই ছোটোরা নৌকা তৈরি করে কাঠ দিয়ে। তাতে মাস্তুল থাকে, পাল থাকে, বৈঠাও থাকে। সব ঠিক আসলেরই মতো। গত তিন বছরে পবন অন্তত আরও তিরিশটা নতুন ছবি এঁকেছেন। তাঁর চেহারা আরও ছন্দোময় হয়ে উঠেছে। সবগুলি নতুন ছবিতেই তাঁর বিষয় আবার সেই সমুদ্র। কখনও ভোরের, কখনও রাতের, কখনও জ্যোৎস্নার, কখনও কুয়াশাময়। বাতাসের তাজা গন্ধ আছে প্রতিটি ছবিতেই।

পবন ধীবরের যখন সাত বছর বয়স, তখন তাঁর বাবা সাহেব ধীবর সমুদ্রে গিয়েছিলেন। তিনি আর ফেরেননি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ