রাতটা চব্বিশে বোশেখের আর সময়টা পোষ্টডিনার । সন্ধ্যেটা ছিল বৃষ্টিময়তায় মাখা, মনটা ছিল প্রাক-রবীন্দ্রজয়ন্তীর আড্ডার মেজাজে । ঋক, ঋভু, ঋজু আর ঋতম এর হাতে তৈরী ব্যান্ডের বার্ষিক প্রোগ্রাম "ঋ এ রবি, রাতের তারা"..তারই জোর প্রস্তুতি | প্রাণ চাঞ্চল্যে ভরপুর, নতুন যৌবনের এই চারজন দূতের অনেক স্বপ্ন মনে আর স্বপ্ন নিয়েই এই চঞ্চলতা । গ্রুপচ্যাটে চারজনের প্রতিদিনের নেটালাপে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ পরিকল্পনার রূপায়ণের প্রয়াস চলে। সেদিন ছিল প্রোগ্রামের আগের রাত । তাই উত্তেজনার পারদ হৈ হৈ করে উঠেছিল আর দুকুল-প্লাবি চারটি মন-নদীর চ্যাট-বক্স যেন উপছে পড়ছিল কথায়, কথায় আর কথায় ।
সেই স্বপ্ন নিয়েই রবীন্দ্রচর্চার প্রস্তুতি। বাংলাব্যান্ডের খুব রমরমা এখন বাংলায়। নিজেদের লেখা ও সুর করা গনের সাথে সাথে রবিঠাকুরকেও পাত্তা দেয় এরা। ইম্প্রোভাইজ করে, এক্সপেরিমেন্ট করে টেগোরকে নিয়ে। বড় সুন্দর এদের পরিবেশনা। চেষ্টা আছে খুব। সেই সাথে আছে ইনোভেশন। খরবায়ু বয় বেগে, চারিদিক চায় মেঘে ... গুনগুন করতে করতে ঋক ঢুকল ঘরে।
চারবন্ধু ডিজিটালি গপ্পে বসেছে সে রাতে। যে যার মত ল্যাপটপ খুলে লগ ইন করল।
ফুটকি আলোর সবুজ বাতিঘরে চারবন্ধুর তখন রবীন্দ্রজয়ন্তীর জোর কদম প্রস্তুতি চলছে। ফোনের বিল না পুড়িয়ে এ বেশ ভালো আইডিয়া। এ কে তো নতুন ব্যান্ড তারা। পয়সাকড়ি বিশেষ নেই হাতে।ঘন ঘন প্রোগ্রাম করলে তবু একটু পরিচিতি হয়। পাঁচকান হয় তাদের গানের কথা।
কি রে ? কি বুঝছিস? কাল সন্ধ্যেবেলায় কালবোশেখি হয়ে সব ভেস্তে দেবেনাতো ? আমাদের তো খোলামাঠে প্রোগ্রাম। ঋভু বলল
ফুরফুরে মেজাজে ঋক বলল, বৃষ্টি এসে গেলে স্ক্রিপ্ট বদলে বৃষ্টির গান ধরব আমরা। রবিঠকুরের ভান্ডারে কি কম পড়িয়াছে?
ঋতম বলল্, ঐজন্যেই তো বলেছিলাম সামিয়ানা ভাড়া করতে বস্! তোরা তো বেশি বুঝিস একটু।রবীন্দ্রজয়ন্তী আর বৃষ্টি তো প্যারালাল চলে, দেখে আসছি ছোট্টবেলা থেকে।
ঋক বলল্, পকেট গড়ের মাঠ, আর তুই কেবল খরচা বাড়িয়েই চলিস।
ঋজু বলল্, তাও তো আমি ডিজিটাল কার্ড বানিয়ে পাবলিসিটি করেছি সোশ্যাল নেটে। কার্ড ছাপিয়ে আরো অনেক পয়সা নষ্ট হত। দর্শকদের জন্য নো মিষ্টিফিষ্টি, নো চা-সরবত। এমনি এসো বাপু, গান ভালোলাগে তো বসে শোনো নয়ত ফোটো। সাফ কথা। আমরা কোয়ালিটি পারফর্মার। না শুনলে তোমার মিস। আমাদের নো প্রফিট, নো লস।
ঋক : তাহলে ঋজু শুরু করছে আবৃত্তি দিয়ে "তোমারে নমি এ সকল ভুবন মাঝে ...."
ঋভু : এরপরে ঋক তোর গান "তুমি কি কেবলি ছবি, শুধু পটে লিখা...."
ঋজু : নেকস্ট ঋক, তোর নিজের কথায় আর সাথে গীতাঞ্জলি থেকে পাঠ ...
ঋতম : এবার আবার ঋভুর সোলো গান "শুধু তোমার বাণী নয় গো, হে বন্ধু হে প্রিয়..."
ঋক : এবার আমাদের কোরাস "প্রথম আদি তব শক্তি....." তাই তো রে?
ঋভু : হ্যাঁ, ঠিক আছে...এবারে সঞ্চয়িতা থেকে বনবাণীর উদ্বোধন কবিতার অংশ, আমার আর ঋজুর দ্বৈত আবৃত্তি "ডেকেছ আজি, এসেছি সাজি হে মোর লীলাগুরু ---"
ঋভু : মানে "নৃত্যলোল চরণতলে মুক্তি পায় ধরা, ছন্দে মেতে যৌবনেতে রাঙিয়ে ওঠে জরা" পুরোটা তো ?
ঋতম : এবার আবার আমাদের চারজনের কোরাস "আলোকের এই ঝরণাধারায় ধুইয়ে দাও "
ঋক : ঋতম, ঠিক আছে, মিউজিসিয়ানদের পেমেন্ট গুলো নিয়ে যাস খামে ভরে
ঋভু : ঋক, মাইক ওলা কে আবার বলে দিস, সময় মত পৌঁছে যেতে, সাউন্ডটা যেন ভালো দেয়, মনিটর দেয় যেন, দেখিস।
ঋজু : ঋতম, তুই তাহলে ফুল-মালা-মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে হাজির হচ্ছিস কাল
আর ঐ মিষ্টির দোকান আর শাড়ির দোকানের ব্যানারটা গিয়েই গাছের সাথে লাগিয়ে দিতে হবে মনে করে। আফটার অল আমাদের ইভেন্ট স্পনসর বলে কথা।
ঋতম : তাহলে কাল বিকেল ৫টা, সবুজবীথি, চাষীর বাগান মাঠ, আর শোন্ বাড়ির মা, বোন, কাকী, মাসী যে যেখানে আছে নিয়ে আসতে বলে দিস। এট লিস্ট ফাঁকা মাঠে গোল দিতে হবেনা তাহলে!
হঠাত্ পাবলিক চ্যাট রুমে আবির্ভাব এক অজ্ঞাতকুলশীল পঞ্চম অতিথির । ইথার তরঙ্গের বাতাস যেন ভারি হয়ে গেল নিমেষের মধ্যে । নিবে গেল ঘরের আলো, শুধু জ্বলতে লাগল ল্যাপটপের আলো.....
গেষ্ট : তোমাদের কিসের এত তোড়জোড় চলছে?
ঋক : আমাদের আগামীকাল রবিঠাকুরের সার্ধশতবর্ষ জন্মজয়ন্তীর একটা প্রোগ্রামের ব্যাপারে কথা হচ্ছে।
গেষ্ট: তোমরা এই সাইবার এজের তরুণেরা এখনও রবীন্দ্র চর্চা কর বুঝি?
ঋভু : মানে? রবীন্দ্রনাথ আমাদের শয়নে, স্বপনে, জাগরণে...
গেষ্ট : তার মানে তোমরা এখনো পড়?"তাল গাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে"
ঋক : কেন ? আপত্তি কোথায়?
গেষ্ট : তোমরা সহজ পাঠ পড়েছ?
ঋতম : না পড়ে আজ রবীন্দ্রনাথ বলে চেঁচাচ্ছি বুঝি?
গেষ্ট : তোমরা কেমন রবীন্দ্রনাথ পড় । আমাদের সময় আমরা পেয়েছি কালিদাসকে, আর পড়েছি বিদেশী সাহিত্য।
আচ্ছা তোমাদের কি মনে হয়না যে এই রবীন্দ্রনাথের জন্য কত শিল্পী আজ করে খাচ্ছে।
ঋতম : হ্যাঁ, ঠিক ই তো !
গেষ্ট : কিন্তু রবীন্দ্রনাথের গান, আবৃত্তি, নাটক এ নিয়ে তো দেশের সক্কলে কবিপ্রণাম জানাচ্ছে তা তোমরা কিছু নতুন জিনিষ ভাবছ না কেন?
গেষ্ট : পদার্থবিদেরা নিউটোনিয়ান মেকানিক্স বা যাকে তোমরা ক্লাসিকাল মেকানিক্স বল, তা থেকে এগিয়ে গিয়ে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সাথে কোলাকুলি করছে, সেখানে তোমাদের মত শিল্পীরা সেই রবীন্দ্রজয়ন্তীতে পড়ে রয়েছ?
ঋক : না, মানে ঠিক তা নয় ...
গেষ্ট : ছড়িয়ে দাও রবীন্দ্র ভাবনা ইন্টারনেটে, শুনছিলাম জেমস ক্যামেরন বলে একজন "অবতার" নামে একটি ছবি করেছেন !
তা তোমরা মাল্টিমিডিয়ায় পাল তুলে দাও না রবীন্দ্র স্মরণ-মননের ! "তাসের দেশ" পড়েছ নিশ্চয়ই , তা মাথায় আসেনা? তাসের দেশকে কেমন করে ত্রিমাত্রিক ভাবে বানানো যায় ? আজ দেড়শ বছর ধরে সেই গতানুগতিক রবীন্দ্রজয়ন্তী দেখে আসছি । তা তোমরা বাপু পরের বছরে এই তাসেরদেশ নৃত্যনাট্যটিকে যদি মাল্টিমিডিয়ার সাহায্যে মঞ্চস্থ করতে পার তাহলে বুঝি ! যেখানে তাসের দেশের বিচিত্র তাসেরা মানুষের চারপাশে নেচে কুঁদে সব অনুশাসনের কথা বলবে, আর দর্শকরা ৩ডি চশমা পরে দেখবে আর চেঁচিয়ে বলে উঠবে
"এলেম নতুন দেশে ....." অথবা গেয়ে উঠবে "আমরা নূতন যৌবনেরই দূত"
ঋক : খাসা চিন্তা ভাবনা ! আপনার ক্রিয়েটিভিটির তারিফ না করে পারছিনা ।
গেষ্ট : রিসোর্স কে ভাঙিয়ে খাচ্ছ খাও কিন্তু মনে রেখ, রিসোর্সের আর লিমিটেড বাট ক্রিয়েটিভিটি ইজ আনলিমিটেড !
ঋভু : এক্কেবারে ঠিক কথা বলেছেন । আপনার ইমেল আইডিটা দেবেন প্লিজ, আপনি আসুন না আমাদের অনুষ্ঠানে
গেষ্ট : "তুমি মোর পাও নাই পাও নাই পরিচয় "
ঋজু : দিন না আপনার ব্লগের ঠিকানা
গেষ্ট : ইমেল : bhanudada@parolok.com
আর ব্লগের ঠিকানা : http://rabindranath.geetanjali.com
"তোমাদের "ঋ এ রবি রাতের তারা"
উঠুক ফুটে আকাশপারে
আমি আছি, ছিলাম সাথে
যুগযুগান্ত বছর পরে"
ছেলে চারটি তখন উদাত্ত কন্ঠে গান ধরেছে " উতল হাওয়া, লাগল আমার গানের তরণীতে, উতল হাওয়া..."
হঠাৎ সকলের নেট কানেক্সন চলে গেল, কিন্তু ঘরের আলো জ্বলে উঠল দপ্ করে। ঠিক যেমন ভোল্টেজ বাড়লে হয়।
সেই স্বপ্ন নিয়েই রবীন্দ্রচর্চার প্রস্তুতি। বাংলাব্যান্ডের খুব রমরমা এখন বাংলায়। নিজেদের লেখা ও সুর করা গনের সাথে সাথে রবিঠাকুরকেও পাত্তা দেয় এরা। ইম্প্রোভাইজ করে, এক্সপেরিমেন্ট করে টেগোরকে নিয়ে। বড় সুন্দর এদের পরিবেশনা। চেষ্টা আছে খুব। সেই সাথে আছে ইনোভেশন। খরবায়ু বয় বেগে, চারিদিক চায় মেঘে ... গুনগুন করতে করতে ঋক ঢুকল ঘরে।
চারবন্ধু ডিজিটালি গপ্পে বসেছে সে রাতে। যে যার মত ল্যাপটপ খুলে লগ ইন করল।
ফুটকি আলোর সবুজ বাতিঘরে চারবন্ধুর তখন রবীন্দ্রজয়ন্তীর জোর কদম প্রস্তুতি চলছে। ফোনের বিল না পুড়িয়ে এ বেশ ভালো আইডিয়া। এ কে তো নতুন ব্যান্ড তারা। পয়সাকড়ি বিশেষ নেই হাতে।ঘন ঘন প্রোগ্রাম করলে তবু একটু পরিচিতি হয়। পাঁচকান হয় তাদের গানের কথা।
কি রে ? কি বুঝছিস? কাল সন্ধ্যেবেলায় কালবোশেখি হয়ে সব ভেস্তে দেবেনাতো ? আমাদের তো খোলামাঠে প্রোগ্রাম। ঋভু বলল
ফুরফুরে মেজাজে ঋক বলল, বৃষ্টি এসে গেলে স্ক্রিপ্ট বদলে বৃষ্টির গান ধরব আমরা। রবিঠকুরের ভান্ডারে কি কম পড়িয়াছে?
ঋতম বলল্, ঐজন্যেই তো বলেছিলাম সামিয়ানা ভাড়া করতে বস্! তোরা তো বেশি বুঝিস একটু।রবীন্দ্রজয়ন্তী আর বৃষ্টি তো প্যারালাল চলে, দেখে আসছি ছোট্টবেলা থেকে।
ঋক বলল্, পকেট গড়ের মাঠ, আর তুই কেবল খরচা বাড়িয়েই চলিস।
ঋজু বলল্, তাও তো আমি ডিজিটাল কার্ড বানিয়ে পাবলিসিটি করেছি সোশ্যাল নেটে। কার্ড ছাপিয়ে আরো অনেক পয়সা নষ্ট হত। দর্শকদের জন্য নো মিষ্টিফিষ্টি, নো চা-সরবত। এমনি এসো বাপু, গান ভালোলাগে তো বসে শোনো নয়ত ফোটো। সাফ কথা। আমরা কোয়ালিটি পারফর্মার। না শুনলে তোমার মিস। আমাদের নো প্রফিট, নো লস।
ঋক : তাহলে ঋজু শুরু করছে আবৃত্তি দিয়ে "তোমারে নমি এ সকল ভুবন মাঝে ...."
ঋভু : এরপরে ঋক তোর গান "তুমি কি কেবলি ছবি, শুধু পটে লিখা...."
ঋজু : নেকস্ট ঋক, তোর নিজের কথায় আর সাথে গীতাঞ্জলি থেকে পাঠ ...
ঋতম : এবার আবার ঋভুর সোলো গান "শুধু তোমার বাণী নয় গো, হে বন্ধু হে প্রিয়..."
ঋক : এবার আমাদের কোরাস "প্রথম আদি তব শক্তি....." তাই তো রে?
ঋভু : হ্যাঁ, ঠিক আছে...এবারে সঞ্চয়িতা থেকে বনবাণীর উদ্বোধন কবিতার অংশ, আমার আর ঋজুর দ্বৈত আবৃত্তি "ডেকেছ আজি, এসেছি সাজি হে মোর লীলাগুরু ---"
ঋভু : মানে "নৃত্যলোল চরণতলে মুক্তি পায় ধরা, ছন্দে মেতে যৌবনেতে রাঙিয়ে ওঠে জরা" পুরোটা তো ?
ঋতম : এবার আবার আমাদের চারজনের কোরাস "আলোকের এই ঝরণাধারায় ধুইয়ে দাও "
ঋক : ঋতম, ঠিক আছে, মিউজিসিয়ানদের পেমেন্ট গুলো নিয়ে যাস খামে ভরে
ঋভু : ঋক, মাইক ওলা কে আবার বলে দিস, সময় মত পৌঁছে যেতে, সাউন্ডটা যেন ভালো দেয়, মনিটর দেয় যেন, দেখিস।
ঋজু : ঋতম, তুই তাহলে ফুল-মালা-মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে হাজির হচ্ছিস কাল
আর ঐ মিষ্টির দোকান আর শাড়ির দোকানের ব্যানারটা গিয়েই গাছের সাথে লাগিয়ে দিতে হবে মনে করে। আফটার অল আমাদের ইভেন্ট স্পনসর বলে কথা।
ঋতম : তাহলে কাল বিকেল ৫টা, সবুজবীথি, চাষীর বাগান মাঠ, আর শোন্ বাড়ির মা, বোন, কাকী, মাসী যে যেখানে আছে নিয়ে আসতে বলে দিস। এট লিস্ট ফাঁকা মাঠে গোল দিতে হবেনা তাহলে!
হঠাত্ পাবলিক চ্যাট রুমে আবির্ভাব এক অজ্ঞাতকুলশীল পঞ্চম অতিথির । ইথার তরঙ্গের বাতাস যেন ভারি হয়ে গেল নিমেষের মধ্যে । নিবে গেল ঘরের আলো, শুধু জ্বলতে লাগল ল্যাপটপের আলো.....
গেষ্ট : তোমাদের কিসের এত তোড়জোড় চলছে?
ঋক : আমাদের আগামীকাল রবিঠাকুরের সার্ধশতবর্ষ জন্মজয়ন্তীর একটা প্রোগ্রামের ব্যাপারে কথা হচ্ছে।
গেষ্ট: তোমরা এই সাইবার এজের তরুণেরা এখনও রবীন্দ্র চর্চা কর বুঝি?
ঋভু : মানে? রবীন্দ্রনাথ আমাদের শয়নে, স্বপনে, জাগরণে...
গেষ্ট : তার মানে তোমরা এখনো পড়?"তাল গাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে"
ঋক : কেন ? আপত্তি কোথায়?
গেষ্ট : তোমরা সহজ পাঠ পড়েছ?
ঋতম : না পড়ে আজ রবীন্দ্রনাথ বলে চেঁচাচ্ছি বুঝি?
গেষ্ট : তোমরা কেমন রবীন্দ্রনাথ পড় । আমাদের সময় আমরা পেয়েছি কালিদাসকে, আর পড়েছি বিদেশী সাহিত্য।
আচ্ছা তোমাদের কি মনে হয়না যে এই রবীন্দ্রনাথের জন্য কত শিল্পী আজ করে খাচ্ছে।
ঋতম : হ্যাঁ, ঠিক ই তো !
গেষ্ট : কিন্তু রবীন্দ্রনাথের গান, আবৃত্তি, নাটক এ নিয়ে তো দেশের সক্কলে কবিপ্রণাম জানাচ্ছে তা তোমরা কিছু নতুন জিনিষ ভাবছ না কেন?
গেষ্ট : পদার্থবিদেরা নিউটোনিয়ান মেকানিক্স বা যাকে তোমরা ক্লাসিকাল মেকানিক্স বল, তা থেকে এগিয়ে গিয়ে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সাথে কোলাকুলি করছে, সেখানে তোমাদের মত শিল্পীরা সেই রবীন্দ্রজয়ন্তীতে পড়ে রয়েছ?
ঋক : না, মানে ঠিক তা নয় ...
গেষ্ট : ছড়িয়ে দাও রবীন্দ্র ভাবনা ইন্টারনেটে, শুনছিলাম জেমস ক্যামেরন বলে একজন "অবতার" নামে একটি ছবি করেছেন !
তা তোমরা মাল্টিমিডিয়ায় পাল তুলে দাও না রবীন্দ্র স্মরণ-মননের ! "তাসের দেশ" পড়েছ নিশ্চয়ই , তা মাথায় আসেনা? তাসের দেশকে কেমন করে ত্রিমাত্রিক ভাবে বানানো যায় ? আজ দেড়শ বছর ধরে সেই গতানুগতিক রবীন্দ্রজয়ন্তী দেখে আসছি । তা তোমরা বাপু পরের বছরে এই তাসেরদেশ নৃত্যনাট্যটিকে যদি মাল্টিমিডিয়ার সাহায্যে মঞ্চস্থ করতে পার তাহলে বুঝি ! যেখানে তাসের দেশের বিচিত্র তাসেরা মানুষের চারপাশে নেচে কুঁদে সব অনুশাসনের কথা বলবে, আর দর্শকরা ৩ডি চশমা পরে দেখবে আর চেঁচিয়ে বলে উঠবে
"এলেম নতুন দেশে ....." অথবা গেয়ে উঠবে "আমরা নূতন যৌবনেরই দূত"
ঋক : খাসা চিন্তা ভাবনা ! আপনার ক্রিয়েটিভিটির তারিফ না করে পারছিনা ।
গেষ্ট : রিসোর্স কে ভাঙিয়ে খাচ্ছ খাও কিন্তু মনে রেখ, রিসোর্সের আর লিমিটেড বাট ক্রিয়েটিভিটি ইজ আনলিমিটেড !
ঋভু : এক্কেবারে ঠিক কথা বলেছেন । আপনার ইমেল আইডিটা দেবেন প্লিজ, আপনি আসুন না আমাদের অনুষ্ঠানে
গেষ্ট : "তুমি মোর পাও নাই পাও নাই পরিচয় "
ঋজু : দিন না আপনার ব্লগের ঠিকানা
গেষ্ট : ইমেল : bhanudada@parolok.com
আর ব্লগের ঠিকানা : http://rabindranath.geetanjali.com
"তোমাদের "ঋ এ রবি রাতের তারা"
উঠুক ফুটে আকাশপারে
আমি আছি, ছিলাম সাথে
যুগযুগান্ত বছর পরে"
ছেলে চারটি তখন উদাত্ত কন্ঠে গান ধরেছে " উতল হাওয়া, লাগল আমার গানের তরণীতে, উতল হাওয়া..."
হঠাৎ সকলের নেট কানেক্সন চলে গেল, কিন্তু ঘরের আলো জ্বলে উঠল দপ্ করে। ঠিক যেমন ভোল্টেজ বাড়লে হয়।
লেখক পরিচিতি
ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়
জন্ম সাল ১৯৬৫।
জন্মস্থান আড়িয়াদহ।
বর্তমান আবাসস্থল : দক্ষিণ কলকাতা।
ছোটগল্প, প্রবন্ধ, ভ্রমণ কাহিনী, কবিতা, অণুগল্প লেখেন।
প্রকাশিত কবিতার বই : মোর ভাবনারে"।
রান্নার বই : ( English) 89 Recipes.
ভ্রমণকাহিনী : চরৈবেতি। ।
ছোটগল্প সংকলন : দ্বাদশী ।
প্রাপ্ত পুরস্কার : দ্বাদশ বেহালা বইমেলায়(২০০৯) কবিতার বই শ্রেষ্ঠ পুরষ্কারে সম্মানিত ।
রোমানিয়ান পত্রিকায় কবিতার অনুবাদের জন্য রোমানিয়ান ব্লগের প্রেসকার্ড ।
সম্পাদিত ই-পত্রিকা: papyrus.sonartoree.com
ইমেইল-ঠিকানা : indira@sonartoree.com
3 মন্তব্যসমূহ
সপ্রতিভ ও সময়ানুগ। "চারিদিক চায় মেঘে", ছায় হবে না?
উত্তরমুছুনখুব প্রয়োজনীয় একটি লেখা।
উত্তরমুছুনদারুন লেখা !
উত্তরমুছুন