গল্পকারের স্বাক্ষাতকার: মেহেদী উল্লাহ

‘তবে আমি যা বলেছি তা পাঠকভেদে নানা রকম অর্থ হবে’

স্বাক্ষাতকার গ্রহণ: অলাত এহ্সান



মেহেদী উল্লাহ এ সময়ের গল্পকার। পেশা সাংবাদিকতা। ‘পোস্টমাস্টার ও অন্যান্য গল্পে’র পাণ্ডুলিপির জন্যে পেয়েছেন জেমকন তরুণ কথাসাহিত্য-২০১৩ পুরস্কার। তিনি শুধু গল্প লেখেন না-সময়কেও লেখেন। সময়ের পরম্পরা তাঁর চিন্তার ক্ষেত্রে স্বচ্ছভাবে উপস্থিত। ফলে তিনি শেকড়লগ্ন গল্পকার। তিনি মনে করেন রবীন্দ্রনাথ, তিন বন্দ্যোপাধ্যায়, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়, সুবোধ ঘোষ, বিমল কর, কমলকুমার, অমিয়ভূষণ, হাসান আজিজুল হক, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এরা তো আছেনই সর্বশেষ শহীদুল জহির যেখানে শেষ করেছেন সেখান থেকেই তার শুরু করা উচিত।
অমর একুশে বইমেলা ’১৫-এ শুদ্ধস্বর প্রকাশনী থেকে বের হচ্ছে গল্পগ্রন্থ ‘রিসতা’। তার সঙ্গে কথোপকথোনে তার লেখক প্রস্তুতি, লেখার প্রকরণ ও চিন্তার বিভিন্ন দিক উঠে এসেছে। তার সঙ্গে কথা বলেছেন গল্পকার অলাত এহ্সান।গ



অলাত এহ্সান: ‍গল্প লেখার প্রস্তুতি আপনার অনেকদিনের, কিন্তু গল্পলেখা শুরু করেছেন কবে?

মেহেদি উল্লাহ: প্রথম গল্পলেখা প্রসঙ্গে আমার উদয়ের কথা মনে পড়বে। উদয় আমার মামাতো ভাই। সে যদি সেদিন পাঁচ-ছয় বোতল পানি আমার বিছানায় না ঢেলে দিত তবে প্রথম গল্পটা সে রাতে লেখা শুরু করতাম কি-না সন্দেহ ছিল। সে বিছানায় পানি ঢেলেছিল ২০০৭ সালের মাঝামাঝিতে কোনো এক রাতে, যেদিন মামা বাসায় ছিলেন না আর মামি পাশের রুমে হয়তো জেগে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পড়েছেন! বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য ঢাকায় এসে মামার বাসায় থাকতাম, মিরপুরে। উদয় উদ্ভট একটা জীব! এখন বড় হয়ে গেছে, শুনেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, যোগাযোগ নাই বহুদিন। সে রাতে ওর কি এক কথা রাখতে পারিনি বলে আমার বিছানায় ঢেলে সমগ্র পানির বোতল খালি করল। ওনার লক্ষ-আমার ঘুম হারাম করবেন। ফলে আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম, রাতটাকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়। বিছানায় বন্যা, তাই সোফায় বসে বসে সেন্টার টেবিলের ওপর খাতা রেখে রেখে প্রথম গল্পটা লিখতে শুরু করেছিলাম। গল্পের বিষয় ছিল, জনসংখ্যার আধিক্য, প্রেম, যৌনতা ইত্যাদি, সব মনে পড়ছে না। যাই হোক, গল্পটা লিখে অত্যাধিক আনন্দে ভেবেছিলাম, এই এক মহাগল্প, যা দেশে না হোক, অন্তত মিরপুর এলাকায় আর কারো লেখার ক্ষমতা নাই! সিওর! গল্পটা উদয়ের ইংরেজি খাতায় লিখেছিলাম, ওর কোনো বাংলা খাতা ছিল না, বাংলায় উদাসীন। এইজন্যই হয়তো আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় ভর্তি হয়ে থাকবো। এটা একটা কারণ বটে! জাহাঙ্গীরনগরে অনেকে অনেক কিছু নিয়ে প্রবেশ করেছিল, কিন্তু আমি একটা ...ব্যাগে এই গল্পের খসড়াটা নিয়ে ঢুকেছিলাম। এক মেয়েকে তো দেখলাম, অনেকগুলো হাতপাখা নিয়ে ঢুকেছে! জানতে পারলাম, সে গরম একদম সহ্য করতে পারে না, তাই তার মা হাতপাখা দিয়েছে অনেক কয়টি, বিদ্যুত না থাকলে ভরসা!

যাইহোক, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্যিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে মিশে আর বেশি বেশি পড়াশোনা করে ছয়মাস পরেই বুঝতে পারলাম, গল্পটা কিচ্ছু হয় নি। বাদ! নতুন চিন্তা, বেশি ভাবনা আর অত্যধিক সাহিত্য-আড্ডায় যেয়ে যেয়ে গল্পের মাথা খুলেছে।


অলাত এহ্সান: এই সময়ে গল্পগুলোর মধ্যে আপনার গল্পে কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন কি?

মেহেদী উল্লাহ: সামান্য বিছানায় পানি ঢেলে দিলে যে গল্প লিখতে শুরু করে দেয়, একরাতের মধ্যে, তার গল্পে পরিবর্তন না থেকে উপায় আছে। নইলে বাংলা সাহিত্যের বদনাম হয়ে যাবে যে! আমি শুধু এইটুকু বলতে পারি। পরিবর্তন পাঠকই ধরুক। আমি অনেক মহিলাকে দেখেছি দুই পদের তরকারি রান্না করেই, লোক ডেকে খাইয়ে প্রশংসা শুনতে ভালোবাসেন-খাওয়া পাতে বার বার জিজ্ঞেস করেন, ভাই, রান্না ভালো হয় নি? খারাপ হলেও বলতে হয়, আহ্ কি রান্না! কিন্তু আমার আম্মার কাছে আমি এটা শিখেছি, উনি অনেক সুস্বাদু রাঁধতে পারেন, কত মেহমান খায়, তারপরও উনি জানতে চান না। লোকেই বলে, আন্টি আপনার রান্নাতো চরম! আম্মা মুখ লুকান, বলেন, সে তোমাদের বিনয় বাবা!


এহ্সান: আসছে বইমেলায় আপনার প্রকাশিতব্য বইয়ে ১৩টি গল্প আছে। গল্পগুলো কি কি বিষয় নিয়ে লেখা?

মেহেদী উল্লাহ: বইটার নাম 'রিসতা'। আসছে বইমেলায় ‘শুদ্ধস্বর’ থেকে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। নোয়াখালী আমার আম্মার বাড়ি, আব্বারও পুরানবাড়ি। ওখানে সম্পর্ক বোঝাতে বেশ ওজনদার একটা শব্দ রিসতা। বিশেষ করে বিয়ের বেলায় খাটে। শব্দটাকে ছোট থেকেই বুঝতে চেষ্টা করেছি। রিসতার মধ্যে যে অ্যাসেন্স আছে আজো তার অর্থ ঠিক ধরতে পারি না। এই সময়ের সম্পর্কগুলো পাল্টে গেছে। আমার আব্বা আর আম্মার সঙ্গে যে সম্পর্ক দেখে দেখে আমরা বড় হয়েছি, এখন আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে সেরকম সম্পর্ক বজায় নেই। অথবা ধরেন জাতির জনকের সঙ্গে বর্তমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যে সম্পর্কের কথা আমরা পড়েছি বা দেখেছি, আজকের একুশ শতকের বাংলাদেশে পিতা-কন্যার সম্পর্ক কিন্তু তেমন নেই। আমি যতটুকু জানি, শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুকে 'আপনি' বলে সম্বোধন করতেন, এখন তো মেয়েরা বাবাকে 'তুমি' বলে ডাকে। এভাবে ‌'শেখ রাসেল-শেখ হাসিনা' সম্পর্ক, অর্থাৎ ছোটভাই-বড়বোন সম্পর্কও বদলে গেছে। বদলে গেছে সম্পর্কের টোটাল অনুভূতি কিংবা বন্ধনের ওজন।


এহ্সান: আপনি কি কোনো নির্দিষ্ট বিষয় বস্তু নিয়ে লিখতে পছন্দ করেন?

মেহেদী উল্লাহ: না, আমি আমার মতো লিখে যাই। পরে বিষয়বস্তু অনুযায়ী গল্পগুলোকে সাজিয়ে বই করি। যেমন, তিরোধানের মুসাবিদা- প্রকাশের আগে আমার হাতে বিশের অধিক গল্প ছিল, কিন্তু আমি মৃত্যু বিষয়ক গল্পগুলোকেই বইটিতে রেখেছি। এভাবে এবার রাখছি সম্পর্ক বিষয়ক গল্পগুলোকে। আমি দেখেছি, আমার প্রথম প্রকাশিত গল্প 'কাছারি'র মধ্যেও সম্পর্ক প্রাধান্য পেয়েছে, ফলে আমি প্রথম বইয়ে গল্পটি না রেখে 'রিসতা'য় রেখেছি। গল্পটি এবার সাহিত্যপাতা থেকে বইয়ে ঢুকবে। ফলে রিসতা’য় আমার প্রথম প্রকাশিত গল্পটিও থাকছে, যেটি লিখেছিলাম ২০০৮-এ।


এহ্সান: গল্পগুলোর উপস্থাপনেও বৈচিত্র আছে কি? কোনো বিশেষ স্টাইলের প্রতি আপনা দূর্বলতা আছে কি, মানে আপনি স্বাচ্ছন্দ করেন?

মেহেদী উল্লাহ: তা আছে। গল্পগুলোতে সম্পর্ক উপলক্ষ্য হলেও লক্ষ নানাভাবে, নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে বলা, সেটা করা হয়েছে।

না। প্রতিটি গল্পই একেকটি স্টাইল। আসলে, যত স্টাইল তত নেকি, মানে সাহিত্যের জন্য ভালো। এক আল্লাহর যেমন নিরানব্বইটি গুণ (নাম) আছে, তেমন তার উত্তম বান্দা হিসেবে, আমার মতো গোলামের নিরানব্বই না হোক, স্টাইলের হাফ সেঞ্চুরি তো হতে পারে। চাইলে, একজন রিকশা চালকও নব্বই স্টাইলে রিকশা চালাতে পারে। আমি কথা বলে দেখেছি এক রিকশা চালকের সাথে। লেখক হিসেবে আমাদেরও নতুন স্টাইল বের করতে হবে। স্টাইল অনেকটা আসনের মতো, এক আসনে একঘেমেয়ী লাগে, যত বেশি স্টাইল, গল্প তত বেশি মজার। যে লেখক অন্য লেখকের ফলোয়ার, তিনি চাইলে শুধু সেই লেখকের স্টাইল ফলো করতে পারেন, কিন্তু যিনি নতুন কিছু সৃষ্টি করতে চলেছেন তাকে কারো ফলোয়ার হলে চলে না। তিনি কাউকে ফলোয়ার বানাতেও চান না। এখনকার তরুণ লেখকরা একারণেই স্মার্ট, তাদের প্রিয় গল্পকার সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ্, হাসান আজিজুল হক, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস অনেকেই আছেন, কিন্তু আমার জানা মতে তারা কারো ফলোয়ার নন। একারণেই হাসান আজিজুল হককে দেখবেন, কখনো তরুণদের সাহিত্য নিয়ে কথা বলেন না, ইভেন তিনি শহীদুল জহিরের মতো বড়মাপের সাহিত্যিকের 'জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা'র মতো উপন্যাসটি প্রথম দফায় না পড়ে বালিশের তলায় রেখে দিয়েছিলেন দীর্ঘদিন। ইলিয়াস এক্ষেত্রে একটা দামি কথা বলেছেন, যে তরুণটি নিরীক্ষা করছে, তাকে কেউ পিঠ চাপড়ায় না, কারণ তাতে এতদিনের পোষ মানানো স্টাইলটা হাতছাড়া হয়ে যায়। সৈয়দ শামসুল হক তো এখনও তরুণদের সঙ্গে বাদশাহী আমলের মতো করে কথা বলেন। একবার বাংলা একাডেমীর ‘হে ফেস্টিভালে’ নিজে দেখেছি তার এ-হেন ভালো ব্যবহার! অবশ্য এটা যার যার ব্যক্তিত্বের বিষয়, তিনি তরুণদের সাহিত্য পড়বেন কি পড়বেন না, তরুণকে আদর করে কাছে ডাকবেন কি ডাকবেন না। তরুণরাও এর প্রতিশোধ হিসেবে, লেখক মরে গেলে তাকে বড় সাহিত্যিক বানিয়ে দেয়। এই যেমন হুমায়ূন আহমেদ। জীবদ্দশায় কেউ কথাটি না বললেও এখন, অনেক তরুণই তাঁকে নিয়ে লিখে চলেছেন। মেলায় আলাদা কভারে বই করছেন।


এহ্সান: আপনার গল্পগুলো আন্তঃসম্পর্কিত?

মেহেদী উল্লাহ: হ্যাঁ, গল্পগুলো মাকড়শার জালের মতো।


এহ্সান: গল্পগুলোতে আপনি কি বলতে চেয়েছেন, কোনো বিশেষ বিষয়কে উপস্থান বা ম্যাসেজ দিতে চেয়েছেন কি?

মেহেদী উল্লাহ: দিতে চেয়েছি, তবে আমি যা বলেছি তা পাঠকভেদে নানা রকম অর্থ হবে। একেক পাঠক একেক রকম ম্যাসেজ রিসিভ করবেন। এটা পাঠকের ব্যাপার।


এহ্সান: গল্পের বিষয় বস্তু আপনি কি ভাবে নির্ধারণ করেন?

মেহেদী উল্লাহ: আমি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমসাময়িক সুখের ও দুঃখের যেকোনো বিষয় বেছে নিই। অনেক সময় আবার গল্পটি লিখে ফেলার পর তাতে বিষয় ফুটে উঠে। তবে বিষয়ই একমাত্র বিবেচ্য না। একটি গল্পে বিশেষ বিষয় না থাকলেও সেটি ভালো গল্প হতে পারে। শুধু অনুভূতি দিয়েও কেউ লিখে ফেলতে পারেন গোটা গল্প। সেখানে হয়তো বিষয়টি উহ্য। ধূসর। কেবল চরিত্রগুলোকে রিড করা যাচ্ছে। আসলে, গল্পের অনেক টুল আছে, একেকটি গল্পে একেকটি টুল ক্লিক করে। এজন্যই দেখা যায়, কোনো গল্পের একটি চরিত্র হিট হয়, কোনো গল্পের কিছু লাইন হিট করে অথবা কোনো গল্পের গল্পটিই হিট অথবা থিম, আবার কোনো গল্পের বলার কৌশল হিট করে। একটি গল্পের যে কোনো একটি টুল পাঠকের ভালো লাগলেই গল্পকার হিট করেন। যেমন, রবীন্দ্রনাথের রতন, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের রঞ্জু চরিত্রটি হিট করেছে, হাসান আজিজুল হকের 'আত্মজা ও একটি করবী গাছ'র থিমটাই হিট করেছে, এই গল্পের চরিত্রের নাম হয়তো কারো মনেই নেই, শহীদুল জহিরের বলার কৌশল হিট করেছে, এরকম সিম্পল ব্যাপার এগুলো, অনর্থক জটিল করে ভাবার কারণ নাই। সেরকম আমার গল্পের ক্ষেত্রে বিষয়ের 'বাউন্সার রেসপন্স' হয়েছে। অথবা থিম/বলার কৌশল।


এহ্সান: একটি ঘটনা বা অভিজ্ঞতা কি করে আপনি গল্পে রূপান্তর করেন?

মেহেদী উল্লাহ: আমি যে কোনো ঘটনাকেই গল্পের রূপ দিতে পারি। কিন্তু আমি দিই না, আমি একটি গল্প লেখার আগে হাজার ঘটনা বাদ দিই। কোন ঘটনা লিখবো না, সেটা নিয়ে বেশি ভাবি।


এহ্সান: গল্পে আপনার ব্যক্তিগত ছাপ আছে কি?

মেহেদী উল্লাহ: প্রিয় পাঠক-সমালোচক ভালো বলতে পারবেন।


এহ্সান: গল্প উপস্থাপনের ক্ষেত্রে আপনি মেটাফোর, নিজস্ব শব্দ তৈরি করেন কি না?

মেহেদী উল্লাহ: অবশ্যই করি। 'তিরোধানের মুসাবিদা'য় নিজস্ব শব্দ অনেক আছে। একটা যেমন, 'আন্ধার'। আমি অন্ধকার কখনোই লিখি না, আমার আম্মা সর্বদা 'অন্ধকার'কে 'আন্ধার' বলেন, তাই 'আন্ধার'ই আমার মায়ের ভাষা। আমি এখন চেষ্টা করছি মানুষের মুখচলতি ভাষার যত কাছাকাছি যাওয়া যায়। এরকম আরো শব্দ আছে, যেমন-টাসকি, আজিব, পেনা। এছাড়া অনেক বিদেশি শব্দের নেক্সট-নেক্সট রূপান্তর ঘটেছে। সেগুলো এখন ফোরর্থ-ফিফথ সোর্সে আছে। একালে এসে তা আরো বদলেছে। সেগুলোও ব্যবহার করি। এছাড়া আরেকটা মজার জিনিস করি, সেটা হচ্ছে, একটা প্রতিবেশের রেগুলার জিনিসের আইটেমকে একশব্দে লেখা। যেমন- আমজামকাঁঠালবরইশীলকাকশালিক। ধরেন, অধিকাংশ ড্রয়িং রুমে একই গোছের আসবাব থাকে, তো শব্দটা হয় এমন-সোফাসেন্টারটেবিলটিটেবিলটবশোপিসকার্পেট। এগুলো এক রুমের জায়গায় খুব লাগালাগি করে থাকে তো, তাই লেখার সময় আলাদা করে লিখতে সাহস পাই না।


এহ্সান: প্রত্যেক লেখকই চায় তার একটা নিজস্বতা তৈরি করতে, তো বর্তমান গল্পকারদের সঙ্গে আপনার গল্পের পার্থক্য করেন কি ভাবে?

মেহেদী উল্লাহ: ট্রাস্ট মি, আমি এটা নিয়ে কখনো ভাবি না। আমার মতো আমি লিখে যাচ্ছি। অন্যদের প্রতিও আমার বিশ্বাস আছে, তারাও তাদের মতো লিখছেন। এটা পাঠক আলাদা করবেন। আমার এখতিয়ার না।


এহ্সান: গল্পের শুধু উস্থাপনের স্টাইল দ্বারা তো আর একজন গল্পকার মহৎ হয়ে ওঠেন না। চিন্তার ও দেখার বৈচিত্র্য ও গভীরতা দরকার হয়। আপনার গল্পগুলোতে জীবনের তেমন কোনো সত্য আবিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন কি?

মেহেদী উল্লাহ: জীবনের শুধু সত্য কেনো, মিথ্যেগুলোকে কোথায় রাখবো! বুঝতে পেরেছি, আপনি একটা কমন আসপেক্ট থেকে জানতে চেয়েছেন।

ব্যাপার, এটা রবীন্দ্রনাথ শিখিয়েছেন, সত্যই সুন্দর, সত্য যে কঠিন ইত্যাদি ইত্যাদি। আপনি ঠিকই বলেছেন। গদ্য লেখার জন্য তিনটি জিনিস খুব গুরুত্বপূর্ণ। ১. নিজস্ব গদ্যভঙ্গি(লেখার শক্তি), ২. পর্যবেক্ষণ (দেখার শক্তি) এবং ৩. চিন্তা/কল্পনাশক্তি(বোধের শক্তি)। আরো একটা বিষয় দেখে যায়, টোটাল বিবেচনা। এসবের সমন্বয়ে ভালো সাহিত্য হতে পারে। আমার গল্পে এসবের কতটা সমন্বয় আছে, তা সময়ই বলে দেবে।


এহ্সান: প্রায় সব গল্পেই তো কোনো না কোনো অনুসন্ধান থাকে। যেমন- আত্ম, নৃ-তাত্ত্বিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, মেট্রপলিটন ইত্যাদি। আপনি কোন ধরনের অনুসন্ধানে গল্প রচনা করেন?

মেহেদী উল্লাহ: আমি বেশি প্রাধান্য দিই মেট্রপলিটন। আত্মবিবরণও কম না। আরেকটি বিষয় আছে ইউটোপিয়া। আমি কখনো কখনো ইউটোপিকও। এছাড়া ব্ল্যাংকস্পেস, মানে শূন্যস্থান। এটা খুব মজার। অনেক সময় কিছুই হয় না, কিছুই লেখা হয় না, তবুও যেন কত কি লেখা হলো। পাঠকের ভালো লেগে গেছে। এটাকে ঠিক অ্যাবসার্ডও ভাবার সুযোগ নেই, আমার চোখে এটি ব্ল্যাংকস্পেস।


এহ্সান: গল্পের বিষয় বস্তুর নির্বাচনের সঙ্গে দর্শনের একটা যোগাযোগ আছে। আপনি গল্পে তেমন কি কোনো দর্শনের প্রতিফল বা প্রভাব দেখাতে চেষ্টা করেছেন?

মেহেদী উল্লাহ: না, আমি গল্পের দার্শনিক দিক নিয়ে ভাবি না। আমি মনে করি এটা আমার ইস্যু না। তবে, একটা কথা না বললে কিছু একটা যেন মিস হয়ে যাচ্ছে। বাংলার ধর্ম ও দর্শন, ভারতীয় দর্শন ইত্যাদি নিয়ে বেশ স্বচ্ছ ধারণা লাভ করেছি আমার শিক্ষক, কবি ও কথাসাহিত্যিক রায়হান রাইনের কাছ থেকে। তিনি আমাদের দর্শন পড়াতেন। স্যারের কাছে আমি আজীবন ঋণী হয়ে থাকলাম। খুব সহজে তিনি সাহিত্য ও দর্শনের সম্পর্ক শিখিয়েছেন। তাই এটা নিয়ে আমার না বলাই ভালো। এ বিষয়ে শুধু স্যারের কাছ থেকেই শুনতে চাই।


এহ্সান: আপনার গল্পগুলোকে কি কোনো বিশেষ ধারা বা ঘরাণার-যেমন মার্কসবাদী, জীবনবাদী, নারীবাদী, ফ্রয়েডিয় ইত্যাদি বলে মনে করেন?

মেহেদী উল্লাহ: না, না। বাদ-টাদ বাদ। এসবের ভাবনা গল্পের জন্য পীড়াদায়ক। গল্পকারের উচিত শুধু গল্পটা লেখা। ইজমজীবি আর গল্পকার এক না। তার মানে এই না যে, ক্রিটিক্যাল থিওরীর প্রতি আমার অশ্রদ্ধা আছে। গল্প লেখার সময় আমি ইজম নিয়ে ভাববো না, এই সমাধানে আসতে আমাকে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। আমি অন্যের লিখিত গল্পে কোনো ইজম আছে তা নিয়ে দিনের পর দিন আলোচনায় আগ্রহী, কিন্তু নিজের গল্পে ইজমের প্রয়োগ নিয়ে ভাবতেই ভয় পাই। ইজম গল্পকে একটি ডিসকোর্সের দিকে ধাবিত করে। এটা খুবই সংকুচিত পরিভ্রমণ। লেখক দশদিক ভেবে লেখেন।


এহ্সান: সাধারণত আমরা দেখি নামগল্প বা গল্পগুলোর অভ্যন্তরিন মিল বা বিষয় বস্তু থেকে বইয়ের নাম নেয়া হয়। আপনার বইতে কোনো নাম গল্প নেই, কিন্তু এই 'তিরোধানের মুসাবিদা' নাম দ্বারা আপনি কি বোঝাতে চেয়েছেন?

মেহেদী উল্লাহ: আমার প্রথম বইয়ে কোনো নামগল্প নেই। গল্পগুলোর বিষয় মৃত্যু, এটিকে মাথায় রেখে নামকরণ হয়েছে। আসলে আমি এই বইতে মৃত্যুর কথা বলতে বলতে জীবনে দিকে ধাবিত হয়েছি। এই প্রশ্নের উত্তর বহুবার বহুখানে বহুভাবে দিয়েছে।


এহ্সান: আমরা দেখি বাংলা সাহিত্যে উত্তারাধিকারের ধারা বহন করেছেন অনেক অনেক লেখক। আপনি কি নিজেকে কোনো সাহিত্যধারার উত্তরাধিকারী মনে করেন?

মেহেদী উল্লাহ: না। আমি বাংলা ভাষার গুরুত্বপূর্ণ গল্পকারদের গল্প এজন্যই পড়েছি, যাতে রিপিট না হয়, উনারা যা লিখেছেন আমার দ্বারা যেন তার পুনরাবৃত্তি না হয়। আমার অগ্রজদের প্রতি আমি বেশ শ্রদ্ধাশীল। বিশেষ করে যাদের হাতে বাংলাদেশের সাহিত্য তৈরি হয়েছে, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্, সৈয়দ শামসুল হক, আলাউদ্দিন আল আজাদ, শাহেদ আলী, আবু ইসহাক, শওকত ওসমান প্রমুখের প্রতি। উত্তরাধিকার একটাই, বাংলাদেশের সাহিত্যের উত্তরাধিকার। আমরা সবাই বাংলাদেশের সাহিত্যই সৃষ্টি করেছি।


এহ্সান: বাংলা সাহিত্যে এখন উত্তরাধুনিক সাহিত্যের নামে একধরনের সাহিত্য চর্চা হচ্ছে, এতে ব্যক্তি স্বাতন্ত্রকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। তাই প্রত্যেক গল্পকার তার স্বাতন্ত্র নিয়ে ভাবেন, এটা অবাঞ্চিত কিছু নয়। এই ব্যক্তি সাতন্ত্র আমাদের সাহিত্যের কি রূপ দিচ্ছে?

মেহেদী উল্লাহ: উত্তরাধুনিকতা পুঁজিবাদসৃষ্ট একধরণের সময়-ধারণা। আধুনিকতা বিরোধী কিছু প্রবণতা দ্বারা একে সংজ্ঞায়িত করা হচ্ছে। এতে পণ্যের প্রসারের জন্য কেন্দ্র থেকে প্রান্ত পর্যন্ত ব্যক্তিকে মুখ্য করে দেখা হচ্ছে। এই বাদের কাউন্টার দিচ্ছেন আধুনিকতাবাদ ও মার্কসবাদে বিশ্বাসী তাত্ত্বিকরা। সেদিকে আর না গিয়ে শুধু একটা কথাই বলবো, পুঁজির বিকাশ বাংলাদেশে কতটা হয়েছে? উত্তরাধুনিক প্রবণতা সমূহ এখানে দৃষ্ট হচ্ছে কি-না? উত্তরাধুনিকতা বলছে কোনো কেন্দ্র থাকবে না, বিকেন্দ্রীকরণের কথা অথচ ঢাকা ছাড় বাংলাদেশ কল্পনা করতে পারবেন? তারা বলছে, গ্র্যান্ডন্যারেশন থাকবে না, অথচ এখানে ধর্মীয় গ্র্যান্ডন্যারেশন এখনো মোটাদাগে মানুষের মগজে। আমরা তো এখনো অতীতকে ভালোবাসি, কথায় কথায় অতীতে চলে যাই, ঐতিহ্যকে প্রাধান্য দিয়ে চলি, তাহলে উত্তরাধুনিকতার লক্ষণগুলো আমাদের দেশে এখনো প্রচ্ছন্ন। আমাদের সাহিত্য উত্তরাধুনিকতা আসবে কিনা এটাও ভাবনার বিষয়। সাহিত্যে তো উনিশ-বিশ সমাজের মানুষই থাকে। ফলে সমাজ উত্তরাধুনিক না হলে সাহিত্য হয় কি করে!

আর উত্তরাধুনিকতা বাদীদের জন্য বিরাট সুখবর, বই নিজেই একটা পণ্য। ফলে এর সুফল তারা ভোগ করবেই। বই তো বিক্রির জন্যই প্রকাশ করা হয়। এটাও পুঁজির অংশ। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য দুঃসংবাদ, এখানে তো প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানে পেশাদারিত্ব নেই। লেখক কি বই লিখে ঠিক মতো টাকা পান? প্রকাশক নিজেও কতটা পান? আমাদের বইয়ের ক্রেতা কই? আসলে, সিস্টেমটাই এখন এমন, পুঁজির সিস্টেমে নিজেকে ফেললে ব্যবসাটা আসলে ঠিকই হয়। বাংলাদেশে এখন শুধু একটি বা দু’টি বড় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আছে, যে দু’টি প্রতিষ্ঠানের একটি পুঁজিবাদের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ব্যবসা সফল। আমরা সবাই চিনি প্রতিষ্ঠানটিকে। ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ শুধু উত্তরাধুনিকতার বিষয় নয়, এর আগে অস্তিত্ববাদী দার্শনিকরাও বলেছেন ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের কথা, নারীবাদও নারীর ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য নিয়েই কথা বলে। ফলে উত্তরাধুনিক সমাজ কায়েম হলেই কেবল সাহিত্যে তা আসতে পারে, নইলে বাংলাদেশে বসে ইউরোপীয় সমাজের সাহিত্য রচিত হবে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এখানকার মানুষের কথাই সাহিত্যে আসা উচিত।


এহ্সান: সাহিত্যের দশক বিচার প্রচলিত আছে। আপনি আপনার দশকে কি ভাবে উপস্থান বা চিহ্নিত করছেন?

মেহেদী উল্লাহ: একজন লেখকের জন্য দশক গুরুত্বপূর্ণ কোনো জিনিস না। এটি পাঠকের জন্য প্রযোজ্য হতে পারে। পাঠক তার প্রিয় লেখকদের সিরিয়াল করার জন্য খুঁজে বের করবেন কে কোন দশকের লেখক। এতে পরম্পরা অনুযায়ী ও সময় অনুযায়ী সাহিত্যকে তুলনা করা সহজ হয় পাঠকের পক্ষে। আমার সৌভাগ্য, আমি একটি নতুন শতকের লেখক। নতুন সময়ের লেখক। আমার কোনো লেখাই ২০০০ সালের আগে প্রকাশিত হয়নি! যদিও জন্মানুযায়ী হওয়ার কথাও না। আমি আমার লেখক জীবনের পুরো সময়টাকেই চিহ্নিত করতে চাই, শুধু একটা দশক কেন! তবে আমার লেখালেখির শুরু কবে, সেটা জানানো যেতেই পারে। ভালো লেখকের দশক লাগে না, তিনি পুরো একটি শতকের, বহু শতকের, হাজার শতকের, লক্ষ শতকের। এই গ্রহের লেখক।


এহ্সান: পরবর্তী বই নিয়ে আপনার কি কোনো চিন্তা আছে?

মেহেদী উল্লাহ: আমি রূপকথার আঙ্গিক অনুসরণ করে কয়েকটি গল্প লিখেছি, আরো লিখতে চাই। আঙ্গিক রূপকথা বা লোককথার হলে ঘটনা হবে আাজকের। একটি বই করবো সবগল্প নিয়ে। নাম রাখবো 'রূপসুরত'।


এহ্সান: আপনার না লেখা কোনো গল্প আছে, যা আপনি লিখতে চান?

মেহেদী উল্লাহ: অনেক আছে। যেগুলো লিখতে গেলে পড়তে হবে, ঘুরতে হবে, সেগুলো পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই লিখবো।


এহ্সান: এক বসায় গল্প লেখেন না ধীরে ধীরে, কেঁটে-ছিড়ে লিখে থাকেন?

মেহেদী উল্লাহ: এটা বিভিন্ন কিছুর ওপর নির্ভর করে। আমার অধিকাংশ গল্পই এক বসায় লেখা। রাতে। বিকেল থেকে রাতে, মাঝরাত থেকে ভোররাতে এরকম। কাঁটি। বাক্য পাল্টাই, শব্দ পাল্টাই, এমনকি পুরো গল্পও পাল্টাই।


এহ্সান: আজকের দিনে সবাই যখন উপন্যাসের দিকে ঝুঁকছে, আপনি সেখানে ছোটগল্পকে কিভাবে দেখছেন?

মেহেদী উল্লাহ: এটা আসলে দক্ষতার উপর নির্ভর করে। উপন্যাস আর ছোটগল্প ফর্মের দিক থেকে পুরোপুরি আলাদা। কেউ ছোটগল্পের ফর্মটি আয়ত্ব করেছেন, কেউ উপন্যাসের। লেখকের ভালো লাগা আর প্রকাশের ধরনের উপর নির্ভর করে তিনি কী লেখবেন, গল্প না উপন্যাস। লেখার কথা বাদ দিলেও, মানুষ মানুষের সাথে এমনিতে গল্প করতে পছন্দ করে, ফোনে গল্প করে, আড্ডায় গল্প করে, ফলে মানুষ যতদিন থাকবে তার গল্পও থাকবে, হোক সেটা মৌখিক কিংবা লিখিত। অতীতে তো শুধু মৌখিক গল্পই প্রচলিত ছিল।


এহ্সান: আপনি কি বাংলাদেশের বর্তমানে রচিত গল্পগুলো নিয়ে সন্তুষ্ট?


মেহেদী উল্লাহ: আমি অসন্তুষ্ট হলে যদি ভালো গল্প লেখা হয়ে যেত তবে তো তাই হতাম। আমরা চেষ্টা করছি। অনেকেই গল্প লিখছেন। জাস্ট গোষ্ঠীবাদ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অনেকেই নিভৃতে অন্যকোনোখানে ভালো গল্প লিখছেন, তো সেগুলো তথাকথিত আলোর মুখ দেখছে না বলে কি তা ভালো গল্প নয়। এক্ষেত্রে পাঠককে সচেতন হতে হবে। অনেক ভালো প্রকাশ মাধ্যমেও বাজে গল্প ছাপা হতে পারে আবার বেশি হাতে পৌঁছায় না এমন ছোটকাগজেও উত্তম গল্প প্রকাশিত হতে পারে। আমি আশা করি, পাঠক সচেতন, পাঠক এসব ব্যবসা ধরে ফেলেন। তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কাউকে লেখক বানানো সম্ভব নয়। লেখক বনে যাওয়া আর লেখক হওয়া এককথা নয়। কারো পৃষ্ঠপোষকতায় এক দশকের জন্য লেখক বনে যাওয়া যায় কিন্তু লেখক হওয়া যায় না। লেখক শতকের পর শতক তাঁর সাহিত্যের মধ্য দিয়ে দেশে-দেশে বেঁচে থাকেন। লেখক কোনো গৃহের নয়, একটি গ্রহের।*



সাক্ষাৎকারগ্রহণকারীর পরিচিতি
অলাত এহ্সান 

জন্ম ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আরো ভেতরে, বারুয়াখালী গ্রামে। কঠিন-কঠোর জীবন বাস্তবতা দেখতে দেখতে বড় হয়ে ওঠা। পারিবারিক দরিদ্রতা ও নিম্নবিত্ত অচ্ছ্যুত শ্রেণীর মধ্যে বসত, জীবনকে দেখিয়েছে কাছ থেকে। পড়াশুনা করেছেন সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ ও ঢাকা কলেজে। ছাত্র জীবন থেকেই বাম রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া। কবিতা লেখা দিয়ে সাহিত্য চর্চা শুরু হলেও মূলত গল্পকার। প্রবন্ধ লিখেন। প্রকাশিতব্য গল্পগ্রন্থ ‘পুরো ব্যাপারটাই প্রায়শ্চিত্ব ছিল’। প্রবন্ধের বই প্রকাশের কাজ চলছে। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

  1. সেই গতবাঁধা কথার সাক্ষাৎকার। কোনো পরিবর্তন নাই। শুভকামনা দুজনের জন্যই

    উত্তরমুছুন
  2. খালি বর্ণনার পাহাড় তার মধ্যে গল্পটাই নাই হয়ে যায়

    উত্তরমুছুন