একেবারে দক্ষিনে, গ্রাম, গ্রাম পেরিয়ে ধানক্ষেত, ক্ষেতের আলের গা ঘেঁষে ঘেঁষে চলা নিরীহ নিরীহ ছড়াদের ভেতর জাতিলা মাছেদের আবাস। উপল, চ্যাং, মাগুর, হিঙ্গি। যেখানে কিছুটা গা ছড়িয়ে বসতে পেরেছে ছড়া, সেখানে কিছু কৈ শোলও আছে। পুঁটি ডানকিনেতো আছেই। বিশেষ করে নতুন প্রসূতি মাতা আর অসুখ বিসুখ থেকে উঠাদের জন্য এই ছড়া এক ভাগ্যবতি জননীর মতো। ছড়া আরো আছে ইউনিয়ন জুড়ে, এই গ্রামের মতো অতো বরকতি নয় আর কোনোটা।
হিমহিমে মাঘমাস। কিন্তু রোদে রোদে হাঁটতে হাঁটতে শরীরের ভেতর পর্যন্ত খড়খড়ে হয়ে গেছে। পাহাড়ের গোড়ায় যেখানে দুধেল শাদা বালির উপর গোল একটি কুয়া, চারপাশে ছুইতে মরার বন এমন ভাবে ঘিরে রেখেছে, কেবল গোখরো সাপের দ্বারাই সম্ভব এই ঘের পাড়ি দেয়া। শীতের কাল, গোখরোও নাই, বনে পাতাও নাই। কেবল শত শত গোলাপী ফুল ফুটে আছে গোল গোল কানপাশার মতো। সাবধানে কাঁটা বাঁচিয়ে আঁজলা ভরে পানি তুলে তুলে মুখ ধুয়ে নিলাম। মাছ ধরতে এসেছিলো হলদে রঙের একটি বুড়া, পানিতে ঢেউ তুলে স্পস্টত বিরক্তি দেখিয়ে উঠে গেলো ওপারে। বনের ভেতর ঘাপটি মেরে বসে থাকবে, সুযোগের অপেক্ষায়।
একটা খেলা ছিলো ছোটবেলায়, ধুড়া কিংবা বুড়া ধরতে পারলে লেজে ধরে মাথার উপর চার পাঁচ পাক দিয়ে কে কতো দূরে ফেলতে পারে…
মুখ ধুয়ে ওড়না দিয়ে হাত মুছলাম, মুখ মুছবো না, চড়চডে রোদে এমনিতেই শুকিয়ে যাবে। হাঁটুতে ভর করে ছড়ার পাড় থেকে উঠে দাঁড়ালাম। ওপাশে নিয়াতির কোল ঘেঁষে একজন নারীকে মাথা ঝুঁকিয়ে ঝুঁকিয়ে মোকাম টিলার দিকে হেঁটে আসতে দেখা যাচ্ছে। দূর থেকেই দেখা যাচ্ছে গরীবগোর্বা মানুষ। হয়তো বহুদূরের কেউ। আজকাল কেউ মোকামে আসে না। এক সময় আশেপাশের দু/চার গ্রাম ছাড়া কেউ জানতো না এই মোকামের কথা। পরে এমন হলো দীর্ঘ আধা মাইল লম্বা লাইন মোকামে উঠতে। স্থানীয়রা ছেড়েই দিলো ওপথ। এখন কেউ কেউ যায় নি:শব্দে। যেমন আমি।
মানতের মোম আর চিনি ময়দা তেল দিয়ে তোষা শিন্নির মতো কিছু একটা বানিয়ে নিয়ে আসছেন নারী। মেয়ের বিয়ের চারমাস, কোনো সন্তানাদী নেই, জামাই ফের বিয়ের হুমকি দিচ্ছে। বললাম আমাকে এতো কথা বলার দরকার নাই। যেখানে যা রাখবার রেখে যাও। খাদেম জেলে।
খাদেম আগেও ছিলো না, এখনো নাই। মাঝখানে যা ছিলো তা এক বিভ্রম। নারী আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছেন। এই গহীন পাহাড়ের মাথায় এমন গরম মাজারে আমি কে? কেনো বড় পাথরটায় বসে আছি, যেখানে মধ্যরাতে মাজার থেকে বেরিয়ে পীরসাহেব বাতাস খান, আমারতো ঋতুস্রাব যেতে যেতেই মরন হয়ে যাবে!
বললাম ঐ যে বটবৃক্ষের গোড়া? যেখানে এখন আর কোনো খাবারের কণা মাত্র নেই, ওখানে এক খাবলা শিন্নি রাখতে, আমাকে এক চিমটি দিতে আর যেহেতু কোনো মানুষ নেই, পাহাড় থেকে নেমে যাবার পর যাকে সামনে পাবে তাকে তাকে কিছুটা দিয়ে বাকীটা মেয়েকে খাইয়ে দিতে! মেয়ের বাচ্চা হবে, জামাই বশ থাকবে। ভেড়া চাইলে ভেড়া, গোলাম চাইলে গোলাম।
নারীটি ভয়ার্ত চোখে আমার দিকে তাকালো। আমি কি যাবো না? এখানেই থাকবো? এই মধ্য দুপুরে? একা থাকার জন্যই এখানে এসেছি। দেখছো না এই পাহাড়ে কোনো পাখি ডাকেনা! কোনো কুকুর উঠেনা! তোমার তাগদা না থাকলে তুমিও বসো। কোনো শব্দ করোনা, একটি জিনিস দেখাবো…
প্রথমে এলো পাখি। কালো পাখির চোখ কালো। কাক নয়, কুকিল তো নয়ই। মোটা কালো পাখির ঠোঁটও কালো, কেবল বিদঘুটে চোখে কাজল বা সুরমা কিছু একটা পরানো। পাখি এসে বসলো জোড়বটের গোড়ায়। দেখলো, শুঁকলো তারপর শিন্নিতে ঠোঁট ছুঁইয়ে উড়ে গেলো গাছের মাথায়। তারপর এলো একটি কাক। তারপর দোয়েল। সবার শেষে একগুচ্ছ ধান চড়ুই। খুঁটে খুঁটে শিন্নির দলা শেষ করে নি:শব্দে নাই হয়ে গেলো বনের ভেতর।
নারীটি উসখুশ করছিলো আমাকে বলার জন্য কিছু। হয়তো জামাই মেয়ের গায়ে হাত তুলেছে, হয়তো আজ দুপুরেও কোনো চাল নেই তাদের মটকাতে…ইশারায় চুপ থাকতে বললাম।
নিয়াতির একটি বাঁকের নাম মোকাম টিলা। নিয়াতি নামের পাহাড়টির ঘের তিনটি গ্রাম জুড়ে। এই বাঁকটা একটু উঁচু আর মোচড় দেয়া। ওপারে উত্তরে কি আছে জানিনা। কেবল গহীন গহীন বনের ভেতর নিরব চলাফেরা। চলতে চলতে একটি শব্দ উঠানের মাথায় এসে থেমে গেছে, সেদিকে তাকিয়েই আমার পাশের নারীটি নি:শব্দে হেলে পড়েছে বালুর উপর। চলাটি উঠানের কোণের জলপাই গাছের নীচে বসে পড়লো। জলপাই গাছে পাতা কম, সারা গায়ে উঠতি বয়েসি কিশোরীর স্তনের মতো গুটি গুটি জলপাই। বারমাসই ধরছে, মুখে দেয়া যায়না কষটে স্বাদের জন্য। সেই বেকর্মা গাছের গোড়ায় বসে তিনি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমার কোনো দায় পড়েনি তার চোখে তাকানোর। এখানে সে রাজা তো আমি মহারানী। টিলা থেকে নেমে গেলে যার যার। তবে আমি নেমে যাবো দক্ষিনে, সে ফিরতি পথ উত্তরে। তবু তাকিয়ে আছেতো আছেই। আমি বরাবরের মতো আঙ্গুল ফোটাতে লাগলাম মটমট করে। এখন এই নারীটি না জাগলেই হয়।
খড়মের শব্দ পাচ্ছি।
কোনো না কোনো দিন একটা মানত লেগেই থাকতো মোকামে। সন্ধ্যার পর গোষ্টির শিশুদের নিয়ে মোকামের দিকে রওয়ানা দিতেন দাদাজি। আগে আগে হারিকেন জ্বালিয়ে কামলাদের একজন, মাঝখানে জনা ত্রিশেক শিশু কিশোর, পেছনে মশাল জ্বালিয়ে বড়দের কেউ আরেকজন। গাছের গোড়ায় শিন্নির প্রথম ভাগ তারপর আগন্তুকদের মাঝে বিলিবন্টন তারপর ঘোরাঘুরি। তারপর বাচ্চারা যখন উঠান ঝাড়ু দিচ্ছে, জিতা পাতা না ছুঁয়ে মরা পাতা জড়ো করছে, আগুন ধরিয়ে তাপ পোহাচ্ছে, দাদাজি তখন কবরের পাশে বসে হুকা টানতে টানতে সাংসারিক খোশালাপ করছেন পীরের সাথে। ফেরার সময় কবরের সামনে দাঁড়িয়ে সালাম জানিয়ে জিকির করতে করতে বাড়ি ফেরা। তখনো কেউ কেউ বনের ভেতর জ্বলজ্বলে চোখ দেখেছে, মশালের আলোয় চকচকে ডোরাকাটা দাগ ঝলসে ঝলসে উঠেছে। দাদাজীর পান্জাবী আঁকড়ে ধরলে চোখ ইশারা করতেন কাউকে না বলতে, তাহলে দৌঁড়াদৌঁড়ি হুলুস্থল শুরু হয়ে যাবে। কে কোন টিলায় উঠে পড়বে অন্ধকারে খোঁজে পাওয়া যাবেনা। আমি আজও বলিনা।
কবর থেকে বেরিয়ে খড়ম জোড়া খটখট শব্দ করে জলপাই গাছের নীচে গিয়ে থেমে যায়। বাঘ আমাকে দেখে ফের, তারপর উঠে দাঁড়ায়। আগের মতো ঝাড়া দিয়ে নয়, ভেঙ্গে ভেঙ্গে। তারপর খড়মসহ নেমে যায় উত্তরের বনে, ধীরে ধীরে।
চাপকলে সহজে পানি আসেনা। পানি দিয়ে দ্রুত চাপতে হয়। নাউড়ির নীচে রাখা ড্রামের পানিও শেষ হবে হবে, পাতা পচা ঘোলাটে পানি থেকে এক বদনা পানি তুলে কলের মাথায় ঢাললাম, পানি উঠলে নারীটিকে জাগিয়ে বাড়ি পাঠানো দরকার…
হিমহিমে মাঘমাস। কিন্তু রোদে রোদে হাঁটতে হাঁটতে শরীরের ভেতর পর্যন্ত খড়খড়ে হয়ে গেছে। পাহাড়ের গোড়ায় যেখানে দুধেল শাদা বালির উপর গোল একটি কুয়া, চারপাশে ছুইতে মরার বন এমন ভাবে ঘিরে রেখেছে, কেবল গোখরো সাপের দ্বারাই সম্ভব এই ঘের পাড়ি দেয়া। শীতের কাল, গোখরোও নাই, বনে পাতাও নাই। কেবল শত শত গোলাপী ফুল ফুটে আছে গোল গোল কানপাশার মতো। সাবধানে কাঁটা বাঁচিয়ে আঁজলা ভরে পানি তুলে তুলে মুখ ধুয়ে নিলাম। মাছ ধরতে এসেছিলো হলদে রঙের একটি বুড়া, পানিতে ঢেউ তুলে স্পস্টত বিরক্তি দেখিয়ে উঠে গেলো ওপারে। বনের ভেতর ঘাপটি মেরে বসে থাকবে, সুযোগের অপেক্ষায়।
একটা খেলা ছিলো ছোটবেলায়, ধুড়া কিংবা বুড়া ধরতে পারলে লেজে ধরে মাথার উপর চার পাঁচ পাক দিয়ে কে কতো দূরে ফেলতে পারে…
মুখ ধুয়ে ওড়না দিয়ে হাত মুছলাম, মুখ মুছবো না, চড়চডে রোদে এমনিতেই শুকিয়ে যাবে। হাঁটুতে ভর করে ছড়ার পাড় থেকে উঠে দাঁড়ালাম। ওপাশে নিয়াতির কোল ঘেঁষে একজন নারীকে মাথা ঝুঁকিয়ে ঝুঁকিয়ে মোকাম টিলার দিকে হেঁটে আসতে দেখা যাচ্ছে। দূর থেকেই দেখা যাচ্ছে গরীবগোর্বা মানুষ। হয়তো বহুদূরের কেউ। আজকাল কেউ মোকামে আসে না। এক সময় আশেপাশের দু/চার গ্রাম ছাড়া কেউ জানতো না এই মোকামের কথা। পরে এমন হলো দীর্ঘ আধা মাইল লম্বা লাইন মোকামে উঠতে। স্থানীয়রা ছেড়েই দিলো ওপথ। এখন কেউ কেউ যায় নি:শব্দে। যেমন আমি।
মানতের মোম আর চিনি ময়দা তেল দিয়ে তোষা শিন্নির মতো কিছু একটা বানিয়ে নিয়ে আসছেন নারী। মেয়ের বিয়ের চারমাস, কোনো সন্তানাদী নেই, জামাই ফের বিয়ের হুমকি দিচ্ছে। বললাম আমাকে এতো কথা বলার দরকার নাই। যেখানে যা রাখবার রেখে যাও। খাদেম জেলে।
খাদেম আগেও ছিলো না, এখনো নাই। মাঝখানে যা ছিলো তা এক বিভ্রম। নারী আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছেন। এই গহীন পাহাড়ের মাথায় এমন গরম মাজারে আমি কে? কেনো বড় পাথরটায় বসে আছি, যেখানে মধ্যরাতে মাজার থেকে বেরিয়ে পীরসাহেব বাতাস খান, আমারতো ঋতুস্রাব যেতে যেতেই মরন হয়ে যাবে!
বললাম ঐ যে বটবৃক্ষের গোড়া? যেখানে এখন আর কোনো খাবারের কণা মাত্র নেই, ওখানে এক খাবলা শিন্নি রাখতে, আমাকে এক চিমটি দিতে আর যেহেতু কোনো মানুষ নেই, পাহাড় থেকে নেমে যাবার পর যাকে সামনে পাবে তাকে তাকে কিছুটা দিয়ে বাকীটা মেয়েকে খাইয়ে দিতে! মেয়ের বাচ্চা হবে, জামাই বশ থাকবে। ভেড়া চাইলে ভেড়া, গোলাম চাইলে গোলাম।
নারীটি ভয়ার্ত চোখে আমার দিকে তাকালো। আমি কি যাবো না? এখানেই থাকবো? এই মধ্য দুপুরে? একা থাকার জন্যই এখানে এসেছি। দেখছো না এই পাহাড়ে কোনো পাখি ডাকেনা! কোনো কুকুর উঠেনা! তোমার তাগদা না থাকলে তুমিও বসো। কোনো শব্দ করোনা, একটি জিনিস দেখাবো…
প্রথমে এলো পাখি। কালো পাখির চোখ কালো। কাক নয়, কুকিল তো নয়ই। মোটা কালো পাখির ঠোঁটও কালো, কেবল বিদঘুটে চোখে কাজল বা সুরমা কিছু একটা পরানো। পাখি এসে বসলো জোড়বটের গোড়ায়। দেখলো, শুঁকলো তারপর শিন্নিতে ঠোঁট ছুঁইয়ে উড়ে গেলো গাছের মাথায়। তারপর এলো একটি কাক। তারপর দোয়েল। সবার শেষে একগুচ্ছ ধান চড়ুই। খুঁটে খুঁটে শিন্নির দলা শেষ করে নি:শব্দে নাই হয়ে গেলো বনের ভেতর।
নারীটি উসখুশ করছিলো আমাকে বলার জন্য কিছু। হয়তো জামাই মেয়ের গায়ে হাত তুলেছে, হয়তো আজ দুপুরেও কোনো চাল নেই তাদের মটকাতে…ইশারায় চুপ থাকতে বললাম।
নিয়াতির একটি বাঁকের নাম মোকাম টিলা। নিয়াতি নামের পাহাড়টির ঘের তিনটি গ্রাম জুড়ে। এই বাঁকটা একটু উঁচু আর মোচড় দেয়া। ওপারে উত্তরে কি আছে জানিনা। কেবল গহীন গহীন বনের ভেতর নিরব চলাফেরা। চলতে চলতে একটি শব্দ উঠানের মাথায় এসে থেমে গেছে, সেদিকে তাকিয়েই আমার পাশের নারীটি নি:শব্দে হেলে পড়েছে বালুর উপর। চলাটি উঠানের কোণের জলপাই গাছের নীচে বসে পড়লো। জলপাই গাছে পাতা কম, সারা গায়ে উঠতি বয়েসি কিশোরীর স্তনের মতো গুটি গুটি জলপাই। বারমাসই ধরছে, মুখে দেয়া যায়না কষটে স্বাদের জন্য। সেই বেকর্মা গাছের গোড়ায় বসে তিনি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমার কোনো দায় পড়েনি তার চোখে তাকানোর। এখানে সে রাজা তো আমি মহারানী। টিলা থেকে নেমে গেলে যার যার। তবে আমি নেমে যাবো দক্ষিনে, সে ফিরতি পথ উত্তরে। তবু তাকিয়ে আছেতো আছেই। আমি বরাবরের মতো আঙ্গুল ফোটাতে লাগলাম মটমট করে। এখন এই নারীটি না জাগলেই হয়।
খড়মের শব্দ পাচ্ছি।
কোনো না কোনো দিন একটা মানত লেগেই থাকতো মোকামে। সন্ধ্যার পর গোষ্টির শিশুদের নিয়ে মোকামের দিকে রওয়ানা দিতেন দাদাজি। আগে আগে হারিকেন জ্বালিয়ে কামলাদের একজন, মাঝখানে জনা ত্রিশেক শিশু কিশোর, পেছনে মশাল জ্বালিয়ে বড়দের কেউ আরেকজন। গাছের গোড়ায় শিন্নির প্রথম ভাগ তারপর আগন্তুকদের মাঝে বিলিবন্টন তারপর ঘোরাঘুরি। তারপর বাচ্চারা যখন উঠান ঝাড়ু দিচ্ছে, জিতা পাতা না ছুঁয়ে মরা পাতা জড়ো করছে, আগুন ধরিয়ে তাপ পোহাচ্ছে, দাদাজি তখন কবরের পাশে বসে হুকা টানতে টানতে সাংসারিক খোশালাপ করছেন পীরের সাথে। ফেরার সময় কবরের সামনে দাঁড়িয়ে সালাম জানিয়ে জিকির করতে করতে বাড়ি ফেরা। তখনো কেউ কেউ বনের ভেতর জ্বলজ্বলে চোখ দেখেছে, মশালের আলোয় চকচকে ডোরাকাটা দাগ ঝলসে ঝলসে উঠেছে। দাদাজীর পান্জাবী আঁকড়ে ধরলে চোখ ইশারা করতেন কাউকে না বলতে, তাহলে দৌঁড়াদৌঁড়ি হুলুস্থল শুরু হয়ে যাবে। কে কোন টিলায় উঠে পড়বে অন্ধকারে খোঁজে পাওয়া যাবেনা। আমি আজও বলিনা।
কবর থেকে বেরিয়ে খড়ম জোড়া খটখট শব্দ করে জলপাই গাছের নীচে গিয়ে থেমে যায়। বাঘ আমাকে দেখে ফের, তারপর উঠে দাঁড়ায়। আগের মতো ঝাড়া দিয়ে নয়, ভেঙ্গে ভেঙ্গে। তারপর খড়মসহ নেমে যায় উত্তরের বনে, ধীরে ধীরে।
চাপকলে সহজে পানি আসেনা। পানি দিয়ে দ্রুত চাপতে হয়। নাউড়ির নীচে রাখা ড্রামের পানিও শেষ হবে হবে, পাতা পচা ঘোলাটে পানি থেকে এক বদনা পানি তুলে কলের মাথায় ঢাললাম, পানি উঠলে নারীটিকে জাগিয়ে বাড়ি পাঠানো দরকার…
0 মন্তব্যসমূহ