চড়াই পাখিগুলো বোধহয় টের পেয়েছিল যে আর এবাড়িতে বেশিদিন নয়, আজ তার সংকেত পেয়ে এক-দেড় হাত বেরিয়ে থাকা খড়ের ছাউনিটার বাসা থেকে বেরিয়ে চালার উপর বসে কিচিরমিচির করে ডেকে প্রতিবাদ জানাল। দাদো মুখ তুলে একবার শুধু সেদিক পানে চাইল। বেতের মোড়ার উপর 'আঁজির' (পেয়ারা) তলায় বসে আছে দাদো, আর দাদোর পোষা কুকুর ভুলুনে লেজ নাড়তে নাড়তে পায়ের কাছে বসে এদিক ওদিক পানে ঘাড় ঘুরিয়ে কি যে দেখছে কে জানে! মুখ দিয়ে কুঁইকুঁই শব্দ করছে, আর ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলছে মাটিতে।
'বড়বাড়ির' সমস্ত জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নতুন ইটের বাড়িটাতে। রহিমকাকা, আজমীরা চাচী, জমিরে-- মানে সেজকাকার ছেলে জমিরুদ্দিন, আমি এবং দাদীও কাজে হাত লাগিয়েছি। সবার মনের ভেতর বাঁধভাঙা আনন্দের ঢেউ। খালি বসে আছে দাদো।দাদোর ব্যাপার স্যাপার আমাদের কারও মাথায় ঢুকছে না, তাই কাজ করতে করতে একবার করে চেয়ে চেয়ে দেখছি দাদোকে। বুড়োটাও তো পারত আমাদের সঙ্গে হাত মিলতে। বুড়ো মানুষ কিছু করুক না করুক অন্তত পাশে দাঁড়ালে কি ক্ষতিটা হত? প্রশ্নটা দানা বাঁধছে মনে মনে, আর তার পালক গজাচ্ছে। তাহলে কি দাদো মন থেকে রাজী নয়? রহিমকাকা যখন প্রস্তাবটা দিয়েছিল প্রথমে দাদো সাই দেয়নি,তারপর তো বুঝিয়ে-সুঝিয়ে রাজী করানো হয়েছে। তাহলে আজ বুড়োর আবার হলটা কি?
থাক। এখন এত কিছু দেখতে গেলে হবে না।আমাদের হাতে এখন বিস্তর কাজ! এই 'বড়বাড়ির' সমস্ত আসবাবপত্র, মানে উনুন থেকে গরম হাঁড়ি নামানোর 'লাতা' থেকে শুরু করে একেবারে খেজুর পাতার মুড়ো ঝাঁটাটা পর্যন্ত বয়ে নিয়ে যেতে হবে। তারপর সব গোছগাছ হয়ে গেলে দাদো-দাদীকে নতুন ঘরে বাস করিয়ে তবেই আমাদের শান্তি।
সবই নিয়ে যাওয়া হবে,খালি থেকে যাবে এই ভিটেমাটি, উঠোন, আঁজিরগাছ।বর্ষায় প্রথমে খড়ের চালাটা ফুটো হবে, ফুটো দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে জল পড়ে উপর তলার মেঝের মাটিটা গলে গলে পড়বে নিচে। তারপর ধীরে ধীরে চারটা দেওয়াল, মাটির ঘর মাটিতেই মিশে যাবে একদিন। হয়তো ঘুঘু চড়বে।দাদো বিড়ি খেতে খেতে সেই কথায় ভাবছে মনে হয়!
রহিমকাকার জন্যই সব কিছু হল। কাকা পার্টি করে।নেতা হিসাবে একটু খ্যাতি আছে বইকি!না হলে সব এমনি এমনি? তবে এই বয়সে আর ইটের বাড়ির কোনো প্রয়োজন ছিল না, মাটির ঘরটাতেই অনায়াসে কেটে যেত জীবনটা। ব্যপারটা মন থেকে মেনে নিতে পারছিল না আমার বাপ-চাচারা। যেহেতু শুধু দাদোদেরই মাটির বাড়ি,তাছাড়া সবার ইটের।তাই কোথায় যেন ঘা লাগছিল!
নিচের ঘরটা খালি হচ্ছে সবেমাত্র। তক্তাপোশটার একধারটা রহিমকাকা একাই, আর দুইধারে জমিরে ও আমি ধরে নিয়ে এলাম।সেই কোন মান্ধাতা আমলের জিনিস তার ঠিক আছে!ঘাম তেল মেখে মেখে কালো কেঁন্দকাঠ হয়ে গেছে,আর তেমন তার ওজন।'পশ্চিম দিকে পা করে শুতে নেই' সেই হিসাব অনুযায়ী আড়াআড়ি ভাবে উত্তর-দক্ষিণে লাগালাম তক্তাপোশটা।আমার মা,আর জমিরের মা মিলে ঘরটা গোছাচ্ছে।কিন্তু এই নতুন ঝাঁ চকচকে ঘরটাতে পুরনো,রংচটা আসবাবে একদম বেমানান লাগছে।
আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আজমীরা চাচীর 'অ-সটা'(রাগ)হল।বলল,কি রে ভম্বল,দাঁড়িন পড়লি যে?লাগ লাগ,দেরি করিন কি লাভ?বাপের ঘর পিয়েরবেড়ায়।ওই অঞ্চলের কথার টানটা এখনো যায়নি।
আমি কাঁকালে হাত দিয়ে জবাব দিলাম,কি করব তাহলে?হয়েই গেছে তো।
__হাঁ দেখ-অ।এখুনি কি হয়িন যাবেক রে?আর উপর তলাটার কি হবেক?চো চো।তুরা আগে চো।
উপর তলায় চাপার সৌভাগ্য আমার কখনো হয় নি।সব সময় দেখেছি সিঁড়ির দরজাটায় শিকল তোলাই থাকে।কখনো যদি চাপতে গেছি দাদো বারণ করত, 'হেই ভাই ওখানে উঠিস না' দাদোর মুখে এমন কথা শুনে কিছুটা কৌতূহল ছোট্ট গুঁতে মাছের মতো বুকের ফাঁক ফোকরে মুখ গুঁজে ছিল।সেই মাছটা লেজ ঝাপটা দিতেই বললাম,চল জমিরে আমরা উঠি।
সিঁড়ির দরজাটা ঘরের কোণঘেঁষা। শিকলটা যেই খুলেছি,ওমনি আঁজিরতলা থেকে দাদোর চিৎকার,অ্যাই ওখানে উঠিস না বলেদিচ্চি।খবর দার!
__কেনে দাদো?উঠব নাই কেনে?জমিরে বলল।
__তুরা যা লিয়ে যাচ্ছিস লিয়ে যা দিনি।উপর তলায় ঢুকার দরকার নাই।
এরপর উঠতে কি সাহস হয়!থমকে দাঁড়িয়ে পড়লাম।দাদী বেরিয়ে এল ঘর থেকে।
__ক্যানে তুমার হয়েছে কি?বুড়ো বয়েসে ভীমরতি ধরেছে!সকাল থেকেই দেখছি গুঁজাপিঠের মতো মুখটা করে বসে আছো।
__তুই হারামি একদম বকিস না বলেদিচ্চি।তুর জিনিস গুলো নামিয়ে লিগা যা,আর কিছুই লিয়ে যেতে হয় না।তুর আশকারা পেয়েই তো...
দাদী থপাস করে বসে পড়ল মাটিতে।চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।মনে হয় দাদী কাঁদছে।
__সারা দুনিয়াটা পালটে গেল,দুনিয়ার মানুষ গুলো পাল্টে গেল,তুমি কি পাল্টাবে নাই।বলি আর সেই যুগ জামানা আছে?আঁকড়গোড়ের পাড়ের আঁকড়গাছ গুলো আর আছে?না জিওলনালার জিওলমাছ?কুনটা আছে শুনি?সব তো কেটে কেটে মাঠ হয়ে গেছে।তাই গাড়ি গাড়ি ধান তুলছ খামারে।তাহলে এখন আবার এত ঢং কেনে?
__এখনো বলেদিচ্চি সরে যা!কানের গুড়াই নাকে কেঁদেচিস তো...।দাদী বুঝে গেছে এবার কি করতে পারে।তাই গজর-গজর করতে করতে সরে যায় দাদী।আমাদিকে বলে,ভাই তুরা চো তো।হাঁড়ি-কুড়ি গুলো সব নিচে নামাগা যা।
সিঁড়ির দরজাটা খুলতেই দেখলাম প্রচন্ড অন্ধকার।বাইরে থেকে কিছুটা আলো ধাপে ধাপে উঠে সামনেটাকে আবছা মেলে ধরেছে।সিঁড়ির শেষ মাথায় অন্ধকারটা কেলে সাপের মতো ফনা তুলে আছে।পা টিপে টিপে মাটির সিঁড়ি দিয়ে উঠে কেলে সাপটার সামনে থমকে দাঁড়ালাম।ছোবল খাওয়ার আগেই জমিরে বলল,খুব আঁধার যে বে?
__ তাই বটে,কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
__তুই দাঁড়া,আমি টর্চটা লিয়ানচি।
আমি একাই ছোবল খেলাম।আরও এক ধাপ উঠে উপর তলার মেঝেটার দিকে চাইলাম।ততক্ষণে কেলে সাপটা আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ফেলেছে।কিছুক্ষণ পর আমিও মিশে গেলাম ওর বিষে।এবার চোখ কচলে তাকাতেই দেখি মেঝের দেওয়ালে একটা আলো জ্বলছে।না না আলো নয়,বন্ধ জানালার দুটো কপাটের মাঝের ফাঁকটুকু দিয়ে এক চিলতে রোদ এসে পড়েছে মেঝের দেওয়ালে।আর রোদটা একটা টিউবলাইট হয়ে গেছে।সেদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই কান দুটো খাঁড়া হয়ে গেল আমার।কিচকিচ ফিসফিস করে কারা যেন কথা বলছে।অস্পষ্ট কথাবার্তা। যেন গোপনে ষড়যন্ত্র আঁটছে কারা।দমবন্ধ হয়ে যাবার জোগাড়।মনে হল চট করে চেপে জানালাটা খুলে দিই।কিন্তু পারলাম না।কে যেন ঠেলা মারছে ওধার থেকে,যেন না উঠি।এই বাড়িতে জন্মেছে আমার আব্বা।ন'টা কাকা আর তিনটে ফুফু।শুনেছি এই ঘর দাদোর বাপ,তার বাপের আমলের।আগে ছিল গ্রামের সব থেকে উঁচু বাড়ি,তাই এখনো সবাই বলে 'বড়বাড়ি'।
হঠাৎ মেঝেতে টর্চের আলো পড়তেই চমকে উঠলাম।কাঁধে হাত দিয়ে বলল কেমন দিলাম বল?
জানালাটা খুলে দিল জমিরে।আর সঙ্গে সঙ্গে কতকগুলো বাদুড় ডানা ঝাপটিয়ে বেরিয়ে গেল জানালা দিয়ে,আর কতকগুলো মেঝের এধার থেকে ওধার ঘুরতে লাগল।তারপর একসময় 'মরকোচাই'(খড়ের চালায় বাঁশ দিয়ে যে মাচা করা থাকে) সেঁধিয়ে গেল।তাহলে এরাই এতক্ষণ গোপনে ষড়যন্ত্র আঁটছিল! সবাই কি বুঝে গেছে?
একটা আদিম গন্ধ ঘিরে আছে মেঝেটাকে,ঝাঁটফাট পড়েনা মনে হল।মেঝেটা যতসব অপ্রয়োজনীয় জিনিসে ভর্তি।জল সেঁচার একটা 'দুনি' পিঠ উল্টিয়ে পড়ে আছে,যেভাবে কুমির ডাঙায় রোদ পোহায়।দেওয়ালের একধারে কতক গুলো মাটির হাঁড়ি-কুড়ি থাক থাক সাজানো 'বিড়ের' উপর।মরকোচাই তোলা আছে একটা লাঙল,মই,জোয়াল।গোরুর গাড়ির দুটো কাঠের চাকা ঠেসানো আছে দেওয়ালে। আরও কত রকমের জিনিস।সবই এখন অচল।দাদোর শখ বটে,এখনো এগুলো রেখে দিয়েছে!কিসের প্রয়োজন এগুলোর?এখন তো বৈজ্ঞানিক প্রদ্ধতিতে চাষবাস!'দুনিটা' অবশ্য ওজন দরে বেঁচে দিলে কিছু টাকা পাওয়া যাবে,আর কাঠের জিনিসগুলো?থাক বাবা।দাদোর জিনিস দাদোই বুঝুক গো।
জমিরে বলল,চল চল ভম্বলে,চল।আর খামোকা দেরি করিস না।
আসলে আমি এটা ওটা নেড়েচেড়ে দেখছি।চল চল বললেই কি যাওয়া যায়?তাহলে দাদো কি এই জন্যেই আমাদিকে উপর তলায় উঠতে দিত না!বেশ মানুষ বলতে হয়,এতদিন ধরে একটা মরা নদী বুকে চেপে বসে আছে,আর কোনোদিনও জল বইবে না জেনেও!
হাঁড়ি-কুড়ি গুলো সব একে-একে এনে নামালাম আঁজিরতলায়।দাদোর সামনেই।ওগুলোর ভেতর নানারকম খাদ্যশস্যের বীজ ছিল,যেগুলো পোকাতে নষ্ট করে দিয়েছে।ধনে,তিল,একরকম সরু সরু লাল রঙের ধান,যেগুলোর কিছুই অবশিষ্ট নেই।শুধু খোসা গুলো।নাক দিয়ে শুঁকলাম,কি খুশবু! মনে হল দাদোকে জিজ্ঞেস করি,দাদো কি ধান এগুলো?দাদোর ফ্যাঁকাসে মুখটা দেখে আমার খুব মায়া হল।প্রশ্নটা বুকের মধ্যেই পুষে রাখলাম।জমিরে বলল,কুলো করে 'পাছুড়লে'(ঝাড়লে) দুটি পাওয়া যাবেক।
কি হবে এই ধানগুলো নিয়ে?এখন তো সব উচ্চ ফলনশীল!
দাদোর মুখে শুনেছি,তখন ক্যালেন কাটা হয়নি,মাঠ গুলো সব এবড়ো-খেবড়ো উঁচু ডাঙা।আকাশের দিকে তাকিয়ে একবার চাষ।মানুষের কম অভাব অনটন গেছে!
__তাহলে বাকি সময় মাঠগুলো পড়ে,থাকত?
__পড়ে থাকবেনি তো কি হবেক?তখন মাঠকে মাঠ গোরু-মোষ চরত।আঁকড়গোড়ে,ভাঁড়ালগোড়ে, জিওলনালা,কাপাসের মাঠের পুকুর গুলো শুকিয়ে খাঁ খাঁ করত।গোরু-মোষে পানি খেতেও পেতুক নাই।সে কি দিনকাল গেছে রে ভাই!
__দাদো,একবার চাষ হলে মানুষ কি খেত গো?
__একবার চাষ,তাও এত ধান হত নাকি ভাবছিস? এসব ধান ফান থাকেনি।মোরগঝুটি,রঘুশাল,রূপশালী, সীতাশাল ধানের চাষ।বিনা ইউরিয়া বিনা স্পেরে।শুধু গোবর সারের ভরসা করেই বিঘে প্রতি পাঁচটা ছ'টা ধান।তখনকার ভাতের কি সুয়াদ ছিল!শুধু নুন ছড়িয়েও এক থালা ভাত গবাগব পেরিয়ে যেত।ভাতের যা 'আকাল'গেছে 'আসাম'(ভাতের ফ্যান), 'আমানি'(ভিজে ভাতের জল)টুকুও ফেলা যেতুক নাই।ছেলেপুলেরা ঢক ঢক করে পিইয়ে খেত।
ভাবলাম এবার এই ভান্ডার গুলোতে দাদী কোন অমূল্য সম্পদ ভরে রাখবে কে জানে!
ভুলুনে ফেলে দেওয়া জিনিস গুলো শুঁকছে,আর মুখ দিয়ে অদ্ভুত ভাবে কুঁই কুঁই শব্দ করছে।আর মাঝে মাঝে ঘাড় তুলে কি যেন দেখছে।তাহলে কি এই বাড়ির মায়া ত্যাগ করতে না পেরে সমস্ত পূর্বপুরুষরা বাসা বেঁধেছিল?আজ তাদের ডেরায় হামলা করায় হুড়মুড় করে বেরিয়ে পড়েছে সব,তা দেখে ভুলুনের এমন আচরণ!কুকুরের ঘ্রানশক্তি তো প্রখর!নিশ্চয় কিছু টের পেয়েছে।
মরকোচার চালে গোঁজা একটা জিনিস দেখিয়ে জমিরে বলল,ভম্বলে ওটা কি বে?
দেখলাম একটা গাছের 'তে-ফ্যাংরা' মোটা ডাল,অনেকটা গুলতির মতো দেখতে জিনিসটা।তাতে কয়েকটা পেরেক পেটানো আছে।আর একটা সুতোর সঙ্গে মরচেধরা ছাতার ছিপ বাঁধা।দুজনেই মুখ চাওয়া-চাওয়ি করলাম।
জমিরে বলল,পেড়ে দেখছি বুঝলি,আমাকে একটু তুলে ধরদিনি।
আমি জমিরেকে তুলে ধরলাম।আজমীরা চাচী দেখতে পেয়ে বাধা দিল,হেই তুরা কি জুড়িনছি বল তো?সাপ-খুপ থাকতি পারে,মরকোচাই হাত ভরিন কি লাভ?নাম নাম,নাম বলছি।শুনলাম না।জমিরে টেনে হিঁচরে বের করল জিনিসটা।সত্যিই আজব জিনিস!সেই গুলতির মতো দেখতে ডান্ডাটা হাত দেড়েক লম্বা।'ফ্যাংরা'(ডান্ডা)দুটো যেখানে মিলিত হয়েছে সেখানটাই ইউ আকৃতির একটা বাঁকানো মোটা 'তার' ডান্ডা দুটোর দুই মাথায় ফুঁটো করে ভরা আছে।এ যে আজব জিনিস!কেই বা করল এমন কারসাজি? আজমীরা চাচীও জানেনা।'অঘত্যে'(বাধ্য হয়ে) দাদোর কাছেই গেলাম।
__দাদো কি বটেগো এটা?
দাদো একবার মুখতুলে দেখল জিনিসটা।আর ওটার গুণেই নাকি কে জানে,দাদোর পিত্তি ক্ষরে গেল।বিরক্ত হয়ে বলল,সরাদিনি আমার ছামু থেকে।দূর হ তুরা।
অনেকদিন হল লক্ষ্য করছি দাদো আর আমাদের বাড়ি আসে না।আগে চাষবাস সম্পর্কে আব্বার সঙ্গে যুক্তি পরামর্শ করতে সন্ধ্যাবেলায় লাঠিটা নিয়ে ঠক ঠক করে ঠিক হাজির হত।এখন আর দেখতে পাই না।
তবে দাদীর অবশ্য অনেক সুবিধা হয়েছে এই 'বাখুলে' পেরিয়ে এসে।আগে একাই সমস্ত কাজ করতে হত।আর এখানে মা-চাচীদের অনেক সাহায্য পাই।সবাই দেখে।কেউ না দেখলে ওরা যাবে কোথায়?
বাপ-চাচারা বলেছিল,তুমাদিগে আর এত কষ্ট করতে কে বলেচে।আমাদের কাছেই খেয়ে লিবে।দাদো বিষ খেয়ে নিবে,কিন্তু 'পালি' খেতে নারাজ।তাহলে কার কি করার আছে?আসলে জমি জায়গার তো অভাব নেই।
মায়ের কাছে জানলাম দাদো শুধু আমাদের ঘরেই নয়,কোনো কাকাদের ঘরেই আর যায় না।
উঠোনের পাশে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে থাকা ভুলুনে ঘেউঘেউ করতে করতে চেনা মানুষের গন্ধ পেয়ে থেমে গেল।ঘরের দরজাটা সানান্য ঠেসানো আছে।ভেতর থেকেই বলল,কে বটে?
__দাদো আমি।
_অহ্।আয় ভাই বস।
দাদী বলল,একটু চা করে আনি,তুর দাদোর সঙ্গে গল্প কর।
আমি বাধা দিলাম,না না দাদী,আবার কষ্ট করে চা করতে হয় না।
__আর কষ্ট ভাই!সারাদিন বুড়ো-বুড়ি বসে থাকি,একবার করে তুরা আসতেও তো পারিস।পাত্তাই নাই তুদের।
ঘরের দেওয়ালে সাঁটানো বি.পি.এল এর ইলেকট্রিক মিটারটার পাশেই একটা সাদা বাল্ব জ্বলছে,সেই বাল্বের সাদা আলোয় দাদোর মুখটা বড্ড অসহায় লাগাচ্ছে।
বললাম,দাদো আর যাও না কেন গো আমাদের ঘর?
কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকল দাদো।তারপর বলল,আমি ভাই বুড়ো মানুষ না হয় যেতে লারি,কই তুরাও তো আসিস না কুনুদিন।
একথার কোনো জবাব দিতে পারি না।প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে বলি,দিয়ে বলো দাদো,কেমন লাগছে এই ঘরে থাকতে?এত সুন্দর ইটের বাড়ি!আর তুমি আসতেই চাইছিলে না।দাদো মুখতুলে আমার দিকে তাকাল।প্রশ্নটা বোধহয় করা ঠিক হল না।একেই কত খোশামোদি করে আনা এবাড়িতে,তার উপর পুরনো কথা তুলে কি লাভ?
দাদোকে রহিমকাকা যখন প্রস্তাবটা দিয়েছিল তখন দাদো বলেছিল,ক্যানে?আবার ইটের বাড়ি করে কি লাভ,আর কয়দিন আমরা?
__আব্বা তুমি বুঝতে লারছো ক্যানে?সরকার থেকে যখন ফ্রিতে পাবে ক্যানে লিবে নাই?কত লোকে লিচ্ছে।
__সে লেকগো,আমার ওসবের দরকার নাই।
__আরে ওরকম কর না,আমি নাম-ফাম সব ঠিক করে দিইছি।ঘরটা করা থাকলেতো বুন-বুনাই রাও এসে ঢুকবেক।যখন আসে,ইয়ার তার ঘরে শুতে হয়।তুমার নিজের বলে থাকলেতো...
রহিমকাকার যুক্তি শুনে দাদো বলেছিল,তাইলে যা ভালো বুঝিস কর।
দাদোর ভালো বুঝেই ঘরটা করা হল।কিন্তু দাদো এমন 'বেগর-বাঁই' করছিল সে কি বলব!বলেছিল,ধান পুরে রাখব ঘরটায়,আর মড়াই করব নাই।
__ধুর!নতুন ঘরটায় কেউ ধান পুরে রাখে?লোকে বলবেক কি?
সেই দাদোই এখন ধানের বদলে পুরা আছে এঘরে।আমি তক্তাপোশটার তলাটা উঁকি মেরে দেখলাম।কিন্তু কই?সেদিনে জিনিসটা লুকিয়ে এনে ওখানে রেখেছিলাম।দাদোকে শুধা'লাম,দাদো সেদিনে যেটা দেখিয়েছিলাম ওটা কি বটে গো?
__কুনটা বলদিনি?
__সেই যে গো সেই...গুলতির মতো...
__অহ্।তুই বস,আমি আনছি।
পাশের রুমটা থেকে সেই আজব জিনিসটা এনে বলল,হাঁ দ্যাখ।
ভালো করে লক্ষ্য করলাম দাদো আরও কিছু নতুন কাজ করেছে।সেই ছাতার ছিপটার ডগায় একটা নাইলন সুতোর ফাঁস বেঁধেছে।আর একটা বাঁশছুলকি পেরেক দুটোর দুই মাথার সঙ্গে বাঁধা সুতোটার সঙ্গে পাক দিয়ে দিয়ে বেজানো হয়েছে।আমি ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে আছি দেখে দাদো বলল,এটা হল তুর সেজকাকার তৈরি বগকল।মরেবেলায় এইটা দিয়ে বগ ধরত তুর কাকা।
সেজকাকা এটা দিয়ে বক ধরত!খুব অবাক হলাম।
বললাম,কি করে কি হয় গো দাদো?
__এই যে বাঁশছুলকিটা দেখছিস,এটার উপর একটা ছোট মাছ রাখতে হয়।আর এই ফাঁস সুতোটা গলিয়ে দিবি পেরেক দুটোর মাথায়।লে ঠুকারে দ্যাখ এবার।
আমি আঙুল দিয়ে বাঁশছুলকিটার উপর একটা ঠোক্কর মারলাম।আর কি অবাক কান্ড!ছাতার ছিপটা বাঁই করে পেছনপানে ঘুরে গেল,যে ভাবে মেছেল ছিপে ঘ্যাচ মারে।সঙ্গে সঙ্গে ফাঁস সুতোটা সপাং করে পরানো গেল আমার হাতে।বাহ্! তাহলে বকবাবাজীর আত্মারাম খাঁচাছাড়া।আমি বগকলটার কারসাজী দেখে মুচকি মুচকি হাসলাম।তা দেখে দাদী বলল,তুর সেজোকাকা মরেবেলায় আমাকে কম জ্বালানো জ্বালিয়েছে!জ্বালিয়ে পুঁদের কাপড় নামিয়ে দিত।খাওয়া নাই-নাওয়া নাই,সারা সারা দিন টো টো করে ঘুরে বেড়াত।আর মাঠে-মাঠে বগধরা,চটুই পাখির বাসায় হাত ভরে ছানা বার করা,পয়রার খোপ থেকে রেতের বেলায় পয়রা ধরা...
__তুমি রেঁধে দিতে দাদী?
__ধুর!বগ-ফগ ঘরে ঢুকুলে আমার পিত্তি জ্বলে যেত!ওরা কি করত জানিস?ওপাড়ার শোধরুলে,তুর গফুরকাকা,আর তুর সেজকাকা ওরা তিন জনে ফিস্টি করত।তুর দাদো ওসব দেখতে পারত না।রেগে গিয়ে একদিন দিল দূরের মাদ্রাসায় ভর্তি করে।ছেলেটা মানুষ হয়তো হোক।কিন্তু সেখানে গিয়েও সে কি কান্নাকাটি!
হঠাৎ অন্ধকার হয়ে গেল ঘরটা,লোডশেডিং।
__যাঃ।সন্ধে হলেই খালি লোডশেডিং! দাদী ওঘর থেকে লন্ঠনটা এনে নামাল মেঝেতে।এই মুহূর্তে সবার ঘর অন্ধকার।শুধু দাদোদের ঘরে আলো জ্বলছে টিম টিম করে।বললাম,একটাই যে লাইট গো দাদো?ওঘরেও তো একটা লাইট চাই,তার নিয়ে যেতে হবে।আমি রহিম কাকাকে কাল বলে দেব।
__একটাতেই গাদা,আবার কে তার লিয়ে যাচ্চে।
__দাদো তা বললে কি হয়?আর গ্রীষ্মকালে কি হবে?ফ্যান চালাতেও তো একটা বোর্ড চাই নাকি?
তক্তাপোশের উপর পা ঝুলিয়ে বসল দাদো।ঠকাং করে একটা শব্দ।দাদোর মুখে আগুন।বিড়িতে টান দিয়ে দাদো বলল,তাইলে বুঝতে পারছিস ভাই,কিছু টের পেয়েছিস তুরা?
__মানে?
__ক্যানে আমি এঘরে আসতে চাই নি?মাটির ঘরের মতো সুখ কুথাতেও আছেরে?কুথাতেও নাই!বছরের পর বছর ধরনগুলো হাতপাখায়,রাত গুলো লন্ঠনে কেটে গেল,আর দুইদিন না আসতে আসতেই বলচিস ফ্যান লাও,অমুক লাও-তসুক লাও...
দাদো আগেকার যুগ ছেড়ে দাও।এটা হাতপাখা,লন্ঠনের যুগ নয়।সুইচ টিপলেই মাথার উপর বঁনবঁন বঁনবঁন।ওগুলো তুমি বড়বাড়ির উপরতলায় তুলে দিয়ে আসতে পার,লাঙল-মই-জোয়াল ওগুলোর পাশে মানাবে ভালো। কথাটা বলার সাহস হল না দাদোকে।
দাদোর মুখ দিয়ে আবার সাদা ধোঁয়া বেরল।ধোঁয়াটা পাক খেতে খেতে মিশে যাচ্ছে বাতাসে।দাদী বলল,বলছিল যে রে বি.পি.এলের ফ্রি।কুনু বিল লাগেনা।
__সে অনেক কিছুই বলে।
দাদো বলল,মানুষ গুলো সব ফুঁটছে কুথায়?শালাদের মূলে মাগ নাই,ফুলে শয্যা।তারপর একটার পর একটার রুগ ধরেই রইল।আজ এটা বাগাও,কাল ওটা বাগাও।ফতুর হয়ে যাবি শালা!
আমি আর কোনো জবাব দিতে পারলাম না। দেখলাম লন্ঠনের মৃদু আলোয় দাদোর লম্বা ছায়া পড়েছে মেঝের দেওয়ালে।দাদোকে লাগছে একটা গলালম্বা বক।আর দাদোর দাড়িটা মনে হচ্ছে একটা লম্বা ঠোঁট।আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি দাদো মাছটা ঠোক্কর মেরে দিয়েছে।ফলে ছাতার ছিপটা বাঁই করে পেছনপানে ঘুরে গেছে।ফাঁস সুতোটা ধীরে ধীরে দাদোর গলায় জড়িয়ে যাচ্ছে।দাদো ডানা ঝাপটাচ্ছে,ছটফট করছে।
17 মন্তব্যসমূহ
আমরা সবাই গল্প লিখি, হামির মাটি দিয়ে গল্প নির্মাণ করে। তার গল্পের গায়ে লেগে থাকে মাটি। খুব কাছে গেলে ভেসে আসে মাটির মন কেমন করা সুবাস।
উত্তরমুছুনএকটি সাক্ষাৎকারে নাগিব মাহফৌজ বলেছিলেন, "দেখুন, একজন লেখক নিছক সাংবাদিক নয়। লেখক গল্প সৃজন করেন তার নিজের জিজ্ঞাসা, সন্দেহ আর মূল্যবোধকে জুড়ে জুড়ে। এইটে শিল্প।"
টান গল্পটি শিল্পে উত্তীর্ণ। হামির নিজের জিজ্ঞাসা, সন্দেহ আর মূল্যবোধকে জুড়ে জুড়ে গল্পটি নির্মাণ করেছে। এই গল্পের সম্পদ এর ডায়ালেক্ট, এর বর্ণনার ভাষা। সম্পদ ডকুমেন্টেশনে। সারা গল্পটি জুড়ে প্রেক্ষাপটে রয়েছে একটি 'বককল'। একটি প্রতীক। আসলে তো ওর আড়ে উঠে এসেছে পরিবর্তিত সময়ের এক দলিল।
শুধু দাদোদের বাড়িই মাটির, তাছাড়া সবার ইঁটের। রহিমকাকা পার্টি করে - তার সৌজন্যে সরকার থেকে ফ্রি ইটের বাড়ি। বিপিএল ইলেক্ট্রিক মিটার। কিন্তু দাদো সেই বৃদ্ধ যেতে চাননি। যেতে চাননি মাটির ঘর থেকে, রহস্যময় উপর তলার ঘর ছেড়ে, যে ঘরে কাউকে ঢুকতে দেয় না দাদো। কিন্তু যেতে তাকে হয়। বাড়ি ফাঁকা করতে হাত লাগায় সব।
"সবই নিয়ে যাওয়া হবে, খালি থেকে যাবে এই ভিটেমাটি, উঠোন, আঁজরিগাছ। বর্ষায় প্রথমে খড়ের চালাটা ফুটো হবে, ফুটো দিয়ে চুঁইয়ে চুঁইয়ে জল পড়ে উপর তলার মেঝের মাটিটা গলে গলে পড়বে নীচে। তারপর ধ্যিরে ধীরে চারটে দেওয়াল, মাটির ঘর মাটিতেই মিশে যাবে একদিন।"
তারাশঙ্করের লেখায় পরিবর্তিত সময়ের যে দলিল পাই তাইই উঠে এসেছে হামিরের কলমে। উঠে এসেছে অচল জিনিসপত্তর, ভুলে যাওয়া ধান - বর্জিত কৃষিকাজের যত অনুষঙ্গ। আর সেই বককল। বক ধরার কৃৎকৌশল।
হামিরের ভাষার একটু নমুনা - ছবিতে দিলাম। আশা করি হামির রাগ করবে না।
কত শব্দ উঠে এসেছে তাদের মায়া নিয়ে।
আঁজিরগাছ (আঞ্জীর - কাবুলী ডুমুর? তাই তো হামির?)
আঁকড় গাছ ( অঙ্কোট বা অংকোল?)
আসাম = ভাতের ফ্যান
ফ্যাংরা = ডান্ডা
বাখুলে, পালি... আরো কত কত শব্দ সম্পদ উপহার দিয়েছো হামিরভাই। শহুরে শব্দের প্রাবল্যে ধরে যাওয়া মাথার একটু আরাম হল।
মাটিতে শিকড় ছড়িয়ে হামির ক্রমশ বাড়িয়ে চলেছে তার বিটপ সম্ভার। মহীরুহ হয়ে উঠুক সে। বাংলা সাহিত্যের মঙ্গল হোক।
Sadique Hossain
উত্তরমুছুন·
অনেকেই প্রথম প্যারাগ্রাফে গল্পটি শুরু করে পরের প্যারাগ্রাফ থেকে ক্যারেক্টারের ইনফর্মেশন দিতে শুরু করে। তখন গল্পটি আর এগোয় না। তারপর বাপ-ঠাকুরদার ইনফর্মেশন দেওয়া শেষ হলে আবার গল্পে ঢোকেন। ততক্ষণে যা হবার, তাই হয়ে যায় - গল্পটির ইন্তেকাল ঘটে।
হামিরুদ্দিনের এই গল্পটিতে সেইসব দোষ নেই। এই গল্পটি ভাল কেননা এই গল্পটি টেকনিক্যালি ভাল।
ভাই হামিরুদ্দিন, যে কলমে গল্পটি লিখেছিলে, সেই কলমটি আমাকে দিও।
প্রচুর অভিনন্দন ভাই ভালো লাগলো ।
উত্তরমুছুনদাদা তোমার লেখার মধ্যে গ্রাম্য জীবনটা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে....প্রতি গল্প অভিনব আর প্রতিটি গল্পে যেন মাটির সোঁদা গন্ধ পাওয়া যায়...চালিয়ে যাও... আরো অনেক লেখা চাই....
উত্তরমুছুনলেখা নয়, যেন মাটি-জলে লেপা মায়ার বসতি। সমৃদ্ধ গল্পকার। সমৃদ্ধ তার শব্দের বাহার। গল্পপাঠে নিয়মিত হবেন আশা করি। অভিনন্দন।
উত্তরমুছুনএটাই প্রাকৃতিক গল্প
উত্তরমুছুনDiscovery of an author
উত্তরমুছুনDiscovery of an author
উত্তরমুছুনঅসম্ভব ভালো ,অনেক আগেই পড়েছি তবুও আবার পড়তে কোনো দ্বিধা হলো না । আলাদা একটা গতি পেলাম লেখাটিতে অতন্ত্য সাবলীলতা পেলাম।এইভাবেই লিখতে থাক ভাই।
উত্তরমুছুনভালো লাগল,
উত্তরমুছুন- অলোকপর্ণা
আমি সুন্দরবনের মানুষ।নোনা নদী,আদিগন্ত খোলামাঠ,ম্যানগ্রোভ, ভাঙা বাঁধের গায়ে যে মাটির গন্ধ,জীবনের সংগে তা ওতপ্রোত। সেই চেনা সুবাস হামিরুদ্দিনের গল্পে পেলাম।অভিনন্দন লেখককে।
উত্তরমুছুনআমি সুন্দরবনের মানুষ।নোনা নদী,আদিগন্ত খোলামাঠ,ম্যানগ্রোভ, ভাঙা বাঁধের গায়ে যে মাটির গন্ধ,জীবনের সংগে তা ওতপ্রোত। সেই চেনা সুবাস হামিরুদ্দিনের গল্পে পেলাম।অভিনন্দন লেখককে।
উত্তরমুছুনঅপূর্ব বর্ননাকৌশল,সহজ-সরল ভাষা সহজেই পাঠকের মনকে আকৃষ্ট করে তোলে |এখানেই তোমার অনন্যতা ...
উত্তরমুছুনএভাবেই এগিয়ে চলো...
তোমার গল্পে মাটির সোঁদা গন্ধ পাই। আটপৌরে ভাষার কারুকাজ পাই। সবমিলিয়ে কেমন যেন ঝিম ধরে যায়। মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে ভেতরঘরে।
উত্তরমুছুনপড়ছি আর অবাক হচ্ছি।এত সুন্দর কথন,বুনন মুগ্ধ করে রাখে শেষ পর্যন্ত।হামিরকে শুভেচ্ছা।ভালো থাকুন আরও লিখুন।
উত্তরমুছুনঅসম্ভব ভাল লেগেছে।
উত্তরমুছুনচমৎকার । মাটির ঘ্রাণের সঙ্গে কত কিছু উঠে আসে এ গল্পে।
উত্তরমুছুন