বিশ্বকে নতুন এক সাহিত্যধারা উপহার দেওয়া বেন ওকরি'র সাক্ষাৎকার


ই-মেইলে সাক্ষাৎকার গ্রহণ: এইনেহি এডোরো-গ্লিনেস
অনুবাদ: এলহাম হোসেন
বেন ওকরি বিশটিরও বেশি গ্রন্থের রচয়িতা। তাঁর জন্ম ১৯৫৯ সালে নাইজেরিয়ায়। সাহিত্যে ম্যানবুকার জিতেছেন ১৯৯১ সালে। সাহিত্য-বিশ্বে তাঁর পদচারণা দীপ্ত ও সাহসী। আফ্রিকার জনমানুষের জীবন তিনি দেখেছেন নানান দিক থেকে, নানান আঙ্গিকে। আফ্রিকার মিথ, ভাষা, বিশ্বাস-ব্যবস্থা, সংস্কৃতি, লোকসাহিত্য নানানভাবে ধরা দিয়েছে তাঁর লেখনিতে। তিনি উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ রচনায় অনবদ্য। তাঁর রচনা বিশ্বের নানান প্রান্তের পাঠককে উদ্দীপিত করে শিকড় অন্বেষণে আর সাহিত্য সমালোচকদের উৎসাহিত করে তাঁকে নানান দৃষ্টিভঙ্গিতে আবিষ্কার করতে, বিশ্লেষণ করতে।
 
যখনই আমি আমাদের সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ এবং আফ্রিকার সাহিত্য নিয়ে কারোও সঙ্গে কথা বলব বলে ভাবি, তখনই মনে হয়, নিশ্চয় সেই ব্যক্তি বেন ওকরি। প্রথম কারণটি হলো- তাঁর সময়ের সঙ্গে তাঁর জীবন ও কর্মের ওৎপ্রোত সম্পর্ক আছে। তাঁর সাহিত্যকর্ম দু’টি সহস্রাব্দকে একই সুতোয় বেঁধে ফেলেছে। আর দ্বিতীয়টি হলো- তিনি সেই ব্যক্তি, যিনি ১৯৯০ এর দশকের শুরুর দিকে সাহিত্যাঙ্গনে আবির্ভূত হয়ে সমসাময়িক আফ্রিকার সংস্কৃতির সবচেয়ে ভালো দিকও দেখেছেন, আবার সবচেয়ে খারাপ দিকও দেখেছেন। আমি জানতাম, তিনি বর্তমান বিষয়-আশয়ের সঙ্গে স্বচ্ছতা ও গভীর অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবেন।




আইনেহি এডোরো-গ্লিনেস:
আচেবে থেকে আউনূর ও অ্যামেশ্বেতা পর্যন্ত গত দশ বছর আফ্রিকার সাহিত্যের দিকপালদের অনেকের মৃত্যু আমরা দেখেছি; আমাদের পূর্বপুরুষদের কাতারে তাঁদের শামিল হয়ে যেতে দেখেছি। এই প্রজন্মের আমরা তাঁদের সাহিত্য রচনা করতে দেখেছি, আবার তাঁদের মৃত্যুও দেখেছি। আমরা কিভাবে তাঁদের মূল্যায়ন করব?
বেন ওকরি: 
আমাদের সাহিত্যের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। একদিক থেকে লেখকদের অতীতে পরিণত হয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে প্রকৃত সাহিত্যের সূচনা হয়। লেখকরা মারা গেলেই তাঁদের সাহিত্যের চর্চা শুরু হয়। তাঁরা জীবিত থাকতে তাঁদের কর্মের মধ্যে যেসব অর্থ লুক্কায়িত থাকে, তাঁরা মারা গেলে সেগুলোর অন্বেষণ শুরু হয়। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তাঁদের লেখা নতুন মাত্রা পায়। বইগুলোই তখন আমাদের অধ্যয়ন করে। তারা তাদের সময়-কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের মাঝে ধরা দেয়। তখন তাঁদের সম্বন্ধে আমরা আগে যা ভেবেছি, তা আর থাকে না। তখন তাঁদের কর্মই কথা বলতে শুরু করে। কেবলমাত্র বর্তমান সময়েই আমাদের অনেক পথিকৃতের সাহিত্য নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছেছে। এঁরা নিজের সঙ্গে আমাদেরকেও অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। বই প্রথমে প্রচারণা এবং বিপণনের উপষঙ্গ হিসেবে আবির্ভূত হয়। পড়ার উপষঙ্গ নয়। তখন বই থাকে লেখক সম্বন্ধে। যদি আমরা নিজেদের এবং নিজেদের সময়কে সেগুলোর মধ্যে দেখি তখন আমরা সেগুলো ভাসাভাসাভাবে পড়ি। সময়ের বয়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে কিছু বই চিরায়ত সাহিত্যের মর্যাদা লাভ করে। কিন্তু আসলে আপাতভাবে সব বই এমনই। একজন সন্তুকে সন্তু হিসেবে ঘোষিত হতে হলে তিনটি অলৌকিক ব্যাপারের প্রয়োজন। বইকেও সত্যিকারের অমরত্ব লাভ করতে হলে একই ব্যাপারগুলোর প্রয়োজন। পুনর্জন্মের মতো কঠিন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এদের যেতে হয়।
 
লেখকরা বিস্মৃত হয়ে যান; তারপর আবার পুনরাবিষ্কৃত হন। অবহেলার শিকার হন; তারপর আবার তাঁদের নতুন করে পঠন-পাঠন শুরু হয়। কিন্তু তাঁদের সাহিত্যিক কারিশমা দেখাতে হয়। তাঁদের নিজেদের চাইতে তাঁদের বইগুলোকে সময়ের পরীক্ষায় বেশি অবতীর্ণ হতে হয় এবং প্রমাণ করতে হয় যে, পরবর্তী যুগগুলোতে তাদের নিজেদের সময়ের চাইতে তারা অধিকতর বেশি প্রাসঙ্গিক। যে বইগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলায় না, সেগুলো কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সেগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য গোত্রগত বা সাম্প্রদায়িক প্রচারণা যতই চালানো হোক না কেন। মোদ্দাকথা হলো, লেখক বেঁচে থাকতে আমরা তাঁদের বইয়ের সত্যিকারের মূল্য বুঝি না। বইগুলোর বাঁচার স্বার্থেই তাঁদের অবশ্যই অতীত হয়ে যেতে হবে। সম্প্রতি গত হওয়া আমাদের কোন সাহিত্যিকের বই বিস্ময়কর এবং দীর্ঘস্থায়ীভাবে মূল্যবান প্রমাণিত হবে, তা আবিষ্কার করতে শুরু করার প্রক্রিয়ার অন্তবর্তীকালে আমরা অবস্থান করছি। আমরা যারা বেঁচে আছি, তারা এটিকে নিশ্চিত বলে জানি। আর লেখকের জীবদ্দশায় যে বইয়ের দুর্লঙ্ঘনীয় মূল্য আছে বলে আমরা জানি, তা তাঁর মৃত্যুর পরেও অক্ষুন্ন থাকবে বলেই আমি মনে করি। তবে লেখকের মৃত্যুর পর তাঁর বইয়ের গুরুত্বের সঙ্গে অনেক বিস্ময়ের যোগ হয়। আমাদের পূর্ববর্তী লেখকদের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে আমরা আমাদের সত্যিকারের সাহিত্যের দেহরেখার আভা দেখতে শুরু করব। কিন্তু সত্যি কথা হলো, প্রকৃত অর্থে কী টিকে থাকবে আর কী আমাদের সাহিত্যের শরীর নির্মাণ করবে, তা জানতে দশকের পর দশক বা শতাব্দীর পর শতাব্দীও লেগে যেতে পারে। যাঁরা কথা বলে কোন বিষয়কে প্রভাবিত করতে পারেন, তাঁদের কেউই যখন থাকবেন না, তখন কেবলমাত্র তাঁদের বই-ই ভবিষ্যতের সঙ্গে দ্বিরালাপ করবে। শেষ পর্যন্ত এ কাজটিই শুধু এঁদের সাহিত্যকর্ম করে যাবে। প্রচার-প্রচারণা, উন্মাদনা ছড়ানো- সবকিছু শেষ হয়ে যাবে। তখন কেবলমাত্র সমাজে সময়ের পরিক্রমায় টিকে থাকবে এঁদের কাজ। আমাদের পূর্বসূরিরা তাঁদের কাজের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকবেন। তাঁদের সত্যিকারের উপহারগুলো আমাদের মাঝে আলো বিকিরণ করে যাবে অনন্তকাল ধরে।

আইনেহি এডোরো-গ্লিনেস: 
প্রতিটি সাহিত্য-যুগের উপর এর পূর্ববর্তী প্রজন্মেও আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রভাব পড়ে। সম্ভবত এ কারণেই আপনি যে বর্তমান আফ্রিকান সাহিত্যের কথা ভাবছেন তার ব্যাপারে আমি উৎসুক। আপনার মতে, আমরা যে সময়ে এসে দাঁড়িয়েছি, তার বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী?

বেন ওকরি: 
এই সময়ের বৈশিষ্ট্যগুলো বলা আমার জন্য অসম্ভব। আমার কর্মতৎপরতা ও যোগাযোগ বিবেচনায় এই মুহূর্তে যে কথা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, তা হলো বর্তমানে সাহিত্যে এক ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে। উচ্ছ্বাস-উৎসবের বহুস্বর ধ্বনিত হয়েছে। সব ধরনের স্বর। এখন বলা যায়, এটি সেই সময় যখন লেখকরা তাঁদের ব্যক্তিগত, নান্দনিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের নানান মাত্রায় ক্ষমতা, স্বাধীনতা ও সাহিত্যের সম্ভাবনা আবিষ্কার করছেন। এভাবেই তো একটি সাহিত্যের জন্মলাভ ঘটে। এটি এই মহাদেশ ও সারাবিশ্বেই ঘটছে। এর পরাগায়ণ ও বিকাশ হচ্ছে। পৃথিবী উপলব্ধি করছে যে, একটি শক্তির জন্ম হয়েছে। পৃথিবীর সাহিত্যসমূহে একটি যুগের সূচনা হয়েছে। আমরা সাহিত্যের সম্ভাবনার গতিপ্রকৃতি বদলে দিচ্ছি। আমি সব সময়ই অনুভব করেছি, যখন আমরা আমাদের স্বরের ক্ষমতা ও সৌন্দর্য আবিষ্কার করতে পারি তখন আমরা সাহিত্যের সীমা অপরিহার্যরূপেই বদলে দিতে পারি। বুঝতে পারছি, কোন নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন এতে নেই। যে নিয়মগুলো ছিলো সেগুলো তাদের প্রবক্তাদের জন্যই কাজ করত। কিন্তু সাহিত্য কী বা কেমন হতে পারে, তা কেউ-ই কোনদিন সুনির্দিষ্টভাবে স্থির করতে পারে না। মানুষের অতীত ইতিহাসের সঙ্গে তুলনা করলে পাঁচ হাজার বছর খুব অল্প সময়। আর ভবিষ্যতের সঙ্গে তুলনা করলে এটি তো আরও ছোট একটি কালখণ্ড। আমরা সাহিত্যকে যেভাবে গড়বো সাহিত্য তেমনই হবে। এটি নতুন নতুনভাবে মানুষের আত্মার সঙ্গে কথোপকথনে লিপ্ত হবে। আমাদের নিয়ম বদলাতে হবে। আওতা বাড়াতে হবে। দৃষ্টিকে সুপ্রশস্ত করতে হবে। মানবাত্মা কত বড়, কত সমৃদ্ধ, তা দেখাতে হবে। পৃথিবীকে নতুন ধরনের সাহিত্য উপহার দিতে পারলে তা হবে আমাদের শ্রেষ্ঠ উপহার। যা অতীত হয়ে গেছে, তা কপচালে চলবে না। আমাদের আত্মা ও দর্শনের ভেতর থেকে সত্যটাকে বের করে এনে তাকে নতুন অবয়ব দিতে হবে। তা না হলে আমাদের স্বপ্ন অধরাই রয়ে যাবে। আমরা দ্বিতীয় স্তরের আঙ্গিকের মধ্যে আটকে যাব। মোদ্দাকথা হলো, আমাদের তিনটি বিষয় দরকার দক্ষতা, স্বাধীনতা এবং ভালোবাসা।


আইনেহি এডোরো-গ্লিনেস: 
আপনার মতো যাঁরা গত শতাব্দীর শেষের দিকে লিখতেন তাঁদের আগে ততোদিনে সাহিত্যের ক্ষেত্রে ত্রিশটি দশক অতিবাহিত হয়ে গেছে । তাহলে সাহিত্যের সময়কালে ত্রিশ বছর বলতে কী বুঝা যায়? আপনার কাছে এর অর্থ কী?

বেন ওকরি: 
সাহিত্যের সময়-প্রেক্ষিতে দেখলে ত্রিশ বছর খুব অল্প সময়। কিন্তু এটিই আমাদের সময়। গত ত্রিশ বছরে আমি দেখেছি কিভাবে প্রতিবাদ, আত্ম-প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা, ঔপনিবেশিকতার বিরোধীতা এবং আফ্রিকার গতানুগতিক মাত্রাসমূহ থেকে বের হয়ে সাহিত্য ব্যঙ্গ এবং স্বাধীনতার ব্যর্থতার বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠে পরিণত হয়েছে; কিভাবে কারাগারের দেয়াল গলিয়ে, সামাজিক বাস্তবতার ঝাঁজ গ্রহণ করে এটি ভিন্ন একটি আঙ্গিক ধারণ করেছে। অতীত এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এখন তো সাহিত্য আন্তর্জাতিক। এখন তো সাহিত্যের সব প্রকরণ আমাদের করায়ত্বে। গোয়েন্দা কাহিনী, কল্পকাহিনী, আফ্রিকার ভবিতব্য নিয়ে সাহিত্য, বহুভাষিক সাহিত্য, মহাকাব্য, স্মৃতিকথা, আত্মজীবনী, ভ্রমণ কাহিনী, সংকরায়িত প্রকরণ, প্রত্যাহিক জীবনের বিষয়-আশয়, অর্থাৎ, যার কথাই বলবেন, দেখবেন, সাহিত্যে এর অস্তিত্ব আছে। সাহিত্য এখন যেমন আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে তেমন সফলও হয়েছে। লেখকরা এখন নিয়মিতভাবে বেস্টসেলার বইগুলোর উপর নিবন্ধ লেখেন। তাঁদের প্রোফাইল সমৃদ্ধ। বেশ আয় উন্নতিও করেন। কেউ কেউ বেশ খ্যাতি অর্জন করেন। কেউ কেউ ব্যাপক জনপ্রিয়তা উপভোগ করেন। সাহিত্য এখন সবাইকে মাতিয়ে রাখছে। তবে এর আত্মবিশ্বাসের জায়গাটি এখনও নাজুক। তিনজন নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী, বুকার বিজয়ী, পুলিৎজার বিজয়ী এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরষ্কার বিজয়ী নিয়ে আফ্রিকার সাহিত্য এখন প্রমাণ করেছে যে, এটি সব ভালো সাহিত্যের মধ্যে জায়গা করে নিতে পারে। কিন্তু এতে শুধু যে জিনিসটি নেই, তা হলো একাগ্রতা। সচেতনভাবে দৃঢ়তা নিয়ে নিজেদের ঐতিহ্যকে আঁকড়ে সবাই মিলে এক মঞ্চে দাঁড়ানোর জন্য যে একাগ্রতার প্রয়োজন, তারও ঘাটতি আছে। আমাদের একটি গঠনমূলক কণ্ঠস্বর থাকতে হবে। এটি আমাদের সমর্থনে এবং রক্ষার জন্য ধ্বনিত হবে। আমরা খুবই ছড়ানো-ছিটানো। ল্যাটিন আমেরিকানদের মধ্যে এই একতাবদ্ধতা আছে। একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করলেও এঁরা এঁদের সাহিত্যকে রক্ষা করেন; প্রচার করেন। আমেরিকার সাহিত্য এতটাই শক্তিশালী যে, এর একটি ক্ল্যাসিক সিরিজ আছে। এর মধ্য দিয়ে এটি এর ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখেছে। ইংরেজি সাহিত্য তো একটি ইন্ডাস্ট্রির চাইতেও বেশি কিছু। এটি ইংল্যান্ডের চাইতেও বড়। নিজের শক্তিতে এটি নিজেই একটি মহাদেশ। আমাদের নিজেদের জায়গা করে নেওয়ার জন্য অবশ্যই যুদ্ধ করব। কিন্তু প্রকৃত শক্তি প্রকাশ পায় সাহিত্যের সামগ্রিকতায়। মাঝে মাঝে মহান সাহিত্য তার স্রষ্টাকেও ছাপিয়ে যায়।


আইনেহি এডোরো-গ্লিনেস: 
সামাজিক মাধ্যমগুলো তালগোল পাকিয়ে ফেলার মতো নতুন একটি বিষয়। এগুলো সামাজিক জীবনের নানান কিছুকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে। আমি জানি না, আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার উপস্থিতির ব্যাপারে ওয়াকিবহাল আছেন কিনা। ইনস্টাগ্রামে #বেন ওকরি হ্যাশট্যাগ পাঁচ হাজারেরও বেশিবার ব্যবহৃত হয়েছে। সাহিত্য বিষয়ক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম গুডরিডস- এ আপনার কাজের রেটিং হয়েছে ১৭০০০ জন ব্যবহারকারীরও বেশির দ্বারা। পনের শ’ এরও বেশি রিভিউ হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগের লেখক হিসেবে আপনি কি কখনও এটি ভেবেছেন?

বেন ওকরি: 
লেখকের বড় একটি দায়িত্ব আছে। আর তা হলো- ভালোভাবে লেখা। সেই ভালো লেখা কী কাজে লাগে তা ভিন্ন বিষয়। কারো কারো জন্য এটি একটি রাজনৈতিক ব্যাপার। কারো কারো কাছে এটি নান্দনিক বিষয়। অল্প কিছু লোকের কাছে এটি আধ্যাত্মিক ব্যাপার। অথবা উপরে যা বললাম তার সব কিছুর মিশ্রণ। তবে যাই হোক না কেন, পরম সত্য কথা হলো- লেখককে লিখতে হবে ভালোভাবে। একটি শিল্পে দক্ষতা অর্জনের জন্য সারাটা জীবন লেগে যায়। আমার বিশ্বাস, আমরা যখন মৃত তখনও লিখে যাই। আমাদের মৃত্যুর পর আমাদের বইগুলোর পুনঃলিখন হয় এবং এগুলোর উত্তরোত্তর উন্নতি হয়। এভাবে বইগুলো যে নতুন নতুন ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের উদ্রেক ঘটায়, তার মধ্য দিয়েই এগুলোর পুনঃলিখন হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একটি চয়েস। যদি আপনি আপনার কাজ ভালোভাবে করতে পারেন, তবে কাজের অংশ হিসেবে আপনি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে যুক্ত হতে পারেন। কিন্তু ঈশ্বরই জানেন, ভালোভাবে কাজ করা যথেষ্ট কঠিন। আমি অল্প কয়েকজনকে চিনি যাঁরা এই দু’টিই বেশ ভালোভাবে সামলান। কিন্তু আমার কাজ বোঝার মতো চেপে থাকে আমার মন, মস্তিষ্ক আর সময় জুড়ে। জীবন একটি লেনা-দেনার বিষয়। আমি চাই বিপুল সংখ্যক পাঠক আমার পরের লেখাটি পছন্দ করুন। কিন্তু সব ভন্ডুল হয়ে যাবে যদি লেখাটি ভালো না হয়। আমি বরং চাই সবচেয়ে ভালো লেখাটি লিখতে। বর্তমানে আমার পাঠক সংখ্যা কম হতে পারে। থাক। এতে কোন অসুবিধে নেই। কিন্তু আমি চাই ভবিষ্যতে লক্ষ লক্ষ পাঠক আমার লেখা পড়ুক। বর্তমানে লক্ষ লক্ষ পাঠক, অথচ ভবিষ্যতে কোন পাঠকই নেই, এমন লেখার লেখক আমি হতে চাই না। সাহিত্য একটি শ্রমসাধ্য কর্ম। বিপণন আর প্রচার ছাড়া এর আর কোন কিছুই বদলায়নি। তবে কোন বিপণন ও প্রচার-প্রচারণাই কোন বই প্রকৃতপক্ষে যেমন ভালো সেটিকে তার চাইতে অধিকতর ভালো বানাতে পারে না। সময় তো সীমিত। আমরা যেমনটা মনে করি তার চাইতেও দ্রুত এটি ফুরিয়ে যাচ্ছে। যেটুকু সময় আছে তা ব্যবহার করে আমি বরং আমার কাজটি নিখুঁতভাবে করতে চাই। সামাজিক মাধ্যমে যদি কোনভাবে ফিচার লিখতে পারি, তাহলে তো সেটা বেশ উপভোগ করার মতো ব্যাপার।


আইনেহি এডোরো-গ্লিনেস: 
যখন আমি চিন্তা করি, কিভাবে অতীত প্রজন্মের লেখকরা বি-উপনিবেশিকরণ মিশনকে তাদের সৃজনশীল কাজের প্রেরণা হিসেবে নিয়েছেন, তখন আমার মনে প্রশ্ন জাগে, তাহলে আজকের দিনের লেখকদের কাছে প্রেরণার উৎস কী। অন্য কথায়, তাহলে কোন উপষঙ্গ রাজনৈতিক পরিবেশকে সাহিত্যের সঙ্গে জুড়িয়ে দিয়েছে। এখনও কি সেটি বি-উপনিবেশিকরণ, না-কি সম্পূর্ণ আলাদা কিছু?

বেন ওকরি: 
আমাদের সময়ের প্রেরণার উৎসাহ হলো স্বাধীনতা। বি-উপনিবেশিকরণ এখনও একটি উদ্দীপ্তকারী উপষঙ্গ। কারণ, ধ্বংসাত্মক ঔপনিবেশিক-আত্মা এখনও সক্রিয় রয়ে গেছে। এখনও আমাদের মন এবং জাতিকে উপনিবেশ মুক্ত করার জন্য যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু এর সঙ্গে সমসাময়িক বিষয়-আশয়েরও যোগ হয়েছে। আত্ম-পরিচয়, লিঙ্গ, ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র্য এবং নানান রূপে চলতে থাকা নিপীড়ন সাহিত্যের বিষয় হতে পারে। আবার নাও হতে পারে। যা ঠিক, আমরা কি তাই হচ্ছি, নাকি ওরা যেমন চেয়েছে আমরা তেমন হচ্ছি বা ওরা যেভাবে আমাদের বুঝতে চায় আমরা সেভাবে তৈরি হচ্ছি? আমরা কি আমাদের একটি সুনম্য ও বিপণনযোগ্য ইমেজ তৈরি করছি, নাকি আমরা নিজেদের নির্মাণ করতে, নিজেদের গল্প অতীতের ধাঁচ বাদ দিয়ে নতুন উদ্দীপনায় ও দক্ষতায় নিজেদের মতো করে বলতে ভয় পাচ্ছি? আমরা যা হতে পারি, তা হতে কি আমরা ভয় পাচ্ছি, নাকি মোটামুটিভাবে সফল হওয়ার আশায় গা ভাসাচ্ছি? আমার মনে হয়, আমাদের লেখকদের ভেতরে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তা তাদের নিজেদের সৃষ্টি। আমরা যে অপরিহার্যরূপে আমরাই - এই দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে পথ চলতে হবে এবং আমাদের এই যাত্রাপথে সঙ্গে নিতে হবে প্রকাশক, সমালোচক ও পাঠককেও।


আইনেহি এডোরো-গ্লিনেস: 
বার্লিনে আফ্রিকান বুক ফেস্টিভালে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। কার্লা ফুটজনার এবং স্টেফানি হার্সব্রানারের ওটি একটি চমৎকার প্রজেক্ট ছিল। এ.বি.এফ. আফ্রিকার ও এর অভিবাসী লেখকদের অন্যতম মিলনমেলা। একি, হার্গেইসা, আবান্টু এবং আরও অনেকগুলো সংগঠন আমাদের এই মহাদেশেই আছে। আমাদের এই মহাদেশে এমন মিলনমেলার বিস্তার কি আপনার কাছে কোন তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা?

বেন ওকরি: 
কনফারেন্স, উৎসব ইত্যাদিতে সমবেত হওয়া লেখকদের মধ্য দিয়ে আফ্রিকার সাহিত্য উদ্দীপিত হয়। উপরন্তু আফ্রিকার প্রাণের মধ্যেই তো সুনম্যতা আছে। উৎসব পালনে আমরা বেশ এগিয়ে। আশা করি, করোনার প্রকোপ কমে গেলে আবার আমাদের উৎসবগুলো পাখা মেলবে এবং আমাদের সবাইকে একই প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসবে। সেখানে আমাদের প্রতিবাদ, উদযাপন, বিকাশ, বৃদ্ধি- সবই ঘটবে।


আইনেহি এডোরো-গ্লিনেস: 
আপনার পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে আপনি আপনার কথা নতুনভাবে বলা বা প্রকাশ করার উপায় অনুসন্ধান করেছেন। ফিকশনের পুরোপুরিভাবে নতুন ধারণা নিয়ে দ্য ফেমিশ্ড রোড আমাদের দৃষ্টি উন্মোচন করেছে। অ্যা টাইম ফর নিউ ড্রিম ‘কাব্যিক প্রবন্ধের’ বই। দ্য কমিক ডেসটিনি একটি সম্মোহনী গল্পের বই। হাইকু আর ছোটগল্পের কোলাজ। নতুন সাহিত্যধারা সৃষ্টিতে সমর্থন পান কোথা থেকে? কেন আপনি নতুন প্রকাশ-ধারা সৃষ্টি করে সাহিত্যের সংগ্রহশালা বাড়াতে চান?

বেন ওকরি: 
নতুন দর্শনের জন্য প্রয়োজন হয় নতুন নির্মিতির। দ্য ফেমিশ্ড রোড ত্রয়ী নতুন ধারার উপন্যাস। কারণ, বাস্তবতা সম্বন্ধে আফ্রিকার অভিজ্ঞতা অন্যদের থেকে আলাদা। সাহিত্যে নতুন আঙ্গিক খুঁজে বের করা কঠিন। নতুন অভিজ্ঞতা প্রকাশের জন্য একে শুধু নিখুঁতই হতে হবে না, স্বাভাবিকও হতে হবে। এমন মনে হতে হবে যে, এ তো স্বাভাবিক। এর জন্য দরকার কঠোর অধ্যবসায়। বলা যেতে পারে, নতুন অভিজ্ঞতা প্রকাশের জন্য সাহিত্য যদি নতুন আঙ্গিক হাজির করতে না পারে, তবে নতুন সাহিত্যের সৃষ্টি হয় না। রাশিয়ার উপন্যাস ইংরেজি উপন্যাসের মতো নয়। শুধু চরিত্র আর স্থানের নামের পার্থক্য নয়। মূলত এর গল্প বলার ঢংই আলাদা। আমাদের গল্প বলার ঢং আমাদের পরিচয় প্রকাশ করে। বিপদ হয় তখন যখন আমরা নিজেদের গল্প বলতে অন্যের নির্মিতি ধার করে ব্যবহার করি। অথচ আমাদের মনস্তত্ত্ব, গল্পের সারবত্তা, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক মাত্রা ভিন্ন। অন্যদের সফল গল্প বলার ঢং ব্যবহার করলে আমাদের সাহিত্যকর্ম বেশি মানুষের বোধগম্য হতে পারে, পশ্চিমের কাছে পরিচিতি পেতে পারে। কিন্তু তা আমাদের গল্পের অন্তরাত্মার সঙ্গে প্রতারণা করতে পারে। আমাদের আত্মা এবং অভিজ্ঞতা যদি গল্প বলার স্বরের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না হয়, তবে তা আমাদের প্রবঞ্চিত করবে। এই আঙ্গিকের ইস্যুতেই পাঠকরা আমার সাহিত্যকর্মকে দুর্বোধ্য মনে করে। আমাদের অভিজ্ঞতা, বাস্তবতা ও সচেতনতার গণ্ডি বৃদ্ধির উদ্দেশেই আমি নতুন নির্মিতি ব্যবহার করি। তবে এই নতুন আঙ্গিককে প্রাসঙ্গিক হতে হবে। পরিমিত হতে হবে। যখন এ কাজ ভালভাবে ও সঠিকভাবে করা হবে তখন বিশ্বটাকে দেখার পন্থা স্বাভাবিক ঠেকবে।

তাহলে ঐ কথাটাকে মিথ্যে মনে হবে যে, পৃথিবীটাকে দেখার একটি মাত্র উপায় আছে আর আমাদেরকে পশ্চিমা উপন্যাসের আঙ্গিক অনুসরণ করে পৃথিবীটাকে দেখতে হবে। তখন রিয়ালিটি প্রকাশের সত্যিকারের পন্থা হলো রিয়েলিজম এ কথাও আপনার কাছে মিথ্যে প্রমাণ হবে।

তাহলে আপনি কী করবেন? আপনি একটি সিংহের সিংহত্ব কুকুরের অবয়ব দিয়ে প্রকাশ করতে পারবেন না। আঙ্গিক অভিজ্ঞতাকে অবয়ব দান করে। এটি একটি গল্প অধিকতর ভালোভাবে বলতে পারার বিষয় নয় বা ভাষার ব্যাপক পরিশুদ্ধিও নয়। গল্প বলা সম্ভব কিন্তু অভিজ্ঞতা বহন করা সম্ভব নয়। বাস্তবতার অন্তস্থ নির্যাস তুলে ধরা সম্ভব নয়। বলাই বাহুল্য যে, এটি করা কঠিন, আর করার কথা ভাবা তো আরও কঠিন। যখন করা হয় তখন এর যথাযথ মূল্যায়ন হয় না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এর সত্যতা অস্বীকার করা যায় না।

আইনেহি এডোরো-গ্লিনেস: 
এক বছর আগে আমি দ্য ফ্যামিশ্ড রোড পড়িয়েছিলাম। এরপর আবার যখন বইটি পড়লাম তখন অবাক হয়ে গেলাম যে, স্বপ্ন দেখার ধারণা আপনার সৃজনশীল বিশ্বের কেন্দ্র কত ব্যাপকভাবে দখল করে আছে। গল্পকথনের আলংকারিক উপষঙ্গ হিসেবে স্বপ্ন দেখাকে আপনি কতটা জরুরি মনে করেন?

বেন ওকরি: 
স্বপ্ন দেখার ব্যাপারটিকে আমি স্বাভাবিকের চাইতে আলাদা মনে করি। আপনি ঘুমের মধ্যে যে স্বপ্ন দেখেন, তা আমার কাছে স্বপ্ন দেখা মনে হয় না। আমার কাছে স্বপ্ন বাস্তব। এটি বাস্তবতাকে আরও বাস্তব করে তোলে। এটি সেই উপষঙ্গগুলো দিয়ে তৈরি যা বাস্তবতার শরীর-কাঠামো নির্মাণ করে। স্বাপ্নিকতা একটি সুনির্দিষ্ট বিষয়। কিন্তু স্বপ্ন দেখাটা হলো গতিশীল, সঞ্চরণশীল বিষয়। স্বপ্ন দেখা বাস্তবতাকে আকৃতি দেয়। কারণ, এটি বাস্তবতার মতই। এটি বাস্বতবতাকে প্রতিধ্বনিত করে। বাস্তবতাকে বদলাতে চাইলে আমাদের স্বপ্ন দেখাটাকেও বদলাতে হবে। যে স্বপ্ন দেখার কথা আমি বলছি, তা তো আমরা সব সময়ই করে থাকি। এটিই আমাদের সার্বক্ষণিক আচ্ছন্ন করে রাখা জগৎ। আমরা সব সময় যা ভাবি, যা করি, যা চাই, যা আশা করি, যাকে যাকে ভয় পাই এগুলোর সবই আমাদের স্বপ্নের অঙ্গসৌষ্ঠব্য নির্মাণ করে। এজন্যই বাস্তবতা বদলায় না। কারণ, আমাদের স্বপ্ন একে দখল করে রাখে। আমাদের জীবনের যে অংশ স্বপ্ন দেখে, সাহিত্য তার সঙ্গে দ্বিরালাপ চালায়। এখানেই শুরু হয় পরিবর্তন। যার ফলে কোন জাতি বা প্রজন্মের শিল্প বা সাহিত্যে যে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখা হয়, তা তাদের জীবনে বাস্তব হয়। প্রথমে স্বপ্নের বীজ বোনা হয়। তারপর মানুষের সচেতনতার ভূমিতে এর শিকড় গজায়। আর যখন এটি ঘটে তখন সুস্পষ্টভাবে ও স্বতস্ফুর্তভাবেই তাদের স্বর্ণালী যুগ, তাদের রেনেসাঁ শুরু হয়। এই বীজ বপন করেন নতুন ভাবনা, চিন্তা-কাঠামো ও দর্শন বিশিষ্ট সচেতন শিল্পী ও দূরদর্শী রাজনীতিকগণ। একটি জাতির জীবন বদলানোর জন্য প্রয়োজন একনিষ্ঠ রাজনৈতিক কর্মসূচি, ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, খাদ্য, ভালো অবকাঠামো ইত্যাদি। কিন্তু মানুষের স্বপ্ন যদি না বদলায়, তবে ঐ কর্মসূচি বা ঐ অর্জনগুলো স্থায়ী হবে না। আমরা যে ভবিষ্যত চাই, তার জন্য প্রয়োজন সঠিক শিক্ষা। আমরা যেমনটা ভাবি লেখকের দায়িত্ব ও কর্তব্য তার চাইতেও জটিল ও গভীর।


আইনেহি এডোরো-গ্লিনেস: 
ভবিষ্যতের ব্যাপারে আফ্রিকার সাহিত্যের প্রশ্নটি কী হবে?

বেন ওকরি: 
আফ্রিকার সম্ভাবনাগুলোকে আমাদের জীবনে এবং শিল্পে আমরা কিভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব?

আমরা আমাদের মেধা আফ্রিকানদের কল্যাণে, দৈনন্দিন জীবনে, মানব জাতির বিরাট অথচ দোদুল্যমান গল্পে কিভাবে ব্যবহার করব?
 
যেহেতু সাহিত্য জীবন-নিসৃত এবং জীবনকেই পুষ্ট করে চলতে থাকে চক্রাকার পথে, তাই সবচেয়ে বড় প্রশ্নটি হলো আমরা কিভাবে সত্য ও সর্বজনীনতায় সমৃদ্ধ মহান সাহিত্য নির্মাণ করব এবং কিভাবে আমরা আফ্রিকার সব সমৃদ্ধি, সব হট্টগোল, সব দুর্ভোগ, সৌন্দর্য আর আনন্দের সোঁদা মাটি ছেনেছুনে তাতে সাহিত্যের সোনা ফলাব। 



অনুবাদক পরিচিতি:
এলহাম হোসেন
 অনুবাদক। প্রাবন্ধিক।
ঢাকায় থাকেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ