সাগুফতা শারমীন তানিয়া লুনার কাছে চিঠি নামে একটি গল্প লিখেছেন। গল্পটি ভাষা ও বিষয় চমকে দেওয়ার মতো সুন্দর। এই গল্পটির নির্মাণ নিয়ে গল্পপাঠের সঙ্গে আলাপ নিচে সংযুক্ত হল।
গল্পপাঠ : গল্প লেখার বীজ কিভাবে এলো?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : এই লেখাটার শুরু একদিন ভোরবেলা উঠে প্রথম দু’তিন প্যারাগ্রাফ লেখা থেকে, এর আগে এর সুতো কোনো ভাবনা থেকে শুরু হয়নি। চিঠি বা চিরকুটের মতো করে যেহেতু লুনাকে (লুনা রুশদী) লেখা, তাকেই সম্ভবতঃ প্রথম পাঠিয়েছিলাম, বা ফেসবুকে লিখে তাকে ট্যাগ করে চমকে দিয়েছিলাম। সে ভীষণ আমোদ পেয়েছিল, খুশি হয়েছিল, সেই শুরু।
গল্পপাঠ : চিঠি ব্যবহারের আইডিয়া এলো কেন?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : চিঠি আমার খুব প্রিয় মাধ্যম, আমি চিঠি লিখতে ভালবাসি বরাবরই। ইমেইল এসে সেই স্থান অধিকার করে নিয়েছে সত্যি, এখনো আমি চিঠি প্রত্যাশা করি এবং মাঝেমাঝে প্রিয়জনদের চিঠি লিখি। চিঠির একটা সুর আছে, যা ঠিক কেজো নয়, আবার ঠিক অলস বিলাসী প্রাণের আশ্রয়ও নয়। হাতে লেখা চিঠি একজন ব্যক্তির হাতের লেখা-লিখবার সময়-অভিব্যক্তি ইত্যাদি মিলিয়ে পুরো ব্যক্তিত্বের নির্যাস বয়ে আনে, এজন্যেই চিঠি বিশেষ। ডাইরিতে এন্ট্রি দেবার মতন করে এই লেখাটা লেখা, সেটা চিঠির মতন সম্বোধন করে করে, কেননা এ শুধু বাতাসে-জড়ানো-প্রলাপ হোক তা চাইনি, আবার আলাপের ভিড়ও চাইনি, এই দুইয়ের মাঝের মীমাংসার রাস্তা ছিল চিঠি, বা চিঠির মতো করে সম্বোধন।
গল্পপাঠ : গল্পটি কি এক বৈঠকে লেখা কি না?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : লেখাটি এক বৈঠকে লেখা নয়, সময় ধরে লেখা, কয়েকদিনের লেখা, মাঝে একটা সময়ে ‘প্রথম আলো’র ভালবাসা সংখ্যার জন্যে লেখা চেয়েছিলেন সোহেল হাসান গালিব, তাকে দেয়ার পরেও আমি আরো কিছু যোগ করেছি, লিখেছি, কেটেছি। পরে ‘আলেয়ার দিন’ নামে একটি লিটল ম্যাগাজিন এটি প্রকাশ করবার ইচ্ছা প্রকাশ করে, এইখানে প্রকাশিত হওয়া ‘লুনার কাছে চিঠি’ই পূর্নাঙ্গ লেখা, আমার ব্লগ ‘ব্যঞ্জনধ্বনি’তেও এই লেখা পুরোটা আছে।
গল্পপাঠ : গল্পটির কোনো ড্রাফট করেছিলেন কি?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : আমি যে কোনো একটি মেটাফর বা সময়ের ভাবনা ধরে লেখা শুরু করে দিই, কখনোই আসলে পুরো গল্পটা ভেবে লেখা হয়না। দু’একবার কোনো কোনো গল্পের বেশ খানিকটা ছকে নিয়ে আমি লিখতে বসেছি, কিন্তু লেখা নির্মিতির গতি এবং লক্ষ্য বদলে গিয়ে প্লটেরও অদলবদল হয়ে গেছে এবং আমি তা হতে দিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, যে কোনো প্লটকে বা ভাবনাকে এইভাবে চলতে দেয়া চাই, স্বতঃস্ফূর্ততার অভাব ঘটতে দিলে সেটা পাঠকের চোখে ধরা পড়বেই।
গল্পপাঠ : গল্পের চরিত্রগুলি কি আপনার চেনা?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : আমি যেহেতু অনেক লেখাই উত্তমপুরুষে লিখি, অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেন সেইগুলি আমি কি না, এই লেখাটিতে আবার লুনাও আছে, যে কিনা দক্ষিণ গোলার্ধের একটি মহাদেশে রীতিমত বেঁচেবর্তে আছে, ফলে এই প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক- চরিত্রগুলি আসল কি না। নামগুলি (আমি, লুনা, কুশান) আসল, ভাবনাগুলি প্রায় একনিষ্ঠভাবে আমার বাস্তবজীবনের ভাবনা, আত্মজৈবনিক উপাদান আছে এতে, তবে এরপর আরো কিছু আছে যা ইলিউসিভ। সেটা থাকুক।
যা লিখতে চেয়েছিলেন, সেটা কি লেখা হয়েছে?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : লিখেছি লিখবার খুশিতে, লেখার আনন্দই এর গন্তব্য। আমার প্রতিদিনকার ভাবনাকে নানাভাবে ছিঁড়ে ফেলা চিরকুটের আকার দেয়াই এর উদ্দেশ্য ছিল। পরে যখন ভালবাসা সংখ্যায় এটি প্রকাশিত হল, তখন অনেকে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, অভিনন্দনবার্তাগুলির বক্তব্য ছিল সমলৈঙ্গিক ভালবাসা নিয়ে লিখতে পারাটা অনেক বড় ব্যাপার। আসলে, এধরণের উদ্দেশ্য নিয়ে এটি লেখা নয়। সমকামিতাকে কামনার সম্পর্ক হিসেবে দেখবার একটি রীতি আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে, তার বাইরেও নারীতে-নারীতে বা পুরুষে-পুরুষে আরো সম্পর্ক আছে, সেটা বিশ্বাসের-অভিন্ন রূচির-সহানুভূতির-সংবেদনশীলতার-নির্ভরতার- ভালবাসার। সেইখানটায় দাঁড়িয়ে একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে সম্বোধন করে করে, মনে করে করে, ডাক দিয়ে সচকিত করে কিছু লিখছে-ভাবছে এইই ছিল লিখবার উদ্দেশ্য।
গল্পপাঠ : গল্পটি কি পরে এডিট করেছেন?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : যখন হাতে লিখতাম, গভীর প্রত্যয়ের সাথে লিখতাম, একটুও কাঁটাছেড়া নয়, একটুও বদলাতাম না, একবারে লিখতাম। এই অভ্যাস একটু বদল হয়েছে কম্পিউটারে লিখবার পর থেকে। এখন এডিট করি, নিজের লেখা এডিট করার একরকমের আনন্দ আছে, নিজের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করার চর্চা আছে, সেটা মজার।

গল্পপাঠ : গল্প লেখার বীজ কিভাবে এলো?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : এই লেখাটার শুরু একদিন ভোরবেলা উঠে প্রথম দু’তিন প্যারাগ্রাফ লেখা থেকে, এর আগে এর সুতো কোনো ভাবনা থেকে শুরু হয়নি। চিঠি বা চিরকুটের মতো করে যেহেতু লুনাকে (লুনা রুশদী) লেখা, তাকেই সম্ভবতঃ প্রথম পাঠিয়েছিলাম, বা ফেসবুকে লিখে তাকে ট্যাগ করে চমকে দিয়েছিলাম। সে ভীষণ আমোদ পেয়েছিল, খুশি হয়েছিল, সেই শুরু।
গল্পপাঠ : চিঠি ব্যবহারের আইডিয়া এলো কেন?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : চিঠি আমার খুব প্রিয় মাধ্যম, আমি চিঠি লিখতে ভালবাসি বরাবরই। ইমেইল এসে সেই স্থান অধিকার করে নিয়েছে সত্যি, এখনো আমি চিঠি প্রত্যাশা করি এবং মাঝেমাঝে প্রিয়জনদের চিঠি লিখি। চিঠির একটা সুর আছে, যা ঠিক কেজো নয়, আবার ঠিক অলস বিলাসী প্রাণের আশ্রয়ও নয়। হাতে লেখা চিঠি একজন ব্যক্তির হাতের লেখা-লিখবার সময়-অভিব্যক্তি ইত্যাদি মিলিয়ে পুরো ব্যক্তিত্বের নির্যাস বয়ে আনে, এজন্যেই চিঠি বিশেষ। ডাইরিতে এন্ট্রি দেবার মতন করে এই লেখাটা লেখা, সেটা চিঠির মতন সম্বোধন করে করে, কেননা এ শুধু বাতাসে-জড়ানো-প্রলাপ হোক তা চাইনি, আবার আলাপের ভিড়ও চাইনি, এই দুইয়ের মাঝের মীমাংসার রাস্তা ছিল চিঠি, বা চিঠির মতো করে সম্বোধন।
গল্পপাঠ : গল্পটি কি এক বৈঠকে লেখা কি না?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : লেখাটি এক বৈঠকে লেখা নয়, সময় ধরে লেখা, কয়েকদিনের লেখা, মাঝে একটা সময়ে ‘প্রথম আলো’র ভালবাসা সংখ্যার জন্যে লেখা চেয়েছিলেন সোহেল হাসান গালিব, তাকে দেয়ার পরেও আমি আরো কিছু যোগ করেছি, লিখেছি, কেটেছি। পরে ‘আলেয়ার দিন’ নামে একটি লিটল ম্যাগাজিন এটি প্রকাশ করবার ইচ্ছা প্রকাশ করে, এইখানে প্রকাশিত হওয়া ‘লুনার কাছে চিঠি’ই পূর্নাঙ্গ লেখা, আমার ব্লগ ‘ব্যঞ্জনধ্বনি’তেও এই লেখা পুরোটা আছে।
গল্পপাঠ : গল্পটির কোনো ড্রাফট করেছিলেন কি?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : আমি যে কোনো একটি মেটাফর বা সময়ের ভাবনা ধরে লেখা শুরু করে দিই, কখনোই আসলে পুরো গল্পটা ভেবে লেখা হয়না। দু’একবার কোনো কোনো গল্পের বেশ খানিকটা ছকে নিয়ে আমি লিখতে বসেছি, কিন্তু লেখা নির্মিতির গতি এবং লক্ষ্য বদলে গিয়ে প্লটেরও অদলবদল হয়ে গেছে এবং আমি তা হতে দিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, যে কোনো প্লটকে বা ভাবনাকে এইভাবে চলতে দেয়া চাই, স্বতঃস্ফূর্ততার অভাব ঘটতে দিলে সেটা পাঠকের চোখে ধরা পড়বেই।
গল্পপাঠ : গল্পের চরিত্রগুলি কি আপনার চেনা?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : আমি যেহেতু অনেক লেখাই উত্তমপুরুষে লিখি, অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেন সেইগুলি আমি কি না, এই লেখাটিতে আবার লুনাও আছে, যে কিনা দক্ষিণ গোলার্ধের একটি মহাদেশে রীতিমত বেঁচেবর্তে আছে, ফলে এই প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক- চরিত্রগুলি আসল কি না। নামগুলি (আমি, লুনা, কুশান) আসল, ভাবনাগুলি প্রায় একনিষ্ঠভাবে আমার বাস্তবজীবনের ভাবনা, আত্মজৈবনিক উপাদান আছে এতে, তবে এরপর আরো কিছু আছে যা ইলিউসিভ। সেটা থাকুক।
যা লিখতে চেয়েছিলেন, সেটা কি লেখা হয়েছে?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : লিখেছি লিখবার খুশিতে, লেখার আনন্দই এর গন্তব্য। আমার প্রতিদিনকার ভাবনাকে নানাভাবে ছিঁড়ে ফেলা চিরকুটের আকার দেয়াই এর উদ্দেশ্য ছিল। পরে যখন ভালবাসা সংখ্যায় এটি প্রকাশিত হল, তখন অনেকে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, অভিনন্দনবার্তাগুলির বক্তব্য ছিল সমলৈঙ্গিক ভালবাসা নিয়ে লিখতে পারাটা অনেক বড় ব্যাপার। আসলে, এধরণের উদ্দেশ্য নিয়ে এটি লেখা নয়। সমকামিতাকে কামনার সম্পর্ক হিসেবে দেখবার একটি রীতি আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে, তার বাইরেও নারীতে-নারীতে বা পুরুষে-পুরুষে আরো সম্পর্ক আছে, সেটা বিশ্বাসের-অভিন্ন রূচির-সহানুভূতির-সংবেদনশীলতার-নির্ভরতার- ভালবাসার। সেইখানটায় দাঁড়িয়ে একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে সম্বোধন করে করে, মনে করে করে, ডাক দিয়ে সচকিত করে কিছু লিখছে-ভাবছে এইই ছিল লিখবার উদ্দেশ্য।
গল্পপাঠ : গল্পটি কি পরে এডিট করেছেন?
সাগুফতা শারমীন তানিয়া : যখন হাতে লিখতাম, গভীর প্রত্যয়ের সাথে লিখতাম, একটুও কাঁটাছেড়া নয়, একটুও বদলাতাম না, একবারে লিখতাম। এই অভ্যাস একটু বদল হয়েছে কম্পিউটারে লিখবার পর থেকে। এখন এডিট করি, নিজের লেখা এডিট করার একরকমের আনন্দ আছে, নিজের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করার চর্চা আছে, সেটা মজার।

সাগুফতা শারমীন তানিয়া 'র লুনার কাছে চিঠি গল্পটি পড়ুন : লিঙ্ক
0 মন্তব্যসমূহ