ওরা ছিল বড়ঘরটায়...গরম পড়েছে। মাথার ওপরে ফ্যান। অলীক একটা বারমুডা আর বুক খোলা টি সার্টে। মধুরা শুধু চুল খুলে দিয়ে, চশমা নামিয়ে রেখেছিল। ফ্রীজ থেকে একটা ঠান্ডা পাণীয়ের বড় বোতল বার করল অলীক, সঙ্গে দু’টো স্ট্র। বোতলের মুখে দু’টো স্ত্র-ই নামল একসঙ্গে। গলা ভিজল দু’জনের। একটু আরাম, অল্প স্বস্তি।
মধুরার একটা কথা বলার ছিল অলীককে, এ পর্যন্ত সুযোগ পায়নি। মনে অজানা দ্বিধা—কি করে লজ্জার কথাটা বলে! শুনে অলীকের প্রতিক্রিয়া কি হবে, কে জানে? তার থেকে এতদিন যা চাপা আছে থাক---এটাও ভাবল। কিন্তু নিজের মনের তেমন সমর্রন পেল না।
মধুরা বলল—এ ঘরটায় গুমোট লাগছে, বাইরের সোফায় যাবে? অলীকের আপত্তির কারণ ছিল না, অনুসরণ করল মধুরাকে।
বসার জায়গাটা বেশ বড়, লম্বায় ও চওড়ায়। দক্ষিণে স্লাইডিং কাচ ঢাকা ব্যালকনি। তারপরই নদী। ওপারে অন্য জনপদের আবছা সিল্যুয়েট। সোফার সামনে একটা একটা ডিম্বাকৃতি কাচের টেবল, কিছু সাময়িক পত্র। ওপাশে একটা কমন টয়লেট, আরও দু’টো ঘর, কিচেন। মধুরা একটা ঘরের টয়লেটে গেল—আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মুখে জলের ঝাপটা দিল, চুলে চিরুণি। নিজের বিম্বিত মুখের দিকে তাকিয়ে নিজেকেই প্রশ্ন করল একবার...কি করবে? অলীককে বলবে? সিদ্ধান্ত নিতে অল্প সময় লাগল, কারণ এই ভার সে আর বহন করতে পারছিল না।
সোফায় অলীকের পাশে বসল মধুরা। হাতের ব্যাগটা রাখল টেবলে। অলীকের বাঁ হাতের আঙুলগুলো টেনে নিল নিজের দুই করতলের উষ্ণতায়। আসলে নিজেকে প্রস্তুত করছিল মধুরা। এবার সে অলীকের বাহু ধরল, হঠাৎ বলে ফেলল---শোনো না...
অলীক ঘুরে তাকাল মধুরার দিকে, বলল—কী, বলো...
মধুরা এতক্ষণে সব সংকোচ কাটিয়ে উঠেছে। বলল---একটা কথা তোমায় বলা হয় নি। এই যে আমরা বেড়িয়ে এলাম, তোমার জন্যে কোন উপহার কিনতে পারি নি, কেনা হয় নি।
অলীক খানিকটা চমকে উঠল এই কথায়। অস্ফুটে বলতে পারল---ও !
মধুরা অলীকের এই উচ্চারণের অর্থ ঠিক বুঝতে পারল না। জিজ্ঞেস করল---রাগ করলে? ডিড ইট হার্ট ইউ?
---- নো, নট এট অল। হোয়াই শুড ইট? আমি তোমার আত্মীয়, সহকর্মী বা পারিবারিক বন্ধু নই। দেন, হোয়্যার ইজ দ্য পয়েন্ট অফ ইয়োর বাইং ফর মী? আমি বুদ্ধু নই......
এই কথায় কোন উত্তাপ আছে কিনা, মধুরা ঠিক ধরতে পারল না। তাও বলল--- শোনো না, কিনতে পারি নি, কিন্তু কিছু এনেছি নিজের মতোন করে। সেগুলো আজ এনেছি, নেবে?
অলীকের মনে অবাক জিজ্ঞাসা, বলল--- কী বলছো, কী এনেছো---আমার জন্যে?
মধুরা ব্যাগ খুলল, ভেতর থেকে বের করে আনলো একটা ছোট্ট নুড়ি পাথর। বলল---এটা লিড্ডার নদীর বুক থেকে তোমার জন্যে কুড়িয়েছি। নেবে? এরপর সে ব্যাগের ভেতরে রাখা বইয়ের ভাঁজ থেকে বের করল একটা মাঝারি মাপের কার্ড। তার ওপর স্টাফ করা একটা চিনার পাতা। কার্ডে লেখা, ‘আমার অলীকবাবু’।
কাঁপা হাতে এই দু’টো অলীকের সামনে অঞ্জলি দেবার মতো করে এগিয়ে দিলো মধুরা। মুখে---নেবে? নেবে না?
অলীকের মনের মধ্যে তখন তুমুল তোলপাড়। এমন উপহার, এমন যত্নের ছোঁয়া, এত মৌলিক ভাবনা—তার জন্যে কেউ তো কখনও করে নি। টাকার মাপে এই উপহারের মূল্য হয়? এক স্বর্গীয় আলোয় সে ডুবে যাচ্ছিল। অনাবিল আনন্দের উৎসে দাঁড়িয়ে সে শুধু বলতে পারল---আই ফীল অনার্ড, এক্সট্রিমলি অনার্ড...
মধুরা হাত বাড়িয়ে অলীকের চুল ঘেঁটে দিল। আর মুখে বলল---পাগল, পাগল..
থাকেন এলাহাবাদে
কবি।
সম্পাদনা করেছেন শীর্ষবিন্দু নামে পত্রিকা।
কোনো বই প্রকাশ করেননি।
মধুরার একটা কথা বলার ছিল অলীককে, এ পর্যন্ত সুযোগ পায়নি। মনে অজানা দ্বিধা—কি করে লজ্জার কথাটা বলে! শুনে অলীকের প্রতিক্রিয়া কি হবে, কে জানে? তার থেকে এতদিন যা চাপা আছে থাক---এটাও ভাবল। কিন্তু নিজের মনের তেমন সমর্রন পেল না।
মধুরা বলল—এ ঘরটায় গুমোট লাগছে, বাইরের সোফায় যাবে? অলীকের আপত্তির কারণ ছিল না, অনুসরণ করল মধুরাকে।
বসার জায়গাটা বেশ বড়, লম্বায় ও চওড়ায়। দক্ষিণে স্লাইডিং কাচ ঢাকা ব্যালকনি। তারপরই নদী। ওপারে অন্য জনপদের আবছা সিল্যুয়েট। সোফার সামনে একটা একটা ডিম্বাকৃতি কাচের টেবল, কিছু সাময়িক পত্র। ওপাশে একটা কমন টয়লেট, আরও দু’টো ঘর, কিচেন। মধুরা একটা ঘরের টয়লেটে গেল—আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মুখে জলের ঝাপটা দিল, চুলে চিরুণি। নিজের বিম্বিত মুখের দিকে তাকিয়ে নিজেকেই প্রশ্ন করল একবার...কি করবে? অলীককে বলবে? সিদ্ধান্ত নিতে অল্প সময় লাগল, কারণ এই ভার সে আর বহন করতে পারছিল না।
সোফায় অলীকের পাশে বসল মধুরা। হাতের ব্যাগটা রাখল টেবলে। অলীকের বাঁ হাতের আঙুলগুলো টেনে নিল নিজের দুই করতলের উষ্ণতায়। আসলে নিজেকে প্রস্তুত করছিল মধুরা। এবার সে অলীকের বাহু ধরল, হঠাৎ বলে ফেলল---শোনো না...
অলীক ঘুরে তাকাল মধুরার দিকে, বলল—কী, বলো...
মধুরা এতক্ষণে সব সংকোচ কাটিয়ে উঠেছে। বলল---একটা কথা তোমায় বলা হয় নি। এই যে আমরা বেড়িয়ে এলাম, তোমার জন্যে কোন উপহার কিনতে পারি নি, কেনা হয় নি।
অলীক খানিকটা চমকে উঠল এই কথায়। অস্ফুটে বলতে পারল---ও !
মধুরা অলীকের এই উচ্চারণের অর্থ ঠিক বুঝতে পারল না। জিজ্ঞেস করল---রাগ করলে? ডিড ইট হার্ট ইউ?
---- নো, নট এট অল। হোয়াই শুড ইট? আমি তোমার আত্মীয়, সহকর্মী বা পারিবারিক বন্ধু নই। দেন, হোয়্যার ইজ দ্য পয়েন্ট অফ ইয়োর বাইং ফর মী? আমি বুদ্ধু নই......
এই কথায় কোন উত্তাপ আছে কিনা, মধুরা ঠিক ধরতে পারল না। তাও বলল--- শোনো না, কিনতে পারি নি, কিন্তু কিছু এনেছি নিজের মতোন করে। সেগুলো আজ এনেছি, নেবে?
অলীকের মনে অবাক জিজ্ঞাসা, বলল--- কী বলছো, কী এনেছো---আমার জন্যে?
মধুরা ব্যাগ খুলল, ভেতর থেকে বের করে আনলো একটা ছোট্ট নুড়ি পাথর। বলল---এটা লিড্ডার নদীর বুক থেকে তোমার জন্যে কুড়িয়েছি। নেবে? এরপর সে ব্যাগের ভেতরে রাখা বইয়ের ভাঁজ থেকে বের করল একটা মাঝারি মাপের কার্ড। তার ওপর স্টাফ করা একটা চিনার পাতা। কার্ডে লেখা, ‘আমার অলীকবাবু’।
কাঁপা হাতে এই দু’টো অলীকের সামনে অঞ্জলি দেবার মতো করে এগিয়ে দিলো মধুরা। মুখে---নেবে? নেবে না?
অলীকের মনের মধ্যে তখন তুমুল তোলপাড়। এমন উপহার, এমন যত্নের ছোঁয়া, এত মৌলিক ভাবনা—তার জন্যে কেউ তো কখনও করে নি। টাকার মাপে এই উপহারের মূল্য হয়? এক স্বর্গীয় আলোয় সে ডুবে যাচ্ছিল। অনাবিল আনন্দের উৎসে দাঁড়িয়ে সে শুধু বলতে পারল---আই ফীল অনার্ড, এক্সট্রিমলি অনার্ড...
মধুরা হাত বাড়িয়ে অলীকের চুল ঘেঁটে দিল। আর মুখে বলল---পাগল, পাগল..
-------------------------
থাকেন এলাহাবাদে
কবি।
সম্পাদনা করেছেন শীর্ষবিন্দু নামে পত্রিকা।
কোনো বই প্রকাশ করেননি।
4 মন্তব্যসমূহ
খুব খুশি...একটা ভুল থেকে গেল, থাকি শ্রীরামপুরে। চাকরি করতাম এলাহাবাদ ব্যাঙ্কে।
উত্তরমুছুনbesh romantic golpo eti..madhurao kom romoniyo noy.golper thas bunote eti kobitar somotulyo hoye poreche
উত্তরমুছুনromantic lekha .... kobitar moton sundor
উত্তরমুছুনসবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি...শম্পা ও নামহীনকে...
উত্তরমুছুন