একটা মামলার প্রয়োজনে একটা জেলা শহরে যেতে হয়েছিল। যথারীতি জেলা আদালতের উঠোনে এবং গেটের পাশে অনেকগুলি ভাতের হোটেল, পান-সিগারেট এবং মিষ্টির দোকান। এরই মধ্যে সবচেয়ে বড় মিষ্টির দোকানটায় গিয়ে দোকানের মালিককে জিজ্ঞাসা করলাম,‘আচ্ছা এখানে সবচেয়ে বড় উকিল কে? আমি বাইরে থেকে এসেছি, একটু জানতে পারলে উপকার হয়।’
আমার জিজ্ঞাসা শুনে প্রবীণ মিষ্টান্ন বিক্রেতা কি যেন একটু ভেবে তারপর বললেন,‘সবচেয়ে ভাল উকিল?’
আমি বললাম,‘হ্যাত্ষ। আমার একটা মামলার ব্যাপারে বিশেষ দরকার।’
‘সবচেয়ে ভাল উকিল হলেন বলাইবাবু, আমাদের এই জেলার মধ্যে,’ তারপর ভদ্রলোক কিঞ্চিত ইতস্তত করে বললেন, ‘অবশ্য তিনি যদি মাতাল অবস্থায় না থাকেন।’
আমি একটু চিন্তিত হলাম। ‘মাতাল উকিল!’ উকিলের আগে মাতাল বিশেষণটা খুব ভাল ঠেকছে না। সুতরাং আবার জিজ্ঞাসা করলাম,‘দু’নম্বর ভাল উকিল কে?’
মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী বললেন,‘দু নম্বর ভাল উকিল হলেন ওই বলাইবাবুই, তিনি যখন মত্ত অবস্থায় থাকেন।’
বলা বাহুল্য ভদ্রলোকের এই ধাঁধা আমার পছন্দ হয় নি, আমি অন্য উকিলের খোঁজ করেছিলাম।
এই উকিল আদালতে মত খেয়ে আসেন। জানি তাঁকে যদি প্রশ্ন করা হয়, ‘আপনি এত মদ খান কেন?’ তিনি বলবেন,‘আমি এত-শত মদ কিছু খাই না। আমি অল্প-অল্প খাই, বারবার খাই।’
সে যা হোক, আদালত নয়, বিদেশী এক শহরে দেখেছি পানশালার নাম ‘অফিস’(office)। প্রথমে এই চমকপ্রদ নামকরণের ব্যাপারটা বুঝতে পারিনি। পরে রহস্যটা বুঝেছিলাম, এই পানশালা থেকে যত দেরি করেই বাড়ি ফেরা যাক, মিথ্যে না বলে সত্যি কথাই বলা যাবে,‘অফিসে দেরি হয়ে গেল।’
মদ ও মদ্যপের গল্পের শেষ নেই। আগে অনেক বলেছি, পরে অনেক বলব।
আপাতত একটি অনুকাহিনী উপস্থাপন করছি।
এক পানশালায় তিনজন বাঁধা খদ্দের। বেয়ারারা তাদের নাম দিয়েছে, বড়দা, মেজদা, ছোড়দা।
যথারীতি একদিন সন্ধ্যায় এই তিনজনে বসে পান করছিলেন। বড়দা একটু বেশি বেশি খাচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ বাদে ডোজের মাত্রা বেশি হয়ে যাওয়ায় বড়দা বেহুঁশ হয়ে চেয়ার থেকে গড়িয়ে মেঝেতে পড়ে গেলেন।
মেজদা এবং ছোড়দার কিন্তু এতে ভ্রুক্ষেপ নেই, বরং বড়দার এই বেহুঁশ হয়ে পড়ে যাওয়ার ব্যাপারে দুজনে খুব তারিফ করতে লাগলেন এই বলে যে,‘বড়দার একটা মাত্রাজ্ঞান আছে, ঠিক কখন থেমে যেতে হয় সেটা বড়দা জানেন।’
এই সময় এ্ক আগন্তুক পানশালায় প্রবেশ করে ছোড়দা-মেজদার টেবিলের সামনে বসলেন। তাঁকে বেয়ারা এসে, ‘কি দেব?’ প্রশ্ন করার আগেই তিনি অধ:পতিত বড়দার দিকে আঙুল দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন,‘ইনি কে?’
বেয়ারা বলল,‘ইনি বড়দা।’
আগন্তুক বড়দাকে খুব ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করে তারপর প্রায় ষড়যন্ত্রকারীর মতো গলা নামিয়ে বেয়ারাকে বললেন, ওই বড়দাকে যা দিয়েছিলে, ভাই আমাকেও তাই দিয়ো।
পুনশ্চ:
গঙ্গারাম, আমার পোষা চরিত্র, অবশেষে তার মাতলামির গল্পই বলি। রোববার সকালে অনেক বেলায় ঘুম থেকে উঠে হ্যাং-ওভারগ্রস্ত গঙ্গারাম বেশ কয়েকবার আড়মোড়া ভাঙার পর বৌকে জিজ্ঞাসা করল, ‘হ্যাগো, কাল রাতে আমি বাড়ি ফেরার সময় কি কোন হইচই করেছি?
‘না তুমি করোনি। গম্ভীর মুখে গঙ্গারামের বউ বলর, হইচই করার মতো অবস্থা তোমার ছিল না। তবে যারা তোমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে তারপর চ্যাংদোলা করে, বাড়ির মধ্যে দিয়ে গেল তারা খুব হইচই করেছিল। পাড়ার সমস্ত লোক জেগে উঠেছিল।’
আমার জিজ্ঞাসা শুনে প্রবীণ মিষ্টান্ন বিক্রেতা কি যেন একটু ভেবে তারপর বললেন,‘সবচেয়ে ভাল উকিল?’
আমি বললাম,‘হ্যাত্ষ। আমার একটা মামলার ব্যাপারে বিশেষ দরকার।’
‘সবচেয়ে ভাল উকিল হলেন বলাইবাবু, আমাদের এই জেলার মধ্যে,’ তারপর ভদ্রলোক কিঞ্চিত ইতস্তত করে বললেন, ‘অবশ্য তিনি যদি মাতাল অবস্থায় না থাকেন।’
আমি একটু চিন্তিত হলাম। ‘মাতাল উকিল!’ উকিলের আগে মাতাল বিশেষণটা খুব ভাল ঠেকছে না। সুতরাং আবার জিজ্ঞাসা করলাম,‘দু’নম্বর ভাল উকিল কে?’
মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী বললেন,‘দু নম্বর ভাল উকিল হলেন ওই বলাইবাবুই, তিনি যখন মত্ত অবস্থায় থাকেন।’
বলা বাহুল্য ভদ্রলোকের এই ধাঁধা আমার পছন্দ হয় নি, আমি অন্য উকিলের খোঁজ করেছিলাম।
এই উকিল আদালতে মত খেয়ে আসেন। জানি তাঁকে যদি প্রশ্ন করা হয়, ‘আপনি এত মদ খান কেন?’ তিনি বলবেন,‘আমি এত-শত মদ কিছু খাই না। আমি অল্প-অল্প খাই, বারবার খাই।’
সে যা হোক, আদালত নয়, বিদেশী এক শহরে দেখেছি পানশালার নাম ‘অফিস’(office)। প্রথমে এই চমকপ্রদ নামকরণের ব্যাপারটা বুঝতে পারিনি। পরে রহস্যটা বুঝেছিলাম, এই পানশালা থেকে যত দেরি করেই বাড়ি ফেরা যাক, মিথ্যে না বলে সত্যি কথাই বলা যাবে,‘অফিসে দেরি হয়ে গেল।’
মদ ও মদ্যপের গল্পের শেষ নেই। আগে অনেক বলেছি, পরে অনেক বলব।
আপাতত একটি অনুকাহিনী উপস্থাপন করছি।
এক পানশালায় তিনজন বাঁধা খদ্দের। বেয়ারারা তাদের নাম দিয়েছে, বড়দা, মেজদা, ছোড়দা।
যথারীতি একদিন সন্ধ্যায় এই তিনজনে বসে পান করছিলেন। বড়দা একটু বেশি বেশি খাচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ বাদে ডোজের মাত্রা বেশি হয়ে যাওয়ায় বড়দা বেহুঁশ হয়ে চেয়ার থেকে গড়িয়ে মেঝেতে পড়ে গেলেন।
মেজদা এবং ছোড়দার কিন্তু এতে ভ্রুক্ষেপ নেই, বরং বড়দার এই বেহুঁশ হয়ে পড়ে যাওয়ার ব্যাপারে দুজনে খুব তারিফ করতে লাগলেন এই বলে যে,‘বড়দার একটা মাত্রাজ্ঞান আছে, ঠিক কখন থেমে যেতে হয় সেটা বড়দা জানেন।’
এই সময় এ্ক আগন্তুক পানশালায় প্রবেশ করে ছোড়দা-মেজদার টেবিলের সামনে বসলেন। তাঁকে বেয়ারা এসে, ‘কি দেব?’ প্রশ্ন করার আগেই তিনি অধ:পতিত বড়দার দিকে আঙুল দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন,‘ইনি কে?’
বেয়ারা বলল,‘ইনি বড়দা।’
আগন্তুক বড়দাকে খুব ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করে তারপর প্রায় ষড়যন্ত্রকারীর মতো গলা নামিয়ে বেয়ারাকে বললেন, ওই বড়দাকে যা দিয়েছিলে, ভাই আমাকেও তাই দিয়ো।
পুনশ্চ:
গঙ্গারাম, আমার পোষা চরিত্র, অবশেষে তার মাতলামির গল্পই বলি। রোববার সকালে অনেক বেলায় ঘুম থেকে উঠে হ্যাং-ওভারগ্রস্ত গঙ্গারাম বেশ কয়েকবার আড়মোড়া ভাঙার পর বৌকে জিজ্ঞাসা করল, ‘হ্যাগো, কাল রাতে আমি বাড়ি ফেরার সময় কি কোন হইচই করেছি?
‘না তুমি করোনি। গম্ভীর মুখে গঙ্গারামের বউ বলর, হইচই করার মতো অবস্থা তোমার ছিল না। তবে যারা তোমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে তারপর চ্যাংদোলা করে, বাড়ির মধ্যে দিয়ে গেল তারা খুব হইচই করেছিল। পাড়ার সমস্ত লোক জেগে উঠেছিল।’
1 মন্তব্যসমূহ
আসলে মালের ঘোরে তখন তো তোমার হৈ চৈ করার অবস্থা ছিল না ।
উত্তরমুছুন