অনুগল্প : মাধবীলতা

সুদেষ্ণা দাশগুপ্ত

সন্ধ্যার ঠিক মুখে কোণার দোতলা বাড়ির ওপরের ঘর থেকে শাঁখের আওয়াজ শুনে মাধবীলতা দুহাত মাথায় ঠেকায় তারপর পাশে বসা তার সখিকে বলে - তুই হচ্ছিস আমার মা, বুঝলি। এক মা চক্ষু বুঁজেছেন সেই পাঠশালে পড়ার কালে, মনে পড়ে না তেমন, আর এই বড়কালে যকোন পাপের পুকুরে ডুবতি যাচ্ছিলাম, তুই ঠ্যাং দুখান চেপি ধরলি, আরেক মা হয়ে। আমায় কেমন জেবন দেকালি আবার। একনও আমি পুকুরেই ডুবে আচি, তোর ঋণের পুকুরে। এ ঋণের বোঝা যে আমি ক্যামনে শোধাই!
মাধবীলতার সখি বোঝে না এত আবেগের কথা। সে জানে মাধবীলতা তার বন্ধু।

****
কোথাও রাত ভ'রে বৃষ্টি হয়েছে কাল, এদিকে ভোরটা ভেজা ভেজা, স্যাঁতানো যেন। মাধবীলতার সখি কেমন মনমরা। তার কাজেও যেতে ইচ্ছে করছে না। জানে একদিনের মাইনে কাটা যাবে, তবু। সে চাপা স্বভাবের, তাও মাধবীলতা জোর করে তার মনের কুঠুরিতে লুকিয়ে রাখা কথা একদিন জেনে গেছিল। জেনে গেছিল যে সে কোণার দোতলা বাড়ির কিঙ্করদাকে মনে মনে ভালোবাসে।
দোতলা বাড়ি থেকে সানাইয়ে ভোরে বেহাগের সুর ভেসে আসছে। কাল সে বাড়িতে কিঙ্করদা আর তার সখি মাধবীলতার ফুলশয্যে হলো যে।
ছবি: উৎপল দাশগুপ্ত

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ