‌জয়ন্ত দে'র গল্পঃ আমি কৃষ্ণার প্রেমিক



মোবাইলে ছোট্ট একটা এসএমএস এল—অপেক্ষা করছি। একবার আসতে পারবেন? এসএমএসটা দেখলাম। একবার নয়। বার বার। বোতল খুলে জল খেলাম। একটা চা চাইলাম বিশুর কাছ থেকে। অসময়ের চা। বিশু একটু কপাল কোঁচকাল। ঠক করে চায়ের কাপটা নামিয়ে দিয়ে গেল টেবিলে। খুব আয়েশ করে চা খেলাম। আবার এসএমএসটা দেখলাম।
বেশ কয়েকবার। না, আর কিছু লেখেনি। হাতের,ঘড়ি দেখলাম। ছুটি হতে এখনও পঞ্চাশ মিনিট বাকি।

আচ্ছা, আমি যে এসএমএসটা দেখেছি, বা বার বার দেখছি, সেটা কি গিরীন্দ্র দেখতে পাচ্ছে বা বুঝতে পারছে?

গিরীন্দ্র। গিরীন্দ্র প্রসাদ লাহিড়ী। খুব বড় ঘরের ছেলে। মদ আর জুয়াতে সর্বস্বান্ত। একদা আমার নীচের ফ্ল্যাটের ভাড়াটে। চার মাস ভাড়া বাকি রেখে পালিয়েছে। সঙ্গে আমার বউটিকে নিয়ে গেছে। তার গা ভরা গয়না পরিয়ে তাকে নিয়ে গেছে। পথ খরচা হিসেবে আলমারিতে যে হাজার চল্লিশেক টাকা ছিল তাও নিয়ে গেছে। সেই গিরীন্দ্র আমাকে এসএমএস করছে। আমি ইচ্ছে করলে পুলিশ ডাকতে পারি।

পরকীয়া, নারীপাচার, ভাড়া মারা, গয়না গায়েব, টাকা চুরির কেসে ফাঁসাতে পারি। পুলিশকে দিয়ে আচ্ছা করে প্যাঁদাতে পারি। জেলের ঘানি ঘোরাতে পারি। কিন্তু আমি কিছুই করছি না। এসএমএস দেখলাম। চা খেলাম। একটা সিগারেট খাওয়া যেতে পারে।

গত হপ্তার মঙ্গলবারে গিরীন্দ্র এসেছিল। ঠিক এভাবেই আমাকে এসএমএস করেছিল।

‘সামনের চায়ের দোকানে আছি। একবার আসতে পারবেন?’

আমি এই এসএমএসটা দেখে বুঝতে পারিনি, এটা গিরীন্দ্রর। কেন না আমার বউ নিয়ে লোপাট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শয়তানটা মোবাইল নম্বরটা ত্যাগ দিয়েছিল। ওর পুরনো নম্বরটা আমার কাছে আছে। মাঝে মাঝে আমি ওই নম্বরে ফোন করি। ফোন করে দেখি রিং হয় কি না?

সেই গিরীন্দ্র আমাকে অন্য নম্বর থেকে এসএমএস করেছিল। আমি তো বুঝিনি। এসএমএস পেয়ে সটান হাজির হয়েছিলাম চায়ের দোকানে। দেখি কেউ নেই। আশ্চর্য! ভাবলাম, কী কেস ভিজিলান্স নয় তো? একটু ভয়ও লাগল। কেউ নির্ঘাত ঠুকে দিয়েছে। অনেক সময় এভাবেই কন্টাক্টররা বিল পাশের জন্য আমাকে এমন এসএমএস পাঠিয়ে চায়ের দোকান থেকে ডাকে। সেখানেই টাকা পয়সার কথাবার্তা, লেনদেন হয়। সে কথা ভেবেই আমি চায়ের দোকানে এসেছিলাম। অফিসের সামনে এই একটাই চায়ের দোকান। এসে দেখলাম, আমাকে ডাকার মতো কোনও লোকজন নেই। মনটা খুঁত খুঁত করছে। কে ডাকল? কেন ডাকল? এসব ভাবতে ভাবতে আমি যখন ফিরছি। তখনই প্রায় আমার কানের কাছে এসে গিরীন্দ্র ডাকল, ‘স্যার আমি। একটু কথা ছিল!’ আমি গিরীন্দ্রকে দেখে হাঁ। গিরীন্দ্র এখানে? আমার সামনে? কী সাহস! শুয়োরেরবাচ্চা! রাগে আমার থরথর করে শরীর কাঁপছে। মাথা খুলি যেন ফেটে উড়ে যাবে। গিরীন্দ্র বলল, ‘স্যার একটু কথা ছিল। প্লিজ স্যার!’ আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি। গিরীন্দ্র বলল, ‘আসুন না, একটু ওদিকে গিয়ে বসি।’

আমার শরীর পাথর হয়ে আছে। কিন্তু ততক্ষণে গিরীন্দ্র আমাকে ফেলে সামনে এগিয়ে গেছে। যেন ও নিশ্চিত আমি ওর সঙ্গে যাব। ও আমাকে টানছে। কিছু দূর গিয়ে গিরীন্দ্র দাঁড়াল। যেখানে দাঁড়াল, সেখানে একটা সিমেন্টের স্ল্যাব পাতা। অনেকেই সেখানে বসে। আমি আগে কোনওদিন ওখানে বসিনি। আজ ওখানে কেউ বসে নেই। গিরীন্দ্র ওখানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি গিয়ে দাঁড়ালাম।

গিরীন্দ্র ধপ করে বসে পড়ল। তারপর আমাকে দেখে বলল—বসুন স্যার।

বিকেল হয়ে এসেছে। এখন শীতকাল। চারদিকে কেমন শুকনো শুকনো ভাব। ধুলোর আস্তরণ পড়ে। গিরীন্দ্রকে দেখলাম, কেমন যেন রুক্ষ, খড়ি ফোটা। গিরীন্দ্র তো এমন নয়। জমিদারের নাতি। কত গপ্প শুনেছি। সোনার মোহর দেখেছে। বাপ ঠাকুর্দা বাইজি নাচাত। সেই করেই সব গেছে। গিরীন্দ্র এসেছিল ত্রিপুরা থেকে। বড়বাজার থেকে কাপড় কিনে ত্রিপুরায় সাপ্লাই দেবে। যা হিসেব দেখিয়েছিল, খুব
লাভ। কৃষ্ণাকে সস্তায় দুর্দান্ত সব শাড়ি এনে দিত। হারামজাদা! কবে যে ওদের প্রেম পিরীতি হয়েছিল, আমি জানতে পারিনি। জানলাম কৃষ্ণার চিঠি পেয়ে। কৃষ্ণা তখন গিরীন্দ্রর সঙ্গে চলে গেছে। গয়না, লকারে যা টাকা ছিল সব নিয়ে গেছে।

কৃষ্ণা নির্ঘাত জানত না গিরীন্দ্র একটা জালিয়াত। জুয়াড়ি। ওরা চলে যাওয়ার পর আমি ওর খোঁজ করতে করতে বড় বাজারে ভীমশঙ্কর উমাশঙ্করের দোকানে গিয়ে গিরীন্দ্রর স্বরূপ জানতে পারি। গিরীন্দ্র ওদের অনেক টাকা মেরে পালিয়েছে। ততদিনে আমার আত্মীয় স্বজন জেনে গেছে। অফিসেও আমার বউ পালানোর খবর এসেছে। একদিন নরহরি ভট্টাচার্য হাসতে হাসতে বলল, ভাগ্যবানের বউ মরে। কিন্তু যাদের বউ পালায় তারা হতভাগ্য। ইচ্ছে করলে আর একটা বিয়ে করতে পারে না। যে কোনও সময় বউ ফিরে আসতে পারে। গিরীন্দ্র আমাকে সেই বউ ফিরিয়ে নেওয়ার কথাই বলতে এসেছে। শুধু আমার একটা অনুমতি চায়। অনুমতি পেলেই ও কৃষ্ণাকে আমার কাছে তুলে দিয়ে যাবে।

আমি অবাক চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। গিরীন্দ্র বলল, তারা বিয়ে করেনি। একসঙ্গে থেকেছে এই সাত মাস। তাই আমার কৃষ্ণাকে নেওয়ার কোনও বাধা নেই।

আর গিরীন্দ্র এসে কোনওদিন আমার বউ দাও বলে ঝামেলাও করবে না। নো দাবী দাওয়া। আমি গিরীন্দ্রকে বললাম, দাবী দাওয়া মানে! আমার সতেরো ভরি সোনার গয়না, চল্লিশ হাজার টাকা নিয়ে তুমি গেছ। আমার কথায় গিরীন্দ্র জিব কাটল, ‘কী যে বলেন স্যার। ও জিনিস আমি নিইনি। যা নিয়েছে তা আপনার স্ত্রী। আমি আপনার স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলাম। তাকে ফেরত দিচ্ছি। তবে হ্যাঁ, আমার তিন মাসের ভাড়া বাকি ছিল। দিইনি। সেটাও আমি দিয়ে দেব। তবে এখন না। পরে। আমি চাপা গলায় গিরীন্দ্রকে বললাম, গেট আউট। আর কোনওদিন এখানে এলে জুতো খুলে মারব। কৃষ্ণা যাওয়ার সময় আমার পারমিশন নিয়েছিল? এখন বাড়ি ফেরার পারমিশন চাইছে?’ গিরীন্দ্র ফ্যাকাসে মুখে বলল,

‘কৃষ্ণা আপনার বাড়িতে ফিরতে চাইছে না। ও একটু বাঁকা পথে হাঁটতে চাইছে। সেই জন্য আপনার অনুমতি চাইছে। অনুমতি দেবেন না স্যার। বরং আপনাকে দিয়ে যাচ্ছি, ওকে নিয়ে ঘর সংসার করুন।’
‘ঘর সংসার! নষ্ট মেয়েমানুষ!’ আমি ঝপাত করে গিরীন্দ্রর কলার চেপে ধরলাম।

‘ওকে মরতে বলো।’

‘আপনি আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছেন স্যার। এটা ঠিক করছেন না। ভালো মন্দ কিছু হলে ফেঁসে যাবেন। ও সহজ মেয়ে নয় স্যার।’

‘গেট আউট।’

জামা ঠিক করতে করতে গিরীন্দ্র বলল, ‘এই প্রথম কাউকে দেখলাম, যে হারানো জিনিস ফেরত পেয়ে এত রেগে যায়। আসি স্যার।’

গিরীন্দ্র চলে গেল। কিন্তু সেদিন থেকে আমার মাথার ভেতর খচখচ করছে কৃষ্ণা কিসের অনুমতি চায়? আমার বাড়িতে তো ফিরতে চায় না বলল। তবে?

—মরুক! মরুক! ও মরুক!

আজ সেই ফোন থেকে এসএমএস।

পুরো অফিস করলাম। অফিস থেকে বেরিয়ে দেখলাম, বাইরে বেশ অন্ধকার। সেই অন্ধকারে, সেই সিমেন্টের স্ল্যাবে গিরীন্দ্র বসে। আমাকে দেখেই উঠে দাঁড়াল। আমার কাছে এসে বলল, ‘একটু ডিসটার্ব করলাম স্যার। খুব দরকার। কথা আছে চলুন।’

‘কী দরকার তুমি এখানেই বলো।’

‘এখানে সব কথা বলা যাবে না স্যার, দিঘির পাড়ে চলুন, আমরা বসে কথা বলি।’ কথাটা বলেই ও হাঁটতে শুরু করল। সে দিনের মতোই ও নিশ্চিত আমি ওর পিছন পিছন যাব। দিঘির পাড়ে। দুজনে বসলাম। শীতকালের সন্ধে। চারদিক বেশ ফাঁকা। বললাম,

‘কী দরকার বলো!’

গিরীন্দ্র হালকা গলা খাকারি দিল, বলল, ‘স্যার আপনি কি কৃষ্ণাকে এখনও ভালোবাসেন? কৃষ্ণা কিন্তু স্যার আপনাকে ভালোবাসে না। আমাকেও বাসে না।’

আমি চাপা গলায় বললাম, ‘এই ন্যাকামির কথা বলতে এসেছ?’

‘হ্যাঁ স্যার। আমি হান্ড্রেড পারসেন্ট সত্যি কথা বলছি। আপনি স্যার এত ঘুষ খান বলে ও আপনাকে ভেতর ভেতর খুব ঘেন্না করত। এটা নাকি ওর বিয়ের আগের থেকেই হয়েছিল। যখন বিয়ের সম্বন্ধ হয়। তখনই ও জেনেছিল, ছেলের উপরি আয় খুব। মাইনের টাকায় হাত পড়ে না। আপনার মেসোমশাই কৃষ্ণার বাবাকে বলেছিল। আরও কাউকে কাউকে বলেছিল। সে কথাই কৃষ্ণার কানে এসেছিল। ওর

তাই এই বিয়েতে খুব আপত্তি ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর রাজি না হয়ে পারেনি।

ও খুব মনোকষ্টে ছিল স্যার। তারপরই আপনার বাড়িতে আমি এলাম—।’

গিরীন্দ্র মাথা নীচু করে।

‘আমার সাড়ে তিন বছরের সংসার—এসে আমার সবর্নাশ করলে।’

‘কী জানি স্যার কার সর্বনাশ হল? আপনার, না আমার? আমার তো স্যার কাজ কারবার বুঝেছেনই। সরল পথে কিছু নয়। পুরোটাই ধাপ্পা! কিন্তু একটা জিনিস আপনি বলুন স্যার। আপনার সঙ্গের লোকটি যদি সব সময় আপনার দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলে, ধাপ্পাবাজ, জুয়াড়ি, মিথ্যেবাদী—আপনার মনে অবস্থা কেমন হবে? আমার তাই হয়েছে স্যার। ও আমাকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। আমার সব কথা জানার পর ও এত ঘেন্না করে, যে আমার নিজেকেই নিজের ঘেন্না লাগছে। তবে কি বুঝলেন স্যার, কৃষ্ণার ব্যাপারে কিন্তু আমি ধাপ্পা দিইনি। ওকে সত্যিকারের ভালোবেসেছি। নাহলে আপনাকে ফেরত দিতে আসি। আপনি সেদিন আমায় কলার ধরে হেনস্থা করলেন, বললেন, এর পরে এলে জুতো পেটা করবেন। তবু দেখুন আমি এসেছি। কেন এসেছি। আমি কৃষ্ণাকে ভালোবাসি আর
কৃষ্ণা আমাকে ভালোবাসে না। ও বুঝতে পেরেছে, ও ভুল করেছে। ও ভুল শুধরে নিতে চায় স্যার।’

‘ভুল শুধরে নেবে! কী করে? আবার আমার ঘাড়ে উঠবে? না, না—।’

‘না, না, স্যার ও আমার বা আপনার কারও সঙ্গে থাকতে চায় না। ও একা বাঁচতে চায়। স্বাধীনভাবে।’

‘মানে?’

‘তাই তো বলছে স্যার। একা থাকবে। আমি বললাম, আমাকে ভালো লাগছে না, চলো তোমাকে তোমার স্বামীর ঘরে ফিরিয়ে দিয়ে আসি। আমি কোনওদিন আর ও-মুখো হবো না। কিন্তু ওর এক গোঁ, ও একা বাঁচবে। ওর পেটে বিদ্যা আছে, চাকরি করে খাবে। ওর হাতে সতেরো ভরি সোনা আছে, ব্যবসা করে খাবে। কিন্তু আমার বা আপনার সঙ্গে থাকবে না। কী মুশকিল বলুন তো! ওকে আমি বলেছি, পুরুষজাতটাকে জানো না শেয়াল কুকুরের অধম! তোমাকে একা পেলে ছাড়বে না। ও স্যার আমার কথা শুনে হাসে। বলে, না, কোনও পুরুষই আমায় ক্ষতি করেনি।

কেউ-ই শেয়াল কুকুর নয়। আমি স্যার খুব তর্ক করেছি, বলেছি, কেন? তোমার বাবা জেনে শুনে একটা ঘুষখোরের সঙ্গে তোমার বিয়ে দিয়েছে। তোমার বর একটা ঘুষখোর, পাপের টাকা এনে তোমার হাতে দিয়েছে। আর আমি একটা ফালতুলোক! জুয়াড়ি! ধাপ্পাবাজ। আমরা তিন তিনটে পুরুষ—জল মাটি আকাশ—সবাই তোমাকে ঠকিয়েছি।’

কথাটা বলে গিরীন্দ্র থামে। হ্যা হ্যা করে শ্বাস নেয়। বলে, ‘ও কি বলে জানেন স্যার—বলে কেউ আমায় ঠকায়নি। তোমরা সবাই আমাকে ভালোবাসো। কিন্তু আমি ভুল করেছি। আমি এবার ভুল শুধরে নেব। আমি একা থাকব। নিজের মতো। আমি ওকে বলেছি স্যার—এত বড় পৃথিবী, তুমি একা থাকবে কী করে? ও বলে—এত বড় পৃথিবী বলেই তো একা থাকতে পারব। স্যার, আপনি ওকে পারমিশন দেবেন না স্যার। ও আপনার বিয়ে করা বউ। আপনার হাতে আইন আছে। ওকে আটকান স্যার। একা মেয়েমানুষ ব্যবসা করে খাবে—হবে না। ওকে গয়না চুরির কেসে ফাঁসান। ওর স্কুল কলেজের সব সার্টিফিকেট আপনার বাড়ির লকারে। লুকিয়ে ফেলুন স্যার। পুড়িয়ে দিন। চাকরি করবে! একা থাকবে! হবে না। ওর বাবা বলেছে। আমি বলেছি। আপনিও বলুন স্যার। ওকে ভয় দেখিয়ে আপনার পায়ের নীচে রাখুন। এত বাড় ওদের বাড়তে দেবেন না। ওরা আমাদের ভালোবাসায় থাকুক। একথাটা ওদের বুঝিয়ে দিতে হবে স্যার। স্যার?’

আমি গিরীন্দ্রর কাঁধে হাত রাখি। রাগে ফুঁসি। ‘ঠিক বলেছ গিরীন্দ্র—এত বাড় ওদের বাড়তে দেওয়া ঠিক নয়।’

গিরীন্দ্র হাসে। স্বস্তির শ্বাস ফেলে। ‘উঃ বাঁচালেন স্যার। বড্ড বাঁচা আমাকে বাঁচালেন। নিজেও বাঁচলেন অবশ্য! নাহলে ফালতু একটা খুনোখুনির মধ্যে আমাকে আপনাকে জড়িয়ে পড়ত হত।’

‘খুনোখুনি! কেন?’ আমি প্রশ্ন করলাম।

‘হ্যাঁ স্যার। আপনি যদি অনুমতি দিতেন। মানে কৃষ্ণা একা থাকবে, আমাদের চোখের সামনে নিজের মতো জীবন কাটাবে, একা বাঁচবে, কৃষ্ণার পক্ষে থাকতেন... তাহলে আমি সেটা হতে দিতাম না স্যার। কুচ করে এক ক্ষুরের টানে আপনার গলার নলি দু ফাঁক করে দিতাম। ধরাও পড়তাম। ধরা পড়ে বলতাম—আমি কৃষ্ণার প্রেমিক। আমি কৃষ্ণার কথায় ওর বরকে খুন করেছি। ব্যস, কৃষ্ণার আর একা থাকা হত না। তখন এক ছাদের নীচে—এক জেলে। ওর একা বাঁচা হত না। উঃ আমি আপনি, আজ দুজনেই আমরা বেঁচে গেলাম স্যার। স্যার, স্যার, আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন স্যার।’

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 মন্তব্যসমূহ