মোল্লাবাড়ির পানির হাউজটার নাম হাডুলটঙ্গ। ওখানে দাঁড়িয়ে আছি অনেক্ষণ। মনোযোগ দিয়ে দেখছি এর মাথা থেকে পা পর্যন্ত ছেয়ে থাকা অর্ধগলিত ফেনা ওঠা ভাত বা নুনের দানার মতো ছড়িয়ে থাকা বিক্ষিপ্ত ছত্রাক, বিবর্ণ ঘাস। আরো নিবিড় করে চোখে কচলে খুঁজছি দেয়াল ঘষে খোদাই করে রাখা কোন এক প্রাগৈতিহাসিক কালের প্রেমস্মৃতি। স্মৃতিকাতর হই। এইতো এখানেই আছে কোথাও কালকেউটে লুকিয়ে থাকার দিন, ধানগোলার ঘর, বল্লারটোকের বাসা। ডাক্তারবাড়ি আর দুলাল কাকার উঠুনের পথ এদিক থেকেই শুরু। কুমারী নদী আর চেয়ারম্যান বাড়ির মোরগফুল গাছের ঝাড়টা নিশ্চয়ই আছে কোথাও এখনো।
আমি দাঁড়িয়ে আছি ফড়িংয়ের ঘরটাকে পেছনে রেখে। ভেবেছি ওর গলায় স্বর পেলেই ডাকব। কই কেউ তো আসে না এদিকে!
- কে আফনে?
- আমি? আমি বহ্নি!
- বহ্নি! মানে বুনো! মানে আফনে বুনো আফা?
আমার হ্যাঁ অথবা না উত্তরের আগেই মেয়েটার চোখ মুখ পাল্টে যায় দ্রুত, আমি দেখতে পাই ক্রমশ তার চোখে ঘনিয়ে উঠছে দীর্ঘদিন জমিয়ে রাখা কুণ্ডলিত ক্রোধ।
এই রুক্ষ চেহারার পেটমোটা মেয়েটা কখন আমার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছিল টের পাইনি। খেয়াল করে দেখি মেয়েটার চোখ ঘোলা। ব্লাউজের মাঝ বরাবর একটা ধাতব সেফটিপিন হাঁ হয়ে আছে । আমার মনে হলো সুমিত ওকে দেখলেই দাঁত চিবিয়ে বলতো, অ্যা পারফেক্ট ন্যাস্টি উম্যান! অ্যা আগলি গার্ল!
আমি এ আগলি গার্লকে ভালো করে দেখার আগেই মেয়েটা আমাকে আবার প্রশ্ন করে-
- আফনে কেমন মাইয়া হু, আফনের কলঙ্কে আফনের বাপ গলায় দড়ি দিছিল না মনে নাই আফনের?
আমার এসব অতীত মনে করার চেষ্টা করতে হয় না, সবই মনে আছে, একথা তাকে বোঝাবে কে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আমার এসব প্রাগৈতিহাসিক ঘটনায় মেয়েটা এত উত্তেজিত কেন!
আরো খেয়াল করে দেখতে পাই ক্রামন্বয়ে আমার পরিচয়ঘটিত সমস্যা সমাধানে তার মুখ লাল হয়ে উঠছে। কাঁপছে, অস্থির তাড়াহুড়োয়। তার উদ্ধত আচরণ বলে দেয় কী যেন করতে চাইছে সে আমায়, তার গাঢ় ময়লা ঠোঁট তড়বড় করে নড়ে কত জানা অজানা জিজ্ঞাসায়-
- আফা সত্য কথা, আফনের কি নিজেরে ছেনাল মনে হয় না? আফনের কী মনে হয় না আফনে একটা নষ্ট মাইয়ালোক! কেমনে পারলেন বিয়াইত্তা এক হিন্দু ব্যাডার লগে ঘটনা ঘটায়া পলাইতে? গেরামে কত ছি ছি। দুনিয়ায় এত মোসলমান! এত ব্যাডা মানুষ, খালি আফনেই ভাইগ্যা যাওয়ার আর কোন মর্দা পাইলেন না।
কথা বলতে বলতে মেয়েটার ঘাড়ের রগ ফুলে ওঠে, অনেকদিনের ফুঁসে ওঠা রাগ গলে গলে পড়ে তার ঠোঁট দিয়ে। মেয়েটা বলছে তো বলছেই, মিছিলের মতো ধেয়ে আসছে তার শব্দরাশি। আমার অদ্ভুত লাগে, কে এই মেয়ে? আমার উপর তার এত রাগ কেন? তবে মেয়েটাকে আমার ভাল লাগছে। তার পোকায় খাওয়া উঁচু দাঁত ক্রমশ প্রকাশ্য হয়, মুখের দুর্গন্ধজাত বন্ধ বাতাস ভাগাড়ের সৌরভে নিয়ে আমার চারপাশ দূষিত করছে ; তবু আমার ভালোলাগছে। আমি মেয়েটার রাগ কমার অপেক্ষা করি! তাকে বলা উচিত, তার বুকের সেফটিপিনটা খুলে পড়েছে অনেকটা। যেকোনো সময় আলগা হয়ে বেরিয়ে যাবে তার স্থূল শরীর, অর্ধ নগ্ন বুক। মেয়েটার চিবিয়ে চিবিয়ে বলা কথায় আমি কৌতুক বোধ করি। ফুলমাসীকে মনে পড়ে। ফুলমাসীও মেয়েটার মতো চেঁচায়! যদিও তার চেঁচানোর কারণ আলাদা, তবু কোথায় যেন এই মেয়েটার সঙ্গে তার মিল আছে। তিনতলার বারান্দা থেকে সময় সময় আমি মনোযোগ দিয়ে ফুলমাসীর চিৎকার শুনি ‘রে হারামি মুসলমান খানকির পোলারা, কত আর আমার গতর দেখবি, আমার ঘরের ফুটায় কত আর চউখ দিবি! আয় কাছে আয়, তগোরে আমার লাঙ্গ বানাই, আয় কাছে আয় তগোর ধোন দেখি, আয়। ভগবান তগোরে কুষ্ঠ দিয়া পচায়া মারব, দেখিস কইলাম! আমার পাছা দেইখা শরীর চুলকায়! চুলকাক! সব ওই ভগবান দেখব।’ এরপর ফুলমাসী পায়ের গোড়ালির ওপরে বিঘতখানেক শাড়ি পাড় তুলে নরম তুলতুলে মাংস ডলে ডলে আরো প্রলোভন বাড়িয়ে দেয় পথচারীর। কলতলাটা অশ্লীল শব্দের ঝংকার তুলে প্রায়শই জমিয়ে রাখেন তিনি। আমি মুগ্ধ হয়ে শুনি। হাসি পায় একটা কথা ভেবে, আচ্ছা সত্যিই কি ফুলমাসীর ভগবান কখনো আসেন বিচার করতে কে তার পাছা দেখছে সেসবের ? এসব ভেবে হাসতে থাকি একা একা। একফাঁকে সুমিত এসে পাশে দাঁড়ায় । আমাকে বা ফুলমাসীকে দেখে তার দাঁত কিড়মিড় করে। হাউ ন্যাস্টি কনসেন্ট্রেশন, হোয়াট কাইন্ডস অব ওয়াস্টিং টাইম! ‘হাউ ন্যাস্টি উম্যান, হাউ আগলি!’ হাউ হাউ!
- ফড়িং আছে বাসায়?
ফড়িং নামটা শুনে মেয়েটা এবার একটু ধাতস্থ হয়, এ নাম সে আগে কারো মুখে শুনেনি হয়তো। এই আহ্লাদী নামে মুখে আঁচলচাপা দিয়ে হাসে সে। বলে,
- আফনে হেরে এখনো ফড়িং কন? হেতির নাম তো ফরিদুল। জানেন, আমাগো মাইয়া টিয়া এখন ইস্কুলে পড়ে?
মেয়েটার চোখে গর্ব, মুখে একটু লাজুক হাসি। এবার বুঝতে পারছি মেয়েটা কে!। সে অযাচিতভাবে গা দোলায়, একটু হাসে একটু থামে। তার সে হাসির মধ্য-বিরতিতে তলপেটের মাংসপিন্ডে বয়ে যায় ঢেউ। আমি এও বুঝতে পারি মেয়েটা আবার গর্ভবতী।
- দেখছেন পেটেরটা কেমন নড়ে। মনে হয় পোলা হইব। এইবার পোলা হইলে নাম রাখমু শালিখ। মাইয়ার নাম তো আগেই রাখছি টিয়া। শালিখ আর টিয়ার বাপের নাম ফড়িং! কেমন সোন্দর! হিহিহি, ফড়িং ফড়িং ফড়িং। সোন্দর ফড়িং।
প্রাথমিক ঝড় শেষে তার আপন ঘর সংসারের সুখে মেয়েটা এখন সহজ, আমার উপর আর রাগ ধরে রাখতে পারছে না। তার রাগের উৎস হয়ত আমার ছেনালিপনা নয়, আমার বাবার আত্মহত্যাও নয়, তার রাগের কারণ মনে হয় তারই বিবাহপূর্বে ফড়িংয়ের এই আমাতে প্রণয়াসক্তি। আমি বুঝতে পারি।
সে এবার হঠাৎ গ্রামদেশীয় অথিতিপরায়ণতায় সচেতন হয়ে ওঠে। ভুলেই যায় পূর্বকার ফুঁসে ওঠা বিদ্বেষ, ঘৃণা। আমার হাত ধরে মোল্লাবাড়ির উঠোনে টেনে নেয়। উঠোনের কোণে সুপারিগাছের খোলের বেড়ার পাশে শুনতে পাই শোরগোল! একটা ছাল ওঠা কুকুর এ বাড়ির উঠোন থেকে মুরগির বাচ্চা কামড়ে নিয়ে পালাচ্ছে, এসব দৃশ্য আমার পূর্ব পরিচিত। শৈশবে দেখা। এ বাড়ির শক্তসমর্থ কর্তা পুরুষটি নিশ্চয়ই এখন কাঠের পিঁড়ি নিয়ে তাড়া করবে কুকুরের পিছু। আমি আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছি, কে এসে ভেঙে দেয় কুকুরের কোমর, কেউ আসে না। ফড়িংকে দেখতে পাই ঘেমো শরীরে উঠোনের আরেক মাথায় দাঁড়ানো। মরা একটা শিমুলগাছ কেটে রান্নার জন্য লাকড়ি করছে। সেই ফড়িং! ওর হাতে কুড়োল। কুকুরের কামড়া-কামড়িজনিত কোনো উত্তেজনা নেই ফড়িংয়ের ভেতর। হঠাৎ চোখ পড়ে। আমাকে দেখে সে বিস্মিত, হাঁটুর নিচে লুঙ্গি নামায় টেনে।
-বুনো, কখন আসলি? সুমিত দা এসেছেন?
সুমিত দা নামটা বলতে বলতে ফড়িং লজ্জায় চোখ নামায়, এতদিন পরেও সুমিতের সঙ্গে আমাকে ভেবে কিছুটা অপ্রস্তুত সে!
-কাল রাতে এসেছি, সকাল থেকে তোর ঘরের পেছনে দাঁড়িয়ে আছি। তোদের ঘরে জায়গা হবে? ঘুমোব একটু।
-আরে পাগলি কী বলছিস! আয়, আয় ঘরে আয়। কতদিন পর তুই!
আমি কথা বলতে চাই অনেক। জিভ সরে না। সামনে দাঁড়ানো খলবল করে কথা বলা মেয়েটিকে খুঁজি। আমার মুখে জড়তা। দীর্ঘদিনের অনভ্যাসে মুখ দিয়ে আগের সেই সহজ ভাষাটি আসে না। ফড়িংয়ের ওসবে খেয়াল নেই, সে উত্তেজনা সামলাতেই ব্যস্ত!
- তুই আসবি আগে একটু বললে কী হতো?
- গ্রামের পাট তো চুকেছে কবেই, আজ বাড়ি বিক্রির দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার কথা, তাই আসা।
ফড়িং চুপ! আমার মনে পড়ে ওবাড়ির সঙ্গে একসময় ওর সম্পর্ক সাপে-নেউলে ছিল। মা বেঁচে থাকতে মায়ের দুচোখের বিষ ছিল ফড়িং। একসময় এই বুনোর জন্য কত কী সইতে হতো ফড়িংকে।
মা জননী বুনো, ভালো আছিস মা, বলতে বলতে ফড়িংয়ের আব্বা হাত বাড়িয়ে ছুটে আসেন, তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরেন, কাঁদেন, তার কণ্ঠে বিলাপ। দীর্ঘদিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার জন্য অভিযোগ। তিনি বলে যান, আমি নির্বিকার শুনে যাই, যেন অনন্ত অভিযোগ শুনে যাওয়ার এক বড় প্রজেক্ট নিয়ে এসেছি এখানে।
ফড়িংয়ের বউ ভালো করিৎকর্মা। এরই মধ্যেই সে এপাড়ার ছেলেবুড়োর দলকে ডেকে নিয়ে হাজির! সবার মিলিত হাউকাউয়ের মধ্যে এখন আমি দিশেহারা। একটু ঘুমুতে এসেছিলাম এ বাড়ি। তা আর হলো না। কতগুলো একঘেয়ে ঘ্যানঘ্যানে প্রশ্ন রেডিওর মতো ঘুরপাক খেয়ে বেজে যাচ্ছে আমার চারপাশ ধরে। প্রশ্নের ধরন অনেকটা এ রকম
-সুমিতকে নিয়ে কি আমি ভালো আছি?
-সুমিতের আগের বউটা কোথায়?
-সুমিত কি মুসলমান হয়েছিল?
-আমি কি বর্তমানে হিন্দু, নাকি মুসলমান?
-আমার মাথায় সিঁদুর নেই কেন? ইত্যাদি ইত্যাদি।
ফড়িংয়ের বড় জ্যাঠা বুড়ো আসলাম শেখ আমার গা ঘেঁষে দাঁড়ায়! গ্রামের মানুষগুলো এমনই, যৌনতা ছাড়াও এরা স্পর্শ চায়। সেই সেবার যেদিন গ্রাম ছেড়েছিলাম আমার মনে আছে আসলাম শেখ আমাকে আর সুমিতকে বাবলা গাছের ডাল দিয়ে মারতে মারতে প্রায় হাড় ভেঙে দিয়েছিলেন।
আমি কোনো উত্তর দেওয়ার আগেই আসলাম শেখ বলতে লাগলেন ''আম্মা, তোমার মতো মাইয়া এই গাঁয়ে আর জন্মে নাই গো, আমাগোর একটাই গর্ব, সেইটা তুমি। আমরা সব সময় সবখানে গলা উঁচা কইরা কই, আমাগো মাইয়া বুনো বাঘিনী একটা, কত যুদ্ধ কইরা, সংগ্রাম কইরা ডাক্তারি পাস দিছে, তা কয়জন পারে-বলতে বলতে আসলাম শেখ ফড়িংয়ের দিকে তাকায়-দ্যাখ, মা দ্যাখ, ফইরার অবস্থা দ্যাখ, সেই যে বলদটা লেখাপড়া বাদ দিলো, এখন হাওলাদার গো দোকানের স-মিলে দিনরাত কামলা খাটে।
আসলাম শেখের কথায় আমি ঘুমতাড়িত চোখে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে এবার ফড়িংকে দেখি। ওকে দেখলে যে কেউ আমার চেয়ে দশ-পনেরো বছরের বড় মনে করবে। চুল প্রায় অর্ধেক পাকা, অধিক পান খাওয়ার ফলে দাঁত কুচকুচে কালো। আমাকে দেখে ভদ্রস্থ হওয়ার চেষ্টা করছে তখন থেকে, তার ফলে ওর বাহ্যিক দর্শন আরও কদর্যই লাগছে। ফড়িংকে দেখে কত প্রশ্ন মনের ভেতর ঘুরপাক খায়।
আচ্ছা, এরপর কি ফড়িংয়ের মনের বয়স বেড়েছিল আর?
এখনো কি সে রাত-বিরাতে পাড়া-প্রতিবেশীর গাছের ফলফলাদি চুরি করে?
এখনো কি তার নইদ্যার পুকুরের মাছ চুরির আশায় ঘুম হারাম হয়? কে জানে?
আহা, সুমিতের মতো শত্রুপক্ষের আর কারও ঘরে কি লাল পিঁপড়ার বাসা রেখে আসে ফড়িং?
কেমন আছে ও?
ভালো আছে তো?
- একলা আইছ আম্মা? সঙ্গে কেউ আসে নাই!
-না আসেনি।
বুঝতে পারছি সুমিত নামটা নিতে বড় জ্যাঠা ইতস্তত করছেন, আমিও আর কথা খুঁজে পাই না, সুমিতকে মনে করে কথা খুঁজি। কাল একটা নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ফাইনালের মডারেশন বোর্ড আছে ওর। সঙ্গে আরেক কমিটির কারিকুলাম প্রণয়ন। ওকে সেখানে ছুটতে হবে। সম্ভবত সেখানে রেনুকা বালাও থাকবেন। সুমিতের ভাষায় হাউ গর্জিয়াস উম্যান, হাউ ডেলিসিয়াস, হোয়াট অ্যা পারসোনালিটি!
ফড়িংয়ের বউ সাদা কলপ করা টিনের থালায় কতগুলো মুড়ির মোয়া নিয়ে আসে। ফড়িং এগিয়ে যায় বউয়ের হাত থেকে মোয়া তুলে নিতে। উঠোনে এখন অনেক মানুষ। হোগলা পাতার বিছানায় পা মুড়ে বসেছে সবাই, মাঝে আমি। বউটা নিচে বসতে পারছে না, ওর জন্য ফড়িং একটা মোড়া নিয়ে আসে টেনে। গামছা দিয়ে বাতাস করে বউয়ের গায়ে, ফড়িংয়ের তৎপরতায় আমার ক্লান্তি লাগে। ঝিমুনি লাগে খুব। হাঁসফাঁস করে বুক। সুমিতের হাতে কখনো গামছা দেখিনি। অলকানন্দা বা নীল অপরাজিতা! না, তাও মনে পড়ে না। আমার মনে পড়ে, গতকালকের ব্যাগ গোছানোর সময়টা, কথা বলছিল ফোনে। গাল চুলকে কোনো এক অধ্যাপকের পিণ্ডি চটকাচ্ছিল টানা ঘণ্টা দুয়েক ধরে। আমার শরীর খারাপ ছিল; পিরিয়ডের দুটো সাইকেল মিস করেছি, গতরাত থেকে তলপেটে ব্যথা, সে ব্যথা নিয়েই এগিয়ে যাই
- সুমিত, একটু শুনবে?
সুমিত হাতে মাছি তাড়ানোর মতো তাচ্ছিল্যে করে দেখায় পরে আসার ইঙ্গিত। বোঝা যাচ্ছিল তার রিসিভারে তখন বেশ উত্তেজনা।
- আরে, আর বলো না। বুড়োটার শিং নেই, তবু গুঁতোতে চায়, গাভীন গাই! রেনুকার কাছে প্রমাণ আছে সব। স্টুপিড একটা, নেহায়েতই তার সঙ্গে ইউজিসির এক প্রজেক্টে কাজ করছি বলে। আরে না না, কারিকুলাম বোর্ডে আমি বুড়োটার নাম প্রস্তাব করিনি, ঘাগু মাল একটা আছে না। ওই যে সানাউল জাহিদ, সেই-ই তো তুলল বুড়োটার নাম। ঐ ক্যাম্পাসে সে একপিস ছাগল রেখে এসেছে। প্রগতিশীল নয়া বুদ্ধিজীবীদের মাঝে সে সবচেয়ে শক্তিশালী বলদ প্রমাণ দেয় সবসময়। ধড়িবাজ দাদা, ধড়িবাজ। খেয়াল করে দেখেছেন, হাত কচলাতে কচলাতে ওর হাতে রেখাই নেই। তাকে গুনব আমি? এই সুমিত মিত্র! হাউ অ্যাবসার্ড! হাউ ইজ ইট পসিবল? হোয়াট অ্যা জোকস!
এ পর্যায়ে আমি সুমিতের ভুলভাল ইংরেজি বয়ানের মাঝেই ঢুকে পড়ি।
-সুমিত, কাল আমি গ্রামে যাব, গাড়িটা লাগবে।
-গাড়ি? গাড়ি কেন? তুমি গেলে যাও, গাড়ি আমার লাগবে। কাল আমার এক্সটারনাল বোর্ড আছে। অনেকটা পথ।
-রেনুকার গাড়িতে গেলে হবে না তোমার?
আমার প্রশ্ন শুনে বিরক্ত হয় সুমিত। সশব্দে নামিয়ে রাখে রিসিভার। এরপর কিছুক্ষণ দাঁতমুখ খিঁচিয়ে কুৎসিত গালিগালাজ দিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। আমার মনে হলো, সুমিতের মুখে ন্যাস্টি, আগলি শব্দগুলো শোনা ছাড়া আরও দুই-একটা খাঁটি বাংলা শব্দ শুনতে পেলাম। সুমিত বলে বেশ! সুমিত তো সেই কবি, সেই আবৃত্তিকার, যার ভরাট কণ্ঠ, উঁচু করা ঘাড়ের বাবরি চুলের মোহে ভুলেছিলাম সমাজ-সংসার। আমার সেই প্রথম যৌবনের প্রেম সুমিত। ওকে দেখলেই তো বুকের ভেতর ব্যথা হতো আমার। সুমিত মিত্র সেই মানুষ যার-একটি কথার দ্বিধা থরথর চূড়ে, ভর করেছিল সাতটি অমরাবতী;
একটি নিমেষ দাঁড়াল সরণী জুড়ে
থামিল কালের চিরচঞ্চল গতি...
আজ আর ভেবে পাই না আমাদের সংসারের সেই সেগুনবাগিচার ফ্ল্যাটে ফিরে যাবার সরণীজুড়ে কী আছে এখন? জলকাদা, সাপ, ব্যাঙ, জোঁক নাকি হাঙর?
সুমিতকে নিয়ে যখন পালিয়েছিলাম, তখন সবে মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী আমি। ভেকেশানে বাড়ি এসেছিলাম। কী থেকে কী হলো। অনেক কোলাহল, অনেক গুঞ্জন, অনেক ঘৃণা মাথায় নিয়ে ছেড়ে গিয়েছিলাম হাডুলটঙ্গ, বল্লারটোক আর কুমারীনদী। আজ হয়ত সেসব মনে করার দায় নেই আমার। সেদিনের স্মৃতি রোমন্থন করতে গেলে ক্লান্ত হওয়া ছাড়া কোথাও নেই কিছু। অদ্ভুত ব্যাপার। এত এত মানুষের কোলাহলে আমার মাথা আর কোনো কাজ করছে না। আমি মনে হয় নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছি। দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে আসার ক্লান্তির আবেশ ছড়িয়ে পড়ছে গায়ে। ঘুমে ভারি হয়ে যাচ্ছে চোখ! চোখের সামনে হুমড়ি খেয়ে পড়ে থাকা মুখগুলো দেখতে দেখতে ছোট হয়ে যাচ্ছে। মুহূর্তে বাতাসে ভেসে ভেসে আমি শূন্যে স্বপ্ন হয়ে হারিয়ে যাই।
-বুনো... অ বুনো, ওঠ ওঠ।
আমি শুনতে পাচ্ছি আমার জানালায় একের পর এক টোকা পড়ে যাচ্ছে। কাল স্কুলে আমার বার্ষিক পরীক্ষা। পরীক্ষায় ফার্স্ট হতে না পারলে বাবা বকবে খুব। জানালায় টুক টুক টুক টোকা! আমি ঘুম ঘুম চোখে জানালা খুলি। ফড়িং সামনে দাঁড়ানো। ময়লা স্যান্ডো গেঞ্জি আর মালকোচা মারা লুঙ্গির গিঁট ঠিক করে সাদা চকচকা দাঁত বের করে হাসছে ফড়িং।
চালুনি আর টেঁটা নিয়ে বাধ্যগত অনুচরের মতো ফড়িংয়ের পিছু পিছু যাই, আশৈশব ফড়িংয়ের বিশ্বস্ত সহযোগী আমি দিন ভুলে যাই, রাত ভুলে যাই। ওর সঙ্গে রাস্তায় ঘুরি, নইদ্যার পুকুরে নামি মাছ ধরতে। এরপর আবার আমরা হাঁটি, পথ আর ফুরোয় না। দিন যায় রাত যায়, আমরা হাঁটি, হাঁটতে হাঁটতে আমরা চলে যাই এমন এক নগরে, যে নগরে মানুষগুলো আর মানুষ নাই, অর্ধেক পুরুষ অর্ধেক নারী। আমাদের সামনে একটা বিশাল প্রাসাদ, ঝালর ঝুলছে। রঙিন ফিতাগুলো উড়ে যাচ্ছে চূড়োয়। আমি আর ফড়িং চেয়ে চেয়ে দেখি সব। দেখতে দেখতে আমার তলপেটে ব্যথা হয়। ভারী হয় পা। তরল রঙিন স্রোত নেমে যায় মাটি ছুঁয়ে, ফড়িং আমার হাত ধরে, আমি ওর হাতের নির্ভরতায় খুঁজে পাই উষ্ণতা। আমাদের পথ ফুরোয় না।
সেই যে ফ্রক পরে হাঁটতে শুরু করলাম, তার পর থেকেই হাঁটছি। হাঁটতে হাঁটতে আমার ফ্রক খুলে পড়ে, আমি নারী হয়ে যাই। দেখতে পাই আমার জরায়ুমুখে শক্ত ইটের মতো ঝুলে আছে একটা মানবশিশু; আমার আর সুমিতের প্রথম নেশার ফল। বাচ্চাটার দুটো পা দুটো হাত আমার পেট ফুঁড়ে বের হয়ে কিলবিল করছে শরীরে। হাতড়ে দেখি শিশুটির যৌনাঙ্গ অপুষ্ট। ভয়ে আমার গা ছমছম করে। ফড়িংকে ধরি, ওর চোখ সাদা। সে আমায় নিষ্পাপ আলোয় ফিসফিস করে বলে, ‘ভয় পাসনে বুনো। বাচ্চাটা আমরা লুকিয়ে রাখব। সভ্যসমাজ এর খোঁজ পাবে না । সুমিতের নিষ্ঠুর করাল জান্তব আগ্রাসন ভয় পাস না আর। একে তুই আর আমি মিলে বাঁচিয়ে রাখব, দেখিস তুই!’ আমার ভয় কমে। আমার সামনে ফড়িংয়ের ঝলমলে মুখ। সেই কিশোর বালকের চোখে তখন কত আলো! ও আমায় ধলপ্রহরের আকাশ দেখায়। অবাক হয়ে দেখি সেও আর কিশোর নেই, পথে পথে কখন হয়ে উঠেছে পুরুষ, যুবক পুরুষ। অনতিদূরে সেই অদ্ভুত নগরীটা। নগরটা দেখতে ঠিক আমার মেডিকেল কলেজের হোস্টেল গেটের মতো। আমায় যেতে হবে, নগরের গেইটে দাঁড়িয়ে সুমিত। সুমিতের হাতে সুনীলের কবিতার বই। সত্যবদ্ধ অভিমানে সুমিত ঘোরগ্রস্ত।
‘এই হাত ছুঁয়েছে নীরার মুখ। আমি কি এ হাতে কোনো পাপ করতে পারি?’ আমার বিস্ময় জাগে, সত্যিই কি নীরা নামে কেউ ছিল তার? সুমিত কোলাব্যাঙের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে আমার কাছে ছুটে আসে, তলপেটে ঝুলে থাকা বাচ্চাটা ছোঁ মেরে নিয়ে ছুটে পালায়। সুমিত ছোটে, আমিও ছুটি। ছুটতে ছুটতে আমার হাত খুলে পড়ে, পা খুলে পড়ে। রাশি রাশি বর্জ্যে তলিয়ে যেতে যেতে আমি অনুভব করি শরীরে শীতল পানির স্পর্শ।
আমার ঘোর ভাঙে। ফড়িং, ফড়িংয়ের বউ, ঘরের আর আর সবাই আমার মুখের ওপর ঝুঁকে দাঁড়িয়ে। মাথার পাশে দীপু কাকা, এই গ্রামের একমাত্র এলএমএফ ডাক্তার দীপঙ্কর বোস। ছোটবেলায় কাকাকে রাজপুত্তুরের মতো লাগতো দেখতে। এখন বুড়ো হয়ে গেছেন। মাথার বেশিরভাগ চুল পাকা। কাকা আমার মাথায় হাত রাখেন, আতঙ্কে তাকিয়ে থাকেন কিছুক্ষণ!
-বুনো, কত সপ্তাহের ছিল রে মা, এ অবস্থায় কেন এলি এখানে? মরতে এসেছিস! আছে কোনো ভালো ডাক্তার এ গাঁয়ে? নিজে ডাক্তার হয়েও নিজেকে মারতে চাইছিস, কার ওপর অভিমান তোর?
দীপু কাকাকে দেখে আমি ধড়মড় করে উঠে বসার চেষ্টা করি, বুঝতে পারি ঘোরের মাঝে অনেক সময় কেটে গেছে কিছু একটা ঘটে গেছে এর মধ্যেই। বাইরে অন্ধকার রাত। উঠতে চাই, ক্লান্ত লাগে খুব। আবার শুয়ে পড়ি। আমার পরনে ফড়িং-এর বউয়ের একটা পুরনো রঙচঙা শাড়ি। চারপাশ দেখে সহজেই অনুমেয় এটা ফড়িংয়ের শোবার ঘরের বিছানা!
দীপু কাকার মুখ চুপসে আছে, অন্ধকারে সে মুখ আরও বিষণ্ন।
আমার গলায় কিছু একটা হয়েছে। স্বর বের হতে চায় না। তবু বলি,
- কাকা, আমার কিছু হয়নি। অনেকটা পথ ড্রাইভ করে এসেছি, রেস্ট হয়নি। কাল সারারাত জেগে ছিলাম, ধকল নিতে পারিনি তাই পড়ে গেলাম।
দীপু কাকা গাঢ় চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকেন। আমি কুঁচকে যাই। মনে হলো, কাকা তার অন্তর্দৃষ্টিতে আমার ভেতরটা পড়ে নিচ্ছেন। আমার নিজেকে অপরাধী লাগে। ছেলেবেলায় কোনো ছোটখাটো অন্যায় করলে দৌড়ে ছুটে যেতাম দীপু কাকার কাছে। কাকার কোলে বসে থাকতাম চুপচাপ। কাকা পিঠে হাত বোলাতেন আর বলতেন, ‘সব ঠিক আছে বুনো, সব ঠিক আছে। তুই যা করেছিস বেশ করেছিস।’ আচ্ছা, আজ যদি আমি দীপু কাকার কোলে তেমনি করে মুখ লুকাই কাকা কি বলবেন "বেশ করেছিস বুনো, বেশ করেছিস!"
আমার আর সুমিতের দেড়যুগের অসার সংসারটা এখনো কি দীপু কাকার কাছে সত্যি সত্যি বেশ লাগবে?
ফড়িংয়ের বউ ঘাবড়ে গেছে, অস্থিরতায় কেমন করছে। কোথা থেকে একগ্লাস দুধ নিয়ে এসেছে মেয়েটা। আমার পাশে বসে মাথা হাতড়ায়, তার চোখ অপরাধী। তার ভাবে মনে হচ্ছে, সেই যেন আমার পেটের বাচ্চাটা টেনেহিঁচড়ে এনে জ্যান্ত মেরে ফেলেছে।
- আপা, কষ্ট হইতাছে খুব? একটু সবুর করেন, বড় জ্যাঠা ভ্যানের খোঁজে গেছে। আপনেরে জেলা সদরে নিয়া যামু আমরা। দুধটা খায়া লন আপা। শইলে একটু বল পাইবেন।
মেয়েটার কাতরতায় আমার কেমন লাগে। মেয়েটা দেখতে একদম ভালো না, গালের হনু উঁচু, দাঁতগুলোও কেমন! চামড়া ময়লা। তবু মেয়েটাকে দেখে আমার মরে যাওয়া বাচ্চাটার কথা মনে পড়ে। বড় হলে কেমন হতো সে? এর মতো শুষ্ক রুক্ষ, ফুলমাসীর মতো বেহায়া, সুমিতের মতো স্বার্থপর অথবা ফড়িংয়ের মতো সাহসী! কেমন হতো? আচ্ছা, বাচ্চাটার যৌনাঙ্গ ঠিক থাকলে সে কি সুমিতের হাতে বেঁচে থাকার ছাড়পত্র পেত? কী জানি কী হতো! একটা কথা ভেবে আমার স্বস্তি আসে, ভালোই হলো এবারের বাচ্চাটা পেটেই মরেছে, সুমিত জানতোই না এর খোঁজ! না হয় আবার সেই হসপিটাল, সেই মর্গ। আমার কেমন লাগে। মর্গের কথায় সেই অপুষ্ট লিঙ্গের বাচ্চাটার কথা মনে হয়, আচ্ছা এতগুলো বছরেও কি বাচ্চাটার ঠান্ডা লাগছে না? লাগছে নিশ্চয়ই। বুক মুচড়ে ওঠে, আমার অবুঝ বাচ্চা! আমার শিশু বাচ্চা, আমার সোনা বাচ্চা।
আমি দুধের গ্লাস মেয়েটার হাত থেকে কেড়ে নিই, ছুড়ে মারি কোথাও। ঝনঝন করে শব্দ হয়। দীপু কাকা, মেয়েটা বা ঘরের আর আর সবাই সরে আসে আমার কাছে। অস্থির লাগে, এই মুহূর্তে আমার ফড়িংকে বড্ড প্রয়োজন। আমি চেঁচাই
ফড়িং
ফড়িং
ফড়িং এগিয়ে আসে। চেপে ধরে আমার হাত, আমি উষ্ণতা পাই না, ঠান্ডা প্রচণ্ড-, মর্গের সেই বাচ্চাটার মতো।
-ফড়িং, মনে আছে, তুই একবার একটা কালকেউটে পিটিয়েছিলি?
-হু, মনে আছে।
- মার খেয়ে সাপটা পালিয়েছিল, আমরা আর খুঁজে পাইনি।
- হু, সব মনে আছে। তুই একটু চুপ থাক তো, পুরনো কথা মনে করে অসুস্থ শরীরে আর অস্থির হওয়ার দরকার নাই।
- না না। আজ না করিস না। বলি আমি, আমাকে বলতে দে, কেউ নেই আর আমার কথা শোনার, সবাই তো একে একে ছেড়ে গেল। তুই একটু শোন না। তুই জানিস, সে সাপটা কোথায় আছে? আমি জানি। চল আমার সঙ্গে, তোকে দেখাই!
- বুনো, চুপ করবি?
- কেন চুপ করব? কোনোকালে কি বলেছি কিছু? চুপচাপ থাকিনি। ভুল তো সবটা আমারই। এবার তুই চল আমার সঙ্গে, একবার দেখবি সাপটা কেমন দুলে দুলে চলে, ফটফট করে ইংরেজি বলে, চল না চল। জানিস সাপটার বিষে অনেক ঘোর, আমি নীল হয়ে আছি। সাবধান এরপর কিন্তু রেনুকাবালা! আমার সারা শরীরে সাপের ছোবল দেখবি ফড়িং, দেখ।
ফড়িং দেখে না, চোখ সরিয়ে নেয়, আমার ভাল্লাগে না, আমি জোর করি। তীক্ষè আঁচড়ে ফড়িংয়ের মুখ টেনে আনি আমার দিকে, ফড়িংয়ের বউয়ের রঙ-ওঠা শাড়ি ব্লাউজ খুলে ফেলি টেনে টেনে। ফড়িং চোখ বন্ধ করে ফেলে। তবু আমি আমার বুক পিঠ ঘাড় খুঁজে খুঁজে দেখাই সাপের ছোবল, দেখাতে দেখাতে অনাবৃত হতে থাকি একটু একটু করে। কাপড়ের অভাবে আমার শীত হয় খুব, ঘরভরা মানুষ ছটফট করে এই অস্থিরতায়। তারপর কী হলো। এত এত মানুষের মাঝে হঠাৎ ফড়িং আমায় জাপটে ধরে, শক্ত করে। আমার জিভে ফড়িংয়ের চোখের নোনতা পানির স্বাদ, ফড়িং, ফড়িংয়ের বউ আর দীপু কাকার ভেজা মুখ দেখতে দেখতে ক্লান্তিতে দুচোখ জুড়ে আসে ঘুম। কতকাল ঘুমাই না আমি। ঝাপসা চোখে ফড়িংয়ের মুখচ্ছবি খুঁজি। ঘুমিয়ে পড়ার আগে ভুলে যেতে চাই একশো সাত বি সেগুনবাগিচার তৃতীয় তলার কোনো একটা ঘরে আমার ফিরে যাবার কথা!
লেখক পরিচিতি
নাহিদা নাহিদ
লেখক পরিচিতি
নাহিদা নাহিদ
সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রকাশিত বই--
প্রকাশিত বই--
২০১৭ সালে প্রথম গল্পগ্রন্থ ' অলকার ফুল'। প্রকাশক-- 'বাঙালি' প্রকাশন ।
২০১৮ সালে দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ 'যূঁথচারী আঁধারের গল্প'। এই বইটির জন্য কথাসাহিত্যে "কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার" অর্জন করেছেন।।
তৃতীয় গল্পগ্রন্থ 'পুরুষপাঠ' এই বইটি প্রকাশিত হয়েছে 'ঐতিহ্য' প্রকাশনী থেকে।
অধ্যাপনা এবং সৃজনশীল লেখালেখির পাশাপাশি 'হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস: মধ্যবিত্ত জীবন' এই শিরোনামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণা কর্মে নিযুক্ত আছেন।
২০১৮ সালে দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ 'যূঁথচারী আঁধারের গল্প'। এই বইটির জন্য কথাসাহিত্যে "কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার" অর্জন করেছেন।।
তৃতীয় গল্পগ্রন্থ 'পুরুষপাঠ' এই বইটি প্রকাশিত হয়েছে 'ঐতিহ্য' প্রকাশনী থেকে।
অধ্যাপনা এবং সৃজনশীল লেখালেখির পাশাপাশি 'হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস: মধ্যবিত্ত জীবন' এই শিরোনামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণা কর্মে নিযুক্ত আছেন।
1 মন্তব্যসমূহ
এই নিয়ে গল্পটা কয়েকবার পড়া হল। যতবার পড়ি, ততবারই মুগ্ধ হই।
উত্তরমুছুন