
জিগীষা জানে, ব্যাগটা যদি কেউ পেয়ে থাকে, সেই ব্যাগ হাতড়ে এমন কিছু পাবে না যাতে সে বিশেষ লাভবান হতে পারে। কিছু টাকা অবশ্যই ছিল, তবে বেশি নয়, এই হাজারখানেক। আর ছিল টুকটাক কয়েকটা প্রসাধনী সামগ্রী। এছাড়া রুমাল, টিস্যুপেপার এবং কন্ট্রাসেপ্টিভ পিলের একটা শিশি। যদি কোনো ছেলের হাতে পড়ে তার শুধুমাত্র হাজারখানেক টাকাই লাভ হবে, আর কোনো মেয়ের হাতে পড়লে বাকি জিনিসগুলোও তার কাজে লেগে যাবে। কিন্তু ব্যাগটা ফেরত না পেলে জিগীষা যে কতটা কষ্ট পাবে, তা কেউ অনুমানও করতে পারবে না।
জিগীষা একবার ভাবল, লোকাল থানাতে এফ-আই-আর করবে কিনা! কিন্তু একটা সাধারণ ব্যাগের জন্য থানা আদৌ তা গ্রহণ করবে কিনা, সন্দেহ আছে। কোনো গুরুত্বই দেবে না হয়তো। জিগীষা ভেবে দেখল, সে আরও একটা কাজ করতে পারে। গণেশঠাকুরের কাছে মানত করা যেতে পারে। ব্যাগ খোঁজায় গণেশবাবা সহযোগিতা করলে এবং ব্যাগটা খুঁজে পেলে জিগীষা এককিলো লাড্ডু সহযোগে পুজো দেবে। জিগীষা কারও কারও কাছে জেনেছে, এইরকম মানত করেই তারা নাকি তাদের হারানো সামগ্রী খুঁজে পেয়েছে।
তবে ব্যাগ হারানোর ব্যাপারটা জিগীষার জীবনে এই প্রথম নয়। কয়েকবারই হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই শেষপর্যন্ত ব্যাগ খুঁজে পেয়েছে। একবার তো তার প্রাণের বান্ধবী সংযুক্তা শুধুই মজাকি করার জন্য ব্যাগটা নিজের কাছে লুকিয়ে রেখেছিল। জিগীষার তো তখন করুণ অবস্থা। রীতিমতো কান্নাকাটি করে ঘরের সবাইকে ব্যাগ হারানোর জন্য অভিযুক্ত করে সে কী সাংঘাতিক কান্ড কারখানা! তারপর সংযুক্তার কাছ থেকে ব্যাগটা ফেরত পেয়ে খুশিতে সংযুক্তার মুখ ভরিয়ে দিয়েছিল চুমোয় চুমোয়। আর একবার একটা রেস্তোরাঁর নিভৃত কেবিনে বয়ফ্রেন্ড ভাস্করের সঙ্গে এতটাই ঘনিষ্ঠতায় নিমগ্ন হয়ে পড়েছিল যে, ব্যাগটা সেই কেবিনে ফেলে রেখেই তারা চলে গেছিল। ভাগ্যিস রেস্তোরাঁর এক কর্মচারী ব্যাগটা ম্যানেজারের কাছে জমা দিয়েছিল! আরও একবার সেই একই ভুল করেছিল যেবার সপ্তর্ষির বাড়িতে সপ্তর্ষির সঙ্গে এক নির্জন শয্যায় একদেহে লীন হয়েছিল। ক্লান্ত শ্রান্ত শরীর ও মন নিয়ে জিগীষা সেবারও ফিরে এসেছিল কন্ট্রসেপ্টিভ পিলের শিশি সমেত ব্যাগটা ফেলে রেখেই। দিন দুয়েক পর সপ্তর্ষি ফেরত দিয়েছিল।
কিন্তু এবার!
1 মন্তব্যসমূহ
ভালো লাগলো জিগীষার দিনযাপন ও ঝুরো গল্প !
উত্তরমুছুন