জুতায় কালি করতে গিয়ে ভদ্রলোকের সঙ্গে পরিচয়।
ডিজি অফিসে ঢোকার আগে একবার জুতা কালি করে নিই। এটা অভ্যাস হয়ে গেছে। সারা রাত জার্নি করে সাতসকালে এসে কাকরাইল মসজিদের সামনে নামি। হেঁটে হেঁটে হাইকোর্ট পর্যন্ত আসি। তারপর সকাল ১০টা অবধি সময় কাটানোর জন্য বিভিন্ন কাজ খুঁজে খুঁজে বের করি।
সকালের নাশতা, শেভ করা, ফুটপাত থেকে চিরুনি কেনা ইত্যাদি ইত্যাদি। এর মধ্যে কবে যেন জুতা পালিশটাও ঢুকে গেছে। আমাদের স্কুলের একটা পোস্ট ক্রিয়েশনের ফাইল নিয়ে অনেক দিন ঘোরাঘুরি করছি। এর বদৌলতে ডিজি অফিসে আসা-যাওয়া একটা অভ্যস্ততার মধ্যে এসে গেছে।
সকালের নাশতা, শেভ করা, ফুটপাত থেকে চিরুনি কেনা ইত্যাদি ইত্যাদি। এর মধ্যে কবে যেন জুতা পালিশটাও ঢুকে গেছে। আমাদের স্কুলের একটা পোস্ট ক্রিয়েশনের ফাইল নিয়ে অনেক দিন ঘোরাঘুরি করছি। এর বদৌলতে ডিজি অফিসে আসা-যাওয়া একটা অভ্যস্ততার মধ্যে এসে গেছে।
এই জুতা কালির কাজটা বেশ চমৎকার আবিষ্কার। এতে ভালো সময় কাটে। বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায়। ডিজি অফিসের কোনা-কাছাড়ায় যে তিন-চারজন মুচি আছে, তাদের ব্যস্ততা ডিজি অফিসের কর্তাদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। তাই জুতা কালি করতে গিয়ে লাইন দিতে হয়। বেশির ভাগ খদ্দের আসে তাদের ছেঁড়াখোঁড়া জুতাটা কোনো প্রকারে চলনসই করে দেওয়ার আবদারে। তাদের চেহারাও জুতার মতোই ক্ষয়মাণ—শ্রীহীন। এসব জুতা হাতে নিয়েই মুচি একটা ধমক দেয়। ধমকের সারাংশ এমন, ‘জুতোর তো একটা লাইফ আছে, এমন টরচারিং করলে টিকব ক্যামনে।’ গ্রামের স্কুলের মাস্টার, লোকের ধমক খেয়ে খেয়েই জীবন কাটে, তাই তাঁরা সুন্দর প্রতিক্রিয়া দেখাতে জানেন। মুখ কাঁচুমাচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন। ডিজি অফিসের মেজাজি মুচি তাতে প্রীত হয়। ঠান্ডা মাথায় জুতা নিয়ে গবেষণা করে। ভাবে, কোথা থেকে শুরু করবে—তলদেশ না নাসিকাগ্র থেকে।
: তল তো দুইটারই চেঞ্জ করা লাগব। নাইলে হাঁটনের সময় ব্যালেন্স থাকব না।
: ভাই আপাতত একটা চেঞ্জ করলে হয় না। বাড়িত গিয়া—
: প্রবলেম দিলে কিন্তু কেলেম নাই—
: ঠিকাছে ভাই।
শর্তমুক্ত হয়ে কাজ শুরু করে মুচি। অপেক্ষার সারি দীর্ঘ হয়। লোকজন মুগ্ধ হয়ে তার কর্মতৎপরতা দেখে। এর মধ্যে কেউ একজন এসে রসভঙ্গ ঘটায়।
: এই, কালি অইব?
ছেঁড়াখোঁড়া চপ্পলটা ফেলে দিয়ে ফরেন শু লুফে নেয় মুচি। সযত্নে নতুন কাপড় দিয়ে জুতা মোছে। ধীরে ধীরে একেক কৌটা থেকে একেকটা উপকরণ বের করে রং বানায়। সেই রং পরম মমতায় মেখে দেয় জুতার গায়ে। ছোট্ট বাচ্চাদের যেমন তেল মাখানো শেষ হলে ফাল্গুনের মিষ্টি রোদে ফেলে রাখা হয় রৌদ্রস্নানের জন্য, তেমনি জুতাটাকে গাছের পাতা ছেকে আসা টুকরা টুকরা রোদে ভালোভাবে মেলে রাখা হয়। এর মধ্যে ছেঁড়া জুতার স্বত্বাধিকারী মৃদু আরজি জানায়—
: আমারটা একটু—
: ওই মিয়া, আপনাগো আসলে আক্কল-গেয়ান বলতে কিছু নাই। দেখতাছেন না একটা কামে ব্যস্ত আছি।
: বিদেশি জুতার ভদ্র-সভ্য মালিকটি মুচকি মুচকি হাসে। তার গা থেকে পারফিউমের মিষ্টি গন্ধ আসে। সেই গন্ধে অপেক্ষারতরা পুলকিত হয়ে ওঠে। কেউ কেউ মুচিকে বিরক্ত করার দায়ে ছেঁড়া জুতার মালিককে ভর্ৎসনাও করে।
এ সময় কোত্থেকে মাটি ফুঁড়ে উঠে এলেন এক লোক, বয়স্ক। পরনে সাদা শার্ট ও রংজ্বলা প্যান্ট। শার্টের বুকপকেটের কোনায় কালো কালির দাগ লেগে আছে। হাতে একটা র্যাক্সিনের ব্যাগ। একটু ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে এগিয়ে এলেন। পেছনের সবাই হইহই শুরু করল।
: দেখেন না আমরা লাইনে খাড়াইছি।
সদ্য আগত লোকটির তামাটে চেহারা ততক্ষণে কৌতুকের হাসিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
: হ বাবাজি, আক্কেল-জ্ঞান কম বইল্যাই তো মাস্টারিতে আইছি, নাইলে তো গদিঅলা সাহেব অইতাম।
ভ্রু কুটিল করে তাকায় মুচি। যেন সে ভাবছে, এই ধৃষ্টতার শাস্তি কী হতে পারে।
এবার ল্যাংচানো পায়ের মাথা থেকে ছেঁড়া চটিটি ঝেড়ে ফেলে আমার দিকে তাকান ওই লোকটি। হাইকোর্টের মোড়ে তখন আটকে পড়া গাড়িগুলো গোঁৎ-গোঁৎ করছে। প্যাঁ-পোঁতে নরক গুলজার হওয়ার দশা। মাথার ওপর সূর্যটাও চড়েছে তেমন। এর মধ্যে ফরেন জুতাটায় শেষ ফিনিশিং দিয়ে ছেঁড়া জুতাটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল মুচি। এখন ছেঁড়া জুতাটি বোধ হয় টের পাচ্ছে তার মালিকের ধৃষ্টতার পরিণাম। নিরীহ জুতা সুইয়ের উন্মত্ত গুঁতায় প্রাণনাথ প্রাণনাথ করে উঠছে যেন। আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি সেই পৈশাচিক দৃশ্য। আমাদের ছেঁড়াখোঁড়া বর্ণহীন জুতাগুলো পায়ের তলায় লুকিয়ে গিয়ে মাথা কুটছে, ওই বর্বরের হাতে ছেড়ে দিয়ো না আমাদের। এর মধ্যে দু-একটা জুতা হার্ট অ্যাটাক করল। তাদের মালিক শোকার্ত মুখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ডেথ সার্টিফিকেটের আশায়।
গেঁয়ো মাস্টারদের অভদ্রতায় রুষ্ট মুচিকে বিনোদিত করার জন্য যে যার মতো চেষ্টা চালায়। কেউ একজন বলে, ভাইজানের বাড়ি কই?
: কী কইন, আমারো তো ঈশ্বরগইঞ্জো। কোন গেরামটা কইবাইন...হায় রে আঠারবাড়ি...
কড়া প্রশাসক ডিজি অফিসের সামনে বসা মুচি। এসব আঞ্চলিকতার আবেগ তাকে স্পর্শ করে না। সে পরবর্তী শিকারের জন্য ক্ষিপ্র হয়ে ওঠে।
: না, এহন এই কাম ধরতে পারুম না। সিরিয়াল লম্বা। ঘুইরা আসেন।
রোগা সিরিঙ্গে গোছের লোকটা অনুগত ছাত্রের মতো পায়ের জুতাটা খুলে রেখে যায়। পায়ের নিচের জুতা হারিয়ে কেমন হতবিহ্বল হয়ে পড়ে। কী করবে এখন বুঝে উঠতে পারে না। মুচির চারপাশে জটলা আরও বাড়ছে। সবাই নিজের জুতা সারানোর জন্য তাড়াহুড়ো করছে। অনেক উদ্বিগ্ন খদ্দেরের মধ্যে ব্যতিক্রম কেবল রেক্সিনের ব্যাগ হাতে দাঁড়ানো সেই লোকটি। তিনি তাঁর প্যান্টের পকেট থেকে অ্যালুমিনিয়ামের কৌটা বের করে পান খাচ্ছেন, পিক ফেলছেন দূরে গিয়ে, সিআরডিপির দেয়ালে। হঠাৎ আমার দিকে মৃদু হেসে বললেন, ‘পান খান?’
: জি না। ধন্যবাদ।
: হে হে হে।
: হাসেন কেন?
: নিজের কথায় নিজেই হাসি। পান ও খান দুটোই ক্রিয়াপদ।
: স্যার কি বাংলার শিক্ষক?
: নাহ্। বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। ভুবনমোহিনী হাই ইস্কুল।
পান চিবুতে চিবুতেই বললেন লোকটি। তাঁর হাসিখুশি ভাব ভালোই লাগল আমার। জীবনে দুঃখ থাকবে, কষ্ট থাকবে, গ্লানি থাকবে—তাই বলে সারাক্ষণ মুখ গোমড়া করে রাখব, তার কী মানে। এই দুই দিনের মানবজীবন যদি উপভোগই করা না গেল তো কিসের কী! তবে লোকটিকে নিয়ে ধাঁধা এখনো কাটেনি আমার।
: আমারে দেইখ্যা বিভ্রান্ত হইছেন, আমার লেবাস দেইখ্যা খটকা লাগছে? ঠিকাছে ভাই, আপনার দোষ কী? মানুষের প্রবৃত্তিই এমন, সে বিভ্রান্ত হতে ভালোবাসে। বয়স তো তিন কুড়ি ছুঁই ছুঁই, কম তো আর দেখলাম না। সব লেবাসের খেলা।
: ভালো বলছেন স্যার।
: আপনার ডিস্ট্রিক?
বললাম। এরপর জানতে চাইলাম তাঁর আসার উদ্দেশ্য।
: সত্যি শুনতে চান, না কথার খাতিরে প্রশ্নটা করলেন?
: শুনতে চাই।
: হাতে সময় আছে।
: জি আছে।—মোবাইলে সময় দেখে বললাম।
: তাইলে আসেন আমার সঙ্গে। মুখ থেকে পানের পিক ফেলে শক্ত করে আমার হাত চেপে ধরলেন লোকটি।
গেটের মুখের দালানটার দোতলায় ক্যানটিন, আগে জানা ছিল না, তিনিই নিয়ে এলেন। ঢোকার মুখটা অন্ধকার হলেও ভেতরে বেশ আলো-বাতাস আছে। একেবারে কোনার একটা টেবিল বেছে নিয়ে আমায় নিয়ে বসলেন ভদ্রলোক।
: অ্যাই, ফ্যানটা দাও।
সঙ্গে সঙ্গে মেসিয়ার ছেলেটি খেঁকিয়ে উঠল, ‘এতোগুলা টেবিল খালি রাইখ্যা ওই কোনাত গিয়া মরছেন ক্যা?’
: থাক স্যার, ফ্যান লাগবে না।
একটা কাঠ কাঠ হাসি দিয়ে পরিস্থিতিটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলেন তিনি।
: গরম জায়গা তো...লোকজনের মেজাজও গরম। হে হে হে...তা বাবা কী খাইবেন?
: সে খাওয়া যাবে স্যার, আগে বলেন আপনার আসার কারণটা।
: বাবা, বিষয়টা খুব লজ্জার। তাই এই নিরালায় নিয়া আসলাম। আশা করি কাউরে বলবেন না।
: কাকে বলব বলুন তো?
: তা অবশ্য ঠিক। এই জীবনে আপনার সঙ্গে দ্বিতীয়বার দেখা হবে কি না, আল্লাহ মালুম।
: অবশ্যই হবে, স্যার। বলুন আপনার সমস্যাটা।
: এক কাপ চায়ের অর্ডার দিয়া দিই। চিনি তো খান?
: হ্যাঁ, খাই। দেন।
ভদ্রলোক নিজে উঠে গিয়ে মেসিয়ার ছোকরার পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে কী যেন বললেন। ফিরে এলেন হাসি হাসি মুখে।
: ভাগ্য ভালো, চায়ের কেতলি নামায় নাই। নামায়া ফেললে এডুকেশন মিনিস্টার আসলেও চা পাইত না।
: তা আপনার সমস্যাটা?
: জি বলছি। এক খিলি পান খেয়ে নিই।
ভদ্রলোক পান খান। আমি জানালা দিয়ে ডিজি অফিসের উঠোন দেখি। মানুষে গিজগিজ করছে। একেকটা মানুষ একেকটা সমস্যা নিয়ে ছুটছে। সামনে গাড়ির ঝিক। উঠোনের মধ্যে কাঠবাদামের গাছ। গাছে খাবার নিয়ে মারামারি করছে দুটো কাক।
পানের পিক ফেলে ঠোঁট মোছেন ভদ্রলোক।
: বুঝলেন, শিক্ষক অইতে আসলাম।
: তখন যে বললেন আপনি বিজ্ঞানের শিক্ষক?
: কী বলছি, আপনি ভালো কইরা হয়তো খেয়াল করেন নাই। আমি বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক।
: সে একই কথা।
: এক হইল কেমনে বাবাজি। পদের আগে যে সহকারী রইয়া গেল। ৩৫ বছর ধরে সহকারী শিক্ষক আছি। শিক্ষক আর হইলাম কই?
: কী আর করবেন স্যার, আমাদের তো ওপরে ওঠার পথ নাই।
: না না মিয়া, সেটা সমস্যা না। সমস্যা অন্যখানে।
: কোথায়?
: গত জুন মাসে আমাদের অ্যাসিস্ট্যান্ট হেড মাস্টারের পদটা খালি হইছে। আমার চাকরিও বেশি দিন নাই। বছর খানেক। সবাই মিল্যা ধরল, রফিক স্যার এই কয়দিন অ্যাসিস্ট্যান্ট হেড মাস্টারি কইরা যান। আমিও মনে মনে ভাবলাম, খারাপ কী, বুড়া বয়সে হইলেও সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদবিটা লাগব।
: ভালো। কিন্তু সমস্যাটা কোথায়?
রফিক স্যার আমার দিকে চেয়ারটা টেনে নিয়ে আরেকটু নিবিড় হলেন। কণ্ঠটাও নামালেন খাদে।
: সব ঠিকঠাক, অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার ইস্যু করার সময় লাগল ফ্যাকড়াটা।
: কিসের ফ্যাকড়া?
: দেখা গেল ৩৫ বছর আগে আমার নিয়োগের সময় কমিটি ফরমেশন ঠিকমতো হয় নাই। কোনো প্রতিনিধি বলে ছিল না। তাঁর সার্টিফিকেট না হইলে কিছুই হইব না। লোভ করতে গিয়া এমন বিপদে পড়লাম, চাকরিটা যায় যায়।
: এ কেমন কথা, একটা সামান্য কাগজের জন্য আপনার ৩৫ বছরের অর্জন সব বৃথা!
: বৃথা হইব কেন, আমার ছাত্ররা কত বড় বড় পদে আছে।
কণ্ঠটা আরও নিচে নামিয়ে বলতে শুরু করলেন রফিক স্যার।
: এই যে তোমাদের ডাইরেক্টর, সে তো আমার ডাইরেক্ট স্টুডেন্ট। দেখো না কেমন নীতিমান সৎ লোক, এসব ও ভুবনমোহিনী ইস্কুল থেকে পাইছে। আমাদের হেড মাস্টার ছিলেন পীযূষ কান্তি রায়বাহাদুর। তিনি বলতেন, পড়াশোনা আগে-পরে একটা সময় ঠিকই হইয়া যাইব, কিন্তু ন্যায়-নীতি-মনুষ্যত্ব শিইখ্যা নিতে অইব ইস্কুল থেইকা।
: দারুণ কথা বলতেন তো তিনি।
: আমার সব ছাত্রকে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান দিয়া নীতিমান মানুষ করতে চাইছি। কতটা পারছি, মাবুদ জানেন।
আপন কৃতকর্মের জন্য গৌরবান্বিত এক শিক্ষককে দেখে মনটা ভরে গেল। আবার খারাপ লাগল এই ভেবে যে প্রথম দেখায় এই মানুষটাকে নিয়ে ধন্দে পড়ে গিয়েছিলাম।
: তা হলে তো ল্যাঠা চুকে গেল স্যার। ডাইরেক্টর স্যারকে ধরলেই তো সমাধান হয়ে যায় আপনার।
: ধরি নাই মনে করছ, ধরছি বাবা ধরছি। কিন্তু তার হাত-পাও তো আইনের শিকলে বাঁধা। বেচারা অনেক চেষ্টা-তদবির করছে। কিন্তু কী করবে বলো, আইনের বাইরে তো কিছু করতে পারে না।
: এখন কী করবেন স্যার?
এ মুহূর্তে রফিক স্যারের মুখে একটা দুষ্টু হাসি খেলে গেল।
: যস্মিন দেশে যদাচার। সিস্টেম কইরা ফালাইছি বাবা।
: কী সিস্টেম স্যার?
: হেকমত নামের এক ছেলে আছে এখানে, আমাদের এলাকার। তার ব্যাপক জানাশোনা। সে বলছে এই কাগজ বের করা তার জন্য কিছুই না। এক হাতে ক্যাশ ২০ হাজার, আরেক হাতে কাগজ।
রফিক স্যার আলতো করে তাঁর রেক্সিনের ব্যাগটা হাতাতে লাগলেন।
: কিন্তু স্যার কাজটা ঠিক হবে?
: ঠিক না হওয়ার কী আছে?
: এই ভুয়া কাগজটা ফাইল হয়ে আপনার ছাত্রের কাছে যাবে। আর কেউ জানুক বা না জানুক, সে জানবে কাগজটা ভুয়া। যে শিক্ষককে সে উচ্চ আসনে বসিয়ে রেখেছিল এত দিন, কাগজটা পাওয়ার পর সে কী ভাববে বলুন তো!
রফিক স্যারের মাথা নিচু হয়ে যায়। কাঁপতে থাকেন থরথর করে। বাচ্চারা মিষ্টি চুরি করতে গিয়ে মায়ের হাতে ধরা পড়লে যে অবস্থাটা হয়।
3 মন্তব্যসমূহ
দুর্দান্ত একটি গল্প পড়লাম। অসাধারণ সংলাপ ও পরিবেশ তৈরীর মুন্সিয়ানা নিয়ে কোনো কথা হবে না। গল্পটা পড়তে পড়তে যে উচ্চতায় পৌঁছেছিলাম ,শেষটায় গিয়ে যেন ধাক্কা খেলাম। শেষটা যেন আরেকটু ডিমান্ড করছিল।
উত্তরমুছুনঅসাধারণ গল্প। প্রতিটা সংলাপ পাঠককে আঠার মতো আটকে রাখে গল্পের ভাঁজে।
উত্তরমুছুনগল্পের দৃশ্যপট কল্পনা করতেছিলাম আর পড়তেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে যে শেষ হবে এটা মানতে পারছিলমা না।
উত্তরমুছুন