অনিন্দিতা গোস্বামী'র গল্প সেই বিরলতম মেয়েটি

যা ঘটবার কথা ছিল ঘটল ঠিক তার উল্টোটা। ঘটনা শুনে পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজন হতবাক হয়ে গেল সবাই। সবচেয়ে অবাক হলো মেয়েটি নিজেই। মেয়েটির স্বামী মামলা করল মেয়েটির নামে। কিন্তু উপযুক্ত তথ্য প্রমানের অভাবে মামলা ক্রমেই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছিল। এমন অদ্ভুত এবং ব্যাতিক্রমী ঘটনা প্রবাহে কেমন যেন দিশাহারা হয়ে পড়ছিলেন বিচারক মন্ডলী। রায় দান ক্রমশ পিছচ্ছিল। অসহিষ্ণু হয়ে উঠছিলেন বাদী এবং বিবাদী পক্ষের সকলেই। অথচ মেয়েটি নির্বিকার। আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও চেষ্টাই করছিল না সে। তার এই নিঃশ্চুপ নিরপেক্ষতা আরও যেন ধন্ধে ফেলে দিচ্ছিল বিচারব্যবস্থাকে।

বিচার চলছে চলুক। আমরা ততক্ষনে ঘটনাগুলিকে একটু ক্রম অনুসারে সাজিয়ে নিই। ঘটনার সূত্রপাত ১৪১০ সালের বাইশে আশ্বিন। মেয়েটির নাম প্রমিতা। সবে সে সকালবেলা উঠে বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে আড়মুড়ি ভাঙছিল, চিনচিন করে উঠল তাঁর তলপেট টা। ডাক্তারের নির্ধারিত সময় ছিল আরও দিন দশেক পরে অথচ ক্রমবর্ধমান ব্যথা যেন দু’পা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। তার সন্তান যেন নামতে চায় হুড়মুড় করে। নার্সিংহোমে ভর্তি হতে না হতেই তাকে তুলে দেওয়া হল লেবার রুমের টেবিলে। স্বাভাবিক প্রসব। স্বজ্ঞানে নিজের শরীরটাকে অতগুলো মানুষের সামনে ছেড়ে দিতে সংকুচিত হয়ে উঠেছিল প্রমিতা। অথচ নিরুপায়। যন্ত্রনায় তখন তাঁর চেতনা লুপ্তপ্রায়। দু-তিন জন ধাত্রী সেবিকার সহায়তা নিয়ে প্রমিতার প্রসব করালেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সেই খ্যাতনামা ডাক্তার। ঠ্যাং ধরে বের করে আনলেন ছোট্ট পুচ্‌কে এক পুত্র সন্তানকে। তারপর ধাত্রী দুজনকে নির্দেশ দিলেন বাচ্চাটিকে পরিষ্কার করে আনবার জন্য। ডাক্তারবাবু স্টেথস্কোপ ধরলেন প্রমিতার বুকে। কিছু নির্দেশ দিলেন সেবিকাটিকেও। সে ছুটে চলে গেল সেটা আনতে। মধ্যচল্লিশের সেই ডাক্তারবাবু প্রমিতার সারা গায়ে স্টেথোস্কোপ বুলাতে বুলাতে সবুজ অ্যাপ্রোনের মধ্য দিয়ে হাত ঢুকিয়ে মুচড়ে দিলেন প্রমিতা স্তনবৃন্ত দুটি। যন্ত্রনায় কঁকিয়ে উঠে মুখ ফিরিয়ে নিতে নিতে প্রমিতা উপলব্ধি করল সে ঘুমিয়ে পড়ছে। তার স্যালাইনের বোতলে হয়তো ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়েছে, তবু ঘৃণাটুকু ঢেকে দিল তাঁর ভারী চোখের পাতা। 

ছেলেই বুঝি আনল তার সাফল্যের বিজয়রথ। কবে থেকে একটা চাকরির জন্য কত রকম পরীক্ষাই যে সে দিয়েছে অথচ কিছুতেই একটা চাকরি বাধাতে পারছিল না। কোনটা লিখিত পরীক্ষায় হয় না, কোনটা বা মৌখিক এ গিয়ে কেটে যায়। ধরেই নিয়েছিল সে চাকরি টাকরি আর তার দ্বারা হবে না। অথচ ছেলে হবার পর পরই দুম করে একদিন ব্যাঙ্ক পি ও- র চাকরিটা তার হয়ে গেল। 

ঘর সংসার বাচ্চা অফিস সব একসঙ্গে দৌড় ঝাঁপ করে দিব্যি সামলে উঠছিল প্রমিতা। খুব শিগ্‌গিরি ব্যাঙ্কেও সে বেশ কাজের লোক হিসাবে পরিচিতি পেল। নজরে পড়ল ম্যানেজারেরও। এটা ওটা ছুঁতোয় অফিসের সময় সীমার পরেও তিনি আটকে রাখতে লাগলেন প্রমিতাকে। এই নিয়ে অশান্তি শুরু হলো বাড়িতেও। ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল ওর স্বামী অলোক। বলল চাকরি ছেড়ে দাও। কে তোমাকে বলেছে চাকরী করতে? কিন্তু চাকরিটা যে তখন নেশার মত পেয়ে বসেছে প্রমিতাকে। সেও রুখে ওঠে। বলে চাকরি আমি করবই, ব্যাগ কাঁধে বেরিয়ে যায় সে অফিসে, অন্য দিনের থেকে যেন আরও বেশি করে ঝুঁকে পড়ে সে কীবোর্ডে । ম্যানেজার আরও বেশি করে দায়িত্ব চাপিয়ে দেন ওর ওপরে। 

কিন্তু সেই চাকরিটাও শেষ পর্যন্ত করতে পারে না ও, ছেড়ে দিতে হয় বাধ্য হয়ে। সেদিন প্রমিতাকে নিজের ঘরে ডাকলেন ম্যানেজার। কথা বলতে বলতে প্রমিতার চেয়ারে পিছন দিকে উঠে গেলেন তারপর প্রমিতার কাঁধের ওপর হাত রেখে বললেন প্রমিতা, হায়দ্রাবাদে আমাদের একটা মিটিং আছে, আমি চাইছি আপনিও আমার সঙ্গে চলুন। আপনার জন্য অনেক লোভনীয় অফার অপেক্ষা করছে। ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকালো প্রমিতা, দেখল ম্যানেজারের চোখে একটা ঘৃণ্য ইঙ্গিত, হাত দুটোও কাঁধ থেকে নেমে এসে দুপাশে ঠেঁসে ধরেছে, চেয়ার ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল প্রমিতা। ইচ্ছা করেছিল চেঁচিয়ে সব সহকর্মীদের জানিয়ে হৈ- চৈ করে জনমত গঠন করে ঐ লোকটার চাকরি খেয়ে নিতে, ইচ্ছে করে ছিল থানায় গিয়ে রিপোর্ট লিখাতে, কিন্তু চাকরিটার কথা ভেবে কিছুই পারে নি। তার বেশ কিছুদিন বাদে একদিন ক্যাসে বসেছিল সে আর দিনের শেষে তার হিসেব সে মিলাতে পারে নি। বহু টাকার গরমিল। কলঙ্কের বোঝা মাথায় নিয়ে সে চাকরি ছেড়েছিল। কিভাবে যে কি হয়েছিল তাঁর কাছে তা পরিষ্কার হয় নি কোনদিন। 

চাকরি গেলেও কাজের নেশাটা তার গেল না। এতদিন সে ব্যাংকে কাজ করেছে, সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সে খুলল কনসাল্‌টেন্সি ফার্ম। সেখানে গরিব গুরবো, চাষি, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সকলে আসে বুদ্ধি নিতে কিভাবে কোনও লোন বার করতে হবে, কি কি করলে সবচেয়ে বেশি লোন পাওয়া যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। দেখতে দেখতে ছড়ালো তার নাম। অসহায় মানুষগুলোর বড় কাছের মানুষ হয়ে উঠল সে। প্রথমে ভেবেছিল অর্থের বিনিময়েই কাজ করবে সে কিন্তু মানুষ গুলোর সঙ্গে থাকতে থাকতে এমন মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে যাচ্ছিল যে অর্থ কমতে কমতে নাম মাত্রে এসে ঠেকেছিল। ফলে গৃহ অশান্তি উঠল তুঙ্গে। শ্রম ও সময় অনুপাতে অর্থ যেখানে তুল্যমুল্য নয় সংসারের বিচারে সে কাজ অর্থহীন। চিৎকার করে উঠত অলোক, কোনও দরকার নেই তোমার ঐ ছাতার মাথার কাজের। তুমি তো কাজ করো তোমার নাম কামানোর জন্য। সংসারের কি কাজে লাগে ঐ কাজ? ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো। 

জেদ চেপে গেল প্রমিতারও, কাজ সে করবেই। বাড়ল প্রতিপত্তিও, সভা, মঞ্চ, এমন নির্লোভ, নিঃস্বার্থ, কর্মী মানুষটি কে পেতে চায় সকলেই। বিদ্যালয়ের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান থেকে পুরসভার কন্যা বাঁচাও অভিযান, সব জায়গায়ই ডাক পড়ে প্রমিতার। মত্ত হস্তি হয়ে ওঠে ওর স্বামী অলোক। উদ্ধত তর্জনি নাকের ডগায় আন্দোলিত করে কখনও বা বোঝাতে চায় সে পুরুষ সিংহ, তার থাবার নীচে পিঁপড়ের মত পিষে মরা ছাড়া প্রমিতার গতি নেই, সমাজে সে যতই কেউকেটা হোক না কেন। আর প্রমিতাও আশ্চর্য, মঞ্চ কাঁপিয়ে যতই বক্তৃতা করে আসুক না কেন, যতই লড়াই করে দুষ্টু ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে জব্দ করে লোন বের করে দিক না কেন প্রান্তিক মানুষগুলোর জন্য, বাড়ি এসে সে যেন হয়ে যায় মেরুদন্ডহীন কেঁচো। কোনও কালে ভালবেসে সে বিয়ে করেছিল অলোক কে। তুখোড় মেধাবী অলোক কে তো সে এমনিতেই নিজের থেকে অনেক বড় বলে মনে করে তার জন্য অলোকের এই প্রয়াস কেন? কষ্টে দুঃখে ভেঙে গুড়িয়ে যায় বুকের ভেতরটা। শ্রী রামকৃষ্ণ বলেছিলেন কিছু না করলেও ফোঁস করিস অন্তত। কথাটার মর্মার্থ সেদিন বুঝেছিল প্রমিতা যেদিন অলোক সৌজন্যের সীমা অতিক্রম করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ওর ওপরে। শরীরের আঘাতের চেয়েও মনে আঘাত লেগেছিল বেশি, অপমানটা কিছুতেই ভুলতে পারছিল না প্রমিতা, তাই দ্বিতীয় দিন যখন তর্জনি তুলে তেড়ে এলো অলোক, ছিঃ! বলে থুতু ছিটকে দিয়েছিল প্রতিমা। বাতাসে উড়ে যাওয়া ছোট্ট কয়েকটা জলকনা অথচ অসম্ভব চুলকাতে লাগল অলোকের তর্জনি থেকে পুরো ডান দিকটা। চুলকোতে চুলকোতে প্রথমে দানা দানা হলো, তারপর সেগুলো ফেটে গিয়ে কষ গড়াতে লাগল, তারপর পচন ধরতে শুরু করল তর্জনি সহ ডান দিকটা। 

ডাক্তার বললেন বিষক্রিয়া । কোনও বিষাক্ত কিট পতঙ্গ অথবা সরীসৃপ। প্রথমে লোক লজ্জায় কাউকে সত্যিটা বলেনি অলোক, কিন্তু চিকিৎসায়ও যখন কমছিল না তার ঘা, যখন সে ভয় পেতে শুরু করল তখন সে ডাক্তার থেকে আত্মীয় স্বজন সকলকে চিৎকার করে বলতে আরম্ভ করল সত্যিটা। ডাক্তার অবশ্য হেসে ঘটনাটা কাকতালীয় বলে উড়িয়ে দিলেন। বললেন যন্ত্রনায় মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে অলোকের, কিন্তু আত্মীয় স্বজনের মধ্যে সন্দেহ দানা বাঁধল। পাড়া প্রতিবেশী যারা এতদিন অলোকের চিৎকার চেঁচামিচিতে ভাবত বৌটা একদিন আত্মহত্যা করবে কিম্বা হয়তো রান্না করতে গিয়ে গায়ে আগুনও লেগে যেতে পারে তারা তাজ্জব বনে গেল খবর শুনে। 

সবচেয়ে ভয় পেল প্রমিতা নিজে। নিজের হাতের ওপর দু-চার বার থুতু ছিটিয়ে দেখল কিছু হয় কিনা। সে চুপি চুপি গেল সেই নার্সিংহোমে, যেখানে তার সন্তান জন্মেছিল, খোঁজ নিল সেই ডাক্তারের যে প্রসব করিয়েছিল তার, সেদিন প্রমিতা ঘুমিয়ে পড়তে পড়তেও ঐ অসভ্য ডাক্তারের মুখে ছিটিয়ে দিয়েছিল একদলা থুতু। কিন্তু খোঁজ নিয়ে যা জানল তাতে গায়ের রক্ত হিম হয়ে গেল প্রমিতার। জানল ঐ ডাক্তারের চোখ দুটো নাকি কি এক বিষ ক্রিয়ায় অন্ধ হয়ে গেছে, মুখে বীভৎস ঘা। চিকিৎসার জন্য তিনি নাকি বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন, তারপর আর তার কেউ কোন খোঁজ জানে না। 

সেখান থেকে প্রমিতা গেল তার পুরনো চাকরির জায়গায়। পুরনো ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বদলী হয়ে গেছেন কবেই, কেউই তার ঠিকমত কোন খবর দিতে পারল না। বেরিয়ে আসার মুখে দেখা একটি ছেলের সঙ্গে, সে সদ্য এসেছে এই শাখায়। আলাপ হল, কথায় কথায় সে জানালো সেই পুরনো ম্যানেজারকে সে বহুদিন আগে পেয়েছিল আগের জায়গায়। দুরারোগ্য এক ত্বকের অসুখে ভুগছিলেন তিনি। কেমন যেন অবসাদ গ্রস্থ হয়ে পড়ছিলেন, অবশেষে স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে নেন চাকরির মেয়াদ শেষ হবার বহু আগেই। 

পা দুটোকে যেন ঠেলে ঠেলে চলছিল প্রমিতা। সেদিন শেষ বারের মত অফিস ছেড়ে বেরিয়ে আসার আগে সে একবার ম্যানেজারের ঘরে গিয়েছিল, দুহাতে ভর দিয়ে টেবিলের অপর ঝুঁকে পড়ে বলেছিল, এত নোংরা খেলা খেললেন আপনি! ছি! সেদিনও তার মুখ থেকে ছিটকে গিয়েছিল কয়েকটা জলকণা। কিন্তু সত্যি সত্যিই এতটা তো সে চায়নি কখনো। রাগের মুহূর্তে, যন্ত্রনার মুহূর্তে, অপমানের মুহূর্তে শুধু কখনো কখনো তার মনে হয়েছে এমনতর। সে তো সবাইকে ভালোবাসতেই চেয়েছিলো, বিশ্বাস করতে চেয়েছিল, অথচ কি করে তার শরীরের মধ্যে এত বিষ জমে গেল? অবসন্ন লাগছিল তার নিজের শরীরটাও। প্রায় টলতে টলতে সে বাড়ি এসে বিছানার ওপরে শুয়ে পড়ল। 

অলোক যখন তার নামে মামলা করল সে কোন প্রতিবাদ করল না। বিবাহ বিচ্ছেদে অলোক ক্ষান্ত হলে সে তা স্বেচ্ছায় দিয়ে দিত কিন্তু অলোক নিজের ঐ বিকৃত হাতের দিকে তাকিয়ে প্রতিশোধ নেবার জন্য ব্যাস্ত হয়ে উঠল। আদালতের কাছে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাইল প্রমিতার। আদালতে বেড়াল, কুকুর, ছাগল অনেক কিছু এনে থুতু ছিটোতে বলা হল প্রমিতাকে। কিন্তু তাদের কিছুই হলো না। উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে আদালত যখন প্রমিতাকে খালাস করে দিতে যাচ্ছেন সেই সময় প্রমিতা নিজেই তথ্য সূত্র ধরিয়ে দিল সেই ডাক্তার এবং ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের উল্লেখ করে। 

তার পরের ঘটনা প্রবাহ খুব মসৃণভাবে গড়ালো। ফাঁসির হুকুম হল প্রমিতার। এই রকম বিষকন্যা সমাজের পক্ষে বিপজ্জনক। এটা নিশ্চয়ই কোন বিরল ধরনের ওসুখ যার প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার হয় নি। এমন কি এটা কিভাবে সম্ভব তাও কারো জানা নেই। ফলে এই অসুখ যদি কোনভাবে ছড়িয়ে পড়ে তা সমাজের পক্ষে মারাত্মক হতে পারে। যদি কোন অন্ধকূপে যাবজ্জীবন দণ্ডিতও রাখা হয় প্রমিতাকে তথাপি বলা যায় না মাছি বা কোন কিছু দ্বারা যদি সংক্রামিত হয় এই রোগ! সকলেই শিহরিত হয়ে উঠলেন এক বাক্যে। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডই বহাল থাকল প্রমিতার। 

যেহেতু এটা গল্প তাই তার একটা শেষ প্রয়োজন। আর মৃত্যু গল্পের খুব গতানুগতিক পরিসমাপ্তি তাই প্রমিতা তার শেষ ইচ্ছে হিসেবে তার দেহ দান করে যেতে চেয়েছিল সে সব শরীরবিদ্যা বিষয়ক গবেষকদের জন্য যারা ভবিষ্যতে গবেষণা করবে মানুষের স্যালাইভা গ্রন্থি থেকে আদৌ কি কখন বিষ নিঃসৃত হতে পারে? হলে তা কিভাবে? কোনো অসুখ সমাজ থেকে নির্মূল করতে হলে আগে খুঁজে বের করা দরকার সে অসুখের উৎস, তবেই তার প্রতিষেধক আবিষ্কার সম্ভব হবে। আর সে এ-ও বলেছিল সে আশা রাখে এই কঠিনতম গবেষণার মহাযজ্ঞে একদিন সামিল হবে তার সন্তানও। 

কথা শেষ হয়ে গিয়েছিল। নিঃস্তব্ধ আদালত চত্বরে বাবার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে মা গো বলে ছুটে এসে প্রমিতার কোমর ছড়িয়ে ধরল তার ছোট্ট ছেলেটা। 


-------------------



লেখক পরিচিতি:
অনিন্দিতা গোস্বামী
গল্পকার।
পশ্চিমবঙ্গে থাকেন।

                                                                              

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

  1. অসম্ভব ভালো লাগলো আপনার এই বিষয় ভাবনা । আপনাকে অভিনন্দন । গল্পের ভুবন এভাবেই সমৃদ্ধ হোক। ভালো থাকবেন।
    - প্রবুদ্ধ মিত্র

    উত্তরমুছুন