জয়দীপ দে
বইয়ের নাম: তলকুঠুরির গান
লেখক: ওয়াসি আহমেদ
প্রকাশক: প্রথমা
প্রথম প্রকাশ: ২০১৫ খ্রি.
পৃষ্ঠা: ২৫৬
মূল্য: ৪৫০ টাকা
সিলেট বাংলার একটি অংশ হলেও ১৮৭৪ সালে আসাম প্রদেশ গঠন করার সময় সিলেটকে কেটে আসামের সঙ্গে জুড়িয়ে দেয়া হয়। মূলত আসামের রাজস্ব যোগান দেয়ার জন্যই কৃষিসম্পদে সমৃদ্ধ বাঙালি-অধ্যুষিত সিলেটের এই বিচ্যুতি। অবশ্য সিলেটের শিক্ষা ও বিচার ব্যবস্থা কলকাতা তথা বাংলা নির্ভর ছিল সবসময়। সেজন্য ব্রিটিশরা বিশেষ বিধান করেছিল।
ফলে বাংলায় ভূমি ব্যবস্থাপনায় যেসব সংস্কার হয়েছিল তা সিলেটে হয়নি। ১৮৫৯ সালের রেন্ট এ্যাক্ট বা ১৮৮৫ সালে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন সিলেটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল না। বাংলায় অন্যান্য স্থানে ভূমি রাজস্ব আহরণে যে সংস্কার হয়েছিল, তা সিলেট অঞ্চলে হয়নি। তার উপর সিলেটে বৃহৎ জমিদারি ছিল না। অনেকক্ষেত্রে জমিদার ও মিরাশদার নিজেরাই স্বচ্ছল ছিল না। তারা ভূমিদাসদের নিবিড় শোষণ করে টিকে থাকত।
ফলে কিছু বর্বর প্রথা দীর্ঘদিন ধরে অনুকূল পরিবেশ পেয়ে ভয়ংকর রূপ নিয়েছিল। এর মধ্যে একটি হলো নানকার প্রথা।
নান শব্দের অর্থ রুটি। এই রুটির জন্য যারা ভূস্বামীদের কাছে দাস হয়ে থাকত তাদেরকে নানকার বলা হত। এরা মূলত ভূমিদাস ছিল। জমিদার বা মিরাশদাররা তাদের ভিটের অদূরে দাসদের জন্য একটুকরো অনাবাদি ভূমি বরাদ্দ দিত। সেখানে এক টেরে ঘর তুলে মানবেতর জীবনযাপন করত দাসরা। বিনিময়ে তাদের বিনাপারিশ্রমিকে ভূমিস্বামীর গৃহে ‘হদ’ বা ‘বেগারী’ খাটতে হত। এই ভূমিদাসদের নানকার বলা হত।
এই নানকার প্রথা উচ্ছেদের জন্য চল্লিশের দশকে সিলেটের বিস্তীর্ণ ভূভাগ অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল।
এই নানকার বিদ্রোহ নিয়ে অজয় ভট্টোচার্যের খুব সমৃদ্ধ একটি বই আছে। করিমগঞ্জ থেকেও এ নিয়ে একটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশেও বিচ্ছিন্নভাবে এ নিয়ে কাজ হয়নি তা নয়। সম্প্রতি দীপু মাহমুদ একটি উপন্যাস লিখেছেন। সেটি প্রকাশের অপেক্ষা।
২০১৫ সালে প্রথমা থেকে প্রকাশিত হয় ওয়াসি আহমেদের ‘তলকুঠুরির গান’ নামের উপন্যাসটি। নানকার বিদ্রোহ যে অঞ্চলে হয়েছিল, সেই অঞ্চলের ভূমিপুত্র ওয়াসির আহমেদ। তাই উপন্যাসের প্রতি বিশেষ একটি আগ্রহ ছিল আমার। উল্লেখ্য আমার পূর্বপুরুষও এ অঞ্চলের ভূমিপুত্র ছিলেন।
তলকুঠুরির গান-এর সুচনা শরীফ নামে এক ফার্মেসী কোম্পানির বিপণন কর্মকর্তার নামের সঙ্গে একটি উপাধি যুক্ত করার বিড়ম্বনাকে থেকে। সেই শরীফ সাতবছর বয়স থেকে দেখে আসছে তার থুথুড়ে পিতার মাথায় নাক থেকে চাঁদি বরাবর কপালের মাঝামাঝি খেতজমির আলের মতো টানা একটি দড়ি। এই দড়িরহস্যের মীমাংসার আগেই আমরা আরেক রহসে্যর মধ্যে পড়ে যাই। শরীফের বোন শরীফার এসএসসি পাসের পর যখন তার পিতা শুকুর চান মোনাজাত করতে গিয়ে ‘নানকারের বেটি মেট্রিক পাস দিল’ বলে গুমরে গুমরে কফজমা গলায় ডুকরে ওঠে।
সে বেদনার রহস্যভেদের আগে আরেক রহস্য। এক অভিনব ঘটনার সঙ্গে আমাদের দেখা হয়। লেখকের বর্ণনায়-
‘খোলা জায়গায় অল্প বাতাসেই হারিকেনের সলতেগুলো দপদপ করছে, কয়েকটা চিমনিতে এরই মধ্যে কালি জমতে শুরু করেছে। সময়টা সকাল, সূর্য উঠে গেছে আশেপাশের টিলাটক্করের মাথায়। ঘড়িতে আটটা হতে পারে, নয়টা হতে পারে, তবে ঘড়ির তোয়াক্কা করে তো কাজকর্ম চলে না। ঘড়ি আছেই-বা কজনের! সব মিরাশদারের বাড়িতেও ঘড়ি নেই…’
কেন সাতসকালে তৈয়ব আলী তার স্ত্রী আম্বিয়াকে নিয়ে হাজির হয় সেই হারিকেন মিছিলে? বৌঝিরা কেন হারিকেন হাতে সাতসকালে হাঁটা দেয় সিলেটের পথে? রহস্য উন্মোচন হয় সিলেটের কালেক্টরের বাংলোর সামনে গিয়ে মহিলারা যখন কানা রাজাকে নিজেদের কষ্টক্লিষ্ট মুখগুলো দেখাতে উদগ্রীব হয়ে ওঠে। তুলে ধরে জলত্ব হারিকেনে আলো। কিন্তু এতেও প্রতিরোধি। প্রতিরোধের মুখে আক্রোশে ফেটে পড়ে আম্বিয়া। প্রবল রোষে লাথি ছুঁড়ে বাংলোর গেটে। সে কানা রাজির ক্ষীণদৃষ্টিতে আলো ফেলতে চায়। কোন সেই আলো?
আম্বিয়ার এই ক্রোধের রহস্যভেদ করে তার ভাই শুকুর চান। আম্বিয়ার পিতা তকবির চান ছিলেন নানকার তথা ভূমিদাস। প্রতিদিন মিরশদারের বাড়িতে গতর খেটে মুঠে বইতে যেতে বাজারে। জমির ফল ফসালি দূরে থাকে জলার মাঝেও তাদের অধিকার ছিল না। তার ছেঁড়াফাঁড়া জালে এক বিশাল বোয়াল মাছ ধরা পড়ে। লোভ সামলাতে না পেরে সেই বোয়াল মনিবের বাড়িতে না দিয়ে দু টাকায় ময়নার কাছে বিক্রি করে দেয়। এই বিক্রির কথা অল্প সময়ের মধ্যে জানাজানি হয়ে যায়। পরের দিন শাস্তির খড়গ নেমে আসে তকবির চানের কপালে। শাস্তির নাম তক্তা-উড়া। লেখকের বর্ণনায়-
‘তক্তা চড়িয়ে তুরাব যখন বুকের ওপর ওঠে দাঁড়িয়েছে, দম নেওয়ার ও ছাড়ার নিয়মকানুন তকবির চানের মাথায় গুলিয়ে গেছে। বার দুই সে দম আটকে রাখতে চেষ্টা করে পারল না। এদিকে তুরাব কাজটি ঠিকঠাক করেছে, না ফাঁকি দিচ্ছে, তদারক করতে বড় চৌধুরী বারান্দা ছেড়ে নেমে এসেছেন…’
এমন সময় তকবিরের পুত্র শুকুর চান এসে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় তুরাবকে তকবিরের উপর থেকে। এতে কিশোর শুকুর চানের মাথায় লাঠির আঘাত পড়ে।
এই আঘাত খেতজমির আলের মতো টানা একটি দড়ি হয়ে দপদপ করে ওঠানামা করত শরীফের দৃষ্টিতে। তার পূর্বপুরুষের নির্যাতনের স্মৃতি তাকে তাড়া করে বেড়াত। কিউবিকল-ঘেরা কর্পোরেট অফিসে বসেও সে ভুলে যেত পারত না তার ‘নানকার’ পরিচয়।
এখানে মুনিয়া নামের আরেক চরিত্রের দেখা পাই কিছু দূরে এগুবার পর আমরা। এক লড়াকু চরিত্রের মেয়ে। অভাব জর্জরিত এক পরিবার থেকে সে উঠে আসার চেষ্টা করছে। ডিগ্রি পাস করে ভদ্রস্থ চাকরি করে সুন্দর জীবন পেতে চায়। কিন্তু দারিদ্রের চোরাকাটা প্রতি পদে পদে তাকে বিদ্ধ করে। এই অসম লড়াইয়ের মাঠে একসময় মুনিয়া পায় শরীফের দেখা। দুটো সংগ্রামী জীবন একটি ধারায় প্লাবিত হতে থাকে।
শরীফ ফিল্ড ভিজিটে ভৈরব থেকে আজমিরীগঞ্জ যাওয়ার পথে লঞ্চের তলকুঠুরিতে শুনতে পায় বহুকালে আগে তার পিতার কণ্ঠে শ্রুত এক গান-
দিন তো গেল, নিশা অইলম ঠাঁই পাইলাম না
চৌদ্দ জনম বিনালে গেল, মানুষ অইলাম না-
ও আমার নানকারি জিন্দেগি
এমন জিন্দেগি ভবে আর না মিলে
ও আমার…
সেই গান তাকে নিয়ে যায় জীবনবোধের অতলে। নির্বিবাদী শরীফ চাকরিক্ষেত্রে এক ভীষণ অস্বস্তির মধ্যে পড়ে। সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্ব লাগিয়ে এক অসুস্থ প্রতিযোগিতার দিকে মালিকপক্ষ ঠেলে দিতে চায় কর্মীদের। কিছু জুনিয়র অফিসারকে তাই পদোন্নতি দেয়া হয়। শরীফ তা স্বাভাবিকভাবে মেনে নিলেও হিসাব বিভাগের ফণীবাবু তা স্বাভাবিকভাবে মেনে নেন না। তিনি ম্যাসিভ স্ট্রোক করেন।
কিন্তু ম্যানেজমেন্ট তার কোন দায়দায়িত্বই নেয় না। তার মেয়ে এ ব্যাপারে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। ফণী বাবুর মৃত্যু হলে পরিস্থতি আরো ঘোলাটে হয়ে ওঠে। কিন্তু শরীফ যা ভেবেছিল তার কিছুই হয় না। নানকারদের দিয়ে যেমন জমিদার মিরাশদাররা নানকারদের ঠ্যাঙাত, ঠিক সেভাবেই যেন ঠ্যাঙানো হচ্ছে কর্পোরেট হাউসে। সেই ভূমিদাসের সন্তানরা এখন শ্রমদাসের জীবন অতিবাহত করছে যেন। লঞ্চের তলকুঠুরিতে শুনতে পাওয়া সেই গানের মতো ‘চৌদ্দ জনম বিনালে গেল, মানুষ অইলাম না’-
মোহিতের ভাষায়-
‘এখন সভ্য যুগ, দাসত্ব চালাতেও সভ্যতা নানা কায়দাকানুন উপহার দিচ্ছে। এসি ঘরে ফ্যাট সেলারি দিয়ে দাস পোষা সভ্যতারই দান। আজকের দাস নেংটি পরে কুঁজো হয়ে চলে না, স্যুট-টাই পরে বুক চিতিয়ে ঘোরে’।
একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস পড়ার মেজাজ নিয়ে বসেছিলাম। কিন্তু এতো দেখি সমকালের গল্প। কখনো ১৯৩৭ কখনো ৪২ কখনো বা ২০২১-এ দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে বুঝতে পেলাম, পরিস্থিতি খুব একটা পাল্টায় নি। কিন্তু এই শ্রমসাধ্য ছোটাছুটির কাজ খুব আনন্দের সঙ্গেই করেছি কথাশিল্পী ওয়াসি আহমেদের গদ্যের জাদুতে। তার ভাষা নম্র, বসন্ত বাতাসে ধীর লয়ে হেঁটে যাওয়া পথিকের মতো। আশেপাশের প্রতিটি বিষয়ের উপর সচেতন সূক্ষ্ম দৃষ্টি। যতটা না গল্প, তার চেয়ে বেশি গল্পের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অনুভূতিটাকে ধরার চেষ্টা। শুরুতেই এমন একটা নমূনা মেলে:
‘নামের শেষে উদ্ভট পদবিটা জুড়ে দেওয়ার পর শরীফের মনে হলো তার চিন্তা-ভাবনায়, কাজকর্মে কোথাও বাড়তি চাপ পড়ছে। গরমকালে হালকা জামাকাপড়ের বদলে ভারী জোব্বা চাপালে যেমন হাঁসফাঁস লাগে’।
পদবির মতো একটা বিমূর্ত বিষয়কে লেখক কী দারুণভাবে মূর্ত করেছেন জামাকাপড়ের অনুভূতি দিয়ে।
আর লেখক উপন্যাসের কাঠামোটি দাঁড় করিয়েছেন যেন স্থপতির ব্লুপ্রিন্ট হাতে নিয়ে। এমনভাবে একটার পর একটা ঘটনাকে সাজিয়েছেন সময়ের দূরত্ব, পরিস্থিতির ভিন্নতা- কখনোই পাঠককে হকচকিয়ে দেয় নি। পড়ে মনে হয়েছে, এমনটাই তো হওয়ার কথা ছিল। এটা বোধহয় একজন সত্যিকারের জীবনশিল্পীর দক্ষতা। একইভাবে তুলে ধরেছেন নানকার বিদ্রোহের পেছনের রাজনীতি। একসময় কমিউনিস্টরাও এটা খুব একটা পৃষ্ঠপোষকতা করেনি। মুসলিমলীগ বা কংগ্রেসের তো প্রশ্নই আসে না। এসব রাজনীতির রৌদ্রতপ্ত বিষয়গুলো সামান্য আলোছায়ার মধ্য দিয়ে এমনভাবে তুলে দিয়েছে, তাও খু্ব একটা কাঠখোট্টা ঠেকে নি।
এই উপন্যাসটির সঙ্গে এতোবেশি একাত্ম হতে পারার পেছনে আমার কিছু ব্যক্তিগত বিষয় ছিল। আমার আদিভিটে গোলাপগঞ্জ। উপন্যাসের মূল ঘটনাস্থল আমাদের গ্রামের বাড়ির আশেপাশে। হয়ত আমিও একজন ‘শরীফ’। ঢাকা শহরে শরীফের মতো আধুনিক শ্রমদাস হয়ে নব্য মিরাশদারদের গৃহে কামলা দিচ্ছি। মুনিয়া রেলপাড়ায় বড়ো হয়ে, সেই রেলপাড়ায় আমারও বড়ো হওয়া। মতিঝর্না, টাইগারপাস, পাহাড়তলী- এসব জায়গা আমার কাছে আমার কররেখার মতো পরিচিত। তাই ওয়াসির প্রত্যেকটি বর্ণনার সঙ্গে আমার কানেক্ট করতে মুহূর্তকাল ব্যয় করত হয়নি। সব ঘটনা সব পরিপ্রেক্ষিত আমার অতিচেনা। শরীফের মতো আমিও কিছুদিন ঔষুধ কোম্পানিতে কাজ করেছি। কর্পোরেট ডিপ্লোমেসি খুব কাছ থেকে দেখেছি। এভাবে একটা উপন্যাসের অন্দরমহলে ঢোকার সৌভাগ্য বোধহয় কম পাঠকের হয়। সেই হিসেবে আমি ভাগ্যবান।
খুব কাছ থেকে দেখলে যেমন চাদেঁর গায়েও ফুটাফাটা মেলে, তেমনি উপন্যাসে কিছু সামান্য ত্রুটি আমার চোখে পড়েছে। হতে পারে সে আমার জানার সীমাবদ্ধতা। উপন্যাসের বর্ণনায় আমরা দেখতে পাই ফণীবাবুর মৃত্যুর পর বিমল তার কিউবিকলে বসছে। কিন্তু কথা হলো, পদোন্নতি পেয়ে বিমল তো ফণীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হয়েছিল। সে কেন ফণীর কিউবিকলে বসবে?
বিহারের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে মোগলসরাইয়ের কথা এসেছে। কিন্তু মোগলসরাই বিহার প্রদেশে অবস্থিত নয়। উত্তর প্রদেশে। বুড়ির ছেলেরা ভাটিয়ারি শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে কাজ করতে যায় লিখেছেন লেখক। কিন্তু পাহাড়তলীর বিহারীরা কখনো সেখানে কাজ করত না।
লেখকের বর্ণনায় মুনিয়ার বাবা হেলপার থেকে মেকানিক হয়েছিল। আসলে রেলওয়েতে এরকম কোন পদ নেই। আর মুনিয়ার ভাই মামুন রেলওয়েতে ওয়েল্ডার হিসেবে ঢুকেছে। সেটাও অসম্ভব। সাধারণত রেলওয়েতে নিচুপদের কর্মচারীরা খালাসী হিসেবে ঢোকে। পর্যায়ক্রমে পদোন্নতি পেয়ে ফিটার ও ওয়েল্ডার হয়।
মুনিয়া লাভলেন থেকে ঢাকার বাস ধরেছে লিখেছেন। কিন্তু ৯০-র দশকের পর থেকে আর লাভ লেইনে সেই স্ট্যান্ড নেই। আর রেল কর্মচারীর সন্তান হিসেবে ট্রেনে যাওয়াই প্রাসঙ্গিক ছিল। কারণ তারা ফ্রি পাস পায়। কয়েক জায়গায় বাংলা বাড়ি লেখা। সেটা বাংলো বাড়ি হলে ঠিক ছিল।
একজন লেখকের পক্ষে উপন্যাসের সবগুলো চরিত্রের জীবনযাপন করা সম্ভব নয়। তাই তথ্যে উনিশ বিশ হতেই পারে। সেটা গুরুত্বর কিছু না হলেই হলো। মূল বক্তব্য প্রভাবিত না করলেই চলে। আমার পর্যবেক্ষণগুলো উপন্যাসের বক্তব্য ও গতিপথে কোন বাধা সৃষ্টি করেনি। তাই গ্রাহ্য না করলেও হয়।
সব মিলিয়ে দারুণ একট পাঠ অভিজ্ঞতা হলো তলকুঠুরির গান পড়ে। লেখকের জন্য শুভ কামনা রইল।
--------------
জয়দীপ দে
কথাসাহিত্যিক। প্রাবন্ধিক
বাংলাদেশে থাকেন।
4 মন্তব্যসমূহ
খুব সুন্দর আলোচনা। কেনজানি "তলকুঠুরির গান" আমার অজ্ঞাতে থেকে গিয়েছিল। আমি "আধিয়ার" নামে তেভাগা আন্দোলনের ইতিহাসকে ভিত্তি করে উপন্যাস লিখলাম। সেখানে তেভাগার সময় আর বর্তমান একই ফ্রেমে আনা হয়েছে। ছোটোভাই তখন "তলকুঠুরির গান" উপন্যাসের কথা বলল। পড়লাম এবং পড়ে বিস্মিত হলাম আমরা উপন্যাসের কাঠামো একইরকম ভেবেছি। নানকার বিদ্রোহ নিয়ে উপন্যাস লেখার ইচ্ছে হয়েছিল অজয় ভট্টাচার্যের লেখা "নানকার বিদ্রোহ" বইটা পড়ে। তার আগে আরণ্যকের নাটক "নানকার পালা" দেখেছি। ওয়াসি আহমেদের লেখা "তলকুঠুরির গান" পড়ে চিন্তা থেকে সরে এলাম। কিংবদন্তীর পবন সরে আসতে দিলো না। চেপে ধরল। আমিও সিদ্ধান্ত নিলাম ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস লিখব, যার ব্যাপ্তি হবে ১৯৩৭ সাল থেকে ১৯৪৯, একযুগ। সেখান থেকে জন্ম নিচ্ছে "নানকার"। ধন্যবাদ আপনাকে। অভিনন্দন। এই আলোচনা আমাকে সমৃদ্ধ করেছে।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ প্রিয় কথাকার
মুছুনঅকপট আলোচনা।
উত্তরমুছুনকপট পারি না যে
মুছুন