--হ্যাঁ। আসুন।
--মহাশয়কে আমরা প্রণাম করি।
--আপনাদের মঙ্গল হোক।
--আপনিই তো মঙ্গলময়!
--লজ্জা দেবেন না…
--আপনাদের এখানেও এসব আছে!
--এসব মানে!
--লজ্জা হিংসা!
--আমরা দুজন দুজনকে সর্বদা অনুকরণ করে চলি।
এই শেষ বাক্যের মধ্যে কিছু একটা জটিলতা ছিল। আলফু চিত্রকর বাক্যের ভার বা ঘোর সম্পর্কে কোনো সন্দেহ প্রকাশ করল না কিন্তু ভেতরে ঢুকতে না পারলে যে অস্বস্তি, তার ছাপ তার মুখে চোখে স্পষ্ট। এই ধাক্কা সামলাতে সামলাতে আলফুকে ছেড়ে অনেক এগিয়ে গেছেন তিনি, যিনি আলফুর কাছে পরম কৃপাময়।
--আপনাদের কাছ থেকে আপনাদের গল্প শুনতে শুনতে আমি আচ্ছন্ন হয়ে পড়ি। মনে হয়, যেন এক অলৌকিক জগতের বাসিন্দারা আমার উঠোনে মুকুল ছড়িয়ে নৃত্য করছেন। জানেন, আমি সবসময় আপনাদের কথাই চিন্তা করি। আমার এখানে সবকিছু আছে। বিনোদন। শৃঙ্খলা। জয়ের লোভ। আকাঙ্খা। বিষন্নতা। বিশৃঙ্খলা। সবকিছুই।
--বলেন কি পরম!
কিছু কিছু শব্দের অর্থ বুঝে বা আঁচ করে অালফু-কে অবাক হতে শোনা গেল।
--হ্যাঁ। তাই।
--তাই! আমার গায়ে তো রোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে।
--আমি আদি থেকেই দেখে আসছি এসব। তবে এসব নিয়ে এখানে কেউ তেমন মাথা ঘামায় না।
গুটিয়ে যাওয়া চামড়া আর কুঁজো হয়ে যাওয়া শরীরটাকে আরো বাঁকিয়ে ঘুম নিচ্ছিল আলফু চিত্রকর। হাসিনার বিরক্তি তাকে এমন একটা নিশ্চিন্ত সুখপ্রদ স্বপ্ন থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে নিয়ে এল। সারাদিনের জট পাকিয়ে যাওয়া জীবনকে কোনোরকমে টেনেটুনে সে যা ক্লান্তি অনুভব করে, মনে করে, এই স্বপ্নই তাকে একটু মুক্তি দিতে পারে। আলফু তাই এই স্বপ্নে কেউ বাধা দিক, চায় না। কিন্তু হাসিনা তাকে ডেকেছে। রীতিমত জাগিয়েছে। বিরক্ত সে কখনোই হয় না। হাসিনার কাছে তার বিরক্তির প্রকাশ চলে না।
ভোর হয়ে গেছে। হাসিনার ডাকে ভোর না এসে পারে না। যখন হাসিনা আলফু-কে ডাকে না, তখন রাত্রি আসে। দিনের প্রতিটা সময় হাসিনা আলফু-কে কাজে লাগাতে চায়। পাঁজরের কয়েকটা জিরজিরে হাড় নিয়ে লোকটা শ্বাসবায়ু ভরে নেয়। যেন সারাদিন আর ফুরসৎ মিলবে না। কোনোদিন হয়তো সত্যিই মেলে না। ফুরসৎ। জমি জায়গা টুকটাক। চাষ করে। তিন ফসলি জমিতে জল দেওয়া থেকে মাটি তৈরি করা আর ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য অালফু কোনোদিন কারোর উপর তেমনভাবে নির্ভর করে না। নিজের কায়িক শ্রম, দুর্বল ধীর গতি হলেও চব্বিশ ঘন্টা অন্তত লেগে থাকা, তাকে আর সবার থেকে আলাদা করে তুলেছে। সংসারের প্রতি আলফুর মায়া আছে অথচ আলফুর প্রতি সংসারের কারোর মায়া নেই।
লুৎফর এখন আর তাকে বাবা বলে ডাকে না। একটা রোগা শীর্ণ বীরুৎ গাছের মত লোককে বাবা ডাকার মত নীচে নামতে পারবে না ব'লে! বোধহয় না। আলফু কিন্তু এটাই ভাবে। সর্বক্ষণ কাজের মধ্যে যতটুকু মাথা খাটানো যায়, সেটুকু দিয়ে। খুব গভীরে যাওয়ার প্রয়োজন অনুভব করে না। কিন্তু দিনের একটা কোনো ঘটনাকে সে নিজের মত করে সাজিয়ে নেয়।
--লুৎফর মোর এই কথাটা শুনলনি…
--মোকে মানুষ বলেই মনে করেনি উ...
চিৎকার করে না। কাউকে বলে না। হাসিনাকে সে একটু সমঝে চলে। সংসারের হাল হাসিনার হাতে। তাই লুৎফর নিয়ে আর কারো কাছে অভিযোগ চলে না।
লুৎফরের কাছে তার বাবার একক কোনো অস্তিত্ব নেই। হাসিনাকে সে তুই বলে ডাকলেও, সংসারকে অর্থ দিয়ে টেনে নিয়ে চলে যে, তাকে সে কীভাবে এড়িয়ে যাবে! আলফু লোকটা কেবল খেটেই যায় সারাদিন। লোকটা কারো সঙ্গে ভালো করে একটু মেশে না। হাসে না। এই লোকটার সঙ্গে নিজেকে কোন্ সরলতায় বাঁধবে সে!
এখুনি একটা সময় ছাড়িয়ে লুৎফর বেরিয়ে যেতে পারে। এখুনি, মনে করলেই নিজেকে সদ্য গজে ওঠা বকুল গাছের কচিপাতা হয়ে সাতরঙা আলো ঠিকরে দিতে পারে। লুৎফর জীবন চায়। বেঁচে থাকতে থাকতে সময়গুলোকে নষ্ট করে দিতে চায় না। কাজের পর কাজ, কাজের ফাঁকে কাজ তার বাবাকে যা করে দিয়েছে, যা করে দিচ্ছে, লুৎফর আড়চোখে এসব দেখে। প্রথম প্রথম দুঃখ পেত। এখন রাগ হয় তার। এসবের কোনো মানে হয় না। এরকম একটা লোক, যে দম নেওয়ার ভারে কুঁজো হয়ে গেছে, সংসার তাকে শুধু দেখতেই চায় মৃত্যু অব্দি। তাকে দিয়ে কিছু করিয়ে নিতে গেলে লজ্জা পেতে হয়। যার তাড়নায় আলফু এত হাড় খাটুনি খাটছে, সেই হাসিনাকে কিছু বলারও সাহস নেই লুৎফরের।
এখন আলফু হাসিনা আর লুৎফর, এই তিনজনের সংসারে তিনটি আলাদা আলাদা লোকের লোক ঘোরাফেরা করছে। যুবক আলফুর এমন আশা ছিল না। সর্বান্তকরণে আল্লাহর কাছে নমাজ পড়ে সে। পড়তও। যতটা না মানলে নিজেকে একটা ধর্মের সঙ্গে বাঁধা যায় না, ততটুকু করতে পারত। এখনও করে। তবুও আলফু কোনো মানসিক সুরাহা পায়নি। এই দুজনের দিকে সে নিরুপায় ফ্যালফ্যাল তাকিয়ে থাকতে পারে কেবল। এদের কাছ থেকে দূরে থাকতে সে এত কাজ করে নাকি, কাজ করার জন্য দূরে চলে যাচ্ছে বোঝা মুশকিল। একটা সহজ সত্যি বিশ্বাস করে আলফু, তা হল, নিজেকে মগ্ন রাখা। যেকোনো কাজে। মনের গঠন আর প্যাঁচ পয়জার বোঝার ক্ষমতা তার নেই। কোনোদিন ছিল না। নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখে, রাখতে পারে যে মানুষ, তার এসব নিয়ে ভাববার সময় কোথায়!
একটা সময় আলফু চিত্রকর পট খেলা দেখাত। সেজন্য কেউ কেউ তাকে, তাদেরকে পটিদার বলে। দুই ধর্মীয় সমাজের মাঝে থেকে আলফু নিজেকে কারো মনের মত করে নিতে পারেনি। সে, তারা হিন্দুদের শীতলা মায়ের কাছে বছরে একবার পুজো দেয়। কোথাও রাধাকুঞ্জ হলে আলফু গিয়ে বসে সন্ধ্যায় সন্ধ্যায়। আসনের সামনের দিকে। নাক মুখ কুঁচকে কেউ এমন ভাবে তাকায়, তাকাতে পারে, আলফু ভেবেছে। কিন্তু নিরুপায় হয়ে কিছু করতেও পারে না। মুসলিম সমাজ তাকে নিজের বলে মেনে নেয় না। হিন্দু সমাজ তাদের অচ্ছুৎ মনে করে। পটিদার বলতে গিয়ে বিদ্রুপ করে বলে পট্টিদার। আলফু সহ চিত্রকর পাড়ার সবাই বিরক্ত হয়। রেগে যায়। কিন্তু কিছু বলার মত তাদের সামাজিক সম্মান কোথায়!
দূর দূরান্তে পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে কথা বলা কাগজগুলো বুকের মাঝখান থেকে মেলে ধরত উদগ্রীব লোকের সামনে। বেহুলা লখিন্দর, কাগজে আঁকা কালো কুচকুচে একটা সাপ, কলার মান্দাস একটার পর একটা পাতা নামে নিচের দিকে। আলফু মুখের ভাব পাল্টাতে পাল্টাতে কখনো চোখে জল এনে পটের গান অাওড়ে যাচ্ছে। গান শেষে আলফু পয়সা পেয়েছে। চাল পেয়েছে। সংসারে এনে দিয়েছে চাল আর পয়সা। হাসিনা হাসি মুখে তুলে রেখেছে আবার কোনোদিন বিড়বিড় করে হালকা থলিটা মাটির অমসৃণ সেঁতিয়ে যাওয়া মেঝেতে ছুঁড়ে দিয়েছে। দিগন্তের প্রতিটা গ্রামে যখন আলফু খুব পরিচিত আর বিরামহীন, তখন ভাবনায় পড়ে যায় সে।
এখন বেশ কয়েক বছর আলফু আর পট আঁকে না। নিত্যদিনের কাজের মধ্যে অনেকটা সময় সে ব্যয় করে ভিক্ষা করে। সূর্য মাথায় নিয়ে বেরিয়ে যায় মানুষটা। হাসিনা একবার ফিরেও তাকায় না। নৈমিত্তিক কাজে সে কোনো স্নেহ বা করুণা করা পছন্দ করে না। মেলে দেয় না বাহু। আঁচল তার লুটিয়ে থাকে না। মানুষটা ঘরে থাকলে হয়তো হাসিনা এক গ্লাস জল দিত, কিংবা দিত না। হয়তো গরমের বয়ে আসা মুছিয়ে দিত আঁচলে, কিংবা দিত না। লুৎফর হয়তো তখনও ঘুমোচ্ছে। একটা ছোটো বাঁক কাঁধে, দুটো ব্যাগ ঝুলিয়ে আলফু চলে যাচ্ছে রাস্তা ধরে। তাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে সাইকেল, মোটর সাইকেল বাস লরি। তার গলার ভেতর সেই পটের গান। বাতাসে বেরিয়ে আসছে না যদিও। কারো কানে বাজছে না। একা আলফু সেই গানের শ্রোতা।
ভিক্ষা সেরে ফিরে আসে যখন সূর্য ক্ষীণ অথচ মলিন। চাপা রঙের মুখ ভর্তি দাড়ির উপর আলো উপচে পড়ছে। মোটা মোটা ভ্রু যুগল কাছাকাছি এসে তার চোখের দৃষ্টি নিখুঁত করে দিয়েছে। বাঁক থেকে ঝুলছে দুটো চাল ভর্তি ব্যাগ। বয়স্ক কাঁধের ওপর এই ভার একটু বেশিই। কিন্তু অালফুকে দেখলে মনে হয়, এই ভারের পেছনে সে পড়ে নেই। সে নিষ্পাপ মলিন একটা চাউনি দিয়ে দেখে নিচ্ছে রাস্তার থমকে থমকে পেছনের দিকে বয়ে যাওয়া। একটা দড়ি, একটা প্লাস্টিক কিংবা কাগজের টুকরো কিছুই বাদ পড়ছে না অালফুর নজর থেকে। কুড়িয়ে নিচ্ছে সে। অত ভার নিয়ে যে চলতে পারছে না ঠিকমত, ঝুঁকতে গিয়ে তার পায়ের কাঁপুনি আসে। মনে হয়, এই বুঝি মুখ থুবড়ে পড়বে। বাজার ভর্তি লোক আলফুর এই নেশায় মজা নেয়। কেউ বকে--
--শালা, চলতে পারেনি, বন্দুক ঘাড়ে।
--এই করতে যেয়ে কুনদিন মরে পড়ে থাকবে রাস্তায়।
এসবের কিছু কথা আলফুর কানে যায়। একটা নির্মল হাসি হাসে সে। মুকুন্দর দোকানের বাইরে রাখা বেঞ্চটায় বসে। একটা চা চেয়ে নেয়। বিস্কুট একটা চাইতে গিয়েও থেমে যায়। চা ঠাণ্ডা হয়। এক ঘোঁটে গিলে নেয়।
আলফু যখন ঘরে ফেরে, তার বাঁকে জড়ানো টুকরো টুকরো অসংখ্য দড়ি। ব্যাগ ভর্তি চালের ওপর ফেলে রাখা আছে প্লাস্টিক কিংবা কাগজের টুকরো। লুৎফর বাড়ি নেই। হাসিনা ঘরের কাজ করছে। বেরিয়ে আসে না। ব্যাগগুলো কোনোরকমে নামিয়ে বসে উঠানে। দম নেওয়া শেষ হওয়ার আগেই বাঁক থেকে টুকরো টুকরো দড়িগুলো খুলে ফেলে। ঘর থেকে নেমে আসা চালের বাঁশে একটা একটা দড়ি বেঁধে দেয়।
আলফু কী বোঝে না! সব বোঝে। গভীরে গিয়ে বোঝে। হাসিনা ঘরে না থাকলে বা থাকলে, অসুস্থ থাকলে সে নিজে গিয়ে তেলটা নুনটা কিনে আনে। সওদা করে। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকার পর একটা বিড়ি চেয়েই বসে কোনো একজনের কাছ থেকে। বিড়ি টানতে গিয়ে ধুঁকে যায়। কাশি হয়। আবার একবার হেসে নেয় সে। এবারের হাসি আসে চোখে জল নিয়ে।
মুখ ফুটে নয়, হাবে-ভাবে যেদিন থেকে লুৎফর বুঝিয়ে দিতে চাইল যে, আলফুর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই, কোনো ঔরসের সম্পর্ক নেই, আলফু শুধু একটু মৃদু হেসেছিল। এত গভীর একটা বিষয়েও যে এমন হাসা যায়, কেউ সামনে থাকলে নিশ্চিত অবাক হত। সবাই এখন আলফুর এই হাসি নিয়ে অভ্যস্ত। তারা ভাবে, ভিক্ষার জীবন নিয়ে বোধহয় এভাবে হাসি মুখে নিয়েই চলতে হয়।
কাজে ফাঁকি দেয় না যে আলফু, সে জমিতে আল দিতে যায়। একা। কোন্ ভাবনা কোন্ মন সামনে রেখে সে এমন আল দেয়! কোদাল থেকে চাপ চাপ কাদামাটি একের পর এক বসে। বিক্ষিপ্ত। ছন্নছাড়া। পা দিয়ে চেপে আল মজবুত করার কথা তার মাথায় আসে না। লোকে বলে, এমন আল দিয়ে কোনো লাভ নেই। এমন যেমনতেমন করে আল দেওয়ার পেছনে কোনো কারণ খুঁজে পায় না লুৎফর হাসিনা আরো অনেকে। একটা আল দেওয়া শেষ হলে আলফু মুখ তুলে আলের দিকে তাকায়। স্বভাবজাত হাসি হাসে। কপালের ঘাম আঙুলে করে টেনে সরিয়ে আলের ফাঁক ফোকর দিয়ে কোনো বিদ্রুপ, কোনো কষ্ট বয়ে আসছে কিনা দেখতে চায়। দেখতে পায় না। আবার তাকায়। আবার আল দেওয়া শুরু করে। আবার তাকায়। মুখ টিপে হাসে।
সন্ধ্যা নেমে আসার পর আলফু একেবারে একা হয়ে যায়। নিজে থেকেই একা হতে হয় তাকে। মনে মনে ভেঁজে নিচ্ছে সংলাপের প্রশ্নোত্তরগুলো। কখনো গম্ভীর হয়ে পড়ছে। কখনো নিজের সম্ভাব্য উত্তরের শব্দ কল্পনা করে হাসছে।
রাত।
ঝিঁঝিঁ।
গাছের ঝোপ থেকে অন্ধকার ঝরে পড়ছে হাসিনার ঘরের উপর।
--আপনাকে প্রণাম জানাই।
--আপনারাও আমার প্রণাম গ্রহণ করুন।
--পরম, আপনি একবার আমাদের ওখানে চলুন…
--না না তা কেন!
--আমার গ্রাম পরিবার দেখে আসতেন…
--তার আর দরকার নেই। আমি অনেক দেখেছি। বলা যায়, সব দেখেছি।
--তবুও কিছু ত তফাৎ আছে!
--কিচ্ছু তফাৎ নেই। আপনার আর আপনাদের চাওয়া পাওয়া আর কল্পনাতেই তো আমাদের ওঠা বসা।
এটা একটু ভারী কথা। আলফু পরমকে না থামিয়ে বলে যেতে দিল।
--হুঁ।
এইটুকু একটা শব্দ উচ্চারণ করে যেন শ্যাওলা পড়া ভাবনায় তলিয়ে গেল আলফু। ওপর থেকে বোঝার উপায় নেই। কে বলবে, এই আলফু বাস্তবে একজন ব্রাত্য জীব মাত্র! এই আলফুই দড়ির পর দড়ি বেঁধে আরো আরো সংসারী হতে চায়! হাসিনাকে লুৎফর-কে আরো কাছে কাছে করে রাখতে চায়!
--মশাই, আপনি নিজে বরং একটু বেশি সময় আমাদের এখানে থাকুন। চাক্ষুষ করুন আমাদের পীড়া।
--পীড়া!
--হ্যাঁ।
সকাল বেলায় হাসিনা দাঁত খিঁচিয়ে আলফুকে ডাকতে যাবে। অবাক না হয়েই দেখবে, প্রতিদিনের মত আলফুর ঠোঁটে সেই হাসি লেগে আছে। যতদিন আলফুর ঘুমে এমন স্বপ্ন থাকবে আর সেই স্বপ্নে তার কাছে, আলফু চিত্রকরের কাছে, পরমের নিজের দুঃখ বর্ণনার সংলাপ থাকবে, ততদিন আলফু হাসিমুখে কারো না কারো কাছে ফ্যালফ্যালিয়ে বিড়ি চাইবে। শীতলার পুজোও দেবে। নমাজও পড়বে। হাসিনাকে বাঁধার চেষ্টা করে যাবে। লুৎফর তাকে অস্বীকার করলেও, সে ছোটো ছোটো চোখে তার দিকে তাকাবে। হাসবে।
1 মন্তব্যসমূহ
ভালো গল্প। আরও লেখো এগিয়ে চলো।
উত্তরমুছুন