উম্মে মুসলিমা'র গল্প : চন্দ্রানন

১৯৪৬ সালে হিন্দু-মুসলমানে রায়ট। একদিকে মুসলমানরা হিন্দুর কল্লা ফেলে তো হিন্দুরা মুসলমানকে কচুকাটা। তো সেই সময় আমার আব্বা ট্রেন থেকে স্টেশনে নামতে গিয়ে দেখে লোকজন সব আর্তনাদ করতে করতে দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছুটছে। ট্রেন থেকে যারাই নামছে কৃপাণ হাতে হিন্দু মৌলবাদীরা তাদের কোপাচ্ছে। কেউ নিহত হচ্ছে, কেউ আহত শরীর নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে। ট্রেনে লুকিয়ে থাকার কোন সুযোগ ছিল না দেখে আমার আব্বা ঘাড় নিচু করে নামতেই কৃপাণ তুললো ওদের একজন। ঘাড়ে কৃপাণ বসাবে সেই মুহূর্তে পাশের জন তার হাত আটকালো। বললো--


‘আরে আরে করছো কি? দেখছো না ও ব্রাক্ষ্মণের ছেলে। শেষে ব্রক্ষ্মহত্যা করে নরকে যাবে? ছেড়ে দাও, ছেড়ে দাও।’

আমার কিশোর আব্বা সেই ভয়াবহ দাঙ্গা থেকে রক্ষা পেয়ে বাড়ি পৌঁছালে আমার পিতামহী গ্রামের গরীবদের জন্য দু’দিন ধরে লঙ্গরখানার ব্যবস্থা করেছিল। দাদির ছিল পাঁচ সন্তান। আমার আব্বা সবার ছোট। পাঁচজনের মধ্যে আব্বাই ছিল আলাদা আর সবাই মোটামুটি একইরকম। কেউ দাদার মতো, কেউ দাদির মত। দাদা গড়পরতা বাঙালিদের চেয়ে লম্বায় খাটো, কালো। দাদি একহারা লম্বা শ্যামবর্ণা, দীঘল চুলের দীঘলনয়না -- এদেশের শ্যামল রঙ রমণী। আব্বার যখন জন্ম হয় তখন গ্রামের লোকজন লাইন দিয়েছিল আমার দাদার বাড়িতে। লোকমুখে রটে গিয়েছিল ‘তবারক শেখের ঘরে চাঁদ ঝকমক করে’।

‘ওলো কাজ থো, চ দেইকি আসি শেখের ঘরে বোলে চান নাইমিছে’

‘কিরাম কইরি হইলু? বড় চাইড্ডি তো প্যাতা জিওল’

‘তাক্কিজানি। তবা শেখও তো আন্দারে হারায়’

তো আমার দাদির কোলে এক টুকরো পূর্ণিমার আলো পড়ে থাকতে দেখে পাড়ার সবাই খুশী। ওদের প্রশ্নের উত্তর নিয়ে বেশি মাথা ঘামাতে হলো না। আমার দাদা তার ইয়ার রাধাকান্তকে নিয়ে দরদালানে বসে আয়েশ করে এক আলবোলার নলে তামাকু সেবন করছিলেন আর ইচ্ছেকৃত ছোট্ট ছোট্ট কাশি তুলে আহলাদের সাথে বর্ণনা করছিলেন --

‘জানো রাধা, আমার পূর্বপুরুষরা এসেছিলেন ইরাক থেকে। আমি আমার প্রপিতামহকে স্মরণ করতে পারি। যদিও আমি তখন নেহাতই শিশু। কিন্তু নবোজাতকের মুখ দেখে আমার বিলক্ষণ প্রত্যয় হয় তিনিই এসেছেন ফিরে। দু’চার পুরুষ পরপর এসব নিশানা আসে, বুঝলে রাধা। তোমাদের ধর্মেও তো পরজন্ম আছে। কী যেন বলে তাকে? ও হ্যাঁ, জাতিশ্বর’।

রাধাকান্ত চোখ বুজে গড়গড়া টানে আর মাথা দোলায়। চোখে মুখে আমার দাদা যা বলেছে তার একশোভাগই সত্যি এমন ছাপ। রাধাকান্ত আর আমার দাদার সখ্যতা গ্রামে সুবিদিত। গ্রামের লোকজন ঐ জুটির নাম দিয়েছিল ‘গৌর-কৃষ্ণ’। রাধাকান্ত যেমন ফরশা, আমার দাদা তেমন কালো। শেষপর্যন্ত শুদ্ধবাংলার ‘গৌর-কৃষ্ণ’ গ্রামের আঞ্চলিকতায় হয়ে উঠলো ‘ঘোরকেষ্ট’। এমনকি আমার দাদা আর রাধাকান্ত যখন জুড়িগাড়ি করে নদীর ধারে বেড়াতে বেরোতো তখন গ্রামের ছেলে-ছোকরারা পেছন পেছন ছড়া কাটতো --

‘ঘোর ঘোর কেষ্ট

গাড়ির চাকা নষ্ট’


কিন্তু আমার দাদা যতই সাফাই গাক পূর্বপুরুষের একথা তো দাদা আগেই রাধাকান্তকে বলেছে যে আমার দাদীর পিতামহ হিন্দু থেকে মুসলমান হয়েছিল। কিন্তু সে কী মুসলমান! কোনদিন তার এক ওয়াক্ত নামাজ কাজা হয়নি। পনের পারা কোরানের হাফেজ ছিলেন তিনি। তারপরেও ইয়ারকে সত্যি কথা বলতে দাদা কসুর করেনি যে তার বউ মাছ-মাংস ছোঁয় না। এ যে বন্ধুপত্নীকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তোলা বন্ধুর কাছে -- রাধাকান্ত তা মনে করে না। কারণ রাধাকান্ত নিজেও দেখেছে মেহেরনিগার মানে আমার দাদী ধানের গোলায় গোলায় প্রদীপ দিয়ে গলায় আঁচল ঘুরিয়ে যখন গড় হয়ে প্রণাম করতো তখন তাকে তাদের নিজেদের নারী বলেই মনে হতো। মেহেরনিগারের হাঁটা-চলা, উঠা-বসা, ধরন-ধারণ ওরকম না হলেও রাধাকান্তের কিছুই আসতো যেত না কিন্তু হওয়াতে আরও কাছের মানুষ মনে হতো। দাদার বাড়ির অন্যান্য নারীরা কুয়োতলায় বাসন মেজে কাঁখে করে হেঁশেলের দাওয়ায় রাখতো। আর দাদি বাঁহাতের তালুর ওপর বাসন রেখে ঘাড়ের পাশে হাত উঠিয়ে দাঁতে ঘোমটা কেটে যখন পা বাড়াতো তখন তার পেছনে পড়ে থাকতো লক্ষীর পদচ্ছাপ। দাদি ছিল আবার আমার দাদার খালাতো বোন। সেকালে মুসলমানদের নিকটাত্মীয়দের মধ্যেই বেশিরভাগ বিয়েশাদি হতো। রাধাকান্ত নিজে ছিল অকৃতদার। কবে কোন্‌ এক মেয়েকে ভালোবেসে তাকে না পেয়ে আর বিয়ে করা হয়ে ওঠেনি। তবে ভারি মজার লোক। কথায় কথায় শোলক বলা তার স্বভাব। দাদাদের অঞ্চলে মানুষজন ধাঁধাঁকে বলতো শোলক।

‘সন্তান রূপবান হলেই তারা পিতার কূলের মত হয়, এ ধারণা ঠিক না’ --ছেলে দেখে গ্রামের লোকজন চলে গেলে রাধাকান্ত আমার দাদাকে নিচুস্বরে বলতে থাকে

‘মোহরজীর বাবাকেওতো দেখেছি অত্যন্ত রূপবান। তাঁর মতও তো হতে পারে’। আমার দাদা দাদিকে মেহের বলে ডাকলেও রাধাকান্ত ডাকতো মোহরজী বলে।

‘তুমি তো তোমার দিকে ঝোল টানবেই। তোমার মোহরজীর বাবার গায়ে যেহেতু তোমাদের সম্প্রদায়ের গন্ধ আছে সেহেতু যুক্তি তোমার একেবারে ফেলা যায় না। বিয়ে তো করলে না কান্তজী। বাচ্চা-কাচ্চাদের বিষয়ে আর কী বুঝবে? বেশ চলো এখন হাওয়া খেয়ে আসি’--বলে আমার দাদা চাঁদপানা ছেলের খুশিতে হাওয়ায় ভাসতে লাগলো। গাড়িতে বসেই রাধাকান্ত তার শোলক ধরতে শুরু করে দিল।

‘আচ্ছা বলো দেখি-- কুদরততিনা দয়াময়, মাসে মাসে বাচ্চা হয়

একই গর্ভে ভাই দশবারো, ছোঁয়াছুঁয়ি হয়না কারো

গর্ভে থাকতে মাথা দেখা যায়

কালিদাসে বলে যায়, বেদ কুরানে নাই

খালে বিলে খুঁজলে পাওয়া যায়’

দাদা বলে -- রাধা, চলো আজ বরং পদ্মদিঘিতেই যাওয়া যাক। পদ্মচাকি তুলে তোমার শোলক বসে বসে খাইগে চলো’।


পাশাপাশি বাড়ি ছিল ওদের। আমার দাদা আর রাধাকান্ত গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে পড়তো। স্কুলে যাওয়ার পথে ওদের বাড়ি, ফেরার পথেও। দাদা দু’বারই ওখানে জিরোতো। যাওয়ার পথে রাধার মা দুবাটি দুধমুড়ি মাঝে বাতাসা দিয়ে সাজিয়ে রাখতো। রাধাকান্ত মাকে লুকিয়ে আর্ধেকটা দাদার বাটিতে ঢেলে দিত। দাদা চেটেপুটে খেয়ে ফেরার পথে আবার ঢুঁ। বিকেলে গুড়ের মোয়া। তিলের নাড়–।

আমার দাদা টেনেটুনে এন্ট্রান্সের গণ্ডী পেরোলেও রাধাকান্ত দ্বিতীয় বিভাগে জলপানি নিয়ে গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করলো। দাদার মা দু’বন্ধুর জন্য দু’টো শান্তিপুরী ধূতি আর কাশ্মিরি শাল আনালো ইন্ডিয়া থেকে। তখন তো আর ভিসা-পাসপোর্ট লাগতো না। দাদার বড়ভাই ছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল রেলওয়ের বুকিং ক্লার্ক। থাকতো নৈহাটি। চার-পাঁচমাস পর পর বাড়ি আসতো। বাড়িতে তার সাতবছর বিয়ে করা নিঃসন্তান বউ। বউএর জন্য প্রতিবারই নতুন নতুন গয়না আর কটকের তসর শাড়ি। বাঁজা বলে বাড়ির কেউ তাকে কোনদিন হেয় করেনি। আল্লাহ চাইলে হবে। মাত্র তের বছর বয়সে বিয়ে হয়েছে। কুড়ি-একুশে কি সন্তানধারণ ক্ষমতা শেষ হয়ে যায়? তাছাড়া বুকিং ক্লার্ক মবারক শেখ বউএর কাছে থাকেই বা কয়দিন। রাধাকান্তের এক খুড়ো এলো একবার কৃষ্ণনগর থেকে। ভালো কুষ্ঠি করতে পারে। মবার বউএর হাত দেখলো সে।

‘ডান হাতের তালু মেলো তো বউমা’-- খুড়ো তর্জনীতে রাখা চূণ দাঁতে কেটে মুখের পানটকে জিব দিয়ে বেশ ঘুরিয়ে নিল। মবার বউ একহাত ঘোমটা টেনে শাড়ির নিচ থেকে হাত বের করে দিলে খুড়ো পান মুখে তোতলাতে থাকে। এমন আলতারাঙা চাপাকলি কুসুমকোমল হাত সে আগে কোনদিন দেখেনি। নাজানি এমন হাতের মুখখানা কেমন ভুবনভোলানো।

‘আমি তো ব-বউমার সন্তানরেখা প-পস্টই দেখতে পাচ্ছি, ত-তবে..’

তবে বলে থেমে গেলে আমার দাদাদের মা ব্যাকুল হয়ে উঠলো। দাঁড়িয়ে থাকা বউমাকে খাটে নিজের পাশে বসিয়ে আকুল হয়ে জিজ্ঞাসা করলো--

‘বলি হ্যাঁগো শ্যামাকান্ত তেবে কী? সুন্তান বাঁচবে না নাকি?’

‘না বউদিদি, তবে হাতের রেখা দেখে সব বলে দিতে ভালো গনক্কারও অপারগ’

‘তেবে কি পা দ্যাকা নাগবে?’

‘না গো, কপালের রেখা আর থুতনির গড়নটা যদি দেখা যায়’ --বলে শ্যামাকান্ত দম ধরে থাকে। একবার ভেবেছিল শুধু কপালের রেখার কথাই বলবে। কিন্তু তা বললে যদি চোখ অব্দি মুখ ঢেকে কেবল কপালটাই দেখায় তো তাতে তার উদ্দেশ্য সফল হবে না। পুরো মুখখানা দেখতে হলে একটু ছলের দরকার হয়।

‘তো দ্যাকো না, এট্টু ঠাউরি দ্যাকো’-- বলে দাদার মা তার বউমার কপালের চুলের রেখা পর্যন্ত ঘোমটা সরিয়ে দিল। শ্যামাকান্তের চোখ কপালে উঠলো। বউমার কপাল থেকে আর তা নামাতেই পারছিল না। রেখা কোথায় ওখানে? আধখানা চাঁদ যেন জোৎস্না ফেলছে সারা মুখে। সাক্ষাৎ লক্ষীপ্রতিমার ঢলঢল আনত আনন। ঢেউতোলা চিবুক ঘিরে লাবণ্যের বন্যা। শ্যামাকান্ত স্তম্ভিত। বিস্মিত।

‘হ্যাঁ শ্যামা, নক্ষণ কি ভালো না?’

‘লক্ষণ শুভ বউদিদি’-- বলে শ্যামাকান্ত দুবার করে কর গুণে বলে দিল আবার বললো--

‘আগামী পৌষ নাগাদ আপনার ঘর আলো করে বউমার কোলে পুত্রসন্তান আসছে’।


পাঁচমাসের পোঁয়াতি বউ নিয়ে মবারক দাদা নৈহাটি গেল। একমাস পর ফিরলো রেলেকাটা বউয়ের লাশ নিয়ে। ট্রেন বদল করার সময় দাদার হাত ফসকে নাকি বউ লাইনের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। ধরে তোলার আগেই তার গায়ের ওপর দিয়ে ট্রেন চলে যায়। আমার দাদার মা সে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়লে দশ দিনের মাথায় মারা যায়। মবারক দাদা নৈহাটি ফিরে গিয়ে আর দেশে ফিরে আসেনি। নানা জন নানা কথা বলতো। কেউ বলতো বউ নিজেই আত্মহত্যা করেছে, কেউ বলতো মবারক দাদাই ধাক্কা দিয়ে ট্রেনের নিচে ফেলে দিয়েছে। কেন, তার কোন সদুত্তর কেউ দিতে পারেনি।

ভারত ভাগ হলো। রাধাকান্তরা ওপারে চলে যাবে। দুবাড়িতে কান্নার রোল উঠলো। দাদা বললো--

‘কাকীমা, তবা বেঁচে থাকতে কারো সাধ্য নেই আপনাদের কিছু বলা। আপনারা কেন যাবেন?’

‘মারামারি কাটাকাটি তো কম হলো না বাবা। কে কোথায় ওঁৎ পেতে আছে কে জানে। দুগ্গা দুগ্গা বলে কেটে পড়াই শ্রেয়’

‘রাধাকে ছেড়ে আমার বেঁচে থাকা কত কঠিন হবে একবারও ভাবলেন না?’

‘রাধাই বা আমার কীভাবে বাঁচবে?’-- সন্ধ্যার ঢিমে আলোয় দুঃখভারে দাঁড়িয়ে থাকা আমার দাদার বাড়ির নোনাধরা প্রাচীরে চোখ রেখে স্বগোক্তির মত আওড়ালো রাধাকান্তের মা।

‘কোনকিছুই তো সেটেল হলো না। সহায়-সম্পত্তি এভাবে রেখে চলে যাওয়া..’

‘তুমি থাকতে কেউ এতে হাত দিতে পারবে না বলেই এভাবে রেখে যাচ্ছি। মাস দুয়েক বাদেই রাধা এসে সব ঠিক করে যাবে’।


আমার দাদা, বাবা, চাচা, ফুপুরা দুদিন ধরে সব গোছগাছ করে দিল। সে দুদিন এবাড়িতেই রান্নাবান্না করলো আমার দাদি। রাধাকান্তের পছন্দের মুড়িঘন্ট, রুই কালিয়া, লাবড়া, সুক্তো আর নলেনগুড়ের পায়েস।

দাদা বললো--

‘রাধা, আমার ভাইকে খুঁজে বের ক’রো। তুমি টেলিগ্রাফ করলে আমি নিজে যাব’

‘মবাদাকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব তো আমারও’

‘তোমরা তো শ্যামাকাকার ওখানেই উঠবে?’

‘আর কোথায়?’

‘সত্যি করে বলো তো রাধা, তোমাদের ফেলে যাওয়া ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, গাছ-গাছালি, জমিজিরেত যখন অন্যেরা ভোগ করবে জানতে পারলে তখন মনটা হু হু করে উঠবে না?’

‘মরে গেলে তখন এদেশই বা কী আর ওদেশই। মরে গেলে কি ওসব সাথে নিয়ে যেতে পারবো? যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন খারাপ তো লাগবেই। কিন্তু আমি তো শ্যামাকাকা নই। আমার জন্ম এদেশে। এদেশেই আমার জন্মান্তর হবে। ও তুমি বেঁচে থাকলে দেখবে তখন। এবার শেষবেলা একটা শোলকের উত্তর দাও দেখি --

ঘরের মধ্যে অচীন পড়শী বসত বাড়ি গাড়ে

আমি কাঁন্দি পড়শী কাঁন্দে

কেউ না দেখতে পারে’

আমার দাদা এ ধাঁধাঁর উত্তর কোনদিন খুঁজে পেয়েছিল কি পায়নি তা জানা যায়নি। তোর কী মনে হয়, তুই বলতে পারিস?


এতক্ষণ একটানা পূর্বপুরুষদের কাহিনি বলে আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের চারবছর তিনমাসের রুমমেট আমাদের ৪০৯ নং রুমের জানালায় বসে বাইরে তাকালো। সেই মুহূর্তে ফস করে বিদ্যুৎ চলে গেল। বাইরে তখন শরৎরাতের পূর্ণিমা। পলকা মেঘ সরিয়ে বারবার জোৎস্না এসে আমার রুমমেটের কপাল ছুঁয়ে পালাচ্ছিল। কিন্তু আমি অন্য ধাঁধাঁয় পড়লাম—কোন্‌ জোৎস্নায় বেশি আলো?

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ