রোয়াল্ড ডাল'এর গল্প : অনন্ত যাত্রার পথে



অনুবাদ : ফারহানা আনন্দময়ী 

জানালায় পর্দাটানা ঝকঝকে পরিষ্কার ঘরটিতে একটু উষ্ণভাব ছিল। দুটো টেবিলল্যাম্প জ্বলছিল ঘরের ভেতর। একটা তার পাশে, আরেকটি উল্টোদিকের খালি চেয়ারটার কাছে। পাশের ছোট টেবিলটায় রাখা ছিল দুটো লম্বা গ্লাস, সোডার জল, হুইস্কি আর থার্মোফ্লাস্কে বরফের টুকরো। 

তার স্বামী কাজ থেকে ফিরবে, সেই অপেক্ষায় বসে ছিল মেরি মেলোনি। 

একটু পরপর সে ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছিল। খুব অস্থিরতা নিয়ে সময় দেখছে তা নয়। বরং এক মিনিট করে করে ঘড়ির কাঁটা যত এগুচ্ছে, সে এইভেবে শান্তি পাচ্ছিল, ওর স্বামীর ঘরে ফেরার মুহূর্তটা কাছে এগিয়ে আসছে। শান্ত মিষ্টি একটা বাতাস তাকে ঘিরে বয়ে যাচ্ছিল। সেলাই করার জন্য সে যখন মাথা নিচু করছিল, সেটার ভেতরেও একটা প্রশান্তি। তার গর্ভে ছয়মাসের একটি বাচ্চা আছে, মাতৃত্বের কারণে তার গায়ের চামড়াতেও একটা আলগা মসৃণভাব এসেছে। মুখের ত্বকে কেমন কোমলতার আভা ফুটে উঠেছে এবং তার চোখ দুটো আগের চেয়ে আরেকটু বেশি দীর্ঘ ও গভীর দেখাচ্ছে। ঠিক পাঁচটা বাজার দশ মিনিট আগে সে শুনতে পেল বাইরে উঠোনে গাড়ির চাকার আওয়াজ। একটু পরে তার কানে এলো গাড়ির দরজা বন্ধ করার শব্দ, জানালার কাছে এগিয়ে আসা পদধ্বনি আর চাবি দিয়ে ঘরের দরজার তালা খোলার আওয়াজ। হাতের সেলাইয়ের কাজটি পাশে রেখে, খানিকটা এগিয়ে গিয়ে স্বামীর গালে আদর দিয়ে তাকে  স্বাগত জানালো। 

“ সারাদিন কেমন কাটলো সোনা”, সে জানতে চাইলো। 

উত্তরে স্বামী জানতে চাইলো, “মন্দ না, তোমার শরীর কেমন পাখি?”। 

স্বামীর হাত থেকে কোটটা নিয়ে সে হ্যাঙারে টাঙিয়ে দিল। তারপর পানীয় আনতে গেল দুজনের জন্য। স্বামীর জন্য পানীয়টা একটু কড়া করেই বানালো আর নিজের পানীয়টা নিলো হালকা করে। ফিরে এসে হাতে সেলাইয়ের ফ্রেমটা নিয়ে চেয়ারে বসলো আবার। আর তার স্বামী সামনের চেয়ারে বসল। দু’হাতে লম্বা গ্লাসটি ধরে ধীরে ধীরে দোলাতে থাকায় গ্লাসের ভেতরের বরফের টুকরোর শব্দ কানে এসে লাগলো। 

দিনের এই সময়টা তার খুব মধুর কাটে। সে জানে, প্রথম গ্লাসের পানীয়টা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার স্বামী কথা বলতে পছন্দ করে না। সে-ও চুপচাপ বসে থাকে একটা তৃপ্তি নিয়ে। সারাদিন একা থাকার পরে স্বামীর সঙ্গে একসাথে বসে থাকাটাও তার কাছে বিশেষ প্রাপ্তি। এই মানুষের সান্নিধ্য তার কাছে যেন এক বিলাসি সঙ্গ। সূর্যস্নানে থাকা কেউ রোদ্দুরের যে উত্তাপ অনুভব করে, তারা একত্রে যখন বসে থাকে, সে-ও এই পুরুষের কাছ থেকে সেরকম এক উষ্ণতা পায় ওই সময়টুকুতে। সে যেভাবে আরাম করে চেয়ারে বিশ্রাম নেয়, হেঁটে ঘরে ঢোকে বা দীর্ঘ পদক্ষেপে অন্য ঘরে যাওয়া-আসা করে... এসব কিছু মিলিয়েই সে তার স্বামীকে ভালোবাসে। ওর দিকে শান্ত ও ঘন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে কিংবা তার মুখের মজার ভঙ্গী করে, এমনকি সে যখন হুইস্কির গ্লাসটা নিয়ে ব্যস্ত থাকে-- সেটাও সে ভালোবাসে। 

“খুব ক্লান্ত লাগছে না”? জিজ্ঞেস করলো সে। 

“হ্যাঁ। তা লাগছে বটে”... এটা বলতে বলতেই একটা অদ্ভুত কাজ করলো লোকটি। বেসিনের কাছে এগিয়ে গিয়ে হাতে থাকা গ্লাসের মধ্যে যে অর্ধেকটা পানীয় ছিল সেটাফেলে দিলো। সে অবশ্য তাকিয়ে দেখেনি। কিন্তু বেসিনের মধ্যে বরফ পড়ার আওয়াজ শুনে বুঝতে পারলো। লোকটি বেশ উপর থেকে গ্লাস উপুড় করে পানীয় ফেলে দিয়েছিল। 

সে আবার এসে হেলান দিয়ে বসলো চেয়ারে। মুহূর্তপরে উঠে আবার নতুন করে নিজের জন্য আরেকটি পানীয় বানাতে লাগলো। 

এটা দেখে মেয়েটি লাফ দিয়ে উঠে প্রায় চেঁচিয়ে বলে উঠলো, “আমি বানিয়ে দিচ্ছি”। 

“তুমি বসো”। 

পানীয় নিয়ে ফিরে আসার পরে মেয়েটি দেখলো, সে খুব কড়া করে হুইস্কি নিয়েছে। পানীয়টা গাঢ় হলদেটে রঙের দেখাচ্ছে। গ্লাসের উপরের দিকে তেলের মতো কিছু একটা ভাসতে দেখতে পেলো সে। খুবই কড়া একটা পানীয় নিয়ে বসেছিল ওর স্বামী। 

“তোমার স্লিপারটা আমি একটু নিতে পারি”? সে বললো। 

“না”। 

সে বলতে শুরু করলো, “এটা মোটেও উচিত কাজ নয়, জানো তো; তোমার মতো একজন অভিজ্ঞ পুলিশ অফিসারকে ওরা সারাদিন ধরে ঘোরাঘুরির কাজে ব্যস্ত রাখে”! 

কোনো উত্তর দিলো না লোকটি। তাই সে আবার মাথা নিচু করে সুঁচিকাজে মন দিল। কিন্তু মুখ না তুলেই, গ্লাসের ভেতরের বরফ-টুকরোর নাড়চাড়ার শব্দে সে বুঝতে পারছিল, একটু পরপর তার স্বামী চুমুক দিচ্ছে পানীয়তে। 

এবার সে বললো, “বাবু, তোমাকে কিছু পনির এনে দিই? আজ বৃহস্পতিবার বলে আমি কিন্তু ঘরে কিছুই রান্নাবান্না করিনি”। 

“না”। 

“তাহলে এক কাজ করি। তোমার যদি খুব বেশি ক্লান্ত লাগে, বাইরে যেতে না চাও, তাহলে ঘরেই আমি রান্না সেরে ফেলি। ফ্রিজারে মাংস আর অন্যান্য সবকিছুই আছে। তোমাকে এই চেয়ার থেকে উঠে গিয়েও খেতে হবে না”। 

সে স্মিত হেসে, মাথাটা নেড়ে অপেক্ষা করতে লাগলো তার উত্তরের জন্য। কিন্তু সে কিছুই বললো না। 

“আচ্ছা, তাহলে আমি বরং কিছু ক্র্যাকার্স আর মাখন দেই তোমাকে”? 

“না, আমি ওসব কিছুই লাগবে না আমার”। লোকটা এবার উত্তর দিলো। 

একটা অস্বস্তি নিয়ে নিজের চেয়ারটায় বসে সে বড় বড় চোখে তাকিয়ে থাকলো তার দিকে। বললো, “কিন্তু তোমাকে তো কিছু খেতে হবে। আমি রান্না করে ফেলি। এরপর তুমি খাবে, কি খাবে না, তোমার ইচ্ছে”। 

সে তার সেলাইটি টেবিলের ওপরে রেখে রসুইঘরে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালো। 

“বসো তো তুমি! কিছু সময়ের জন্য চুপ করে বসো”। লোকটি তাকে নির্দেশের স্বরে বললো। 

তখন পর্যন্তও সে ভয় পায়নি। লোকটি আবারো বললো, “বলছি না, তোমাকে বসতে! বসো”। 

চেয়ারটাতে বসে বড় বড় চোখ দিয়ে সে তার স্বামীর দিকেই তাকিয়ে থাকলো পুরোটা সময়। লোকটি তার গ্লাসের পানীয়  শেষ করে বিষণ্ণ চোখে খালি গ্লাসটির দিকে কী যেন দেখলো। 

“শোনো, তোমাকে কিছু জরুরী কথা বলার আছে”। বললো লোকটি। 

“কী? কী ব্যাপার গো”? 

লোকটি যেন সেই মুহূর্তে একেবারেই আবেগশূন্য। মাথাটা এমনভাবে নিচু করলো যে, ল্যাম্পের আলো তার মুখের উপরের দিকটায় পড়লো। চিবুক আর মুখের কাছটা অন্ধকারের ছায়ায় ঢেকে গেল। সে খেয়াল করলো, তার স্বামীর বাম চোখের কোণটায় মাসলগুলো একটু একটু কাঁপছে। 

লোকটি বলতে শুরু করলো, “আমি আশঙ্কা করছি, এটা তোমার জন্য একটা বিশাল ধাক্কা হবে। তবে সবদিক চিন্তা করে আমার মনে হলো, যেটা ঘটছে, তা তোমাকে জানিয়ে দেয়াটাই উচিত হবে। নইলে আরো দেরি হয়ে গেলে তুমি হয়তো আরো বেশি দোষারোপ করবে আমাকে”। 

যা বলার ছিল, তা পুরোটাই বললো লোকটি। খুব বেশি হলে চার কিংবা পাঁচ মিনিট লাগলো জানাতে। সে ততক্ষণ শক্ত হয়ে বসে সবটা কথাই শুনলো। কেমন ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ওর মনে হচ্ছিল, তার উচ্চারিত প্রতিটা শব্দের সাথে সাথে একটু একটু করে দূরে সরে যাচ্ছে সে। 

“তো, এই হলো ঘটনা। আমি জানি, এটা শোনবার জন্য তোমার পক্ষে এটা উপযুক্ত সময় নয়। কিন্তু এর চেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত আর কিছু পেলাম না। চিন্তা কোরো না তুমি। টাকা-পয়সা সব আমি মিটিয়ে দেবো আর তোমাকে এই সময়ে দেখাশোনার জন্য একজন কেয়ারগিভারও ঠিক করে দেবো। এরপরে এটা নিয়ে আর কোনো ধোঁয়াশা থাকবে না বলেই মনে করি আমি। তুমিও এটা নিয়ে কোনো ঝামেলা করো, আমি তা চাই না। আর সেটা আমার কাজের জন্যেও খুব একটা ভালো হবে না”। 

সব শোনার প্রাথমিক ধাক্কাটা তার পক্ষে হজম করা খুব কষ্টকর ছিল। এতক্ষণ সে কিছু শুনেছে, সেটা ভুলে যেতে চাইলো। তার মনে হচ্ছিলো, তার স্বামী এতক্ষণ তাকে কিছু বলেইনি, সে হয়তো পুরোটা নিজের কল্পনায় ভাবছে। এমনও ভাবছে, সে তার নিজের কাজে এমনই ব্যস্ত ছিল যে, সে এতক্ষণ কিছু শোনেইনি। এ সবই সে নিজেকে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য নিজের মতো করে সাজিয়ে নিচ্ছিলো। 

শান্তস্বরে বললো, “আমি রাতের খাবারটা তৈরি করতে যাই”। এবার আর লোকটি তাকে যেতে বারণ করলো না। 

যখন সে হেঁটে যাচ্ছিলো, মনে হচ্ছিলো তার পায়ের পাতা মেঝে স্পর্শ করছে না। এর বাইরে আর কিছুই বোধ হচ্ছিলো না তার, শুধু মাথাটা সামান্য ঘোরা আর বমি-বমি লাগা ছাড়া। সবই কেমন নিজ থেকেই যেন ঘটছিল... সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসা, আলো জ্বালানো, ডিপ ফ্রিজ খোলা, সবকিছু। এরপর কেবিনেটে হাতের সামনে যেটাই পেল বের করলো সে। তাকিয়ে দেখলো সেটা কাগজে মোড়ানো একটা কিছু, মোড়ানো কাগজটা খুলে আবারো দেখলো এটা কী। 

ভেড়ার একটা পা ছিল সেটি! 

অর্থাৎ রাতের খাবারে ভেড়ার পা-ই রান্না করে তারা খাবে। সে আবারো উপরে উঠে এলো, ভেড়ার পায়ের চিকন দিকটা দু’হাতে ধরেই উপরতলায় এলো। লিভিংরুমে এসে দেখলো, তার স্বামী জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে কিছু দেখছে। তার পেছনদিকটা দেখতে পেল সে। এবার সে থামলো। 

ওর পায়ের আওয়াজ পেয়ে স্বামীটি মুখ না ঘুরিয়ে বলে উঠলো,  "দোহাই লাগে, আমার জন্য রাতের খাবার বানিয়ো না। এখন বাইরে যাবো আমি”। 

ঠিক সেই মুহূর্তে সে একটুও না থেমে তার পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো, হাতে ধরা ভেড়ার পা-টি যতটা পারলো উপরে তুললো এবং গায়ে যত জোর আছে তা দিয়ে স্বামীর ঘাড়ে আঘাত করলো। 

এমন জোরে আঘাত করলো যেন সেটা একটি লোহার ডান্ডা! 

এক পা পিছিয়ে এলো সে, অপেক্ষা করতে থাকলো। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, লোকটি চার-পাঁচ সেকেন্ড কিন্তু দাঁড়িয়েই রইলো, তারপরে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে গেল কার্পেটের ওপরে। 

ঘটনার আকস্মিকতা আর ভয়াবহতা তাকে স্তব্ধ করে দিলো মুহূর্তের জন্যে। ছোট টেবিলটা উলটে যাওয়ার শব্দে সে বেরিয়ে এলো তার প্রথম মানসিক ধাক্কা থেকে। নিজের মধ্যে ফিরলো ক্রমশ। কেমন শীত-শীত করতে লাগলো তার। স্বামীর মৃতদেহটির দিকে চোখ ছোট করে খানিকক্ষণ দেখলোও...কিন্তু ততক্ষণ পর্যন্ত তার হাতে ধরাই ছিল ভেড়ার পায়ের টুকরোটা। 

“আমি মেরে ফেলেছি ওকে”। নিশ্চিত স্বরে নিজেকেই বললো সে। 

কেমন একটা অন্যরকম ভাবনা হচ্ছিলো তার মধ্যে, মনের ভেতরটাও অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গেল। পরবর্তী ভাবনাগুলো সে ভাবতে শুরু করলো দ্রুততার সাথে। একজন গোয়েন্দা পুলিশের স্ত্রী হিসেবে সে জানে এই খুনের শাস্তি কী হতে পারে! ঠিক আছে, কোনো সমস্যা নয়, এটা এখন আর আলাদা করে কোনো চাপ তৈরি করবে না তার জন্য। বরং একটা স্বস্তি! আচ্ছা, গর্ভবতী নারীদের জন্যে খুনের বিচারের শাস্তি কেমন হয়? আদালত কি খুনী মায়ের সাথে বাচ্চাটাকেও মেরে ফেলে? নাকি দশ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করে তারপর শাস্তি কার্যকর করে? 

মেরি মেলোনির এই বিষয়ে কোনো ধারণা ছিল না। তাই বলে সে তো কোনো ঝুঁকি নিতে পারে না! 

রান্নাঘরে ফিরে এসে ভেড়ার পা-টি একটা প্যানে বসিয়ে বেশি তাপে ওভেনটি চালু করে দিল। ভেতরে সেটি রান্না হতে থাকলো। এরপর সে উপরে উঠে এলো আবার। শোয়ার ঘরে ড্রেসিং টেবিলটার সামনে বসে চুলটা বাঁধলো উঁচু করে, গালে একটু পাউডারের পাফও বুলিয়ে নিল। আয়নার দিকে তাকিয়ে সে এবার চেষ্টা করলো হাসতে। একটু কেমন অদ্ভুত দেখালো সেই হাসিটা। সে আবারো একটু হাসতে চেষ্টা করলো। 

“হ্যালো, স্যাম” একটু জোরেই সে বললো। যদিও গলার স্বরটা বেশ অদ্ভুত শোনালো নিজের কানেই। 

“আমি কয়েকটা আলু চাই, আর হ্যাঁ, মটরশুটির একটা টিনও দিয়ো আমাকে”। 

এবার ঠিক আছে। হাসি এবং গলার স্বরটা আগের চেয়ে অনেক স্বাভাবিক শোনাচ্ছে। এটার জন্য তাকে কয়েকবার আয়নার সামনে মহড়াও দিতে হলো। এবার সে কোটটা নিয়ে দৌড়ে নিচে নেমে এলো এবং পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে, বাগান পেরিয়ে পৌঁছে গেল বাসার ওপারের গ্রোসারিতে। 

এখনো ছ’টাও বাজেনি, কিন্তু গ্রোসারির ভেতরে আলোগুলো জ্বলছিল। 

“কেমন আছো স্যাম” সে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বললো কাউন্টারের ওপাশে দাঁড়ানো লোকটিকে। 

“ আরে মিসেস মেলোনি যে!, শুভ সন্ধ্যা। আমি ভালো, তুমি কেমন আছো”? 

“আমাকে কয়েকটা আলু দাও, আর সাথে একটা মটরশুটির টিনও দিয়ো”। 
 
লোকটি পেছনে ফিরে মটরশুটির তাকের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। 

“বৃহস্পতিবারে আমরা সাধারণত বাইরেই যাই খেতে। কিন্তু আজ প্যাটরিকের খুব ক্লান্ত লাগছে, জানালো আজ আর ও বাইরে যেতে চায় না। ঘরেই রাতের খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। এদিকে আবার রান্নাঘরের শেলফে সব্জিও নেই”। সে বলতে থাকলো। 

“মাংসও কি লাগবে তোমার, মিসেস মেলোনি”? 

“না, না, ধন্যবাদ। ফ্রিজারে খুব ভালো একটা ভেড়ার পা রাখা আছে”। 

“ওহ”। 

“ফ্রিজার থেকে বের করে রাঁধলে ঠিক কেমন হয়, আমি খুব বেশি জানি না। তবু চেষ্টা করবো। এটা কি ভালো হবে তোমার কী মনে হয়”? 

“খুব একটা পার্থক্য কিছু হবে বলে মনে হয় না। তুমি কি ইডাহো আলু নিতে আগ্রহী”? গ্রোসারির লোকটি বললো। 

“ওহ, আচ্ছা, দুটো দিতে পারো”। 

“আর কিছু চাও”? লোকটি মাথা নেড়ে খুব মিষ্টি করে জানতে চাইলো, “খাবারের পরের জন্য কিছু কি নেবে ভেবেছো”? 

“আচ্ছা, তুমি ভেবে কিছু বলো, কী নেয়া যায়”? 

দোকানের তাকের দিকে চোখ ঘুরিয়ে দেখে সে বললো, “বড়ো এক টুকরো চিজ-কেক নিতে পারো। আমার মনে হয় এটা ভালো হবে”। 

“একদম ঠিক বলেছো। চিজ-কেক ও খেতে খুব ভালোবেসে”। 

সবকিছু প্যাকেট করার পরে বিল চুকিয়ে দিয়ে উজ্জ্বল এক হাসি দিয়ে সে বললো, “অনেক ধন্যবাদ, স্যাম। আসি, শুভরাত্রি”। 

দোকানের লোকটিও উত্তরে বললো, “তোমাকেও ধন্যবাদ, মিসেস মেলোনি, আর শুভরাত্রি”। 

দোকান থেকে বেরিয়ে সে এবার নিজেকে বলতে থাকলো, এখন তাকে কী কী করতে হবে। তাকে ঘরে যেতে হবে, সেখানে তার স্বামী ক্লান্ত হয়ে অপেক্ষা করছে। ভালো করে আজ তাকে রান্না করে স্বামীকে খেতে দিতে হবে। ঘরে গিয়ে সে কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা, দুঃখের বা আনন্দের কিছু কি দেখবে! ওরকম কিছু দেখলে সে কি ভয় পেয়ে যাবে? মিসেস মেলোনি শুধু সবজি কিনে ঘরে ফিরছে, বৃহস্পতিবারের রাতের খাবারটা তৈরী করতে হবে বলে। 

এভাবেই পরের ঘটনাগুলো সাজিয়ে নিয়ে নিজেকে ভেতরে ভেতরে প্রস্তুত করলো। এমন কিছুই অস্বাভাবিক আচরণ সে করতে পারবে না, যেন সবই স্বাভাবিক আছে; কিছুই ঘটেনি। আলাদা করে অভিনয় করার কোনো প্রয়োজন নেই। 

পেছনের দরজা দিয়ে সে ঢুকলো ঘরে, হাসিহাসি মুখে গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে। 

“ শুনছো, প্যাট্রিক। কোথায় তুমি? কেমন আছো”? 

হাতের পার্সটা টেবিলের ওপরে রেখে সে লিভিংরুমের ভেতরে তাকিয়ে দেখলো, তার স্বামী মেঝেতে পড়ে আছে; পা দুটো একসাথে জোড়া লাগানো আর একটা হাত ভাঁজ করে পিঠের পেছনে ঢোকানো। এটা দেখা সত্যিই খুব বেদনার ছিল। তার প্রতি পুরনো প্রেম, ভালোবাসা সবই যেন মেলোনির বুকে ফিরে এলো মুহূর্তেই। সে দৌড়ে গিয়ে তার পাশে গেল আর চিৎকার দিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। এখানে সবই তার ভেতর থেকে এলো; কিছুই অভিনয় করতে হলো না। 

এর কয়েক মিনিট পরে খানিকটা স্থির হলো সে। উঠে ফোনের কাছে গিয়ে ফোন করলো পুলিশ স্টেশনে; ফোন নাম্বার তার জানাই ছিল। ওপাশ থেকে যখন একজন পুলিশ অফিসার ফোন ধরলো, সে বলতে থাকলো, “তাড়াতাড়ি এসো, যত তাড়াতাড়ি পারো। এখানে প্যাট্রিক মারা গেছে”! 

“কে কথা বলছো”? 

“মেলোনি। আমি প্যাট্রিকের স্ত্রী। মিসেস মেলোনি কথা বলছি”। 

“তুমি বলছো তুমি! প্যাট্রিক মেলোনি মারা গেছে”? 

“আমার সেরকমই মনে হচ্ছে”। সে কান্নাকান্না কণ্ঠে বললো, “সে মেঝের ওপরে পড়ে আছে; আর আমার মনে হচ্ছে সে মৃত”। 

“আমরা এখনই পৌঁছাচ্ছি”। অফিসারটি বললো। 

পুলিশের গাড়িটি চলে এলো খুবই তাড়াতাড়ি আর সে দরজা খুলে দিতেই ভেতরে ঢুকলো দু’জন পুলিশ অফিসার। দুজনকেই সে চিনতো আগে থেকে, স্বামীর চাকরির সুবাদে এখানের পুলিশ বিভাগের সবাইকেই সে চেনে। তারা ঢুকতেই সে পড়ে যাচ্ছিলো। কোনোরকমে একটা চেয়ারে গিয়ে বসলো। ও ম্যালি নামের একজন পুলিশ অফিসার হাঁটু গেড়ে বসে ওর স্বামীর মৃতদেহটা দেখতে শুরু করলো। 

“ও কি মারা গেছে”? 

“তাই-ই তো মনে হচ্ছে। ঠিক কী ঘটেছিল”? 

সে কাঁদতে কাঁদতে তার পুরো গল্পটাই বললো। কীভাবে মুদি দোকান থেকে ঘরে ফিরে স্বামীকে এরকম পড়ে থাকতে দেখলো, বিস্তারিত বললো সে পুলিশদেরকে। সার্জেন্ট নুনান মৃতদেহটির মাথার নিচে কিছুটা রক্ত দেখতে পেল। মিস্টার ম্যালিকে ডেকে সেটা দেখালো; ম্যালি তখন ফোনে কথা বলতে উঠে গিয়েছিল সেখান থেকে। 

এর কিছুক্ষণের মধ্যেই আরো মানুষজন আসা শুরু করলো বাড়িটাতে। একজন ডাক্তার, দুজন গোয়েন্দা-যাদের একজনকে সে নামে চিনতো। এরপর এলো একজন ফটোগ্রাফার আর একজন ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞ। একটা গুঞ্জন শুরু হয়ে গেল ঘরের মধ্যে। এ ওর সাথে ফিসফিস করে কথা বলছে। গোয়েন্দা দুজন তাকে অনবরত প্রশ্ন করতে থাকলো। তবে সকলেই খুব সহানুভুতিশীল ছিল তার প্রতি। এবার সে ঘটনার বিবরণ এক্কেবারে শুরু থেকেই দেয়া শুরু করলো। সেই সেলাই করা, স্বামীর ঘরে ফিরে আসা, খুব ক্লান্ত লাগায় সপ্তাহান্তের ডিনারে বাইরে যেতে আগ্রহী না হওয়া, বাসার সামনের দোকানে যাওয়া আর ফিরে এসে স্বামীকে এভাবে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখার সব ঘটনাই সে বললো। 

“কোন্‌ দোকানটায় গিয়েছিলে তুমি”? একজন গোয়েন্দা জিজ্ঞেস করে বসলো। 

সে উত্তর দেয়ামাত্রই গোয়েন্দাটি ঘুরে আরেকজনকে কী যেন বললো, আর তক্ষুণি অন্যজন ছুটে বেরিয়ে গেল বাইরে। পনেরো মিনিটের মধ্যেই সে ফিরে এলো, হাতে কিছু লেখা একটা কাগজ নিয়ে। ঘরের মধ্যে আবার সেই গুঞ্জন শোনা গেল। সে কাঁদতেই কাঁদতেই ওদের ফিসফিসানির কিছুটা শুনতে পেল... “সে স্বাভাবিক ছিল... হাসিখুশি ছিল... ক্লান্ত স্বামীর রাতে খাওয়ার জন্য ভালো কিছু রাঁধবে বলেছিল... মটরশুটি... পনির... না, এটা সে করতেই পারে না...”! 

খানিকক্ষণ পরে ডাক্তার আর ফটোগ্রাফার চলে যেতেই আরো দুজন লোক এলো। তারা স্ট্রেচারে করে বাইরে নিয়ে গেল তার স্বামীর মৃতদেহটাকে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞ লোকটিও চলে গেল। রয়ে গেল শুধু দুজন গোয়েন্দা আর পুলিশ অফিসার দুজন। তারা সকলেই ওর সাথে দারুণ সদয় আচরণ করছিল। মিস্টার নুনান তখন বললেনও, সে চাইলে রাতটাতে তার বোনের ওখানে গিয়ে থাকতে পারে। এমন কি তার স্ত্রীর কাছে গিয়ে থাকলেও সে ওকে দেখাশোনা করতে পারবে আজকের রাতটা। 

না। বললো, সে এই বাড়িটা ছেড়ে এক পা-ও কোথাও যেতে চায় না। সে আরো বললো, যতক্ষণ শরীরটা ভালো না লাগছে সে কি এখানে থাকতে পারবে? এতে কি ওদের কাজে কোনো সমস্যা হবে? শরীরটা সত্যিই ভালো লাগছিল না ওর। 

শুনে মিস্টার নুনান ওকে অনুরোধ করলো, “তাহলে তুমি একটু শুয়ে বিশ্রাম নাও বরং”। 

না। সে ওখানে ওই চেয়ারটাতে বসে থাকলে স্বস্তি পাচ্ছে বললো। যদি তার একটু ভালো লাগে শরীরটা, তখন না হয় উঠে যাবে। 

এরপরে পুলিশ অফিসার দুজন সেখান থেকে উঠে ওদের কাজে মন দিলো। ওর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বলে গেল, তার স্বামীকে খুব সম্ভবত খুব ভারী কোনো ধাতব বস্তু দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করা হয়েছে। তাই সেখানে রক্ত জমে ছিল। ওরা এবার বাড়িটার ভেতরে বাইরে একবার ঘুরে দেখতে চায়। ঘাতক সেই অস্ত্রটি সাথে করে নিয়ে গেছে, নাকি কোথাও ফেলে গেছে, সেটা একবার খুঁজে দেখা দরকার! 

“অনেকদিন ধরেই আমাদের মধ্যে খুব প্রচলিত একটা ধারণা আছে, অস্ত্রটি পেলেই তুমি হত্যাকারীকে পেয়ে যাবে”। বললো পুলিশ অফিসারটি। 

এরপরেই একজন অফিসার এসে ওর পাশে বসে কোমলস্বরে জানতে চাইলো, “আচ্ছা, তোমাদের ঘরে এমন কিছু ভারী বস্তু আছে, যা দিয়ে আঘাত করা যায় এভাবে? মনে করে দেখো তো কোনো বড়ো সাঁড়াশি! কোনো বড়ো ফুলদানি”? 

“না, আমাদের ঘরে লোহার ফুলদানি নেই”। 

“তাহলে কোনো বড়ো সাঁড়াশি”? 

সে চিন্তা করে বললো, যে, এরকম কোনো সাঁড়াশির কথা সে মনে করতে পারছে না। তবে গ্যারাজে থাকলেও থাকতে পারে। 

তাদের খোঁজ চলতে লাগলো। অন্য একজন অফিসার বাইরে, লনে, সবখানে ঘুরে খোঁজার চেষ্টা করছিল। তার হাতের টর্চ লাইটের আলোও ঘরের পর্দায় এসে পড়ছিল বাইরে থেকে। এভাবে অনেকটা সময় কেটে গেল। সে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো, প্রায় রাত ন’টা বাজে। চারটা পুলিশ অফিসার সকলকে দেখেই কেমন ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। তারা বিরক্ত হচ্ছে, এমনও মনে হচ্ছিলো। 

“জ্যাক, আমাকে একটা ড্রিঙ্কস বানিয়ে দিতে পারবে?” সে বললো। 

“নিশ্চয়ই পারবো। তুমি কি হুইস্কি চাইছো?” 

“হ্যাঁ। কিন্তু অল্প করে। এটা পান করলে বোধহয় আমার একটু ভালো লাগবে”। 

অফিসারটি তার হাতে গ্লাসটি দিলো। 

“তুমি নিজেও একটা নিতে পারো। অনেকক্ষণ ধরে কাজ করছো, ক্লান্ত লাগছে নিশ্চয়ই”। 

“এটার অনুমতি নেই আমাদের। তারপরেও খুব অল্প করে নিতে পারি আমি”। 

এর ঠিক পরপরই একে একে অন্যরাও ঘরে ফিরলো আর সবাই অল্প অল্প করে হুইস্কি নিল। যদিও তারা একটু অস্বস্তিবোধ করছিল, তাও তারা পানীয় নিল। এদিক ওদিক দাঁড়িয়ে তারা ভাবতে থাকলো, ঠিক কী বলে ওকে সমবেদনা জানাবে। 

সার্জেন্ট নুনান রান্নাঘরে গিয়েছিল কোনো কাজে, ফিরে এসে বললো, “মিস মেলোনি, তোমার চুলাটা জ্বলছে আর ভেতরে বোধহয় কোনো মাংস রান্না হচ্ছে”। 

“ওহ! দেখো কী অবস্থা আমার! ভুলেই গেছি। ওটা চুলায় আছে”! 

“আমি বরং গিয়ে চুলাটা বন্ধ করে দিই”? 

“অনেক ধন্যবাদ। তুমি বন্ধ করে দাও”। 

সার্জেন্ট চুলা বন্ধ করে যখন দ্বিতীয়বার ঘরে ফিরলো, মিস মেলোনি জলেভরা দুটো চোখ নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললো, “জ্যাক”! 

“হ্যাঁ, বলো”। 

“তুমি আর অন্য সকলে মিলে আমাকে ছোট একটা সাহায্য করতে পারো”? 

“আমরা চেষ্টা করবো করতে”। 

“তোমরা সকলেই প্যাট্রিকের ভালো বন্ধু। তোমরা এখানে এসেছো ওর হত্যাকারীকে ধরার কাজে। কত ঘন্টা ধরে তোমরা কাজ করছো। এতক্ষণে অনেক ক্লান্ত হয়ে গেছ। আর রাতের খাবারের সময়টাও পার হয়ে গেল অনেক আগে। এভাবে খালিমুখে তোমরা যদি চলে যাও এখান থেকে, আমি জানি, প্যাট্রিক আমাকে কখনো ক্ষমা করবে না। চাইছি, ওর আত্মা শান্তি পাক। একটা কথা বলি! তোমরা ভেড়ার রোস্টটা খেয়ে যাও। রান্না তো হয়েই গেছে”। 

“না, না। এটা আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারি না”। 

“প্লিজ” সে অনুনয়ের সাথে বললো, “আমি এই মুহূর্তে নিজে খেতে পারবো না হয়তো। একটু আগেই এমন এক দুর্ঘটনা ঘটেছে, আমার পক্ষে এখন সম্ভব নয় খাওয়া। কিন্তু তোমরা খেলে কিছু হবে না। অল্প সময়ের মধ্যেই খেয়ে নিতে পারবে। এরপর না হয় তোমরা আবার তোমাদের কাজ শুরু করবে”। 

তারা চারজনই স্পষ্টতই একটু দ্বিধায় পড়ে গেল। কিন্তু যেহেতু সকলেই খুব ক্ষুধার্ত ছিল, ওরা নিজেরাই রান্নাঘরে গিয়ে ওভেন থেকে ভেড়ার পা-টা বের করে খাওয়ার বন্দোবস্ত করতে শুরু করলো। সে কিন্তু উঠলো না, বসেই থাকলো চেয়ারে। বসেই ওদের নিজেদের আলাপ হালকা করে ওর কানে আসছিল। ওদের মুখের মধ্যে মাংস দিয়ে ভর্তি থাকায় কথাগুলো খানিকটা অস্পষ্টভাবে ভেসে আসছিল। 

“চার্লি, আরেকটু নাও তুমি”। 

“না। পুরোটা শেষ করা ঠিক হবে না”। 

“সে আমাদেরকে পুরোটাই খেতে বলেছে। এটাই করি, এতে বরং ওর সাহায্যই হবে”। 

“তাহলে ঠিক আছে। আমাকে দাও আরেকটু”। 

“যে অস্ত্রটা দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, সেটা খুব ভারী কিছু হবে। ডাক্তার বললো, প্যাট্রিকের মাথা্র খুলিটা নাকি টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। খুব বড়ো একটা স্লেজ হ্যামার হবে হয়তো”। 

“এটা খুঁজে পাওয়া বরং আমাদের জন্য সহজই হবে”। 

“আমি ঠিক এটাই বলতে চাইছিলাম”। 

“এত ভারী একটা জিনিস কেউ বেশিদূরে সাথে করে নেবে না। কাজ শেষে ফেলে রেখেই যাবে”। একজন বললো। 

“আমার মনে হয়, বাড়ির সীমানার মধ্যে কোথাও আছে”। 

“এমনও হতে পারে, আমাদের নাকের ডগাতেই আছে। তুমি কি বলো, জ্যাক”? 

ওদের আলাপ শুনে ঠিক সেই মুহূর্তে পাশের ঘরে মুখ টিপে হাসতে থাকলো মিস মেলোনি। 
মূল গল্প: Lamb to the Slaughter by Roald Dahl



অনুবাদক পরিচিতি
ফারহানা আনন্দময়ী
বাংলাদেশের চট্টগ্রামে থাকেন। 
কবি। অনুবাদক। গল্পকার। 











একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ