গল্পপাঠ।। আশ্বিন ১৪২২ বঙ্গাব্দ।। সেপ্টেম্বর ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ।। সংখ্যা। ৩৪





বাংলা দৈনিক পত্রিকাগুলোতে যে সব লেখাপত্র প্রকাশিত হয় সেগুলোর অধিকাংশই নিম্নমানের। সাধারণত পত্রিকার নীতিনির্ধারক, সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক এইসব লেখাগুলো নানা উদ্দেশ্য থেকে প্রকাশ করে থাকেন। যারা তাদেরকে তোয়াজ করতে পারেন, নানা উপঢৌকন দিতে পারেন, তাদের ডিজাইন মতো লিখতে পারেন বা লিখতে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন তাদের লেখাই এইসব পত্রিকায় সাহিত্যের নামে প্রকাশিত হয়। এছাড়া অলেখক ক্ষমতাবান রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, আমলা, মাস্তান পেশীবাজদের অলেখাও ছাপা করা হয়। আর অবসরপ্রাপ্ত কিছু লোকজন যারা একসময় লেখালেখিতে ছিলেন, লেখালেখির চেষ্টা করেছেন বা কয়েকটি বইপত্র প্রকাশিত হয়ে স্বেচ্ছানির্বাসনে যাওয়াটাই যাদের অনিবার্য  ছিল, তাদেরকেও নানা উৎসবে পার্বনে এইসব সাময়িকীতে লিখতে দেখা যায়।

এইসব পত্র-পত্রিকা  দুর্বল ত্রুটিপূর্ণ তরল বানিজ্যিক ও চটিলেখাগুলোকে এসময়ের সৃষ্টিশীল মূলধারা হিসেবে প্রচার করে থাকেন। এবং অলেখকদের সেরা লেখক হিসেবে/ শক্তিশালী লেখক হিসেবে ধারাবাহিকভাবে ঘোষণা করে থাকেন। এদের কাউকে কাউকে আবার বর্ষসেরা লেখক হিসেবে পুরষ্কৃত করা হয়। তাদের বই নিয়ে স্তুতিবাক্য লেখা হয়। ফলে পাঠক এবং নবীন লেখকরা পত্র-পত্রিকা থেকে এ সময়ের লেখালেখি বিষয়ে ভ্রান্ত ধারণা পাচ্ছেন। দেশের ও বিদেশের সেরা লেখাগুলো নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করলেই এই আবর্জনা লেখাগুলোকে চি্নতে কষ্ট হয় না।

অধুনা ইন্টারনেটের কল্যাণে পৃথিবীর সেরা লেখাগুলো পড়ার সহজ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। পত্র-পত্রিকা নির্ভর সাহিত্যের কার্যকারীতা কমে গেছে। পঠন-পাঠনের সহজলভ্য নতুন নতুন উইন্ডো খুলে যাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে দিয়ে নতুন লেখার অমিত সম্ভাবনা জেগেছে।  এই সম্ভাবনাকে ফলপ্রসূভাবে কাজে লাগানোই এ সময়ের লেখক-পাঠকের কাজ।


ভগীরথ মিশ্র জন্ম ভারতের মেদিনীপুরে,  লেখালেখি শুরু করেন সত্তরের দশকে। বাল্য-কৈশোরের গ্রামীণ দৃশ্যপট—স্মৃতির ভাণ্ডার তাঁর লেখার বিষয়—পটভূমি। তাঁর বহু গল্পের কেন্দ্রে সামন্ততান্ত্রিক গ্রাম, আদিবাসী মানুষজন, শাল-মহুয়ার জঙ্গল।

শোষণ মানুষের একটা স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। সেই প্রবৃত্তির তাড়নায় সবল দূর্বলকে শোষণ করে। মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পুরো সময়কালটি ধারাবাহিক নিরবচ্ছিন্ন শোষণের ইতিহাস। ভগীরথ মিশ্রের রাবণ গল্পে শোষনের এই স্বভাবজাত প্রবৃত্তিটি কঠিন নির্মমতার মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে। কাহিনী-বিন্যাস এবং ভাষার ব্যবহারে রাবণ গল্পটি একটি চিরায়ত গল্পের মর্যাদা পেয়েছে।

পড়ুন ভগীরথ মিশ্রের গল্প : রাবণ

হাসান আজিজুল হক আমাদের প্রধান লেখকদের মধ্যে একজন। তাঁর 'জননী' গল্পটিতে আমরা, 'সমাজ'কে দেখার একটি তীব্র সাইকোলজিক্যাল ভঙ্গি পেয়ে যাই। এই গল্পের প্রধান চরিত্র আয়েশা। ভদ্রলোকের বাড়ির কাজের মেয়ে কিশোরী আয়েশা। তার পেটে সন্তান আসে- বিয়ে হয়নি তার, তবুও আসে। আর এই সন্তান আসার ব্যাপারটাই আমাদেরকে বিপন্ন করে তোলে। আয়েশাদের গর্ভে মানবভ্রূণ আসে আবার একদিন হারিয়েও যায়। ভ্রূণেরা প্রমাণ করে দিয়ে যায়- তোমাদের সমাজ অসুস্থ, রুগ্‌ণ। জননী গল্পের সঙ্গে হাসান আজিজুল হকের 'নিজের দিকে ফিরে' শিরোনামক একটি গদ্যও জুড়ে দেয়া হল। কিছু লেখা পাঠকের জন্য এমন জরুরি হয়ে থাকে যে, জীবনে জলের যেমন প্রয়োজন, প্রয়োজন অক্সিজেনের, এই লেখাগুলিও তেমনি।




গল্পকারের প্রথম লেখা গল্প
অমর মিত্র'র প্রথম গল্প : মেলার দিকে ঘর

গল্পটি ১৯৭৪ সালের। এক বাবা তার কিশোরী কন্যাকে মেলা দেখাতে নিয়ে যাবে। সঙ্গে এনেছে কিছু চাল। একটা শাড়ি। আর কয়েকটি টাকা। ভাত রান্না হচ্ছে। চুলার পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে কিশোরী মেয়েটির ছোট ছোট ভাই বোন। পরদিন ভোর ভোর মেয়েটিকে নিয়ে বাবা হেঁটে বহু দূরের মেলার উদ্দেশ্যে রওনা করেছে।

যেতে যেতে তারা আদিগন্ত অনাবাদী ধানী জমি, বিশাল অশ্বত্থ গাছ, তালগাছ পার হয়। শাল গাছে ইলেকট্রিকের খুঁটি, বড় মন্দির, পোস্ট অফিস ছেড়ে তারা ওঠে ডিস্ট্রিক বোর্ডের রাস্তায়--কাঁসাই নদীর কাছে আসতেই দেখতে পেয়েছে কয়েকজন লোক একজন  মেয়েমানুষের মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছে। লোকগুলোর একজনের কাছ থেকে জানা যায়, অভাবে স্বভাব নষ্ট হয়ে আত্মহত্যা করেছে মেয়েমানুষটি।
যেতে যেতে একটি চায়ের দোকানের পাঁচটা মানুষ বাবা আর মেয়েটির সঙ্গে হাঁটতে শুরু করে। মেয়েটি বলে ওঠে, আর মেলায় যাবনি বাপ্‌ ঘরে নিই চল। বাবা নিরুত্তর। তারা হেঁটে চলে।
এ এক মহাদূর্ভিক্ষের গল্প। গল্পটি সেরকম কোনো আখ্যান নয়--এক অনন্ত দূঃখের মধ্যে যাত্রাপথের বিবরণী মাত্র। অসামান্য বুনট। সিনেমাটিক ভাষাভঙ্গী। এই গল্পটি দিয়ে গল্প লিখতে শুরু করেছিলেন কথাসাহিত্যিক অমর মিত্র তার গল্পের পথে যাত্রা। কালিঘাটের পটের মত তাঁর ধ্রুপদী নির্মাণ। এই গল্প শুধু বাংলাদেশ ভারতের গল্প নয়-- যে কোনো নিরন্ন দেশ-কাল ও মানুষের সত্যি গল্প হয়ে উঠেছে।
মূল ক্যামু
অনুবাদ : রওশন জামিল
বাংলা বানান নিয়ে নানা সংশয় আছে অনেকের। ভুল বানানে লেখা, শব্দের ভুল প্রয়োগ --অপপ্রয়োগ যে কোনো ভালো লেখাকেও দুর্বল করে ফেলে। গল্পপাঠের লেখকদের মধ্যেও বানানের ঝামেলা রয়েছে। আশা করা এই ধারাবাহিকটি থেকে গল্পপাঠের লেখক পাঠকগণ তাদের বানানের ভ্রান্তি দূর করার প্রয়াস নেবেন।


আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বলেছিলেন--যে লেখক মানুষকে যত সাহসের সঙ্গে তার টোটালিটিতে ধরবেন তিনিই তো পাঠককে তত বেশি ইন্সপায়ার করবেন মনে করি। লেখায় মানুষের সম্পূর্ণটুকু দেখতে চাই, সবকিছু। টোটাল ট্রুথের মুখোমুখি হতে চাই। ...কাউকে জাস্টিফাই করার দরকার নেই। যে যেমন সেই পারসপেকটিভে তাকে দেখাতে হবে। মানুষকে আমি যেমন দেখতে চাই সেটা বড় কথা নয় মানুষ কেমন আছে, সেটা বড়। সেখান থেকেই তার স্বপ্ন, তার সম্ভাবনা সবই দেখা যাবে। সমাজবিজ্ঞান, দর্শন বা মনস্তত্ত্ব মানুষকে যতটুকু দেখাতে পারে সাহিত্য তো আমি মনে করি আরেকটু এগিয়েই দেখাতে পারে।’ 

এই আখতারুজ্জামান ইলিয়াস প্রশ্ন করেছিলেন, বাংলা ছোট গল্প কী মরে যাছে? এই প্রশ্ন যে সময়ে তিনি করেছিলেন তখন প্রকাশ মাধ্যম হিসেবে ইন্টারনেট আসে নি।  মিডিয়া-মাফিয়ার কবলে পড়া ছাড়া লেখকদের অন্য কোনো উপায় ছিল না। এখন পরিস্থিতি বদলে যাওয়ার সুযোগ এসেছে। ফলে ইলিয়াসের প্রশ্নটির নতুন পরিপ্রেক্ষিত সৃষ্টি হয়েছে।
গল্পপাঠ ছোটপাঠের মরণ-বাঁচন নিয়ে এ সময়ের গল্পকারদের কাছে ইলিয়াসের প্রশ্নটি নতুন করে রেখেছে। এবারে গল্পকার মেহেদী উল্লাহর উত্তর প্রকাশিত হল।

সখী রঙ্গমালার পশ্চাদভূমি নোয়াখালী অঞ্চলের পালাগান ‘চৌধুরীর লড়াই’। সমতটের নামা-অনামা বহু কবি এ প্রেম ও সমরভিত্তিক গীত গেয়ে গেছেন যুগ যুগ ধরে। নিখাদ জনপ্রিয়তাই ছিল এর মূল চাবিকাঠি। বিপত্তিটা বাধে আমজনতার মহফিল ছেড়ে এটি যখন ছাপাখানা থেকে পুস্তকাকারে বেরোয়, তখন। তত দিনে ব্রিটিশরাজের অশ্লীলতা-নিরোধক ১৮৫৬ সালের ১৪ নম্বর আইন জারি হয়ে গেছে। এ দণ্ডবিধির কোপে পড়ে পালাগানের এক গ্রন্থকর্তা ও প্রকাশককে চল্লিশ চল্লিশ আশি টাকা জরিমানা দিয়ে বেরিয়ে আসতে হয়। পুস্তকের যাবতীয় কপি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। এর প্রায় ত্রিশ বছর পর, ভিন্ন সূত্র থেকে সংগৃহীত পালাগানটি ড. দীনেশচন্দ্র সেন পূর্ববঙ্গ গীতিকায় সংকলিত করেন।

তা ছাড়া চৌধুরীর লড়াই কবি-কল্পিত শুদ্ধ পালাগান নয়, খ্রিষ্টীয় অষ্টাদশ শতকের শেষার্ধের তৎকালীন ভুলুয়ার একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যা নোয়াখালী গেজেটিয়ার-এর কাগজের পাত ছাড়াও মানুষের কহন-কথায়, কিংবদন্তির গল্পগাছায় পল্লবিত হয়ে আছে।


 এ সময়ের গল্প

শামসুজ্জামান হীরা ব্যক্তিগত জীবনে বীর মুক্তিযোদ্ধা।  তিনি একজন কমিটেড গল্পকার। তাঁর আপস গল্পটি মুক্তিযুদ্ধ ও তার পরের সময়কার আখ্যান। গল্পের বয়নকারী এনজিওতে চাকরি করেন। বুড়ো হয়েছেন। তিনি একটি প্রজেক্ট পেপারে এক মন্ত্রীর রিকমেন্ডেশন আনতে গেছেন সচিবালয়ে। সিনিয়র সহকারী সচিব মন্ত্রীকে পছন্দ করেন না। কারণ তিনি রাজাকার ছিলেন। এই সিনিয়র সহকারী সচিবকে প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা অনুরোধ করছেন মন্ত্রীর রিকমেন্ডেশন এনে দেওয়ার জন্য।
একাত্তরে এক অপারেশনে রাজাকারের খাতায় নাম থাকায় মোফাক্কার নামে এক লোককে স্ত্রী সন্তান ও বুড়ি মায়ের সামনে থেকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলেছিলেন গল্পের বয়ানকারী। গল্পের শেষে জানা যায় সেদিনের মৃত লোকটিই এই সিনিয়র সহকারী সচিবের পিতা।

গল্পটির নির্মাণে অসামান্য মুন্সিয়ানা আছে। এরকম চমকের সার্থক ব্যবহার খুব বেশি এ সময়কালে দেখা যায় না।


কাজী লাবণ্য'র গল্প : আসিয়া

গল্পটি তালাক নিয়ে। গ্রামের দরিদ্র মানুষের গল্প। এ বিষয় নিয়ে অনেক গল্প আছে। সে দিক থেকে গল্পটি নতুন নয়। কিন্তু গল্পটির পরিবেশন ভঙ্গিটি নতুন। সহজ। স্বাভাবিক সুন্দর। একটি ঘটনা মেলোড্রামাটিক ট্রাজেডীতে পরিণত হতে গিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে ঘুরে দাঁড়ায়। সেদিক থেকে প্রচলিত গল্প থেকে সমকালীন গল্প হয়ে ওঠে।
কাজী লাবণ্যের গল্পে যে গ্রামের কথা বর্ণিত হয়েছে, যে মানুষের আখ্যান প্রকাশিত হয়েছে, তার মধ্যে ভান কম। তাঁর গল্পের বাঁশ ঝাড় প্রকৃতই বাঁশ ঝাড়। সেখানে পিঁপড়ে আছে। মশা আছে। তারা কামড়ায়। সে কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে তালাক দিয়ে বসে একজন কৃষি মজুর তার স্ত্রীকে।  যে কোনো পাঠকই এসবই চোখের সামনে দেখতে পান।



বোধিসত্ত্ব ভট্টাচার্য'র গল্প : 
যারা গাছ হয়ে যায়
এই গল্পটি লেখা হয়েছিল গেল বছর। কিন্তু এর মধ্যে কোথাও প্রকাশ করেননি বোধিসত্ত্ব। তাঁর মতে এটা ঠিক খবরের কাগজের গল্প নয়। কিঞ্চিৎ নিরীক্ষামূলক। এই প্রথম তিনি সরাসরি ওয়েব ম্যাগাজিনে প্রকাশ করলেন। পাঠক কিভাবে গলটি নেবেন সেটা নিয়ে গল্পকার চিন্তিত।
বোধিসত্ত্ব খুব স্বাদু গদ্য লেখেন। তার গল্পে যেমন গল্পের টানটান স্বাদ থাকে, ঠিক তেমনি ভাষায় একটি মাধুর্য থাকে।

অন্যধারার গল্পকার সুবিমল মিশ্র। তিনি প্রতিষ্ঠান বিরোধী লেখক হিসেবেও আলোচিত। তাঁর গল্প নিয়ে আলোচনা করেছেন এ সময়ের অন্যতম প্রধান কথাসাহিত্যিক অমর মিত্র। 
সুবিমল মিশ্রর গল্প নিয়ে আলোচনা : 

কেট চপিনের গল্প : এক ঘণ্টার গল্প
অনুবাদ ও আলোচনা : মোজাফ্‌ফর হোসেন


মোজাফ্ফর হোসেনের গল্প : খোয়াব

মোজাফফর হোসেন ছোট খাটো বিষয়ের মধ্য থেকে তাঁর আখ্যান বেছে নেন। তারপর নিজের মতো করে চরিত্র নির্মাণ করেন। কোনো বাড়তি কথা জুড়ে দেন না। সরাসরি গল্পই বলেন।
একই ধরনের আখ্যান নিয়ে হুমায়ুন আহমেদ গল্প লিখেছেন। সেখানে চরিত্ররা বেশি মাত্রায় কথা বলে। সংলাপ সেখানে গল্পকে গ্রাস করেছে। পাঠকের সময় নষ্ট করিয়েছেন। এভাবে সংলাপের আধিক্য না থাকলেও গল্পের কোনো ক্ষতি হত না। মোজাফফর এই ক্ষেত্রে অনেক পরিকল্পিত। পরিমিত। সংলাপ তাঁর গল্পের আখ্যানকে এগিয়ে নিয়ে যায়। অত্যাবশ্যকীয় হয়ে ওঠে।
 
মোস্তাক আহমাদ দীন'এর প্রবন্ধ : দেশভাগ, দেশ ভাগ নয়

সাতচল্লিশের দেশভাগ এ ভূখণ্ডের অপূরণীয় বেদনা সৃষ্টি করেছিল। সে সময়ে অসংখ মানুষ ভূখণ্ড হারিয়েছে, সহায় সম্পত্তি হারিয়ে নিঃশ্ব হয়ে গেছে, মানুষে মানুষে স্থায়ী ভেদরেখা টেনে দিয়েছে। এই বেদনার ভার আমাদের আরো কয়েক প্রজন্ম বয়ে বেড়ানো ছাড়া উপায় নেই।

দেশভাগ নিয়ে বাংলাদেশে খুব বেশি লেখালেখি হয়নি। ক্রমবর্ধান সাম্প্রদায়িকতা ও রক্ষণশীলতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রচার প্রপাগাণ্ডার কারণে তরুণদের মধ্যে দেশভাগ নিয়ে ভাবনার ক্ষেত্রে এক ধরনের গুপ্ত নিষেধাজ্ঞা জারী রয়েছে। এই ধারা ভেঙে  এ সময়কালেই কবি ও প্রাবন্ধিক মোস্তাক আহমাদ দীন দেশভাগের সাহিত্য নিয়ে এই প্রবন্ধটি লিখেছেন।  
ফোকাস : 'ঢোঁড়াই চরিতমানস'
সতীনাথ ভাদুড়ী'র 'ঢোঁড়াই চরিতমানস' বাংলা ভাষার গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস। কিন্তু এই উপন্যাস পাঠক পায়নি। পাঠক না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়েই কথাসাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর গদ্যে উইলিয়াম ফকনারের সঙ্গে সতীনাথকে মিলিয়ে দেখতে চেয়ে হয়ত আমাদের পাঠ-দৈন্য এবং নতুন একটি আশার জন্ম দিলেন। আকিমুন রহমান 'ঢোঁড়াই চরিতমানস'কেই অনেকটা ভেঙে সতীনাথকেই আবিষ্কারে নামলেন দক্ষ হাতে। লেখা দুটি এখানে পড়ুন--

১. সতীনাথ ভাদুড়ীকে নিয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের গদ্য :
পূর্ণিয়া জেলার উইলিয়াম ফকনার

২. সতীনাথ ভাদুড়ীকে নিয়ে আকিমুন রহমানের গদ্য :
নিম্নবর্গের মানুষের মহানায়ক ঢোঁড়াই


ইশরাত তানিয়া'র দুটি অনুগল্প : 
২. স্বপ্নকমলা








অনুবাদ গল্প
অনুবাদ : জাফর আলম

অনুবাদ : মনোজিৎকুমার দাস






ছুটির গল্প   

শিপা সুলতানা লিখেছেন প্রতিমা গড়ার স্মৃতিকথা। তাদের পাড়ায় বুড়ো পাল মশাই আসতেন। খড় মাটি দিয়ে দুর্গা প্রতিমা গড়তেন। আর পাড়ার ছেলেমেয়েরা অবাক হয়ে দেখত। সেকালে হিন্দু মুসলমানের ভেদটা ছিল না। সুন্দর সবার কাছে সুন্দরই ছিল।

এই সুন্দর হয়ে ওঠার গল্পটি শিপা সুলতানা নিরাভরণ ভাষায় লিখেছেন। তাঁর ভাষা স্বাদু। লাবণ্যময়। স্মৃতিচারণে সাধারণত ব্যক্তিগত আবেগ অনেক লেখাকে তরল করে ফেলে; সেটা শিপা সুলতানার লেখায় নেই। তার লেখার সংযমবোধ তাঁর পরিণত লেখার ক্ষমতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

গল্পপাঠ
কথাসাহিত্যের অন্তর্সূত্র
১ আশ্বিন ১৪২২ বঙ্গাব্দ। ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ। সংখ্যা ৩৪।

সম্পাদক : 
এমদাদ রহমান
মোমিনুল আজম

প্রকাশক :
কুলদা রায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ