মার্চ মাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর একান্নটি বছর কেটে গেল। স্বাধীনতা উত্তর অর্থনৈতিক অর্জন নিয়ে কথা বলা হয়েছে, একইসাথে মুক্তিযুদ্ধে যে সমস্ত চেতনা ও ধারণার উৎপত্তি হয়েছিল তার অবক্ষয় নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি এইখানে।
১৯৭৫ সনে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু ও জেলখানার চার নেতার নির্দয় হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি পৈশাচিক অধ্যায়। সেই অধ্যায় থেকে লেখকেরা নিজেদের বিযুক্ত করতে পারেননি, অনেকেই পরবর্তীকালে তাঁদের হৃদয়ের বিচলতা গল্পে, উপন্যাসে, কবিতায় তুলে ধরেছেন। এই সময়ে অন্যতম প্রতিবাদী প্রথম গল্প হিসেবে আমরা একটি গল্পকে খুঁজে পাই যেটির নাম হল ‘মৃতের আত্মহত্যা’। প্রকাশ হয়েছিল ১৯৭৭এর ৩-রা নভেম্বর সাহিত্য সাময়িকী সমকালে। লিখেছিলেন আবুল ফজল। গল্পটি লেখা হল বঙ্গবন্ধুর খুনির এক স্ত্রীর ভাষ্যে – যে স্ত্রী তাঁর স্বামীর এই হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণে মানসিকভাবে বিচলিত, বিপর্যস্ত, যে স্ত্রী শেষে কিনা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
তদানীন্তন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিচার করলে এই গল্পটি শুধু একটি সাহসী পদক্ষেপ নয়, পরবর্তী সময়ে প্রতিবাদী সাহিত্যের দ্বার উন্মোচনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। কখনো কখনো একটি মাত্র গল্প, সেটির সাহিত্য মান যেরকমই হোক না কেন, যা কিনা সময়ের দাবিকে গ্রহণ করতে পারে, সেটিকে আমরা স্মরণ করি। অনেক সময় লেখক নিরপেক্ষভাবে ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করতে চান, কিন্তু সাহিত্য যতই সমাজ থেকে দূরে যেতে চায়, ‘শিল্পের খাতিরে শিল্পকে’ (art for art’s sake, l'art pour l'art) ধরে রাখতে চায় ততই সে আরো নিগুঢ়ভাবে সমাজের সাথে জড়িয়ে পড়ে। এই ধরনের নন্দনতত্ত্ব চিত্রকলার ক্ষেত্রে কিছুটা খাটলেও সাহিত্যচর্চায়, বিশেষত গদ্য সাহিত্যে তা একেবারেই বেমানান। সেখানে বলা যায় ‘জীবনের খাতিরে শিল্প’ কথাটিই যথার্থ, মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ ঔপন্যাসিক জেমস বল্ডউইন বলেছিলেন, একটি বাক্যও কোনো অন্তর্নিহিত বার্তা ছাড়া লেখা সম্ভব নয়। আর শিল্প-সমালোচক জন বার্জার বলেছিলেন, এমনকী কোনো চিত্রকর্মকে নিষ্ক্রিয়ভাবে অবলোকন করাও একটি রাজনৈতিক ক্রিয়া, বলা যায় একটি ঐতিহাসিক প্রক্রিয়া যেখানে কোনোকিছুকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গী একদিকে যেমন আমাদের জ্ঞান ও বিশ্বাস দিয়ে পরিচালিত, অন্যদিকে কখন এবং কোথায় সেটি দেখছি তার ওপরও নির্ভরশীল।
তবুও ‘শিল্পের খাতিরে শিল্প’ ভাবনার একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা থেকে যায়। এর উদ্ভব হয়েছিল ইউরোপে শিল্প বিপ্লবের শীর্ষ সময়ে, মানুষ গ্রামের ক্ষেত ছেড়ে শহরের কারখানায় যোগ দিচ্ছে, রেনেসাঁ-উত্তর সময়ে ধর্মীয় ও কঠোর সামাজিক অনুশাসনের বাইরে বুদ্ধিজীবীরা পথ খুঁজছে। ‘শিল্পের খাতিরে শিল্প’ আন্দোলনের আবির্ভাবই হয়েছিল উনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপের সামাজিক বন্ধন থেকে মুক্তির ইচ্ছায়। কিন্তু শিল্পকে সমাজ থেকে মুক্ত রাখতে চাইলেও, তার আধারটি, অর্থাৎ লেখকের রাজনৈতিক মতামত সেই শিল্পর সামাজিক চরিত্র নির্ধারণ করে দেয়।
জার্মান কবি ও সাহিত্য সমালোচক উদারবাদী হেনরিখ হাইনে তাঁর জীবনের শেষের পঁচিশ বছর কঠোর রক্ষণশীল জার্মান সেন্সরশীপকে এড়াতে প্যারিসে বাস করতেন, ১৮৫৬ সনে আটান্ন বছর বয়সে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। হাইনের কবিতায় রাজনৈতিক কোনো বার্তা নেইই বললে চলে এবং তাঁর প্রথমদিকের কবিতা সবই রোমান্টিক গোত্রভুক্ত, কিন্তু একদিকে তাঁর ইহুদী ঐতিহ্য ও অন্যদিকে উদারনৈতিক সমাজতন্ত্রী ধারণা তাকে তাঁর জন্মভূমি জার্মানিতে ত্যাজ্য করে তুলেছিল – মৃত্যুর প্রায় আশি বছর পরেও নাৎসি জার্মানিতে অন্য অনেকের সাথে তাঁর বই পোড়ানো হয়েছিল।
হাইনের যে কোনো একটি কবিতাকে পড়লে রোমান্টিক ধ্যানের আভাষ পাওয়া যাবে, এমনকী ‘শিল্পের জন্য শিল্পের’ সৃষ্ট নিঁখুত কাঠামো ও সৌন্দর্যেরও ছোঁয়া পাওয়া যাবে, কিন্তু শুধুমাত্র তখনই যখন আমরা জন বার্জারের থিসিস গ্রহণ করব, অর্থাৎ হাইনের কবিতাকে তাঁর জীবন দর্শনের আঙ্গিকে পর্যবেক্ষণ করব তখনই সেটি নিখুঁত শিল্পের স্তর থেকে একটা নতুন বার্তা নিয়ে উঠে এসে আমাদের কাছে ধরা দেবে। (কার্ল মার্ক্সের সঙ্গে হাইনের দূর আত্মীয়তার একটি সম্পর্ক ছিল, জার্মানির সেন্সর থেকে বাঁচতে মার্ক্সও প্যারিসে এসে ছিলেন কিছুদিন এবং হাইনের সাথে তাঁর বন্ধুত্ব ছিল, হাইনে দ্বারা প্রভাবিতও হয়েছিলেন। তবে সমাজতন্ত্রের পথনির্দেশনার ব্যাপারে হাইনে ও মার্ক্সের মধ্যে পার্থক্য ছিল, হাইনে মানুষের ব্যক্তিগত উৎকর্ষতার দিকে আকৃষ্ট ছিলেন।)
সোভিয়েত ইউনিয়নে স্তালিন পাকাপোক্তভাবে ক্ষমতা নেবার আগে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য, ১৯২০-এর দশকে, একটি শিল্প আন্দোলন ছিল যার তাত্ত্বিক ভিত্তিভূমি শুধু ‘শিল্পের জন্য শিল্প’ই ছিল না, বরং এক ধরনের অ্যাবসার্ড বিমূর্ততায় সৃষ্ট ছিল। বলাই বাহুল্য এই ধরনের ধারণা তখনকার সোভিয়েত সমাজের একমুখী রাজনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল এবং এই শিল্প আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সাহিত্যিক বা আর্টিস্টদের ভাগ্য খুব একটা ভাল হয়নি। তাহলে দেখা যাচ্ছে ‘শিল্পের জন্য শিল্প’ও একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া।
দাউদ হায়দারকে একটি কবিতা লিখে দেশান্তরী হতে হয়েছিল। কবিতাটি আত্মসংলাপের, আত্মদিদৃক্ষার, একক ব্যক্তিমানসের দর্শন – সমাজের দর্শন নয়। শুধুমাত্র শিল্পের জন্যও বলে আখ্যায়িত করা যায়। কিন্তু অপরিপক্ক সমাজ একক ব্যক্তির স্বাধীন দর্শনে বিশ্বাস করে না। তখনও বঙ্গবন্ধু বেঁচে ছিলেন। তসলিমা নাসরিনসহ পরবর্তী সময়ে বহু লেখককে নির্বাসনে যেতে হয়েছে। একটি দেশ বা জাতির পরিপক্কতা নির্ভর করে বহু মতকে সে একসাথে কতখানি ধারণ করতে পারে তার ওপর, সে তার নাগরিককে কতখানি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দিতে পারে। তার নাগরিক যখন অন্য দেশের বদান্যতায় থাকে সেটি তার জন্য সম্মানের হতে পারে না। হেনরিক হাইনের পরে দুশো বছর কেটে গেছে, আমরা কি এগুতে পেরেছি, নাকি নতুন ধরনের অন্তর্জাল নিরাপত্তা আইনে নাগরিক জীবন বিপর্যস্ত করছি। ইউক্রেন আক্রমনের পরে ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার ইউক্রেন যুদ্ধ সংক্রান্ত খবরে সেন্সর আরোপ করেছে, কেউ খোলাখুলি খবর দিলে তার ১৫ বছর জেল হতে পারে। রুশ ছাত্ররা যারা যুদ্ধের প্রতিবাদ করছে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। ভারতে মোদী সরকার আর এক ধরনের নিরাপত্তা আইনে বাক-স্বাধীনতাকে দেশদ্রোহীতার পর্যায়ে পর্যবসিত করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাক-স্বাধীনতার ব্যাপারে আইন এইসব দেশ থেকে অনেক উদার, তবে ডানপন্থী এবং বামপন্থী উভয় দিকের দাবি মানতে গিয়ে সামাজিকভাবে সংবেদনশীল বহু ব্যাপারে সামঞ্জস্য রাখা মুশকিল হয়ে উঠছে, স্কুলের পাঠাগারে কী ধরনের বই রাখা যাবে সেটি একটি বড় উদাহরণ।
১৯৭৫-এর মর্মান্তিক ঘটনার পরে আবুল ফজল বা শওকত ওসমান যে সাহসী লেখা লিখেছিলেন তখন তাঁরা ভাবেননি শিল্পের ভূমিকার কথা। শেষ পর্যন্ত শিল্পের জন্য শিল্প কি জীবনের জন্য শিল্প এই দুটি মতবাদই মানবিকতার ধারক। পৃথিবী এই মুহূর্তে একটি বড় যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ শরণার্থী হচ্ছে। যুদ্ধের কার্যকারণ যাই হোক না কেন নিরীহ মানুষের মৃত্যু কখনই কাম্য নয়। যুগে যুগে শান্তির পক্ষে লেখকেরা বড় ভূমিকা পালন করেছে, এবারও আশা করি করবে।
এবারের গল্পপাঠের একটা বড় অংশ যাচ্ছে মার্কিন সমকালীন গল্পের অনুবাদে। মার্কিন ছোট গল্পের ঐতিহ্য অনেকদিনের এডগার পো থেকে সল বেলো, ও’হেনরি, হেমিংওয়ে হয়ে জর্জ স্যন্ডার্স, কেট শপ্যাঁ থেকে ফ্লানেরি ও’কনর হয়ে অ্যালিস ওয়াকার, অথবা বিজ্ঞান ফিকশন ধারার রে ব্র্যাডবেরি থেকে উরসুলা লে গুইন। বর্তমানের সবাই এখানে স্থান পেয়েছে এমন নয়, পাঠক হয়তো বিরাট মার্কিন চিত্রপটের অংশ বিশেষ দেখতে পাবেন। এছাড়াও গল্পপাঠের নিয়মিত আয়োজনগুলো তো থাকছেই। পাঠক তাঁর নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিয়ে নিশ্চয়ই সেগুলো পাঠ করবেন। পাঠকের জন্যই গল্পপাঠের এই আনন্দ আয়োজন।
সম্পাদকীয়তে ব্যবহৃত ছবিটি আখতার আহমেদ রাশার কাঠশিল্পকর্ম থেকে গৃহীত।
সম্পাদকীয়তে ব্যবহৃত ছবিটি আখতার আহমেদ রাশার কাঠশিল্পকর্ম থেকে গৃহীত।
--দীপেন ভট্টাচার্য
ও' হেনরি সাহিত্য পুরস্কার (O. Henry Award) পেলেন সাহিত্যিক অমর মিত্র। ১৯৭৭ সালে অমর মিত্র লিখেছিলেন এক ছোটগল্প, 'গাঁওবুড়ো'। তাঁর কথায়, 'এটি আমার অল্প বয়সে লেখা গল্প।'
এই গল্পটিই চার দশকেরও বেশি সময় পরে, গত বছর আমেরিকার একটি সাহিত্যপত্রিকা 'দ্য কমন'-এ প্রকাশিত হয়। অনুবাদে তার নাম হয়, 'দ্য ওল্ড ম্যান অফ কুসুমপুর'। সেখান থেকেই এই আন্তর্জাতিক পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয় গল্পটি। গল্পের অনুবাদ করেছেন অনীশ গুপ্ত।
আমেরিকার প্রখ্যাত ছোটগল্পকার ও' হেনরির নামে এই পুরস্কার (O. Henry Award) প্রবর্তন করা হয় ১৯১৯ সালে। ছোট ফিকশন গল্প ও ছোট ফিকশন গল্পের অনুবাদের জন্যই দেওয়া হয় এই পুরস্কার।
চিরায়ত গল্প :
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে প্রতিবাদী প্রথম গল্প। প্রকাশ হয়েছিল ১৯৭৭এর ৩-রা নভেম্বর সাহিত্য সাময়িকী সমকালে। লিখেছিলেন আবুল ফজল। গল্পটি লেখা হল বঙ্গবন্ধুর খুনির এক স্ত্রীর ভাষ্যে – যে স্ত্রী তাঁর স্বামীর এই হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণে মানসিকভাবে বিচলিত, বিপর্যস্ত, যে স্ত্রী শেষে কিনা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
বঙ্গবন্ধুর স্কেচ : শিল্পী মাসুক হেলাল।
গল্পের শৈলী--
গল্প বলবার কৌশলের ভেতরে একটি বড় প্রশ্ন লুকিয়ে রয়েছে-- ক্রিয়াপদের কোন্ রূপটি ব্যবহার করবো? সাধারণত ক্রিয়াপদের অতীত কালরূপটিই বেশি ব্যবহৃত হয়। ক্রিয়াপদের নিত্যবৃত্ত বর্তমান কালরূপও অনেক লেখকই ব্যবহার করেন। আবার ক্রিয়ার ভবিষ্যৎ রূপটিও ব্যবহার করা সম্ভব। ক্রিয়াপদের কালের সঠিক ব্যবহার করা না গেলে গল্পটি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। কথাসাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হক ক্রিয়াপদের ব্যবহার নিয়ে নিচের লেখাটি লিখেছিলেন।
কুলদা রায়ের গল্প : ক্রসফায়ারের পরে যা যা ঘটেছিলআশান উজ জামানের গল্প : আকাশ ভেঙে মুখে দিলেই বিদঘুটে স্বাদ
গল্পপাঠে নতুন
স্বপ্না ভট্টাচার্যের গল্প : অমূল্যনিবাস
ফজলুল কবিরীর গল্প : মড়কের মৌসুম
নূর কামরুন নাহারের গল্প : সালিশ
স্বপ্না ভট্টাচার্যের গল্প : অমূল্যনিবাস
ফজলুল কবিরীর গল্প : মড়কের মৌসুম
নূর কামরুন নাহারের গল্প : সালিশ
আমেরিকান ঔপন্যাসিক টনি মরিসনের প্রথম উপন্যাস The Bluest Eye প্রকাশিত হয় ১৯৭০ সালে। ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত সং অফ সলোমন উপন্যাসটি তাঁকে বিপুল খ্যাতি এনে দেয়। ১৯৮৭ সালে Beloved উপন্যাসের জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন। ১৯৯৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান। টনি মরিসন জন্মেছিলন ১৯৩১ সালে আমেরিকার ওহিও অঙ্গরাজ্যে। ২০১৯ সালে তিনি মারা যান। উপন্যাস ছাড়াও লিখেছেন প্রবন্ধ ও শিশুসাহিত্য। দি প্যারিস রিভিউ পত্রিকায় প্রকাশিত টনি মরিসনের এই দীর্ঘকায় সাক্ষাৎকারটি অনুবাদ করেছেন উৎপল দাশগুপ্ত।
দি আর্ট অফ ফিকশন

বেন ওকরি বিশটিরও বেশি গ্রন্থের রচয়িতা। তাঁর জন্ম ১৯৫৯ সালে নাইজেরিয়ায়। সাহিত্যে ম্যানবুকার জিতেছেন ১৯৯১ সালে। সাহিত্য-বিশ্বে তাঁর পদচারণা দীপ্ত ও সাহসী। আফ্রিকার জনমানুষের জীবন তিনি দেখেছেন নানান দিক থেকে, নানান আঙ্গিকে। আফ্রিকার মিথ, ভাষা, বিশ্বাস-ব্যবস্থা, সংস্কৃতি, লোকসাহিত্য নানানভাবে ধরা দিয়েছে তাঁর লেখনিতে। তিনি উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ রচনায় অনবদ্য।
ই-মেইলে সাক্ষাৎকার গ্রহণ: এইনেহি এডোরো-গ্লিনেস
অনুবাদ: এলহাম হোসেন
অনুবাদ: এলহাম হোসেন
সমকালীন আমেরিকান গল্প:
আধুনিক
ছোটগল্প সাহিত্যের সাম্প্রতিকতম শাখা হিসেবে পরিচিত হলেও আমরা অনুমান করতে
পারি, গল্প
দিয়েই সাহিত্যের শুরু। প্রাচীনত্বের গন্ধ মেখেই সাহিত্যের এই জনরাটি
আধুনিকতার মাটিতে পা রেখেছে। সেও খুব বেশিদিন হয়নি। এক্ষেত্রে দুজন
আমেরিকান গল্পকারের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। সাহিত্যের স্হান ভেদে এই
আধুনিকতায় আবার রকমফের রয়েছে। যেমন আমেরিকার
ছোটগল্পের সঙ্গে ইউরোপীয় ছোটগল্পের প্রবণতাগত কিছু পার্থক্য আছে। আমেরিকার ছোটগল্পে
অ্যাডভেঞ্চার, ফান্টাসি, মিথ এবং গথিক প্রভৃতি প্রকরণের ব্যবহার তুলনামূলকভাবে বেশি।
এই কারণে আমেরিকার ছোটগল্প কিছুটা জনপ্রিয় ধারার। এটা মোটাদাগে বলা। কারণ, বৈচিত্র্যও
মার্কিন ছোটগল্পে কম নেই। মোটাদাগে, এডগার এলান পো, ও হেনরি, ফকনার এবং হেমিংওয়ে—এই
চার পুরোধা লেখক চার ধরনের ছোটগল্পের প্রবক্তা হিসেবে কাজ করেছেন। এলান পো তাঁর গল্পে
গথিক ও অবাস্তব-অব্যাখ্যাত উপকরণ ব্যবহার করেছেন, ও’ হেনরির সিগনেচার তাঁর টুইস্টে,
নির্ভার-নির্মেদ গদ্যে যুদ্ধোত্তর বাস্তবতা তুলে এনেছেন হেমিংওয়ে এবং গীতল গদ্যে আমেরিকার
নিজস্বতা তুলে ধরেছেন ফকনার।
সমকালে
এসে যুক্ত হয়েছে আরো কিছু মৌলপ্রবণতা। আমেরিকার ছোটগল্প এখন আরো বেশি ছড়িয়ে পড়েছে কাঠামো
এবং বিষয়বস্তুতে। সমকালীন মার্কিন গল্প কতটা ঐতিহ্যমুখী কতটা নতুন পথের সন্ধানী—সেই
চিত্রটা উঠে এসেছে গল্পপাঠের বর্তমান সংখ্যায়। গল্পপাঠের এই আয়োজন পাঠকের ভালো লাগবে আশা করি।
অনুবাদক: মৌসুমী কাদের
অনুবাদক: উৎপল দাশগুপ্ত
জয়েস ক্যারল ওটসের গল্প: চলেছ কোথায়, ছিলেই বা কোথায় তুমি?অনুবাদক: ফারহানা আনন্দময়ী
লারা ভ্যাপনিয়নের: ফিশার বনাম স্পাস্কি
অনুবাদক: এলহাম হোসেন
অনুবাদক: এলহাম হোসেন
অনুবাদক: বিপ্লব বিশ্বাস
অনুবাদক: ফজল হাসান
অনুবাদক: বেগম জাহান আরা
অনুবাদক: রাবেয়া রব্বানী
অনুবাদক: ফারহানা আনন্দময়ী
অনুবাদক: দোলা সেন
অনুবাদক: অমিতাভ চক্রবর্ত্তী
লেখালেখি বিষয়ে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের কিছু অভিমত ছিল। সেগুলো একজন নতুন লেখকের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় টেক্সট। শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠজন সমীরকুমার চট্টোপাধ্যায় সেরকম কিছু অভিমত তুলে ধরেছেন নিচের লেখায়। ২৫মার্চ ছিল শ্যামলের জন্মদিনে লেখাটি পত্রস্থ হলো। সঙ্গে তাঁর একটি সিগ্নেচার গল্পও দেওয়া হলো।
শ্যামল-তর্পন :
সমীরকুমার চট্টোপাধ্যায়
খোলাচত্বর:
শাহাব আহমেদের ধারাবাহিক উপন্যাস:
মার্গারেট মিচেলের ধারাবাহিক উপন্যাস:
ভাষান্তর: উৎপল দাশগুপ্ত
এ বছরের ১৭ জানুয়ারি খুব নীরবে বিশাদবৃক্ষের মিহির সেনগুপ্ত উড়ে গেলেন অনন্ত আকাশে। খুব শোরগোল শোনা যায়নি তাঁর চলে যাওয়া ঘিরে। জীবিত অবস্হাতেও ডামাডোলের কেন্দ্রে থাকেননি তেমন একটা। নিভৃতে লিখে গেছেন। মানুষটা চলে গেলেও তাঁর স্মরণযোগ্য সৃষ্টিগুলো থেকে গেল বর্তমান এবং আগামির পাঠকের জন্য। পাঠক নিশ্চয়ই তাঁকে মনে রাখবেন।'বিষাদবৃক্ষ', 'সিদ্ধিরগঞ্জ মোকাম,' ‘ধানসিদ্ধির পরণকথা’, ‘টিলা অরণ্যের পাকদণ্ডী’, ‘বিদুর’, ‘ভাটিপুত্রের পত্র বাখোয়াজি’, ‘উজানি খালের সোঁতা’, ‘টাঁড় পাহাড়ের পদাবলি’, ‘হেমন্ত শেষের পাখিরা’, ‘গোধূলি সন্ধির রাখাল’, ‘নীল সায়রের শালুক’, ‘একুশ বিঘার বসত’ইত্যাদি বইগুলোর মধ্যে তিনি বেঁচে থাকবেন।তাঁর আত্মজৈবিক রচনা 'বিষাদবৃক্ষ' যেটিকে তিনি 'কালচারাল এনথ্রোপলজি বলার চেষ্টা' বলে অভিহিত করেন, ২০০৫, সেটি আনন্দ পুরস্কার লাভ করে।
মিহির সেনগুপ্তের লেখায় দেশভাগের যাতনা, হিন্দু মুসলমান সম্পর্ক, নিপাট বাঙালি জীবনের পাঁচালি ব্যাপক মাত্রায় উঠে এসেছে। জন্মভূমি বরিশালের মুগ্ধ মাটির ঘ্রাণে তিনি নিরন্তর ডুবে থাকতেন।সেই স্মৃতি আজীবন সযত্নে বয়ে বেড়িয়েছেন। বার বার তাঁর লেখায় উপস্হিত হয়েছে সেসব স্মৃতিকথা। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে 'বিষাদবৃক্ষ' একটি উল্লেখযোগ্য রচনা হিসেবে বিবেচিত হওয়ার মতো বই বলে মনে করি। বহুদিন আগে লেখা বইটির পাঠ অনুভূতির মাধ্যমে শ্রদ্ধেয় সাহিত্যিক মিহির সেনগুপ্তের প্রতি গল্পপাঠের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি সশ্রদ্ধ ভালোবাসা জানাচ্ছি।
আলী নূরের ধারাবাহিক স্মৃতিকথা:
কুলদা রায়ের ধারাবাহিক উপন্যাস:
কাননবালার শেষ মুজরো অথবা পিপ্পুলকুমারী বালা- পর্ব ৪
বই নিয়ে আলাপ:
বই নিয়ে আলাপ : নাহার তৃণার অনুবাদ্গ্রন্থ দূরদেশের গল্প যখন হাতের কাছে
তরুণ গবেষক পুরুষোত্তম সিংহ বাংলাসাহিত্যের পরিচিত-অপরিচিত লেখকের গল্প-উপন্যাস নিয়ে নিয়িমিত আলোচনা করে থাকেন। তাঁর আলোচনার মধ্যে এক ধরনের নিবিড়-পাঠ প্রতিক্রিয়া বইটিকে নতুনভাবে পাঠকের সামনে হাজির করে। এখানে ৬টি বইয়ের আলোচনা প্রকাশিত হলো।
পীযূষ ভট্টাচার্যের উপন্যাস নিয়ে আলোচনা : তালপাতার ঠাকুমা-- ঠাকুমার জাদুগিরি, জাদুগিরির ঠাকুমা
সন্তোষ করের বই নিয়ে আলোচনা : মুক্তামাছ, ঐক্য -- যেন এক দরিদ্রের মালা
অনিশ্চয় চক্রবর্তীর লেখা নিয়ে আলোচনা : কালের আয়নায় বোধ-চেতনা-আদর্শের প্রতিবিম্ব
মধুময় পালের লেখা বিয়ে আলোচনা : সংস্কৃতি সংস্কৃতি ঐতিহ্যের প্রতি তোমার মন নাই রাষ্ট্র
সাধন চট্টোপাধ্যায়ের গল্প : বাস্তবের বিপ্রতীপ স্বর
পুষ্পল মুখোপাধ্যায়ের গল্প নিয়ে আলোচনা : নষ্ট সময়ের পদাবলি
0 মন্তব্যসমূহ